নিজের পাপ দিয়ে যে ব্যক্তি কাউকে কষ্ট দেয় তার সাথে উঠাবসা

0
941

লেখক: শাইখ মোহাম্মাদ সালেহ আল মুনাজ্জিদ

প্রশ্ন:

যদি কোন লোক তার পাপের মাধ্যমে আমাকে কষ্ট দেয় এবং অব্যাহতভাবে কষ্ট দিতে থাকে; তখন আমি কি করতে পারি?

উত্তর:

আলহামদুলিল্লাহ। যা করা উচিত সেটা হচ্ছে পাপীকে নসীহত করা— চাই তার পাপের কারণে আপনার কষ্ট হোক কিংবা না হোক। কেননা সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ এক মহা ওয়াজিব; এ কর্তব্য পালন করা শরিয়তের দাবী। যেমনটি আল্লাহ তাআলা বলেছেন: “আর স্মরণ করুন, যখন তাদের একদল বলেছিল, ‘আল্লাহ্‌ যাদেরকে ধ্বংস করে দিবেন কিংবা কঠোর শাস্তি দেবেন, তোমরা তাদেরকে সদুপদেশ দাও কেন? তারা বলেছিল, ‘তোমাদের রবের কাছে দায়িত্ব-মুক্তির জন্য এবং যাতে তারা তাকওয়া অবলম্বন করে, সেজন্য।” [সূরা আরাফ, আয়াত: ১৬৪]

এ আয়াতের ব্যাখ্যায় ইবনে কাছির (রহঃ) বলেন: ‘আল্লাহ তাআলা এ জনপদের অধিবাসীদের সম্পর্কে সংবাদ দেন যে, তারা তিন দলে বিভক্ত হয়েছিল: একদল নিষিদ্ধ কাজে লিপ্ত হল এবং শনিবারে মাছ ধরায় প্রবৃত্ত হল। “অথচ আল্লাহ্‌ তাদেরকে শনিবারে তা করতে নিষেধ করেছেন।”…অপর একদল তাদেরকে এ গর্হিত কাজ করতে নিষেধ করেছে এবং তাদের থেকে দূরে সরে এসেছে। আরেক দল নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে— তারা নিজেরা নিষিদ্ধ কাজে লিপ্ত হয়নি এবং অন্যদেরকেও নিষেধ করেনি। বরং তারা নিষেধকারী দলকে লক্ষ্য করে বলেছে: “আল্লাহ্‌ যাদেরকে ধ্বংস করে দিবেন কিংবা কঠোর শাস্তি দেবেন, তোমরা তাদেরকে সদুপদেশ দাও কেন?” অর্থাৎ তোমরা এদেরকে উপদেশ দিচ্ছ কেন?

তোমরা তো জান যে, তাদের ধ্বংস সুনিশ্চিত, তারা আল্লাহর শাস্তির উপযুক্ত হয়েছে। সুতরাং তাদেরকে উপদেশ দিয়ে লাভ নেই। জবাবে অসৎ কাজের নিষেধকারী দল বলল: ‘তোমাদের রবের কাছে দায়িত্ব-মুক্তির জন্য’। অর্থাৎ আমরা তাদেরকে উপদেশ দিচ্ছি ‘তোমাদের রবের কাছে দায়িত্ব-মুক্তির জন্য’। তথা আল্লাহ আমাদের কাছ থেকে সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করার যে প্রতিশ্রুতি নিয়েছেন সে পূরণার্থে “এবং যাতে তারা তাকওয়া অবলম্বন করে, সেজন্য।” অর্থাৎ এই নিষেধাজ্ঞার কারণে তারা হয়তো তাকওয়া অবলম্বন করবে, তাদের অপকর্ম থেকে বিরত হবে এবং তওবা করে আল্লাহর দিকে ফিরে আসবে। তারা যদি আল্লাহর কাছে তওবা করে আল্লাহ্‌ও তাদের তওবা কবুল করবেন এবং তাদের ওপর রহমত নাযিল করবেন।

মুসলমানের কর্তব্য হচ্ছে- অসৎ কাজের নিষেধ ও দাওয়াতী কাজের নানা ধরণের পদ্ধতি অবলম্বন করা। কখনও নেকীর সওয়াবের প্রতি উদ্বুদ্ধ করার মাধ্যমে, কখনও পাপের শাস্তির ভীতি প্রদর্শনের মাধ্যমে, কখনও বিভিন্ন কাহিনী বর্ণনা করার মাধ্যমে যা হতে শিক্ষা নেয়া যায়, কখনও পাপের দুর্গতি ও পাপীর জিন্দেগিতে এর কুপ্রভাব তুলে ধরার মাধ্যমে, ইত্যাদি।

এরপরও যদি কোন ব্যক্তি এমন পাপী লোকের কাছে থাকা সহ্য করতে না পারেন এবং তার থেকে কষ্ট পান, তাকে উপদেশ দিয়েও কোন লাভ না হয় তাহলে তিনি তার থেকে দূরে সরে আসতে পারেন।

আল্লাহ্‌ই উত্তম তাওফিকদাতা ও সঠিক পথের দিশাদানকারী।

Print Friendly, PDF & Email


'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক'
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে
আপনি Facebook, Whatsapp, Telegram, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। ইসলামি দা’ওয়াহ্‌র ৮০ টিরও বেশী উপায়! বিস্তারিত জানতে এইখানে ক্লিক করুন "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]

দ্বীনী খিদমায় অংশ নিন

আপনার মন্তব্য লিখুন