আমি কি অনুগ্রহপূর্বক আর একবার সুযোগ পেতে পারি ?

88
3900

আপনি দাঁড়িয়ে আছেন এই মুহূর্তে আল্লাহ্‌ তায়ালার সামনে, পাশাপাশি সমগ্র মানবজাতিও একই প্রত্যাশা নিয়ে । জাহান্নাম আপনার বামে আর জান্নাত আপনার ডানে । পৃথিবীর প্রথম মানুষ থেকে শুরু করে শেষ মানুষ পর্যন্ত, সবাই একত্রে উপস্তিত । “আজকের দিনে কি হবে তাদের পরিনতি”? কোন আওয়াজ নেই । সবাই নগ্নদেহে কিন্তু আজকে অস্বাভাবিকভাবেই কেউ কাউকে নিয়ে চিন্তিত না । সবার মাথায় একটা প্রশ্নই তাদেরকে চিন্তিত করছে, আজকে তাদের চিরন্তন আবাস কোনটি হবে, “জান্নাত নাকি জাহান্নাম”?

আল্লাহ রাব্বূল আলামীনের বানী হল (অর্থের ব্যাখ্যা), “তাদের সবাইকে তোমার মালিকের সামনে সারিবদ্ধভাবে এনে হাযির করা হবে, অতঃপর আমি বলবো, আজ তো তোমরা সবাই আমার কাছে এসে গেছো ঠিক যেমনি করে আমি তোমাদের প্রথম বার পয়দা করেছিলাম, কিন্তু তোমরা অনেকেই মনে করতে, আমি তোমাদের দ্বিতীয় বার আমার কাছে হাযির করার জন্য কোনো সময়সূচী নির্ধারণ করে রাখিনি।” [সূরাঃ আল-কাহাফ, আয়াতঃ ৪৮]

আপনি দাঁড়িয়ে আছেন অত্যন্ত আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে । একজন মুসলিম হওয়া সত্ত্বেও আপনার পুরো জীবনে হাতে গুনা যাবে এমন কয়েক রাকাত অথবা কয়েক দিন অথবা কয়েক মাস অথবা কয়েক বছর নামায আদায় করেছেন । এমনকি রমজান মাসেও রোজা রাখার প্রয়োজন মনে করেননি । আর যাকাত তো কখনো আপনার ভাবনাতেই আসেনি । এমনকি যদিও আল্লাহ্‌ তায়ালার অশেষ রহমতে আপনার পর্যাপ্ত ধনসম্পদ ছিল কিন্তু তারপরও জীবনে একবার হাজ্জ করার চেয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ঘুড়ে বেড়ানোকেই আনন্দের সঙ্গে উপভোগ করেছিলেন। চারিদিক নীরব, আপনার দৃষ্টি নত হয়ে আছে আর এই মুহূর্তে আপনার মনে একটাই বাসনা যে, যদি এই নীরবতাটা স্থায়ী হতো অনন্তকালের জন্য তাহলে কতই না চমৎকার  হতো । কিন্তু হঠাৎ, অপ্রত্যাশিতভাবে, আপনাকে আপনার নামে ডাকা হলো, “আদমের সন্তান, আবদুল্লাহ”,  আর আপনার হৃদয়ের স্পন্দন দ্রুতহারে বাড়তে লাগলো । এখন আপনি কাঁপছেন ভঁয়ে । আর এখন পৃথিবীতে আপনার যাবতীয় কর্মের হিসাব নেয়া হবে।

আজকের দিন “সত্য ব্যতীত অন্য কিছু নয়”, আপনি কি পৃথিবীতে প্রকৃত একজন, আল্লাহ্‌ তায়ালার একত্ববাদের উপর বিশ্বাসী ছিলেন ? আপনি কি নবী হযরত মোহাম্মাদ (সাঃ) যে শিক্ষা আমাদের কে শিখিয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন তার অনুসরণ করেছিলেন ? “হ্যাঁ”, যদি করে থাকেন তাহলে নিঃসন্দেহে জান্নাত হবে আপনার চিরন্তন আবাস । কিন্তু যারা আল্লাহ্‌ তায়ালার সাথে অন্যদের শরীক  করেছিলো এবং নবী হযরত মোহাম্মাদ (সাঃ) যে শিক্ষা আমাদের কে শিখিয়ে দিয়ে গিয়েছিলেন সেগুলোকে অবজ্ঞা করেছিলো, তাদের তো নিঃসন্দেহে জাহান্নামই হবে চিরন্তন আবাস । আজকের দিনে কারোর সাথেই অনু পরিমাণও অন্যায় করা হবে না ।

ধীরে ধীরে, অশ্রুধারা বেয়ে পড়তে লাগলো আপনার চোখগুলো দিয়ে । এমনকি আপনার হাতে আপনার আমলনামার বই আসার আগে থেকেই আপনি ভালো করেই জানেন যে আজকের দিনে আর কোনো সুযোগ নেই । আপনার অগনিত সুযোগ ছিল পৃথিবীতে নিজেকে সংশোধন করার কিন্তু আপনি তা অবজ্ঞা করে ক্রমাগতই করেছিলেন পাপ, একটার পর আরেকটা । এমনকি, আল্লাহ্‌ তায়ালার একত্ববাদের প্রমাণস্বরূপ, পৃথিবীতে অগনিত নিদর্শন আপনাকে দেখানো হয়েছিলো কিন্তু আপনি সেগুলোকেও অবজ্ঞা করেছিলেন, একটার পর আরেকটা । এতো সুযোগ দেবার পরেও, আল্লাহ্‌ তায়ালা কিভাবে আপনাকে আরেকবার সুযোগ দিবেন ? আপনি অনবরত পাপের পর পাপ করেই গেছেন কিন্তু আপনাকে পাপের শাস্তি দেওয়া হয়নি, তাই এখন আজকের দিনে আপনাকে আপনার অর্জিত সকল পাপের শাস্তি দেওয়া হবে । অতঃপর আপনার আমলনামার বই আপনার বাম হাতে দেওয়া  হবে । আপনি হয়তো পৃথিবীতে সকল পরীক্ষাতে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন স্কুলে, কলেজে, বিশ্ববিদ্যালয়ে অথবা আপনার পেশাগত জীবনে কিন্তু আপনি আজকে এখানে ব্যর্থ হলেন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষায়, আর সেটি হল, “অনন্তকালের জীবন”।

আল্লাহ রাব্বূল আলামীনের বানী হল: “প্রত্যেক মানুষের ভাগ্যলিপি আমি তার গলায় হারের মত করে ঝুলিয়ে রেখেছি, কেয়ামতের দিন তার জন্য আমলনামার একটি গ্রন্থ আমি তার সামনে বের করে দেবো, সে তা তার সামনে খোলা অবস্তায় পড়ে থাকতে দেখবে । আমি তাঁকে বলবো, পড়ো, এ হচ্ছে তোমার আমলনামা, আজ নিজের হিসাবের জন্য তুমি নিজেই যথেষ্ট।”  [সূরাঃ বনি-ইসরাঈল, আয়াতঃ ১৩-১৪]

আল্লাহ রাব্বূল আলামীনের বানী হল: “অতঃপর তাদের সামনে তাদের আমলনামা রাখা হবে, তখন নাফরমান ব্যক্তিদের তুমি দেখবে, সে আমলনামায় যা কিছু লিপিবদ্ধ আছে তার কারণে তারা খুবই আতঙ্কগ্রস্ত থাকবে, তারা বলতে থাকবে, হায় দুর্ভাগ্য আমাদের, এ আবার কেমন গ্রন্থ, এ তো দেখছি আমাদের জীবনের ছোটো কিংবা বড়ো প্রত্যেক বিষয়েরই হিসাব রেখেছে, তারা যা কিছু করেছে তার প্রতিটি বস্তুই সে গ্রন্থে রক্ষিত দেখবে, তোমার মালিক সেদিন কারো ওপর বিন্দুমাত্র জুলুমও করবেন না।”  [সূরাঃ আল কাহাফ, আয়াতঃ ৪৯]

আপনি হাঁটুতে ভর করে আল্লাহ্‌ তায়ালার কাছে দয়া ভিক্ষা চাইছেন । ইয়া আল্লাহ্‌, ইয়া আল্লাহ্‌, দয়া করেন, ইয়া আল্লাহ্‌, আরেকবার সুযোগ দিন, আর একটি বার । আপনি আপনার বাম হাতে রাখা আপনার আমলনামার বইটি খুললেন, আপনার শরীর কাঁপছে, তারপরও হৃদয়ের এক কোনে বিন্দু পরিমান আশা নিয়ে আপনার আমলনামার বইটি খুলে দেখলেন যে, ছোটো এবং বড়ো, হোক সেটা ধূলিকণার ন্যায় অথবা পাহাড়ের সমান, ভালো এবং মন্দ, সবকিছুই লিপিবদ্ধ করা আছে । আর ইতিপূর্বে আপনি ভালো করেই জেনে গেছেন যে, আজকের দিনে এবং পৃথিবীতে, কোথাওই আল্লাহ্‌ তায়ালা আমাদের ওপর বিন্দুমাত্রও জুলুম করেননি, জুলুমতো আমরা নিজেরাই করেছি নিজেদের ওপর।

আপনি বইটি খুললেন এবং ভিতরে সবকিছুই বিস্তারিত আছে । আর বইটি খোলার সাথে সাথেই যখন আপনার চোখ পড়ল আপনারই কৃত প্রথম পাপটির উপর অমনি অশ্রুধারা শুরু হয়ে গেলো । এবং আপনি সাথে সাথেই বইটি বন্ধ করে দিলেন আর চরম অনুশোচনা, দুঃখ প্রকাশ করতে লাগলেন । সত্যিকার অর্থে, আজকে আর কোনো অবকাশ নেই অনুশোচনা আর দুঃখ প্রকাশ করার । ইতোপূর্বে সকল সুযোগই আপনি হারিয়েছেন । আপনি চিৎকার করে আরও একবার বলতে লাগলেন, ইয়া আল্লাহ্‌, আর একটি বারও কি সুযোগ দেওয়া যায় না!!?

বিপথগামীদেরকে উদ্দেশ্য করে  আল্লাহ রাব্বূল আলামীনের বানী হল: “সেদিন ভয়াবহ শাস্তি দেখে হতভাগ্য লোকেরা দুনিয়ায় যাদের তারা মেনে চলতো তাদের অনুসারীদের সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্নের কথা বলবে, বলবে আমরা তো এদের চিনিই না, এদের উভয়ের মধ্যেকার সব সম্পর্কই সেদিন ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। এ হতাশাগ্রস্ত অনুসারীরা সেদিন বলবে, আবার যদি একবার আমাদের জন্যে পৃথিবীতে ফিরে যাবার সুযোগ থাকতো, তাহলে আজ যেমনি করে তারা আমাদের কে অস্বীকার করেছে, আমরাও সেখানে গিয়ে তাদের সাথে যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন করে আসতাম, এভাবেই আল্লাহ্‌ তায়ালা তাদের সমগ্র জীবনের কর্মকাণ্ডগুলো তাদের সামনে একরাশ লজ্জা ও আক্ষেপ হিসেবে তুলে ধরবেন, তাদের জন্যে যে জাহান্নাম নির্ধারিত হয়ে আছে, এরা কখনো সেই জাহান্নাম থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে না।”  [সূরাঃ আল বাক্বারা, আয়াতঃ ১৬৬-১৬৭]

 জাহান্নামের আগুনের উত্তাপ ইতোপূর্বে আপনার মনের ভিতর প্রজ্জলিত হয়ে উঠেছে। ভাবছেন, কিভাবে, কিভাবে আপনাকে শাস্তি দেওয়া হবে ? কতদিন সেই শাস্তির স্বাদ আস্বাদন করতে হবে ? কতদিন জলতে হবে জাহান্নামের অগ্নিতে ? প্রত্যেকটি বার যখনই আপনি পৃথিবীতে ভালো কিছু করতে চেয়েছেন, অভিশপ্ত শয়তান আপনাকে বিপথে পরিচালিত করেছে আর আপনিও অতি অল্পতেই অভিশপ্ত শয়তানের ছলনাতে সাড়া দিয়েছেন । আজ আর কোনোই সুযোগ নেই অন্যেকে দোষারুপ করার, বস্তুত, সকল দোষ তো নিজেরই ।

আল্লাহ রাব্বূল আলামীনের বানী হল: “যখন বিচার ফয়সালা হয়ে যাবে তখন শয়তান জাহান্নামীদেরকে বলবে,  আল্লাহ্‌ তায়ালা তোমাদের সাথে যে ওয়াদা করেছেন তা ছিল সত্য ওয়াদা, আমিও তোমাদের সাথে একটি ওয়াদা করেছিলাম, কিন্তু আমি তোমাদের সাথে ওয়াদার বরখেলাপ করেছি, আসলে তোমাদের ওপর আমার তো কোনো আধিপত্য ছিলো না, আমি তো শুধু এতটুকুই করেছি, তোমাদের আমার দিকে ডেকেছি, অতঃপর আমার ডাকে তোমরা সাড়া দিয়েছো, তাই আজ আমার প্রতি তোমরা কোনো রকম দোষারোপ করো না, বরং তোমরা তোমাদের নিজেদের ওপরই দোষারোপ করো, আজ আমি যেমন তোমাদের উদ্ধারে কোনো রকম সাহায্য করতে পারবো না, তেমনি তোমরাও আমার উদ্ধারে কোনো রকম সাহায্য করতে পারবে না, তোমরা যে আগে আমাকে আল্লাহ্‌ তায়ালার শরীক বানিয়েছো, আমি তাও আজ অস্বীকার করছি, এমন সময় আল্লাহ্‌ তায়ালার ঘোষণা আসবে, অবশ্যই যালেমদের জন্যে রয়েছে কঠিন আযাব।” [সূরাঃ ইব্রাহীম, আয়াতঃ ২২]

কতই না মন্দ অভিশপ্ত শয়তানের ছলনা ? কত প্রখর ছিল শয়তানের উস্কানি, কুমন্ত্রণা আর কত দুর্বল ছিল আমাদের ইমান ?

অভিশপ্ত শয়তান যখনই আমাদেরকে উস্কানি, কুমন্ত্রণা দিতো আমরা তা খুব দ্রুতই অনুসরণ করতাম । আপনি খুবই তুচ্ছ ভাবে অমান্য করেছিলেন আল্লাহ্‌ তায়ালাকে এবং অনুসরণ করেছিলেন সেই পথ যা আপনার কাছে সঠিক মনে হয়েছিলো অথচ আপনি পুরো উল্টো পথই অনুসরণ করেছিলেন যা অভিশপ্ত শয়তানের উস্কানি, কুমন্ত্রণায় ভরপুর ছিলো, আর সেই পথ অবলম্বন করেছিলেন যে পথে ধ্বংস ছাড়া আর কিছুই ছিলোনা বরং সেই পথই আজকে আপনাকে নিয়ে এসেছে জাহান্নামের দিকে । আপনার চিন্তা ভাবনাগুলো ছিলো অহংকার ও দাপটতায় পরিপূর্ণ যেগুলোর বহিঃপ্রকাশ ছিলো এমন যে, এই পৃথিবীতে আপনি সারা জীবন বেঁচে থাকবেন । বস্তুত, একদিন আমাদের সবাইকে মরতে হবে এবং সামনা সামনি হতে হবে আল্লাহ্‌ তায়ালার আর তিনিই আখিরাতে আমাদের সব কর্মের বিচার করবেন, এই সকল ভাবনাগুলোতে আপনি ছিলেন সম্পূর্ণ উদাসীন, ভেবেছিলেন এই সবই মিথ্যা । আল্লাহ রাব্বূল আলামীনের বানী হল: “প্রতিটি জীবকেই মরণের স্বাদ গ্রহন করতে হবে। ” [সূরাঃ আল আম্বিয়া, আয়াতঃ ৩৫]

অল্প কিছু মুহূর্ত অবশিষ্ট । জাহান্নামের প্রজ্বলিত অগ্নি অপেক্ষমান জাহান্নামীদের জন্যে । আপনার সময় এখন শেষ কিন্তু আপনার সকল ভাবনা শুধু একটা বিষয় কে ঘিরেই আর তা হলো, আর একটি বার সুযোগ । আর সেই সুযোগ হলে আপনি পৃথিবীতে ফিরে গিয়ে আর কোন দিন কোন পাপে নিজেকে জড়াবেন না । সুযোগ, অগনিত সুযোগ আপনাকে ইতোপূর্বে দেওয়া হয়েছিলো দুনিয়াতে ইমান আনার জন্যে, আল্লাহ্‌ তায়ালার হুকুমগুলোকে অনুসরণ করতে কিন্তু আপসোস, আজকে আর কোনো সুযোগ নেই সংশোধনের, সব সুযোগের অবসান ইতোপূর্বে ঘটে গেছে । আপনার সময় এসে গেছে, আর এখনই আপনাকে নিক্ষেপ করা হবে জাহান্নামের দগ্ধকারী প্রজ্বলিত আগুনে অনন্ত কালের জন্য ।

আমার প্রিয় সম্মানিত পাঠকবৃন্দ, আপনি কি আপনার জীবনটাকেও আবদুল্লাহ ভাইয়ের মত প্রকৃত ধ্বংসের মতো ধ্বংসে রুপান্তরিত করতে চান ? আপনার চলমান  জীবনের সাথে উনার জীবনের কি কোনো মিল পাওয়া যায় ? আপনিও কি প্রতিনিয়তই উনার মতো আল্লাহ্‌ তায়ালার হুকুমগুলো, নামায, রোযা, যাকাত, হাজ্জ এই সব অবজ্ঞা করে চলেছেন ? এখানে, এই পৃথিবীতেই একমাত্র আমাদের সুযোগ আর এখনই সময় নিজেকে বদলানোর । দয়াকরে, ভুলে যাবেন না যে, মৃত্যুর পর আমাদের আর কোনো সুযোগ নেই । অনুশোচনা, দুঃখ প্রকাশ কোনই কাজে আসবে না সেই দিন । রাসুল (সাঃ) বলেছেন: “আল্লাহ্‌ তায়ালার কাছে বিনয়ের সহিত যে নিজের পাপের ক্ষমা চাইলো, তার যেন আর কোনো পাপই অবশিষ্ট রইলনা।” [হাদিসটি আবু উবাইদাহ ইবন আবদুল্লাহ ‘হাসান’ বলে  উল্লেখ করেছেন,  সংগ্রহে ইবন মাজাহ, সত্যতায় শাইখ আল-আলবানী]

যারা আল্লাহ্‌ তায়ালা এবং নবীদেরকে অমান্য করলো তাদের জন্যে অত্যন্ত ভয়ঙ্কর আবাস নির্ধারিত করাই আছে, আর তা হল জাহান্নাম । কিন্তু সুখবর তাদের জন্যে, যারা ধর্মভীরু এবং আল্লাহ্‌ তায়ালার হুকুম মোতাবেক সরল, সঠিক ও সত্যের পথে আছে আর সেই দিন তারা থাকবে বিজয়ী, জয়োল্লাসে মত্ত, তাদের কোন ভয় নেই আর তারা অনু পরিমানও চিন্তিত ও দুঃখিত হবে না । তাদের জন্যে তাদের মহান আল্লাহ্‌  কাছে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার রয়েছে। আল্লাহ রাব্বূল আলামীনের বানী হল: “যারা আল্লাহ্‌ তায়ালাকে ভয় করেছে, তারা অনাদিকাল এক সুরম্য জান্নাতে ও প্রবাহমান ঝর্নাধারায় থাকবে।” [সূরাঃ আল ক্বামার, আয়াতঃ ৫৪]

আমার প্রিয় সম্মানিত পাঠকবৃন্দ, এই পৃথিবীতে আপনি আপনার সারা জীবনে কঠিন পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে যতো ভালো কাজগুলো করেছেন তার কোনটিও আল্লাহ্‌ তায়ালা বিফলে যেতে দিবেন না বরং ভালো কাজ গুলোর বিনিময়ে আপনার জন্যে অপেক্ষা করছে চমৎকার চমৎকার বাগানে ভরপুর এক সুরম্য জান্নাত এবং নদ- নদী ও প্রবাহমান ঝর্নাধাঁরা আর সেই দিন সকল ধর্মভীরু এবং সত্যনিষ্ঠ মানুষদেরকে তাদের আমলনামা তাদের ডান হাতে দেওয়া হবে। অবিশ্বাসীদেরকে উদ্দেশ্য করে আল্লাহ রাব্বূল আলামীনের বানী হল: “যেদিন তাদের উপুড় করে জাহান্নামের আগুনের দিকে ঠেলে নেয়া হবে, তখন তাদের ঘোর কেটে যাবে, অতঃপর তাদের বলা হবে, এবার তোমরা জাহান্নামের আযাবের স্বাদ উপভোগ করো।” [সূরাঃ আল ক্বামার, আয়াতঃ ৪৮]

আসুন, আমরা সবাই দোয়া করি, ইয়া আল্লাহ্‌, আপনি আমাদের সেই শক্তি দিন, আমাদের ইমানকে আরও মজবুত করে দিন যাতে আমরা অভিশপ্ত শয়তানের সকল কুমন্ত্রণা ও উস্কানি থেকে নিজেদেরকে হেফাজত করতে পারি এবং আমাদের প্রিয় নবী (সাঃ), আপনাকে সন্তুষ্ট করার জন্যে যেসকল পথ আমাদেরকে দেখিয়ে গেছেন এবং যা কিছু শিখিয়ে দিয়ে গেছেন তার পুরোটাই যেন অনুসরণ করতে পারি সেই মনোবল, ইমান আমাদেরকে নসিব করুন।

আমীন!!

Print Friendly, PDF & Email
Banner Ad


'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক'
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে
আপনি Facebook, Whatsapp, Telegram, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। ইসলামি দা’ওয়াহ্‌র ৮০ টিরও বেশী উপায়! বিস্তারিত জানতে এইখানে ক্লিক করুন "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]

দ্বীনী খিদমায় অংশ নিন

88 COMMENTS

  1. অনেকদিন পর একটা ইসলামী আর্টিকেল পড়লাম। এটা যেন আমার নিজের জীবনের একটা ছবিই! একের পর এক পাপ করে যাচ্ছি। শয়তানের কবলে পড়ে ইসলাম থেকে অনেক দূরে সরে গেছি। আল্লাহ আবার ইসলামের ছায়াতলে ফিরে আসার তৌফিক দান করুন। আমিন!

  2. আললাহই বিশজগতের মালিক, সুতরাং আমাদেরকে তার সামনে একদিন যেতে হবেই

  3. আললাহই বিশজগতের মালিক, সুতরাং আমাদেরকে তার সামনে একদিন যেতে হবেই

  4. আললাহই বিশজগতের মালিক, সুতরাং আমাদেরকে তার সামনে একদিন যেতে হবেই

  5. আললাহই বিশজগতের মালিক, সুতরাং আমাদেরকে তার সামনে একদিন যেতে হবেই

  6. আললাহই বিশজগতের মালিক, সুতরাং আমাদেরকে তার সামনে একদিন যেতে হবেই

  7. আললাহই বিশজগতের মালিক, সুতরাং আমাদেরকে তার সামনে একদিন যেতে হবেই

আপনার মন্তব্য লিখুন