একজন ঈমানদার দা‘ঈর বর্জিত গুণাবলি পর্ব ৩

2
2447

DawahMission_Gloucester_FB-01

লেখক:মুহাম্মদ শাহিদুল ইসলাম

পর্ব ১ | পর্ব ২ | পর্ব ৩ | পর্ব ৪| পর্ব ৫ | পর্ব ৬ | পর্ব ৭| পর্ব ৮ | পর্ব ৯ | পর্ব ১০

৩. অন্তরে শত্রুতা

অন্তরে শত্রুতার পরিচয় ও হুকুম: বোগজ (بغض) শব্দটি আরবী। যার আভিধানিক অর্থ ঘৃণা,শত্রুতা, অবজ্ঞা, অপছন্দ ইত্যাদি। কারো সাথে অন্তরে শত্রুতাভাব পোষণ করাকে বোগজ বলা হয়ে থাকে।

বোগজের হুকুম: শরীয়াতের বৈধ হুকুম ব্যতীত কোন মানুষের সাথে শত্রুতা রাখা হারাম। কিন্তু শরীয়াত বিরোধী লোকদের সাথে এবং যারা শরীয়াতের মাসআলা গোপনা বা পরিবর্তন করে সমাজকে ভ্রষ্টতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে তাদের সাথে শত্রুতা পোষণ করা ওয়াজিব।

অন্তরে অন্তরে  শত্রুতার কারণ ও আলামতসমূহ: নিজের বা ধর্মের ক্ষতি দর্শনে বোগজ পয়দা হয়ে থাকে। উল্লেখ্য যে, ধর্মের ক্ষতি দর্শনে যে শত্রুতা পয়দা হয় তা হারাম নয়। বরং প্রশংসনীয়। আর নিজের ক্ষতি দর্শনে অন্তরে যে শত্রুতা পয়দা হয় তা দোষণীয়।

অন্তরে অন্তরে শত্রুতা আলামতসমূহ: সংক্ষেপে এ কথা বলা যায় যে, শত্রুতার একমাত্র ও প্রধান আলমত হলো যার সাথে শত্রুতা আসে তার সাথে মিলে মিথ্যে থাকতে অসস্তিবোধ ও খারাপ মনে করা। সে তার সাথে সঙ্গ দিতেও অস্বীকৃতি জানায়।

অন্তরে অন্তরে শত্রুতা ভয়াবহ পরিণতি: পরষ্পর পরস্পরের সাথে শত্রুতা করা ইসলামে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমনকি কোন মু’মিনের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য যা সে অপছন্দ করে তা নিয়ে কানাকানি করাও ইসলামে নিষিদ্ধ। এ প্রসঙ্গে হাদীসের এক বর্ণনায় এসেছে, “আবূ হুরাইরা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন; রাসূল সা. বলেছেন : কোন মু’মিন নর ও নারীর কোন চরিত্র অপছন্দ হলে তার অপর ভালো চরিত্র দ্বারা খুশি থাক।” [34]

অন্তরে শত্রুতা থেকে বাঁচার উপায়: সংক্ষেপে বলা যায় যে, যার সাথে শত্রুতা আছে তাঁর সাথে মিলে মিশে চলা এবং তাকে হাদীসা তোহফা প্রেরণ করা। তাহলে দেখা যাবে যে সকল প্রকার শত্রুতা বিদূরিত হয়ে উভয়ের মধ্যে চরম বন্ধুত্বপূর্ণভাব গড়ে উঠবে। আর এজন্যই রাসূল সা. ঘোষণা করেছেন: “আবূ হুরাইরা রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূল সা. বলেছেন : তোমরা পরস্পর পরস্পরকে হাদিয়া দাও তাহলে তোমাদের মধ্যে ভালবাসা তথা মহব্বত পয়দা হবে।” [35]

অপর এক হাদীসে শত্রুতা দূর করার পদ্ধতি সম্পর্কে বলা হয়েছে : আবূ হুরইরা রা. হতে বর্ণিত তিনি বলেন; রাসূল সা. বলেছেন : “তোমরা ততক্ষণ বেহেশ্তে প্রবেশ করতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত মু’মিন হতে না পারবে, আর ততক্ষণ পর্যন্ত মু’মিন হতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা মু’মিন হতে পারবে না যতক্ষণ না তোমরা পরস্পর পরস্পর ভালবাসতে না পারবে। আমি কি তোমাদের বলে দেব যে কোন জিনিস তোমাদের মধ্যে ভালবাসা বৃদ্ধি করবে? আর সেটি হলো তোমরা পরস্পর সালাম বিনিময় করবে।[36]

পর্ব ১ | পর্ব ২ | পর্ব ৩ | পর্ব ৪| পর্ব ৫ | পর্ব ৬ | পর্ব ৭| পর্ব ৮ | পর্ব ৯ | পর্ব ১০


[৩৪] আল-বাইহাকী, আস-সুনানুল কুবরা, খ. ৭, পৃ. ২৯৫, হাদীস নং-১৫১২৪।
[৩৫] আল-বাইহাকী, শু‘আবুল ঈমান, খ. ৪, পৃ. ৪৭৯, হাদীস নং-৮৯৭৬।
[৩৬] মুসলিম আস-সহীহ, খ. ১, পৃ. ৫৩, হাদীস নং-২০৩।

Print Friendly, PDF & Email
Banner Ad


'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক'
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে
আপনি Facebook, Whatsapp, Telegram, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। ইসলামি দা’ওয়াহ্‌র ৮০ টিরও বেশী উপায়! বিস্তারিত জানতে এইখানে ক্লিক করুন "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]

দ্বীনী খিদমায় অংশ নিন

2 COMMENTS

আপনার মন্তব্য লিখুন