প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর জন্য যা জানা একান্ত কর্তব্য – ২

7
4001

সম্পাদক: মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী | অনুবাদক: আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া

পর্ব ১ | পর্ব ২

ইসলাম বিনষ্টকারী বস্তু সমূহ

ইসলামকে বিনষ্ট করে এমন বস্তু দশটি :

এক: আল্লাহর ইবাদাতে কাউকে শরিক বা অংশীদার করা। আল্লাহ বলেন: “নিশ্চয়ই আল্লাহ ইবাদাতে তার সাথে কাউকে শরিক বা অংশীদার মানাকে ক্ষমা করবেন না, এছাড়া যা কিছু আছে তা যাকে ইচ্ছা করেন ক্ষমা করবেন।” [সূরা আন্‌-নিসা: ১১৬]

আরও বলেন: “নিশ্চয়ই যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করে তার উপর আল্লাহ তা‘আলা জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন, তার আবাস হবে জাহান্নামে, আর অত্যাচারী (শির্ককারী)-দের কোন সাহায্যকারী নেই।” [সূরা আল-মায়েদা: ৭২] আর এই শির্ক হিসেবে গণ্য হবে কবর অথবা মূর্তির জন্য কোন কিছু জবেহ করা।

দুই: যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তার মধ্যে কোনো মাধ্যম নির্ধারণ করে তাদের কাছে কিছু চাইবে ও তাদের সুপারিশ প্রার্থনা করবে এবং তাদের উপর ভরসা করবে, সে ব্যক্তি উম্মতের সর্বসম্মত মতে কাফের হয়ে যাবে।

তিন: যে কেউ মুশরিকদের (যারা আল্লাহর ইবাদতে এবং তার সৃষ্টিগত সার্বভৌমত্বে অন্য কাউকে অংশীদার মনে করে তাদেরকে) কাফের বলবে না বা তাদের কাফের হওয়া সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ করবে অথবা তাদের দীনকে সঠিক মনে করবে, সে উম্মতের ঐক্যমত্যে কাফের বলে বিবেচিত হবে।

চার: যে ব্যক্তি মনে করবে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রদর্শিত পথের চেয়ে অন্য কারো প্রদর্শিত পথ বেশি পূর্ণাঙ্গ, অথবা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শাসন-প্রণালীর চেয়ে অন্য কারো শাসন প্রণালী বেশি ভাল; যেমন: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বিচার-পদ্ধতির উপর তাগুতি-শক্তির (আল্লাহদ্রোহী শক্তির) বিচার-ব্যবস্থাকে প্রাধান্য দেয় তাহলে সে কাফেরদের মধ্যে গণ্য হবে।

পাঁচ: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে আদর্শ নিয়ে এসেছেন এর সামান্য কিছুও যদি কেউ অপছন্দ করে তবে সে কাফের হয়ে যাবে, যদিও সে (অপছন্দ করার পাশাপাশি) তার উপর আমল করে থাকে।

ছয়: রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বর্ণিত দীনের (জীবন বিধানের) সামান্যতম কিছু নিয়ে যদি কেউ ঠাট্টা করে বা দীনের কোন পুণ্য বা শাস্তি নিয়ে ‘ইয়ার্কি’ করে তবে সেও কাফের হয়ে যাবে। তার প্রমাণ: আল্লাহ তা‘আলার বাণী: “বলুন: তোমরা কি আল্লাহ ও তাঁর আয়াত (শরয়ি বা প্রাকৃতিক নিদর্শনাবলি) এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে ঠাট্টা করছ? তোমরা কোনো প্রকার ওজর পেশ করো না, কারণ তোমরা ঈমান আনার পরে কাফের হয়ে গিয়েছ।” [সূরা আত্‌-তাওবা: ৬৫, ৬৬]

সাত: যাদু, বান, টোনা এর দ্বারা সম্পর্ক বিচ্যুতি ঘটানো বা সম্পর্ক স্থাপন করানো— যদি কেউ এগুলো করে বা করতে রাজি হয় তবে সে কাফের হয়ে যাবে।
এর প্রমাণ কোরআনের বাণী : “তারা দু’জন (হারুত মারুত) কাউকে তা (যাদু) শিক্ষা দেওয়ার পূর্বে অবশ্যই বলে যে, আমরা তো কেবল ফিতনা বা পরীক্ষা স্বরূপ। সুতরাং তোমরা কুফরই করো না।” [সূরা আল-বাকারা: ১০২]

আট: মুশরিকদের (যারা আল্লাহর ইবাদতে বা সার্বভৌমত্বে কাউকে অংশীদার বানায় তাদের)-কে মুসলমানদের উপর সাহায্য-সহযোগিতা করা। এর দলিল আল্লাহর বাণী: “তোমাদের থেকে যারা তাদের (মুশরিকদের)-কে মুরুব্বি বা বন্ধু মনে করবে তারা তাদের দলের অন্তর্ভুক্ত হবে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা অত্যাচারী কোন জাতিকে সঠিক পথের দিশা দেন না বা অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছান না।” [সূরা আল-মায়েদা: ৫১]

নয়: যে এ-কথা বিশ্বাস করবে যে, যেমনিভাবে খিজির আলাইহিস্‌সালাম এর জন্য মুসা আলাইহিস্‌সালাম এর শরিয়তের বাইরে থাকা সম্ভব হয়েছিল তেমনিভাবে কারো কারো জন্য রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রবর্তিত শরীয়ত থেকে বাইরে থাকা সম্ভব, সেও কাফের বলে গণ্য হবে।

দশ: আল্লাহর দীন থেকে বিমুখ হওয়া, দীন শিখতে বা দীনের আদেশ নিষেধ অনুসারে কাজ করার ব্যাপারে গুরুত্বহীন থাকে।
এর দলিল আল্লাহর বাণী: “তার চেয়ে কে বেশী অত্যাচারী যাকে আল্লাহর আয়াতসমূহ স্মরণ করিয়ে দেওয়ার পর সে তা এড়িয়ে গেল, নিশ্চয়ই আমি পাপিষ্ঠদের থেকে প্রতিশোধ নেব।” [সূরা আস্‌-সাজদাহ: ২২]

এ-সমস্ত ঈমান বিনষ্টকারী বস্তু, ঠাট্টা করেই বলুক আর মন থেকে বলুক অথবা ভয়ে ভীত হয়েই বলুক, যেকোনো লোক এ-সমস্ত কাজের কোনো একটি করলে কাফের বলে বিবেচিত হবে। তবে যাকে জোর করে এ রকম কোন কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছে তার হুকুম আলাদা। এ সবগুলোই অত্যন্ত বিপজ্জনক ও অত্যধিক হারে সংগঠিত হয়ে থাকে। সুতরাং মুসলিম মাত্রই এগুলো থেকে সাবধানতা অবলম্বন করা ও এগুলো থেকে বেঁচে থাকা বাঞ্ছনীয়। আমরা আল্লাহর কাছে তার আযাব-গজবে পড়া ও তাঁর কঠিন শাস্তিতে নিপতিত হওয়া থেকে আশ্রয় চাচ্ছি।

তাওহীদ বা একত্ববাদ এর তিন অংশ

এক: তাওহীদুর রুবুবিয়্যাহ: “সৃষ্টি জগতের সৃষ্টিতে, নিয়ন্ত্রণে, লালন পালনে, রিজিক প্রদানে, জীবিত করণে, মৃত্যু প্রদানে, সার্বভৌমত্বে, আইন প্রদানে আল্লাহকেই এককভাবে মেনে নেয়া।” এ প্রকার তাওহীদ বা একত্ববাদকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সময়কার কাফেরগণ স্বীকার করে নিয়েছিল, কিন্তু শুধু এ গুলোতে ঈমান থাকার পরেও তারা ইসলামে প্রবেশ করতে পারে নি, বরং এগুলোর স্বীকৃতি থাকার পরও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন, এবং তাদের জানমালকে হালাল বা বৈধ করে দিয়েছিলেন। এই প্রকারের তাওহীদ বা একত্ববাদ বলতে বুঝায় আল্লাহর কার্যসমূহে আল্লাহকেই একক কার্য সম্পাদনকারী হিসাবে মেনে নেয়া। তাওহীদ এর এ অংশ মক্কার কাফিরগণও যে স্বীকার করত তার প্রমাণ কোরআনের বাণী: “বলুন: আসমান ও জমিনের কে তোমাদেরকে রিজিক বা খাদ্য যোগান দেয়? অথবা কে তোমাদের শ্রবণেন্দ্রিয় ও দৃষ্টিশক্তির সার্বভৌমত্বের অধিকারী? আর কে মৃত থেকে জীবিতকে বের করে? ও জীবিতকে মৃত থেকে বের করে? এবং কে কার্যাদির সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম নিয়ন্ত্রণ করে থাকে? তারা অবশ্যই বলবে: আল্লাহ। সুতরাং বলুন: তোমরা কি তাকে ভয় পাও না ?” [সূরা ইউনুস: ৩১]

কোরআনের আরও বহু আয়াতে এ কথার প্রমাণ রয়েছে।

দুই: তাওহীদুল উলুহিয়্যাহ: অর্থাৎ “সর্বপ্রকার ইবাদত শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য সম্পাদন করা। আর ইবাদতের প্রকার সমূহের মধ্যে রয়েছে : (১) দোয়া (২) সাহায্য চাওয়া (৩) আশ্রয় চাওয়া (৪) বিপদমুক্তি প্রার্থনা করা (৫) জবেহ করা (৬) মান্নত করা (৭) আশা করা (৮) ভয় করা (১০) ভালবাসা (১১) আগ্রহ ও (১২) প্রত্যাবর্তন করা, ইত্যাদি।” তাওহীদের এ অংশেই যত বিভেদ পূর্বকাল থেকে শুরু করে বর্তমানেও চলছে। এই অংশের অর্থ হলো, বান্দার ইবাদত কার্যাদিতে এককভাবে আল্লাহকেই নির্দিষ্ট করা। যেমন: দোয়া মান্নত, পশু জবেহ, আশা, ভরসা, ভীতি, আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাবর্তন ইত্যাদিতে তাঁকেই উদ্দেশ্য করা।
আর এ সবগুলোই যে আল্লাহর ইবাদত তার দলিল পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে।

তিন: তাওহীদুয্‌যাত ওয়াল আসমা ওয়াস সিফাত: “আল্লাহর অস্তিত্বে বিশ্বাস এবং তার নাম ও গুণাবলীসমূহে তাকে একক স্বত্বাধিকারী মনে করা।” আল্লাহ তা‘আলা বলেন: “বলুন: তিনি আল্লাহ একক স্বত্বা, আল্লাহ অমুখাপেক্ষী, তিনি জন্ম দেন নি, আবার তাঁকেও কেউ জন্ম দেয় নি, আর কেহ তাঁর সমকক্ষ হতে পারে না।” [সূরা আল-ইখলাস]

তিনি আরও বলেন: “আর সুন্দর যাবতীয় নামগুলো আল্লাহরই, সুতরাং তোমরা তাকে সেগুলো দ্বারা আহবান করো, আর যারা তার নামসমূহকে বিকৃত করে তোমরা তাদের ছেড়ে দাও, অচিরেই তাদেরকে তাদের কার্যাদির পরিণাম-ফল দেয়া হবে।” [সূরা আল-আ‘রাফ: ১৮০] তিনি আরও বলেন: “তাঁর মত কোন কিছু নেই, তিনি সর্ব শ্রোতা দর্শক।” [সূরা আশ-শুরা: ১১]

তাওহীদের বিপরীত হলো শির্ক (একত্ববাদের বিপরীতে অংশীদারিত্ব)

শির্ক তিন প্রকার: (১) বড় শির্ক, (২) ছোট শির্ক, (৩) গোপন শির্ক।

১) বড় শির্ক:

যা আল্লাহ কক্ষনো ক্ষমা করবেন না। এ শির্ক এর সাথে অনুষ্ঠিত কোন সৎকাজ আল্লাহ তা‘আলা কবুল করেন না। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: “নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা তাঁর সাথে শির্ক করাকে ক্ষমা করবেন না, তবে শির্ক ব্যতীত (শির্কের চেয়ে নিচু পর্যায়ের) যত গুনাহ আছে তা তিনি যাকে ইচ্ছা করেন ক্ষমা করে দেবেন। আর যে আল্লাহর সাথে শির্ক করলো সে পথভ্রষ্টতায় অনেকদূর এগিয়ে গেল (বেশী বিপথগামী হলো)।” [সূরা আন্‌-নিসা: ১১৬]

তিনি আরও বলেন: “অথচ মসীহ (ঈসা আলাইহিস্‌সালাম) বলেছেন: হে ইস্‌রায়েলের বংশধরগণ! তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর, যিনি আমার প্রভু, তোমাদের প্রভু, নিশ্চয়ই যদি কেউ আল্লাহর সাথে শরিক করে পরিণামে আল্লাহ তার উপর জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন, তার আস্তানা হবে জাহান্নাম, আর অত্যাচারীদের কোন সাহায্যকারী নেই।” [সূরা আল-মায়েদা: ৭২]

তিনি আরও বলেন: “আর আমি তারা যা আমল করেছে সেগুলোর দিকে ধাবিত হয়ে সেগুলোকে বিক্ষিপ্ত ধূলিকণায় রূপান্তরিত করে দিয়েছি”। [সূরা আল-ফুরকান: ২৩] আরও বলেন: “আপনি যদি শির্ক করেন তবে অবশ্যই আপনার আমলকে নষ্ট করে দেব এবং নিশ্চয়ই আপনি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবেন।” [সূরা আয্‌-যুমার: ৬৫]

আরও বলেন: “যদি তারা শির্ক করে তবে অবশ্যই তারা যা আমল করেছে তা নষ্ট হয়ে যাবে।” [সূরা আল-আন‘আম ১৮৮]

বড় শির্ক এর প্রকারাদি

বড় শির্ক চার প্রকার:

এক: দোয়ায় শির্ক করা : এর দলিল আল্লাহর বাণী : “অতঃপর যখন তারা নৌকায় চড়ে তখন দীনকে নিষ্ঠা সহকারে একমাত্র আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট করে তাঁকে ডাকতে থাকে কিন্তু যখন তিনি তাদেরকে ডাঙ্গায় নিয়ে পরিত্রাণ দেন তখনই তারা তার সাথে শির্ক (অংশীদার) করে।” [সূরা আল আনকাবুত: ৬৫]

দুই: নিয়্যাত ও সংকল্পে শির্ক করা : এর প্রমাণ আল্লাহর বাণী: “যারা পার্থিব জীবন ও তার চাকচিক্য পেতে চায় আমি তাদেরকে তাদের কার্যাদির প্রতিফল তাতেই (পার্থিব জীবনেই) পরিপূর্ণভাবে দিয়ে দেব, তাদের এতে কম দেয়া হবেনা, তাদের জন্য পরকালে জাহান্নাম ছাড়া আর কিছুই থাকবে না, তারা দুনিয়ায় যা করেছে তা নষ্ট হয়ে গেছে, আর যে সমস্ত (নেক) কার্যাদি তারা করেছে তা বাতিল হয়ে যাবে।” [সূরা হুদ: ১৫, ১৬]

তিন: আদেশ, নিষেধ প্রতিপালন বা বশ্যতায় শির্ক করা : এর প্রমাণ আল্লাহর বাণী: “তারা আল্লাহ ছাড়া তাদের ‘আরবাব’ তথা আলেম, ‘আহবার’ তথা আবেদদের (পীর-দরবেশদের)-কে তাদের জন্য হালাল হারাম-কারী বানিয়ে নিয়েছে এবং মরিয়ম পুত্র মসিহ্‌-কেও, অথচ তাদেরকে শুধু এক মা’বুদ এর ইবাদত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল, তিনি ব্যতীত আর কোন হক মা’বুদ নেই। তার সাথে যাদের শরিক করছে তাদের থেকে তিনি কতইনা পবিত্র!” [সূরা আত্‌তাওবাঃ ৩১]

“আরবাব” শব্দের তাফসীর বা ব্যাখ্যা হলো আলেমদেরকে পাপ কাজে অনুসরণ করা, এর অর্থ তাদেরকে ডাকা নয়; কারণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রখ্যাত সাহাবী ‘আদি ইব্‌ন হাতিম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর প্রশ্নের উত্তরে এ প্রকার ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন। কারণ তিনি যখন বললেন : আমরা তাদের ইবাদত (উপাসনা) করি না, উত্তরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন : “তাদের উপাসনা হলো পাপ কাজে তাদের আদেশ নিষেধ মান্য করা।”

চার: ভালবাসায় শির্ক করা: এর প্রমাণ আল্লাহর বাণী: “আর মানুষের মাঝে এমনও আছে যারা আল্লাহ ছাড়া তার অনেক সমকক্ষ (সমপর্যায়ের ভালবাসা পাওয়ার অধিকারী, ভালবাসার পাত্র) নির্ধারণ করে সেগুলোকে আল্লাহর ন্যায় ভালবাসে, অথচ যারা ইমানদার তারা আল্লাহকে সর্বাধিক ভালবাসে।” [সূরা আল-বাকারাহ: ১৬৫]

২) ছোট শির্ক:

আর তা হলো (সামান্য) লোক দেখানোর নিয়তে নেক কাজ করা। এর প্রমাণ আল্লাহর বাণী: “সুতরাং যে আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের আশা রাখে সে যেন নেক কাজ করে এবং তাঁর প্রভুর ইবাদতের সাথে অন্য কাউকে শরিক না করে।” [সূরা আল-কাহ্‌ফ: ১১০]

৩) গোপন (সূক্ষ্ম) শির্ক:

এর প্রমাণ হলো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বাণী: “এ [মুসলিম] জাতির মধ্যে শির্ক অন্ধকার রাত্রিতে কালো পাথরের উপর কালো পিপড়ার বেয়ে উঠার মতই সূক্ষ্ম বা গোপন।

শির্ক থেকে বাঁচার দোয়া: নিম্নের দোয়া (অর্থ বুঝে বিশ্বাস-সহকারে) পাঠ করলে শির্ক গুনাহের কাফ্‌ফারা হয়ে থাকে। “হে আল্লাহ আমি জেনে-শুনে তোমার সাথে কোন কিছুকে শরিক করা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি, আর আমার অজ্ঞাত গুনাহরাজি থেকে আমি ক্ষমা চাচ্ছি।”

কুফরির প্রকারভেদ

কুফরি দু’ প্রকার:

এক: যা করলে ইসলাম থেকে বের হয়ে যায়। নিম্নলিখিত পাঁচটি কারণে এ প্রকার কুফরি হয়ে থাকে:

১) মিথ্যা প্রতিপন্ন করার কারণে কুফরি : এর প্রমাণ আল্লাহর বাণী: “আর তার চেয়ে কে বেশি অত্যাচারী যে আল্লাহর উপর মিথ্যার সম্বন্ধ আরোপ করেছে, অথবা তার কাছে হক (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বা আল্লাহ ছাড়া সঠিক কোন উপাস্য নেই এ কালেমা) আসার পর তা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে, জাহান্নাম কি কাফেরদেরই বাসস্থান নয়?” [সূরা আল আনকাবুত: ৬৮]

২) সত্য জেনেও অহংকার ও অস্বীকার করার কারণে কুফরি : এর প্রমাণ আল্লাহ তা‘আলার বাণী: “আর স্মরণ করুন যখন আপনার প্রভু আদমকে সিজদা করার জন্য ফেরেশ্‌তাদেরকে নির্দেশ দিয়েছিলেন তখন ইবলিস ব্যতীত সবাই সিজদা করেছিল, সে অস্বীকার করেছিল, এবং অহংকার বোধে গর্ব করেছিল আর কাফেরদের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।” [সূরা আল বাকারা: ৩৪]

৩) সন্দেহ করার দ্বারা কুফরি করা- আর তা হলো অসার ধারণার বশবর্তী হয়ে কুফরি করা : এর প্রমাণ কোরআনের বাণী: “আর সে তার বাগানে প্রবেশ করল এমতাবস্থায় যে সে তার আত্মার উপর অত্যাচার করছে, এ-কথা বলে যে, আমি মনে করি না যে, এটা (বাগান) কখনো ধ্বংস হয়ে যাবে এবং কোনোদিন কিয়ামত অনুষ্ঠিত হবে বলেও মনে করি না। আর যদি তা হয়েও যায় এবং আমাকে আমার প্রভুর কাছে ফিরে নেয়াও হয় তথাপি আমি তার কাছে ফিরে এর (বাগানের) চেয়ে আরও ভালো (বাগান) পেয়ে যাব। তার সাথী তাকে বলল: তুমি কি সেই স্বত্বার সাথে কুফরি করছ যিনি তোমাকে প্রথমে মাটি ও পরে বীর্য থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং এরপর পূর্ণ মানুষরূপে তোমাকে অবয়ব দান করেছেন? কিন্তু আমি (বলছি) সেই আল্লাহই আমার রব ও পালনকর্তা, তার সাথে কাউকে শরিক করি না।” [সূরা আল-কাহফ: ৩৫-৩৮]

৪) এড়িয়ে যাওয়ার (বিমুখ হওয়ার) কারণে কুফরি : এর প্রমাণ আল্লাহর বাণী : “আর যারা কুফরি করেছে তারা যে সমস্ত বস্তুর ভয় তাদেরকে দেখান হয়েছে সেগুলো থেকে বিমুখ হয়েছে (এড়িয়ে গেছে)।” [সূরা আল-আহকাফ: ৩]

৫) মুনাফেকি করার কারণে কুফরি : এর প্রমাণ আল্লাহর পবিত্র কালামে এসেছে: “এটা এ জন্য যে, তারা ঈমান এনেছে অতঃপর কুফরি করেছে; ফলে তাদের অন্তরের উপর সিল মেরে দেয়া হয়েছে সুতরাং তারা বুঝছে না, বুঝবেনা।” [সূরা আল মুনাফিকুন: ৩]

দুই: দ্বিতীয় প্রকার কুফরি

আর তা হলো ছোট কুফরি, যা করলে গুনাহ হলেও ইসলাম থেকে বের হয়ে যাবেনা, আর তা’ হলো আল্লাহর নেয়ামত এর সাথে কুফরি করা।

এর প্রমাণ : কোরআনের বাণী : “আল্লাহ্ তা‘আলা উদাহরণ দিচ্ছেন কোন নিরাপদ, শান্ত-স্থির জনপদের— যার জীবিকা চতুর্দিক থেকে অনায়াসে আসছিল, তখন তারা আল্লাহর নেয়ামতের সাথে কুফরি করলো, ফলে আল্লাহ তা‘আলা সে জনপদকে তাদের কার্যাদির শাস্তি স্বরূপ ক্ষুধা ও ভয়ে নিপতিত রাখল। ” [সূরা আন্-নাহ্‌ল: ১১২]

মুনাফেকির প্রকারভেদ

মুনাফেকি দু প্রকার:

  •  বিশ্বাসগত মুনাফেকি।
  •  আমলগত (কার্যগত) মুনাফেকি।

এক: বিশ্বাসগত মুনাফেকি

এ-প্রকার মুনাফেকি ছয় প্রকার, এর যে কোন একটা কারো মধ্যে পাওয়া গেলে সে জাহান্নামের সর্বশেষ স্তরে নিক্ষিপ্ত হবে।

  • ১। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা।
  • ২। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা নিয়ে এসেছেন তার সামান্যতম অংশকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করা।
  • ৩। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কে ঘৃণা বা অপছন্দ করা।
  • ৪। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা নিয়ে এসেছেন তার সামান্যতম অংশকে ঘৃণা বা অপছন্দ করা।
  • ৫। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দীনের অবনতিতে খুশী হওয়া।
  • ৬। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দীনের জয়ে অসন্তুষ্ট হওয়া।

দুই: কার্যগত মুনাফেকি

এ ধরণের মুনাফেকি পাঁচ ভাবে হয়ে থাকে: এর প্রমাণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বাণী:
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “মুনাফিকের নিদর্শন হলো তিনটি:

    • কথা বললে মিথ্যা বলা।
    • ওয়াদা করলে ভঙ্গ করা।
    • আমানত রাখলে খিয়ানত করা।

অপর বর্ণনায় এসেছে :

  •  ঝগড়া করলে অকথ্য গালি দেয়া।
  •  চুক্তিতে উপনীত হলে তার বিপরীত কাজ করা।”

তাগুত এর অর্থ এবং এর প্রধান প্রধান অংশ

এ-কথা জানা প্রয়োজন যে, আল্লাহ তা‘আলা মানব জাতির উপর সর্ব প্রথম যা ফরজ করেছেন তা হচ্ছে তাগুতের সাথে কুফরি এবং আল্লাহর উপর ঈমান। আল্লাহ তা‘আলা বলেন : “আর নিশ্চয়ই আমি প্রত্যেক জাতির কাছে রাসূল পাঠিয়েছি এ কথা বলে যে, তোমরা শুধু আল্লাহর উপাসনা কর এবং তাগুতকে পরিত্যাগ কর।” [সূরা আন্‌-নাহল: ৩৬]

তাগুতের সাথে কুফরির ধরণ হলো : আল্লাহ ছাড়া অন্য সবকিছুর উপাসনা (ইবাদত) বাতিল বলে বিশ্বাস করা, তা ত্যাগ করা, ঘৃণা ও অপছন্দ করা, এবং যারা তা করবে তাদের অস্বীকার করা, তাদের সাথে শত্রুতা পোষণ করা। আর আল্লাহর উপর ঈমানের অর্থ হলো : আল্লাহ তা‘আলাই কেবলমাত্র হক উপাস্য ইলাহ, অন্য কেউ নয়— এ-কথা বিশ্বাস করা, আর সবরকম ইবাদতকে নিষ্ঠার সাথে আল্লাহর জন্যই নির্দিষ্ট করা যাতে এর কোন অংশ অন্য কোন উপাস্যের জন্য নির্দিষ্ট না হয়; আর মুখলিস বা নিষ্ঠাবানদের ভালবাসা, তাদের মাঝে আনুগত্যের সম্পর্ক স্থাপন করা, মুশরিকদের ঘৃণা ও অপছন্দ করা, তাদের শত্রুতা করা।

আর এটাই ইবরাহীম আলাইহিস্‌সালাম এর প্রতিষ্ঠিত দীন বা মিল্লাত, যে ব্যক্তি তার থেকে বিমুখ হবে সে নিজ আত্মাকে বোকা বানাবে, আর এটাই হলো সে আদর্শ (أسوة) বা (Model) যার কথা আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বাণীতে বলেছেন : “অবশ্যই তোমাদের জন্য রয়েছে ইবরাহীম ও তার সাথীদের মাঝে সুন্দর আদর্শ, যখন তারা তাদের জাতিকে বলেছিল: আমরা তোমাদের এবং আল্লাহ ছাড়া তোমাদের অপরাপর উপাস্য দেবতাদের থেকে সম্পূর্ণ সম্পর্কমুক্ত, আমরা তোমাদের সাথে সম্পর্ক স্থাপনে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করলাম, আর আমাদের ও তোমাদের মাঝে চিরদিনের জন্য শত্রুতা ও ঘৃণার সম্পর্ক প্রকাশ হয়ে পড়ল, যে পর্যন্ত তোমরা শুধু এক আল্লাহর উপর ঈমান স্থাপন না করছ।” [সূরা আল-মুমতাহিনাঃ ৪]

তাগুত:

শব্দটি ব্যাপক, এর দ্বারা আল্লাহ তা‘আলা ব্যতীত যা কিছুর ইবাদত বা উপাসনা করা হয়, এবং উপাস্য সে উপাসনায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করে এমন সবকিছুকে অন্তর্ভুক্ত করে, চাই কি তা দেবতা, বা নেতা, বা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অনুসরণের বাইরে অন্য কারো অনুসরণই হোক, ঐসবগুলোকেই তাগুত বলা হবে।

আর এ তাগুত -এর সংখ্যা অত্যধিক; তবে প্রধান-প্রধান তাগুত হলো পাঁচটি :

এক: শয়তান : যে আল্লাহর ইবাদত থেকে মানুষকে অন্য কিছুর ইবাদতের দিকে আহবান করে।
এর প্রমাণ আল্লাহর বাণী : “হে আদম-সন্তান, আমি কি তোমাদের থেকে শয়তানের ইবাদত না করার অঙ্গিকার নিই নি? নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।” [সূরা ইয়াসিন: ৬০]

দুই: আল্লাহর আইন (হুকুম) পরিবর্তনকারী অত্যাচারী শাসক : এর প্রমাণ আল্লাহ তা‘আলার বাণী: “আপনি কি তাদের দেখেন নি যারা মনে করে আপনার কাছে এবং আপনার পূর্ববর্তীদের কাছে যা অবতীর্ণ হয়েছে তার উপর ঈমান এনেছে, তারা তাগুতকে বিচারক হিসাবে পেতে আকাঙ্ক্ষা করে অথচ তাদেরকে এর (তাগুতের) সাথে কুফরির নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। আর শয়তান তাদেরকে সহজ সরল পথ থেকে অনেক দুর নিয়ে যেতে চায়।” [সূরা আন্‌নিসাঃ ৬০]

তিন: আল্লাহ কর্তৃক অবতীর্ণ (আইনের) হুকুমের বিপরীত হুকুম প্রদানকারী :
আল্লাহ তা‘আলা বলেন : “আর যারা আল্লাহর অবতীর্ণ আইন অনুসারে বিচার করে না তারা কাফের।” [সূরা আল মায়েদা: ৪৪]

চার: আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন গায়েবের খবর রাখার দাবিদার, আল্লাহ তা‘আলা বলেন : “তিনি গায়েবের জ্ঞানে জ্ঞানী, সুতরাং তার অদৃশ্য জ্ঞানকে কারও জন্য প্রকাশ করেন না, তবে যে রাসূল এর ব্যাপারে তিনি সন্তুষ্ট তিনি তাকে তার সম্মুখ ও পশ্চাৎ থেকে হিফাজত করেন।” [সূরা আল-জিন: ২৬, ২৭]

অন্য আয়াতে বলেন: “আর তার কাছেই সমস্ত অদৃষ্ট বস্তুর চাবিকাঠি, এগুলো তিনি ছাড়া আর কেউ জানে না, তিনি জানেন যা ডাঙ্গায় আছে আর যা সমুদ্রে আছে। যে কোন (গাছের) পাতাই পতিত হয় তিনি তা জানেন, জমিনের অন্ধকারের কোন শস্য বা কোন শুষ্ক বা আর্দ্র বস্তু সবই এক প্রকাশ্য গ্রন্থে সন্নিবেশিত আছে।” [সূরা আল-আন‘আম: ৫৯]

পাঁচ: আল্লাহ ছাড়া যার ইবাদত করা হয় এবং সে এই ইবাদতে সম্পূর্ণ সন্তুষ্ট, আল্লাহ তা‘আলা বলেন: “আর তাদের থেকে যে বলবে- আল্লাহ ব্যতীত আমি উপাস্য, তাকে আমি জাহান্নাম দ্বারা পরিণাম ফল প্রদান করব, এভাবেই আমি অত্যাচারীদের পরিণাম ফল প্রদান করে থাকি”। [সূরা আল-আন্‌বিয়াঃ ২৯]

মনে রাখা দরকার কোন মানুষ তাগুতের উপর কুফরি ছাড়া ইমানদার হতে পারেনা, আল্লাহ বলেন: “সুতরাং যে তাগুতের সাথে কুফরি করে এবং আল্লাহর উপর ঈমান আনে সে এমন মজবুত রজ্জুকে ধারণ করতে সক্ষম হয়েছে যার কোন বিভক্তি বা চিড় নেই, আর আল্লাহ সর্ব শ্রোতা ও সর্ব জ্ঞানী।” [সূরা আল-বাকারা: ২৫৬]

এ আয়াতের পূর্বাংশে আল্লাহ বলেছেন যে, “বিচার-বুদ্ধিসম্পন্ন পথ, ভ্রষ্ট-পথ থেকে স্পষ্ট হয়েছে”। ‘বিচার-বুদ্ধি সম্পন্ন পথ’ বলতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দীনকে, আর ‘ভ্রান্ত-পথ’ বলতে আবু জাহলের দীন, আর এর পরবর্তী আয়াতের ‘মজবুত রশি বা রজ্জু’ দ্বারা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ (বা আল্লাহ ছাড়া হক কোন উপাস্য নেই) এ সাক্ষ্য প্রদানকে বুঝিয়েছেন।

‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ এ কলেমা কিছু জিনিসকে নিষেধ করে, এবং কিছু বস্তুকে সাব্যস্ত করে, সকল প্রকার ইবাদতকে আল্লাহর ছাড়া অন্যের জন্য হওয়া নিষেধ করে। শুধুমাত্র লা-শরীক আল্লাহর জন্য সকল প্রকার ইবাদতকে নির্দিষ্ট করে। “আল্লাহর জন্যই সমস্ত শোকর, যার নেয়ামত ও অনুগ্রহেই যাবতীয় ভাল কাজ সম্পন্ন হয়ে থাকে।”

সমাপ্ত

পর্ব ১ | পর্ব ২

প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর জন্য যা জানা একান্ত কর্তব্য-১

Print Friendly, PDF & Email
Banner Ad


'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক'
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে
আপনি Facebook, Whatsapp, Telegram, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। ইসলামি দা’ওয়াহ্‌র ৮০ টিরও বেশী উপায়! বিস্তারিত জানতে এইখানে ক্লিক করুন "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]

দ্বীনী খিদমায় অংশ নিন

7 COMMENTS

আপনার মন্তব্য লিখুন