লেখকঃ ড. আয়িদ আল করনী | অনুবাদঃ ডা. হাফেজ মাওলানা মােহাম্মদ নূর হােছাইন
মধু আহরণ কর কিন্তু মৌচাক ভেঙ্গ না যাতে সৌম্যতা ও ভদ্রতা আছে তাই সুন্দর আর যাতে তা নেই তাই খারাপ। কারাে সাথে সাক্ষাৎকালে যখন আপনি সুন্দর হাসি দিবেন, একটি কোমল কথা বলবেন তখন আপনি একজন সত্যিকার সফল ব্যক্তির চরিত্র প্রদর্শন করবেন যে চরিত্র না কি একটি মৌমাছিও দেখায়।
যখন কোন মৌমাছি (ব্যবহারিক উদ্দেশ্যে অর্থাৎ প্রয়ােজনে) কোন ফুলে বসে তখন সে এটাকে ধ্বংস (নষ্ট) করে না, কেননা, আল্লাহ তা’আলা কোমলতার বদৌলতে যা দান করেন কঠোরতার বিনিময়ে তা দান করেন না। কিছু লােক আছেন যাদের ব্যক্তিত্ব চুম্বকের মতাে আশেপাশের লােকদেরকে আকর্ষণ করে, শুধুমাত্র এ কারণে যে, তারা তাদের কোমল ও ভদ্র কথা, তাদের ভালাে ব্যবহার এবং তাদের মহৎ কাজের জন্য তারা (ঐ লােকদের) ভালােবাসার পাত্র হন।
অন্যের বন্ধুত্বকে জয় করে নেয়ার কৌশল মহান ও ধার্মিকগণ জানেন; সর্বদা একদল লােক তাদেরকে ঘিরে থাকে। কোন সমাবেশে শুধুমাত্র তাদের উপস্থিতিটাই আশীর্বাদ, তারা অনুপস্থিত থাকলে তাদের অভাববােধ করা হয় এবং তাদের কথা জিজ্ঞাসা করা হয়।
এ ধন্য লােকদের একটি আচরণ সংহিতা আছে আর তা হল: “খারাপকে ভালাে দিয়ে প্রতিহত কর, তাহলে তােমার আর যার মাঝে শত্রুতা আছে সে এমন হয়ে যাবে যেন সে তােমার অন্তরঙ্গ বন্ধু।” [৪১-সূরা হা-মীম-আস-সাজদাহ : আয়াত-৩৪]
(মন্দকে ভাললা দ্বারা দূর করা বলতে বুঝায় যে, আল্লাহ তা’আলা বিশ্বস্ত ঈমানদারদেরকে ক্রোধের সময় ধৈর্য ধারণ করতে এবং তাদের সাথে যারা মন্দ আচরণ করে তাদেরকে ক্ষমা করে দিতে আদেশ করেছেন।)
তারা তাদের সততা, ক্ষমা ও ভদ্রতা দিয়ে অন্যের ভিতর থেকে হিংসাকে বের করে ফেলেন। তাদের সাথে যে মন্দ আচরণ করা হয়েছে তারা তা ভুলে যান। আর যে দয়া তারা পেয়েছেন তারা শুধু তাই মনে রাখেন। তাদেরকে কটু ও রুক্ষ কথা বলা হয়ে থাকতে পারে, কিন্তু তারা তা শুনেন না, বরং চিরতরে পিছনে না ফিরে তারা তাদের পথে অনবরত সামনে চলতে থাকেন। তারা শান্ত ও সৌম্য অবস্থায় থাকেন। সাধারণ জনগণ বিশেষ করে মুসলমানগণ তাদের হাত থেকে নিরাপদ থাকেন। নবী করীম (সাঃ) বলেছেন: “প্রকৃত মুসলিম সে যার জিহ্বা ও হাত থেকে অন্যান্য মুসলিমগণ নিরাপদ থাকেন। আর প্রকৃত মু’মিন সে যাকে অন্য মানুষেরা তাদের রক্ত (জীবন) ও সম্পদের ব্যাপারে বিশ্বাস করে।”
রাসূল (সাঃ) আরাে বলেছেন: “যারা আমার সাথে আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করেছে তাদের সাথে আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করার জন্য, যারা আমার সাথে অন্যায় আচরণ করেছে বা আমাকে অত্যাচার করেছে তাদেরকে ক্ষমা করে দিতে এবং যারা আমাকে বঞ্চিত করেছে তাদেরকে দান করতে আল্লাহ আমাকে আদেশ করেছেন।”
“নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মশীলদের ভালােবাসেন- (বিশেষত তাদেরকে) যারা ক্রোধ সংবরণ করে এবং মানুষকে ক্ষমা করে দেয়।” [৩-সূরা আলে ইমরান : আয়াত-১৩৪]
এ ধরনের লােকদেরকে এ পৃথিবীতে শান্তি ও প্রশান্তির এক আসন্ন পুরস্কারের ঘঘাষণা দিন। পরকালে জান্নাতে তাদের ক্ষমাশীল প্রভুর ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে থাকার এক মহা সুসংবাদও তাদেরকে দিন।
উৎসঃ লা তাহযান [হতাশ হবেন না], ক্রমিক নংঃ ১৮, পৃষ্ঠা: ৫৮ – ৫৯
'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক'
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে আপনি Facebook, Whatsapp, Telegram, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। ইসলামি দা’ওয়াহ্র ৮০ টিরও বেশী উপায়! বিস্তারিত জানতে এইখানে ক্লিক করুন "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]