মূল: ডঃ আলী আল-হাম্মাদী | অনুবাদ: মোঃ মুনিমুল হক
অন্যান্য মহৎগুণের পাশাপাশি একজন মুসলিমকে যে বিষয়ে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে তা হল সে যেন তার অপর মুসলিম ভাই সম্পর্কে কোন অমূলক সন্দেহের বশবর্তী হয়ে না পড়ে। অপর মুসলিম ভাইকে সন্দেহের দৃষ্টিতে না দেখে তার সম্পর্কে সুধারনা পোষণের ব্যাপারটিকে সর্বদায় অগ্রাধিকার দিতে হবে। অপরের ভুল ধরার জন্য আমরা ওঁতপেতে বসে থাকি। কিন্তু হওয়া উচিৎ ছিল তার উল্টোটা। একজন মুসলিম সবসময় সুযোগ খুঁজবে কি করে অপর একজন মুসলিম ভাইকে তার দোষ-ত্রুটি কিংবা তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া যায়। বিশেষ করে, যারা ন্যায়নিষ্ঠ মুসলিম এবং যারা আল্লাহ্র পথে মানুষদের ডাকে তাদের দোষ-ত্রুটি অন্বেষণ করা বা তাদের উপর একটুতেই দোষারোপ করা ইত্যাদি থেকে বেঁচে থাকতে হবে।
নিজের দ্বীন সম্পর্কে যত্নবান, জ্ঞানী এবং ন্যায়নিষ্ঠ মুসলিমদের সকলেরই উপরিউক্ত চারিত্রিক গুণাবলী থাকা উচিৎ যারা তাদের প্রতিপালককে ভয় করে থাকে এবং যারা আল্লাহ্র দ্বীনের বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। মানুষের সম্পর্কে সুধারনা পোষণ করা যদি ন্যায়নিষ্ঠ মুসলিমদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য না হত তাহলে পৃথিবীতে একজনও নিষ্কলুষ চরিত্রের ইসলামিক বিশেষজ্ঞ খুঁজে পাওয়া যেত না, খুঁজে পাওয়া যেত না এমন কোন মহৎ ব্যক্তিকে যার চরিত্রে মানুষ কলঙ্কের ছাপ লাগাতে বাকি রাখত! ফলে যা ঘটতো তা হল, মুসলিমদের সামনে অনুকরনীয় বা অনুসরনীয় কোন ব্যক্তিত্বকেই আর খুঁজে পাওয়া যেত না। আলহামদুলিল্লাহ্, মানুষ সম্পর্কে অমূলক কুধারনা পোষণ করা যেমন ইসলামের পরিপন্থী ঠিক তেমনি তা আমাদের বিচার বুদ্ধিরও পরিপন্থি।
এই বিষয়ের একটি মূলনীতি হিসেবে আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন বলেনঃ “হে মু’মিনগণ! তোমরা বহুবিধ ধারনা হতে বিরত থাকো; কারণ কোন কোন ধারনা পাপ এবং তোমরা একে অপরের গোপনীয় বিষয় অনুসন্ধান করো না এবং একে অপরের পশ্চাতে নিন্দা করো না। তোমাদের মধ্যে কেউ কি তার মৃত ভাইয়ের গোশত ভক্ষণ করতে ভালবাসবে? বস্তুতঃ তোমরাও এটাকে ঘৃণাই কর। তোমরা আল্লাহ্কে ভয় কর। আল্লাহ্ তাওবা গ্রহণকারী, দয়ালু।” [সূরা হুজুরাত : ৪৯ :১২]
মহাপরাক্রমশালী আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন আমাদেরকে বহুবিধ সন্দেহ করা থেকে বিরত থাকতে বললেন এই বলে যে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা পাপ। এবং তাৎক্ষনিকভাবেই তিনি গোপনীয় বিষয় অনুসন্ধান করাকেও নিষিদ্ধ করে দিলেন কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গোপনীয় বিষয় অনুসন্ধানের বিষয়টি জন্মলাভ করে মনের মধ্যে অন্যদের সম্পর্কে কুধারনা পোষণ করা থেকে! একজন মুসলিমের জন্য একটি সাধারন হুকুম হল সে অন্য মুসলিমের দোষ গোপন করবে এবং তাদের সম্পর্কে সুধারনা পোষণ করবে। এবং সে কারণেই আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীনের আদেশ হল কোন মুসলিম অন্য কোন মুসলিমের ব্যাপারে কোন অপবাদ শুনলেও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সম্পর্কে সুধারনা বহল রাখতে হবে।
মু’মিনদের মাতা আ’য়েশা (রাদ্বিআল্লাহু ‘আনহা) -এর উপর মুনাফিকরা যে মিথ্যারোপ করছিল সে বিষয়টি আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন নিজেই পবিত্র কুর’আন আল-কারীমে স্পষ্ট করে দিয়েছেন আমাদের মাতা আ’য়েশা (রাদ্বিআল্লাহু ‘আনহা)-কে নির্দোষ ঘোষণার মাধ্যমে। আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন বলেনঃ “যখন তোমরা একথা শুনলে, তখন মু’মিন পুরুষ এবং নারীগণ কেন নিজেদের বিষয়ে সৎ ধারনা করনি এবং বলনিঃ এটা সুস্পষ্ট অপবাদ।” [সূরা নূর; ২৪:১২]
[হিশাম ইসমাইল আস-সিনি, মানহাজ আহালুস সুন্নাহ ওয়াল জাম’আত ফীন নাকাব ওয়াল হুকম্ ‘আলাল আখীরিন, আল মুনতাদা, লন্ডন, ১৯৯২, পৃষ্ঠাঃ ২১]
ডঃ মুস্তাফা আস সিবা’ঈ বলেনঃ “কারো সম্পর্কে কুধারনা পোষণ করে পরে অনুতপ্ত হওয়ার চেয়ে তার সম্পর্কে সুধারনা পোষণ করে পরে অনুতপ্ত হওয়া বরং শ্রেয়।” [আস সিবা’ঈ, হাকাদা আল লামান্তি আল হায়াত, আল মাক্তাব আল ইসলাম, বৈরুত, ১৯৮৪, ভলিউমঃ ১, পৃষ্ঠাঃ ৪২]
[“ফী কাফাস আল ইত্তিহাম” থেকে সংগৃহীত]
'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক'
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে আপনি Facebook, Whatsapp, Telegram, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। ইসলামি দা’ওয়াহ্র ৮০ টিরও বেশী উপায়! বিস্তারিত জানতে এইখানে ক্লিক করুন "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]
আল্লাহ্ তুমি আমাদের সব সময় মানুষ সম্পর্কে ভালো ধারনা করার তাউফিক দান করো এবং শয়তান থেকে দূরে রাখো। আমিন
আল্লাহ্ তুমি আমাদের সব সময় মানুষ সম্পর্কে ভালো ধারনা করার তাউফিক দান করো এবং শয়তান থেকে দূরে রাখো। আমিন
U would be like
Ameen
ছবি দেওয়া কি ঠিক হচেছ?