হিংসুকদের কটুকথা ও সমালোচনা থেকে বাঁচার ৪টি উপায়

1
3008

মূল লেখক: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল।

হিংসুকদের কটুকথা ও সমালোচনা থেকে বাঁচার ৪টি উপায়

সবচেয়ে নির্বোধ ও ব্যর্থ লোকেরাই হিংসুক হয়। তারা অন্যের সাফল্য সহ্য করতে পারে না। তখন নানা বাজে কথা ও হিংসাত্মক মন্তব্য ছুড়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার চেষ্টা করে। কিন্তু সফল ও বিচক্ষণ ব্যক্তিরা এ সব হিংসুক ও বিদ্বেষীদের থেকে আত্মরক্ষার পদ্ধতি অবলম্বন করে সামনে এগুতে থাকে। আল্লাহর দয়ায় কোন কিছুই তাদেরকে দমাতে পারে না। এখানে হিংসুক লোকদের বিষাক্ত তীর সদৃশ কথা ও সমালোচনার আঘাত থেকে আত্মরক্ষার চারটি পদ্ধতি তুলে ধরা হল:

১) উত্তেজিত হবেন না; নিজ কর্তব্যে অবিচল থাকুন:

  •  হিংসুক ও বিদ্বেষপরায়ণ লোকদের কথায় উত্তেজিত হবেন না বরং নিজ গতিতে দৃঢ়তা ও সতর্কতার সাথে পথ চলা অব্যহত রাখুন। মনে রাখবেন, রেগে গেলে নিশ্চিতভাবে আপনি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। সুতরাং রাগ যেন কোনভাবেই আপনার উপর প্রভাব বিস্তার করতে না পারে।
  • হাসুন। হাসি এক বিস্ময়কর যাদু; যা রাগের আগুনকে নিভিয়ে দেয়।
  • ধৈর্য ধরুন। কেননা, ধৈর্যশীলদের সাথে আল্লাহ আছেন।
  • আউযুবিল্লাহি মিনাশ শয়তানির আজিম (বিতাড়িত শয়তান থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি) পাঠ করুন।
  • আর হিংসুকদের হিংসা আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করুন।

❒ ২) পাত্তা দিবেন না: 

হিংসুকদের সমালোচনা ও তির্যক মন্তব্যে পাত্তা দিবেন না। কেননা কথা দিয়ে রাজপ্রাসাদ ভাঙ্গা যায় না। কথা বলে কঠিন দুর্গের দেয়াল ধ্বংস করা যায় না। সুতরাং যারা জীবনে সফলতা অর্জন করেছে হিংসুকদের কথা-বার্তা তাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না ইনশাআল্লাহ। তাই এ সব লোকদের কথার মূল্য দেয়া উচিৎ নয়। ওসব কথা নিয়ে ভেবে সময় অপচয় করাও অনর্থক। বরং আপনি সঠিক কাজটি নিজের মত করে যান। আল্লাহর উপর সুদৃঢ় আস্থা রাখুন এবং তাঁর নিকট সাহায্য প্রার্থনা করুন। নিশ্চয় তিনি আপনাকে হিংসুকদের গাত্রদাহ সত্যেও অনেক দূর এগিয়ে নিবেন ইনশাআল্লাহ।

❒ ৩) আপনিই সেরা:

আপনি নিশ্চয় এ সব লোকদের চেয়ে চারিত্রিক দিক দিয়ে সেরা, কর্ম ক্ষেত্রে এগিয়ে আর আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসের দিক দিয়েে অধিক শক্তিশালী। পিতামাতার সেবা, পরোপকার, সমাজ কল্যাণ সহ নানা সৎকর্মে আপনি অগ্রগামী এবং জীবনের নানা প্রতিযোগিতায় সফল। আপনার মধ্যে এসব আকর্ষণীয় গুণাবলী না থাকলে তো হিংসুকরা আপনাকে নিয়ে ভাবতো না। আপনার সাফল্যে এদের মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ ঘটতো না। সুতরাং এতেই পরিষ্কার হয় যে, আপনি তাদের চেয়ে অধিক মর্যাদা সম্পন্ন।

অত:এব, আপনি আরও দৃঢ়প্রত্যয়ে আপনার গুণাবলীগুলোকে সমৃদ্ধ করতে থাকুন। তাহলে দেখবেন, এরা নিজেরাই নিজেদের হিংসার আগুনে জ্বলে-পুড়ে শেষ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।

❒ ৪) কাজ করুন এবং উন্নয়ন চেষ্টা অব্যাহত রাখুন:

এ সব বিদ্বেষপরায়ণ ও হিংসুকদের সবচেয়ে বড় জবাব হল, আপনি আপনার চারিত্রিক সৌন্দর্য, অধ্যাবসা ও পরিশ্রম বৃদ্ধি করুন। আল্লাহর প্রতি ঈমানী দৃঢ়তা বাড়ান। আরও বেশি পরিমাণ কল্যাণকর কাজ আঞ্জাম দিন এবং জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনের জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখুন। এটাই হবে তাদের উপযুক্ত জবাব। প্রমাণিত হবে হিংসুকদের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়েছে। সেই সাথে বাড়বে আপনার ব্যক্তিত্বের পরিপক্বতা এবং জীবন যুদ্ধে টিকে থাকার মানসিক শক্তি।
আল্লাহ তাওফিক দান করুন। (মোটিভেশন মূলক আরবী প্রবন্ধ অবলম্বনে রচিত)
————————
গ্রন্থনায়: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (আল হাদীস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ)
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব

Print Friendly, PDF & Email
Banner Ad


'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক'
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে
আপনি Facebook, Whatsapp, Telegram, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। ইসলামি দা’ওয়াহ্‌র ৮০ টিরও বেশী উপায়! বিস্তারিত জানতে এইখানে ক্লিক করুন "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]

দ্বীনী খিদমায় অংশ নিন

1 COMMENT

আপনার মন্তব্য লিখুন