আত্মীয়তার সম্পর্ক [ আপনার সম্পর্ককে আরও উন্নত করুন ]

0
330

লেখক: ড. খালিদ আবু শাদি | অনুবাদক: হাসান মাসরুর

১. আজকের আলোচ্য বিষয়ের ফায়দা

  • প্রশস্ত রিজিক লাভ: এ ব্যাপারে রাসুল (সা:) বলেন: ‘যে ব্যক্তি চায় যে, তার রিজিক প্রশস্ত হোক এবং আয়ু বৃদ্ধি হোক, সে যেন আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখে।’ [সহিহুল বুখারি: ৫৯৮৬, সহিহু মুসলিম: ২৫৫৭]
  • জান্নাতে প্রবেশ: রাসুল (সা:) বলেন: ‘(আত্মীয়তার সম্পর্ক) ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ [সহিহুল বুখারি: ৫৯৮৪, সহিহু মুসলিম: ২৫৫৬]

সুফইয়ান (রা:) বলেন, ‘এখানে ছিন্নকারী বলতে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী বোঝানো হয়েছে।’

  • দ্বিগুণ প্রতিদান: রাসুল (সা:) বলেন: ‘মিসকিনকে দান করার মধ্যে শুধু সদাকার সাওয়াব রয়েছে; আর আত্মীয়-স্বজনকে দান করার মধ্যে দুটি সাওয়াব রয়েছে : দান করার সাওয়াব এবং আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার সাওয়াব।’ [সুনানু ইবনি মাজাহ: ১৮৪৪, সুনানুন নাসায়ি: ২৫৮২]
  • সবচেয়ে দ্রুত প্রতিদান লাভ: রাসুল (সা:) বলেন: ‘সৎকর্ম ও আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখার সাওয়াব দ্রুত পাওয়া যায় এবং বিদ্রোহ ও আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার শাস্তি দ্রুত কার্যকর হয়।[সুনানু ইবনি মাজাহ : ৪২১২] 

২. কুরআনের আলো

আবু হুরাইরা (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন এই আয়াত নাজিল হলো: “আর আপনার নিকটাত্মীয়দের সতর্ক করুন।” [সুরা আশ-শুআরা, ২৬ : ২১৪]

তখন রাসুল (সা:) কুরাইশদের ডাকলেন। তারা একত্রিত হলে তিনি তাদের সাধারণ ও বিশেষ সকলকে সম্বোধন করে বললেন: ‘হে কাব বিন লুওয়াইর বংশধর, জাহান্নাম থেকে আত্মরক্ষা করো । ওহে মুররাহ বিন কাবের বংশধর, জাহান্নাম থেকে তোমরা আত্মরক্ষা করো। ওহে আবদে শামসের বংশধর, জাহান্নাম থেকে তোমরা আত্মরক্ষা করো। ওহে আবদে মানাফের বংশধর, জাহান্নাম থেকে তোমরা আত্মরক্ষা করো। ওহে হাশিমের বংশধর, জাহান্নাম থেকে তোমরা আত্মরক্ষা করো। ওহে আব্দুল মুত্তালিবের বংশধর, জাহান্নাম থেকে তোমরা নিজেদেরকে বাঁচাও। ওহে ফাতিমা, জাহান্নাম থেকে তুমি নিজেকে বাঁচাও। কারণ, আল্লাহর (আজাব) থেকে রক্ষা করার ব্যাপারে আমার কোনো ক্ষমতা নেই। অবশ্য আমি তোমাদের সঙ্গে আমার আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করব।‘ [সহিহু মুসলিম: ২০৪]

আরবিতে হাদিসে শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে, যার অর্থ হলো পানি হাদিসের অর্থ হলো, নিশ্চয় আমি আত্মীয়তার সম্পর্ক অটুট করব। আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নের বিষয়টিকে উত্তাপের সাথে তুলনা করা হয়েছে, যা নিৰ্বাপিত হবে পানি দ্বারা। আর জাহান্নামের আগুনের উত্তাপ শীতলতায় পরিণত হবে আত্মীয়তার সম্পর্ক অটুট রাখার মাধ্যমে।

ফায়দা: আল্লাহ তাআলা কেন নবিজি (সা:)-কে নিকটাত্মীয়দের প্রতি দাওয়াতের আদেশ করলেন? আপনি এই মসজিদের পাশ দিয়ে হাঁটার সময় রাস্তায় চলাচলকারী অপরিচিত কাউকে কি বলতে পারবেন, আমার সাথে মসজিদে চলো? যে আপনাকে চেনে না, সে আপনার এ বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়বে এবং শঙ্কাবোধ করবে। কিন্তু আপনি নিজের ভাইকে নির্দ্বিধায় তা বলতে পারবেন। আপনার ভাতিজাকে বলতে পারবেন। কারণ, সে আপনার আত্মীয়, তাই তাকে বলতে পারবেন। আপনার ছেলে, আপনার চাচাতো ভাই, ফুফাতো ভাই, খালাতো ভাই এবং মামাতো ভাইকে বলতে পারবেন, আমার সাথে চলো। আত্মীয়তার মাঝে পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস রয়েছে। তাই এই বিশ্বাসকে কাজে লাগাতে হবে এবং এর মাধ্যমে তাদের কাছে কল্যাণ ও আল্লাহর দিকে দাওয়াত পৌঁছাতে হবে।

৩. রাসুল (সা:) আমাদের আদর্শ

  • আবু জার (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা:) বলেছেন: অচিরেই তোমরা এমন একটি ভূখণ্ড বিজয় লাভ করবে, যেখানে কিরাতের (দিরহাম বা দিনারের অংশবিশেষ) প্রচলন আছে।[সহিহু মুসলিম: ২৫৪৩]

অন্য বর্ণনা মতে, অচিরেই তোমরা মিশর বিজয় লাভ করবে। তাতে কিরাত নামক একটি ভূখণ্ড আছে। যখন তোমরা তা বিজয় করবে, সেখানের অধিবাসীদের সাথে সদাচরণ করবে। কেননা, তোমাদের ওপর তাদের জন্য রয়েছে জিম্মাদারি ও আত্মীয়তার সম্পর্ক।‘  [সহিহু মুসলিম: ২৫৪৩] 

অন্য বর্ণনায় আছে, ‘যখন তোমরা তা বিজয় করবে, তখন তার অধিবাসীদের প্রতি ইহসান করবে। কারণ, তোমাদের ওপর তাদের জন্য রয়েছে জিম্মাদারি ও আত্মীয়তার সম্পর্ক।

আলিমগণ বলেন, তাদের আত্মীয়তার সম্পর্ক হলো ইসমাইল (রা:)-এর মা হাজার (রা:)-এর দিক থেকে। আর রাসুল (সা:)-এর ছেলে ইবরাহিমের মাও ছিলেন তাদের অন্তর্ভুক্ত।

  • ইবনে উমর (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: ‘নবিজি (সা:)-এর কাছে জনৈক লোক এসে বলল, “হে আল্লাহর রাসুল, আমি অনেক বড় একটি গুনাহ করেছি। আমার জন্য কি তাওবার সুযোগ আছে?” রাসুল (সা:) বললেন, “তোমার কি মা (জীবিত) আছে?”” ইবনে কাতাদার এক বর্ণনায় আছে, “তোমার কি মা-বাবা নেই?” সে বলল, “না।” তিনি বললেন, “তোমার কি খালা আছে?” সে বলল, “জি।” তিনি বললেন, “তাহলে তার সাথে সদাচরণ করো।” [শুআবুল ইমান: ৭৪৮০]
  • মুআবিয়া বিন জাহিমাহ আস-সুলামি (রা:)  থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: ‘আমি রাসুল (সা:)-এর নিকট এসে বললাম, “হে আল্লাহর রাসুল, আমি আপনার সাথে জিহাদ করতে চাই। আমি এই জিহাদের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং আখিরাতের বাসস্থান প্রত্যাশা করি।” তিনি বললেন, “ধ্বংস হও তুমি! তোমার মা কি জীবিত?!” আমি বললাম, “হ্যাঁ।” তিনি বললেন, “তুমি ফিরে যাও এবং তার খিদমত করো।” এরপর আমি ভিন্ন দিক দিয়ে তাঁর কাছে এসে বললাম, “হে আল্লাহর রাসুল, আমি আপনার সাথে জিহাদ করতে চাই। আমি এর মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং আখিরাতের বাসস্থান প্রত্যাশা করি।” তিনি বললেন, “তুমি ধ্বংস হও!

তোমার মা কি জীবিত?!” আমি বললাম, “হ্যাঁ, আল্লাহর রাসুল!” তিনি বললেন, “তুমি ফিরে গিয়ে তোমার মায়ের খিদমত করো।” এরপর আমি তাঁর সামনে দিয়ে এসে বললাম, “হে আল্লাহর রাসুল, আমি আপনার সাথে আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং আখিরাতের বাসস্থান প্রত্যাশায় জিহাদ করতে চাই ।” তিনি বললেন, “ধ্বংস হও তুমি! তোমার মা কি জীবিত?!” আমি বললাম, “হ্যাঁ, হে আল্লাহর রাসুল!” তিনি বললেন, “তুমি ধ্বংস হও! তার পা আঁকড়ে ধরো। সেখানেই তোমার জান্নাত।[সুনানু ইবনি মাজাহ: ২৭৮১]

  • উমর (রা:) থেকে বর্ণিত যে, তাঁকে এক লোক এসে বলল, “আমি একজনকে হত্যা করে ফেলেছি?’ তিনি বললেন, ‘তোমার মা কি জীবিত?’ সে বলল, ‘না।’ তিনি বললেন, ‘তোমার বাবা কি জীবিত?’ সে বলল, ‘হ্যাঁ।’ তিনি বললেন, ‘তাহলে তার সাথে সদাচরণ করো এবং তার প্রতি ইহসান করো।’ এরপর উমর (রা:) বলেন, ‘যদি তার মা জীবিত থাকত, আর সে তাদের উভয়ের খিদমত করত এবং তাদের সাথে সদাচরণ করত, তাহলে আমি আশা করতাম, তাকে কখনো জাহান্নাম ভক্ষণ করবে না ।’

৪. অমূল্য বাণী

  • ইমাম নববি (রা:)  বলেন, ‘আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষার অর্থ হলো, নিকটাত্মীয়দের প্রতি ইহসান করা; যেভাবে রক্ষা করা সম্ভব (সেভাবে তা রক্ষা বা অটুট রাখা)। সুতরাং এই সম্পর্ক রক্ষা কখনো সম্পদের মাধ্যমে হতে পারে, কখনো খিদমতের মাধ্যমে হতে পারে, কখনো সাক্ষাৎ ও সালাম ইত্যাদির মাধ্যমেও হতে পারে।
  • আনাস (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘এক লোকের জীবনের মাত্র তিনটি দিন বাকি ছিল। কিন্তু সে তার আত্মীয়দের সাথে সদাচরণ করেছিল। ফলে আল্লাহ তাআলা তাকে আরও ত্রিশ বছর অবকাশ দিয়েছিলেন।

৫. কিছু চমৎকার কাহিনি

আবু হুরাইরা (রা:) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি রাসুল (সা:)-এর হাদিস বর্ণনা করছিলেন। এমন সময় তিনি বললেন, ‘আমি প্রত্যেক আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারীকে সমস্যা মনে করি। সুতরাং এমন ব্যক্তি যেন আমাদের কাছ থেকে উঠে যায়।’ তখন মজলিশের শেষ প্রান্ত থেকে এক যুবক উঠে দাঁড়াল। সে উঠে তার ফুফুর কাছে চলে গেল। কারণ, সে তার ফুফুর সাথে দুই বছর আগে সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল। এখন এসে তার সাথে মিটমাট করে নিল। তার ফুফু তাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে ভাতিজা, আজ কী মনে করে এখানে এসেছ?’ সে বলল, ‘আমি রাসুলের সাহাবি আবু হুরাইরার কাছে বসা ছিলাম।

তখন তিনি বললেন, “আমি প্রত্যেক আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারীকে সমস্যা মনে করি। সুতরাং এমন ব্যক্তি যেন আমাদের কাছ থেকে উঠে যায়।” অতঃপর তার ফুফু তাকে বললেন, ‘আবু হুরাইরার কাছে ফিরে যাও এবং তাঁকে জিজ্ঞেস করো, তিনি কেন এমনটি বলেছেন।’ সে ফিরে এসে আবু হুরাইরাকে তার ফুফুর সাথে যা ঘটেছিল, তার বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করল, ‘কেন আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী আমাদের সাথে বসতে পারে না?’ তখন আবু হুরাইরা বললেন, ‘আমি রাসুলকে বলতে শুনেছি- ‘যে সম্প্রদায়ের মাঝে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী আছে, সেখানে রহমত অবতীর্ণ হয় না।‘ [আল-আদাবুল মুফরাদ: ৬৩। আলবানি (রা:) এটিকে জইফ বলেছেন]

৬. রমাদানে আত্মীয়তার সম্পর্ক

নিশ্চয় রমাদান মাসে সাওয়াব কয়েক গুণ বৃদ্ধি করা হয়। আর আত্মীয়তার সম্পর্ক হলো বড় ধরনের ইবাদত। সুতরাং রমাদান হলো, এই ইবাদতকে শক্তিশালী করার সবচেয়ে বড় সুযোগ। আত্মীয়দের মাঝে এই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। কারণ, এর মাধ্যমে চরিত্র গঠন হবে এবং আল্লাহর নৈকট্যও লাভ হবে। রমাদান মাসে আত্মীয়তার বন্ধন মজবুত করার অনেক সুরত রয়েছে। যেমন: রমাদানের আগমনে তাদেরকে প্রস্তুত করে তোলা, ইফতারে তাদেরকে দাওয়াত করা এবং ইদুল ফিতরে তাদের সাথে সাক্ষাৎ করা। সুতরাং এই ইবাদতে যারা ত্রুটি করেছে, তাদের জন্য রমাদান হলো, এই ইবাদত করার বিশাল এক সুযোগ।

৭. আত্মীয়দের সাথে সম্পর্কের সূর্য ডুবে গেছে

  • আত্মীয়দের মাঝে যারা অভাবী, তাদেরকে সদাকা না দেওয়া। অনেক মানুষকেই দেখা যায় যে, সে খুব বিত্তবান; কিন্তু তার আত্মীয়দের মাঝে অনেক অভাবী মানুষ আছে (যাদের প্রতি সে খেয়াল রাখে না)।
  • হাদিয়া না দেওয়া। হয়তো নিজের কৃপণতার কারণে দেয় না, অথবা এই বিশ্বাসের কারণে যে, সে অভাবী নয়। অথচ অনেক সময় তার ধারণা ভুলও হয়। হাদিয়ার মাধ্যমে মানুষের ভালোবাসা অর্জিত হওয়ার বিষয়টি সর্বজনবিদিত। আর হাদিসেও আছে: তোমরা পরস্পরকে হাদিয়া দাও, এতে মহব্বত বৃদ্ধি পাবে।‘ [আল-আদাবুল মুফরাদ: ৫৯৪]
  • আত্মীয়দের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ না করা। অনেক দিন চলে যায়, মাসের পর মাস অতিবাহিত হয় এমনকি বছরও পার হয়ে যায়; কিন্তু আত্মীয়- স্বজনদের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ হয় না।
  • আত্মীয়দের পেরেশানি বা আনন্দে শরিক না হওয়া।
  • যখন আত্মীয়রা তার সাথে সম্পর্ক রাখতে চায়, তখন সে তাদের সাথে সম্পর্ক রাখতে চায় না। মূলত এই লোক যদি সম্পর্ক রাখেও, তাহলেও সে আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষাকারী নয়। বরং সে মূলত বিনিময় প্রদানকারী বুখারির হাদিসে বর্ণিত আছে: আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষাকারী ওই ব্যক্তি নয়, যে বরাবর ব্যবহার করে; বরং প্রকৃত আত্মীয়তা রক্ষাকারী ওই ব্যক্তি, যার আত্মীয় সম্পর্ক ছিন্ন করলেও সে তা অটুট রাখে।‘ [সহিহুল বুখারি: ৫৯৯১]

৮. দুআ

  • হে আল্লাহ, আপনার জিকির, শোকর ও উত্তম ইবাদতে আমাকে সাহায্য করুন। হে আল্লাহ, আমাকে ওই ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্ত করুন, যারা মনোযোগ দিয়ে কথা শ্রবণ করে এবং উত্তম কথাগুলোর অনুসরণ করে, হে রব্বুল আলামিন!
  • হে আল্লাহ, আমাদেরকে এমন লোকদের অন্তর্ভুক্ত করুন, যারা আত্মীয়তার সম্পর্ক রক্ষা করে এবং আমাদেরকে আত্মীয়দের সাথে ভালো ব্যবহারে সাহায্য করুন।
  • হে আল্লাহ, আমরা আপনার কাছে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী হওয়া থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।
  • হে আল্লাহ, আপনি যার সাথে সম্পর্ক রক্ষা করার আদেশ করেছেন, তার সাথে সম্পর্ক রক্ষা করা এবং যার থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করার আদেশ করেছেন, তার থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করার ক্ষেত্রে আমাদেরকে সাহায্য করুন।

৯. স্বার্থপর হবেন না

  • কথাগুলো আপনার মসজিদের মুসল্লি ও আপনার সহপাঠী-সহকর্মীদের মাঝে আলোচনা করুন।
  • এই বইটি নিজে পাঠ করে অন্যদেরকেও পড়তে দিন; যেন তারা এর থেকে উপকৃত হতে পারে।
  • মসজিদের ইমামকেও বইটি হাদিয়া দিতে পারেন; যেন তিনি জুমআর খুতবা বা তারাবিহ-পরবর্তী আলোচনায় এর থেকে ফায়দা গ্রহণ করতে পারেন।

১০. যথেষ্ট কথা হয়েছে, এখন আমল দেখার বিষয়

  • আমরা আত্মীয়-স্বজনের সাথে সাক্ষাতের জন্য মাসিক একটি রুটিন তৈরি করব।
  • আগামীতে আত্মীয়-স্বজনের সুখে-দুঃখে তাদের সাথে শামিল থাকব।
  • পারিবারিক অনুষ্ঠান ও উপযুক্ত সময়গুলোতে তাদের দাওয়াত করব; আর এতে তাদের সাথে সাক্ষাতের সুযোগ হবে।
  • পরে আবার তাদের সাথে সাক্ষাৎ করে তাদের অবস্থা জেনে নেব।
  • নিজের নিয়তকে পরিশুদ্ধ করে নেব। তাহলে সম্পর্ক শুধু আল্লাহর জন্য হবে, দুনিয়াবি কোনো স্বার্থে নয়।
  • তাদের সাথে সম্পর্কে যদি কোনো ঘাটতি থাকে, তাহলে তা পূরণ করে নেব।

উৎস: রমাদান-আত্মশুদ্ধির বিপ্লব, পৃষ্ঠা: ৮৫-৯৪

Print Friendly, PDF & Email
Banner Ad


'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক'
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে
আপনি Facebook, Whatsapp, Telegram, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। ইসলামি দা’ওয়াহ্‌র ৮০ টিরও বেশী উপায়! বিস্তারিত জানতে এইখানে ক্লিক করুন "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]

দ্বীনী খিদমায় অংশ নিন

আপনার মন্তব্য লিখুন