পর্ব ১।পর্ব ২।পর্ব ৩।পর্ব ৪।পর্ব ৫।পর্ব ৬।পর্ব ৭।পর্ব ৮।পর্ব ৯।পর্ব ১০।পর্ব ১১।পর্ব ১২।পর্ব ১৩।পর্ব ১৪।পর্ব ১৫।পর্ব ১৬।পর্ব ১৭।পর্ব ১৮।পর্ব ১৯।পর্ব ২০।পর্ব ২১।পর্ব ২২।পর্ব ২৩।পর্ব ২৪।পর্ব ২৫।পর্ব ২৬।পর্ব ২৭।পর্ব ২৮
মাথা নিচু করা
যেহেতু আমরা এখন নামায শুরু করেছি, আমরা আল্লাহর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা আর ভয়ের সাথে আমাদের মাথা নিচু রাখব। যখন মহানবী (সাঃ) নামাজে দাঁড়াতেন, আল্লাহ্র সামনে গভীর বিনয়ে মাথা নিচু রাখতেন আর দৃষ্টি সিজদার স্থানে রাখতেন। ইবনে আল কাইয়িম বলেন- যখন কেউ তার ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে দেখা করে তখন তার ভালোবাসার একটি বহিঃপ্রকাশ হল সে লজ্জা আর শ্রদ্ধায় মাথা নিচু রাখে, এবং আমাদেরও ঠিক এই রকম এ হতে হবে। মহানবী (সাঃ) বলেন: “যখন কেউ নামাজে দাঁড়াবে, সে যেন এদিক সেদিক না তাকায়, কারন আল্লাহ তখন তার দিকে দৃষ্টি দিয়ে রাখেন যতক্ষণ না পর্যন্ত সে এদিক সেদিক তাকায়।” [তিরমিযি]
মহানবী (সাঃ) আরও বলনে: “বান্দা নামাজের মধ্যে যতক্ষণ এদিক সেদিক দৃষ্টিপাত করবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ্র দৃষ্টি তার দিকে থাকবে।” [আবু দাউদ ২/৯০৯]
আমরা অন্যদিকে ঘুরে গেলে কি হয়? নবী (সাঃ) বলেন: “অপরদিকে যখন সে এদিক ওদিক খেয়াল করবে, তখন আল্লাহ ও তাঁর দৃষ্টি সরিয়ে নিবেন।” [আবু দাউদ ২/৯০৯] এবং খেয়াল রাখবেন, ‘এদিক ওদিক খেয়াল’ করার দুটি অর্থ আছে – ১) অন্তরের এদিক সেদিক সরে যাওয়া, অন্যদিকে মনোযোগ চলে যাওয়া এবং অন্যান্য কথা চিন্তা করা, এবং ২) দৃষ্টি সরানো এবং ওপরে, ডানে-বামে তাকানো।
আপনি যদি কোন রাজা বাদশাহর সামনে যান, আপনি এদিক সেদিক ও তাকাবেন না, আবার সরাসরি তার চোখের দিকেও তাকাবেন না। যখন মহানবী (সাঃ)কে মিরাজে ঊর্ধ্বাকাশে নিয়ে যাওয়া হয়, তাঁর বিনম্রতা প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বর্ণনা করেন: “তাঁর কোন দৃষ্টি বিভ্রম হয়নি, এবং তাঁর দৃষ্টি কোন সীমা লঙ্ঘন ও করেনি।” [সুরা আন-নাজমঃ১৭]
ইবন আল কাইয়িম বলেন – এটি হল আদব এর একটি উচ্চ পর্যায়। আমর বিন আল আস (রাঃ) বলেন, আমি ইসলাম কবুল করার আগে মহানবী (সাঃ) কে অত্যন্ত অপছন্দ করতাম। কিন্তু মুসলমান হওয়ার পর তাঁকে দেখে দেখে আমার চোখের সাধ কখন ও মিটত না। কিন্তু যখন তাকে নবীজির বর্ণনা করতে বলা হত তিনি তা করতে পারতেন না, কারন তিনি কখন ও সরাসরি উনার মুখের দিকে তাকাতেন না- এটি ছিল মহানবী (সাঃ) এর সামনে তার আদব।
বিনম্রতা
কখন ও ভাববেন না, আপনি যখন বিনীত হয়ে আল্লাহ্র সামনে দাঁড়ান, নিজেকে ছোট হতে হচ্ছে। মহানবী (সাঃ) বলেন: “আল্লাহ্র জন্য যে বিনয়ী হয়, আল্লাহ তার সম্মান বৃদ্ধি করেন।” [মুসলিম ১৬/১৪১; আদ দারিমী ১/৩৯৬]
নামাজে চোখ উঠানোকে নবীজি নিষেধ করেছেন। তাই অনেকে প্রশ্ন করে থাকে, তাহলে চোখ কি খোলা রাখতে হবে না বন্ধ করা যাবে? নামাজে চোখ বন্ধ করা নবীর সুন্নায় নেই, কিন্তু ইবনে আল কাইয়িম বলেন, যদি চোখ খোলা রেখে কিছুতেই খুশু না আসে তাহলে মাঝে মাঝে চোখ একটু বন্ধ করা যাবে।
হাতের অবস্থান
“নামাজের তাকবীর দিয়ে নামায শুরু করলেন, আল্লাহ্র সামনে বিনয়ে দৃষ্টি অবনত করলেন, এবার বাম হাতের উপর ডান হাত অথবা বাম কব্জির উপর ডান হাত রাখবেন।” [বুখারী ২/৭০৪ ইঃফাঃ]
এই ব্যাপারে কিছু রীতিগত মতভেদ আছে। যেমন হানাফি মাজহাবে নাভির নিচে, শাফি ই মাজহাবে নাভির কিছু উপরে। কেউ বুকে হাত বাঁধে, আবার মালিকি মাজহাবে দুই পাশে ঝুলিয়ে রাখে। বাম হাতের উপর ডান হাত রাখার কারন কি? ইমাম আহমেদ কেও এক ই প্রশ্ন করা হলে তিনি জবাবে বলেন, আল্লাহ্র সম্মানে। আপনি যদি কোন প্রাসাদে ঢুকে দেখেন কিছু লোকের মাথা উঁচু এবং হাত কোমরে আর কিছু লোকের মাথা নিচু আর হাত বুকে জড়সড়; আপনি সহজেই বুঝে ফেলবেন কে রাজার লোক আর কে অধীনস্ত।
দুয়া আল ইস্তিফতাহ বা শুরুর দোয়া
আল্লাহকে সম্ভাষণ জানাতে আমরা নামাজের শুরুতে এই দোয়া পড়ি। আপনি যখন কারো সাথে দেখা করেন, বিশেষত এমন কেউ যাকে আপনি গভীর ভাবে শ্রদ্ধা করেন, প্রথমেই তাকে আপনি আন্তরিক ভাবে সুন্দর করে সম্ভাষণ জানান। আরবিতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মানুষকে সম্ভাষণ জানানোর প্রচলিত রীতি আছে, যেমন; কাউকে শুভ সকাল জানাতে বলা হয় সাবা আল খায়ের অথবা সাবাহ আল ওয়ারদ বা সুবাসিত সকাল। নামাজের শুরুতে এই প্রারম্ভিক দোয়া টি সুন্নাত। যেহেতু আমাদের চেষ্টা নামাজকে সর্বাঙ্গীণ ভাবে সুন্দর করে আদায় করা, আমরা এর যতটা সম্ভব সমস্ত দিক আলোচনা করব এবং মহানবী (সাঃ) এর মত নামায পড়ার চেষ্টা করব।
ধরুন আপনার কোন প্রিয়জন আপানকে কোন একটা কাজ করতে অনুরোধ করল এবং আপনি তা করলেন না। তখন সে যদি আপনাকে ডেকে কাজটির ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে, আপনি তখন তার অনুরোধ না রাখার কথাটি হয়তো বলতে পারবেন না, বিব্রত বোধ করবেন আল্লাহ্র সামনে আমাদের এই অবস্থা নিয়ে দাঁড়াতে হবে, কারন ভেবে দেখুন আমরা আল্লাহ্র কয়টি আদেশ পালন করেছি? কয়টি নিশেধাজ্ঞা মেনে চলেছি? একারণে আমরা কখনও কখনও নামাজে দাড়িয়ে অস্বস্তি বোধ করি। একারনেই আমাদের নবী (সাঃ) নামায শুরুর দোয়া হিসাবে আমাদের এই সুন্দর দোয়াটি শিখিয়েছেন –আল্লাহুম্মা বা-ঈদ বাইনি ওয়া বাইনা খতাইয়াইয়া কামা বা-আদতা বাইনাল মাশরিকি ওয়াল মাগরিব, আল্লাহুম্মা নাক্কিনী মিন খতাইয়াইয়া কামা ইউনাক্কাসাওবুল আবইয়াদু মিনাদ দানাস, আল্লাহুম্মা ইগসিলনী মিন খতাইয়াইয়া বিসসালজি ওয়াল মা ই ওয়াল বারাদ।
“হে আল্লাহ, আমার এবং আমার গুনাহের মধ্যে এমন দূরত্ব তৈরি করে দিন যেমন দূরত্ব আছে পূর্ব ও পশ্চিম দিকের মধ্যে, হে আল্লাহ, আমার গুনাহকে আমার থেকে এমন পরিষ্কার করে দাও, যেমন শাদা কাপড় থেকে এর ময়লা দূর করা হয়। হে আল্লাহ, আমার গুনাহ গুলো ধুয়ে ফেল বরফ দিয়ে, পানি দিয়ে, শিলা দিয়ে।” [বুখারি ২/৭০৮ ইঃফাঃ]
দোয়াটির প্রথম অংশে আমরা প্রার্থনা করছি যেন আমাদেরকে ওই পাপ থেকে দূরে রাখা হয় যেগুলো আমরা এখনও করিনি। দ্বিতীয় অংশে আমরা প্রার্থনা করছি যেন যে গুনাহ করে ফেলেছি তা পরিষ্কার করে ফেলা হয়। আর তৃতীয় অংশ আরও উর্দ্ধে, তা হল আমরা আল্লাহ্র কছে আমাদের পবিত্র করে দেওয়ার জন্য প্রার্থনা করছি।আরেকটি ইস্তিফতাহ্ এর দোয়া নবীজি (সাঃ) করতেন তা হল-সুবহানাকাল্লাহুম্মা ওয়াবি হামদিক, ওয়াতা বারাক আসমুক, ওয়া তাআ’লা জাদ্দুকা ওয়া লা ইলাহা গইরুকা
‘সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিক’ বলে আমরা ব্যক্ত করি যে আল্লাহ সমস্ত কিছুর উর্দ্ধে, এবং সমস্ত রকম ত্রুটিমুক্ত এবং সমস্ত প্রশংসা তারই জন্য। ‘তাবারাক ইসমুক’ বলতে বোঝায় যখন ই আল্লাহ্র নাম কোন কিছুর উপর নেওয়া হয় তা আল্লাহ্র অনুগ্রহ প্রাপ্ত হয় এবং তাতে বরকত দেওয়া হয়। ‘ওয়া তা’আলা জাদ্দুক’ হল আল্লাহ্র সর্বময় ক্ষমতার উচ্চতম প্রশংসা। আর ‘লা ইলাহা গাইরুখ’ হল এতক্ষণ যা কিছু বলা হল তার স্বাভাবিক পরিনতি যে – তিনি ছাড়া আর কে আছে যে ইবাদতের যোগ্য।
এইসব চমৎকার দোয়া সম্পর্কে মহানবী (সাঃ) বলেছেন এগুলো হল আল্লাহ্র পছন্দনীয় কথা। কিছু কিছু আলেম বলেন, প্রথম দোয়াটি পড়া হয় ফরজ নামাজে, আর দ্বিতীয় টি পড়া হয় নফল নামাজে। এই দোয়া গুলো দিয়ে নামায শুরু করে আমরা আমাদের মনকে পরিষ্কার করতে পারি, নিজেদের বিনীত করতে পারি; এভাবে কুরান তিলাওাতের আগে আমাদের মনকে প্রস্তুত করতে পারব ইনশাল্লাহ।
আগের পর্ব গুলো এই লিংক থেকে পড়ুনঃ
পর্ব ১।পর্ব ২।পর্ব ৩।পর্ব ৪।পর্ব ৫।পর্ব ৬।পর্ব ৭।পর্ব ৮।পর্ব ৯।পর্ব ১০।পর্ব ১১।পর্ব ১২।পর্ব ১৩।পর্ব ১৪।পর্ব ১৫।পর্ব ১৬।পর্ব ১৭।পর্ব ১৮।পর্ব ১৯।পর্ব ২০।পর্ব ২১।পর্ব ২২।পর্ব ২৩।পর্ব ২৪।পর্ব ২৫।পর্ব ২৬।পর্ব ২৭।পর্ব ২৮
'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক'
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে আপনি Facebook, Whatsapp, Telegram, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। ইসলামি দা’ওয়াহ্র ৮০ টিরও বেশী উপায়! বিস্তারিত জানতে এইখানে ক্লিক করুন "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]
So per i Know, There is another sana which is also Sunnah to read in the Salah and which is more easier for non arabic people>>that is = Alhamdulillahe Hamdan Kasiran Tayban Mubarakan Fihe.
it is suggested to read after u stand up from ruku and say RABBANA LAKAL HAMD then say – HAMDAN KASEERAN TAIYIBAN MUBARAKAN FEEHI. Bukhari 2nd part, hadees no. 763 (islamic foundation)
it is suggested to read after u stand up from ruku and say RABBANA LAKAL HAMD then say – HAMDAN KASEERAN TAIYIBAN MUBARAKAN FEEHI. Bukhari 2nd part, hadees no. 763 (islamic foundation)
তাহলে কি আউজুবিল্লাহ,সানা পরতে হবে না ?
Namaj shikha sob porbo ek bare download koror option thale valo hoto. akta akta kore download korata jamela.
আউযুবিল্লাহ বলার আগে সানা পড়তে হবে। তবে শুধুমাত্র একটি সানা আমরা সব নামাজে না পড়ে, নবী (সাঃ) যে যে সানা বিভিন্ন সময় পরেছেন সেগুলো আমরাও বিভিন্ন নামাজে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে পড়তে পারি। উল্লেখ্য, আমরা জায়নামাজের দুয়া হিসেবে যেটা জানি (ইন্নী ওয়াজ্জাহাতু ওয়াজ হিয়া লিল্লাজি ফাতারাসসামাওাতি ওয়াল আরদা হানিফাও ওয়ামা আনা মিনাল মুশরিকীন), সেটিও একটি সানা যা তাকবীরের পর আউযুবিল্লাহ পরার আগে পরার দোয়া। তাকবীরের আগে পরার নয়।
আসসালামুআলাইকুম আলহাম্দুলিল্লাহ জনাব আমার একটা বিষয় জানার খুব ইচ্ছা আমি অনেক দিন ধরে এই কথাটা জানতে চাচ্ছি কিন্তু কোথাও বিস্তারিত ভাবে উত্তর পাই না। প্রশ্নহল = আমি একজন এম্রয়ডারী ডিজাইনার একটা এক্সপোর্ট এম্রয়ডারী ফ্যাক্টোরীতে চাকরী করি আমি নিজে কোন ছবি অংকন করি না বা কোন ডিজাইন বানাই না ভায়ার বা ফ্যক্টোরীর এমডি আমাকে আর্টওয়ার্ক দেয় অথবা মেইলে আমাকে ডিজাইন পাঠায় আমি ঐডিজাইনটাকে কাপরের উপর প্রিন্ট করার জন্য যাকিছু করা লাগে তা করেদেই ডিজাইনের ধরন লেখা লগো ছোট প্রানী যেমন কুমির পাখি ঘোরা ফুল ইত্যাদি কিন্তু আমি নিজে কিছু অংকন করিনা আমার এই রুজি কি হালাল হবে ? দয়া করে জানাবেন । আমি খুব চিন্তিত। [email protected]