পর্ব ১।পর্ব ২।পর্ব ৩।পর্ব ৪।পর্ব ৫।পর্ব ৬।পর্ব ৭।পর্ব ৮।পর্ব ৯।পর্ব ১০।পর্ব ১১।পর্ব ১২।পর্ব ১৩।পর্ব ১৪।পর্ব ১৫।পর্ব ১৬।পর্ব ১৭।পর্ব ১৮।পর্ব ১৯।পর্ব ২০।পর্ব ২১।পর্ব ২২।পর্ব ২৩।পর্ব ২৪।পর্ব ২৫।পর্ব ২৬।পর্ব ২৭।পর্ব ২৮
আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাওয়া
আপনি কি জানেন, আপনি যখন নামাজে দাঁড়ান, শয়তান তখন প্রচণ্ড রকম হিংসা বোধ করতে থাকে। একারনেই সে নামাজে দাঁড়ানো ব্যক্তির মনকে ভিন্নমুখী করে তাকে নামাজের এই সুউচ্চ সম্মানিত অবস্থান থেকে সরিয়ে ফেলার সমস্ত রকম চেষ্টা চালায়। এবং দুর্ভাগ্যজনক ভাবে, বেশির ভাগ সময়ই আমরা শয়তানের এই প্ররোচনায় পড়ে যাই। শয়তানের সাদৃশ্য কিছুটা মাছির মত, যতবার দূরে তাড়ান, ঘুরে ফিরে আবার চলে আসে।
শয়তান
নামাজে কুরআন তেলাওাত করার আগে আমরা আল্লাহ্র কাছে অভিশপ্ত ও বিতাড়িত শয়তান থেকে আশ্রয় চাওয়া শিখেছি। এই শয়তানের প্রভাব বিপুল – আমরা যে জিনিস আগে ভুলেও গিয়েছিলাম নামাজে এসে সেই চিন্তা আমাদের মনে পড়ে যায়, আবার আমরা নানা রকম সমস্যার সমাধানের ব্যাপারেও চিন্তা করতে থাকি। যখন আমরা সবশেষে সালাম ফিরাই তখন আমাদের আর মনে থাকে না আমরা নামাজে কি কি পড়লাম বা কত রাকাত পড়লাম। আপনার অবস্থাও যদি এরকমই হয়, তাহলে ইবনে আল কাইয়িম এর মতে এই ব্যক্তির নামাজের শেষেও সেই অবস্থা থেকে যায় যেমনটি নামায শুরুর সময় ছিল; তার গুনাহের বোঝা যেমনটি ছিল তেমনই থেকে যায়। এই জীবনে যদি এমন অবস্থা চলতে থাকে, আমাদের পরকালে তাহলে কেমন অবস্থা হবে? কুরআন এ আল্লাহ তায়ালা কেয়ামতের দিন সম্পর্কে বলেন: “যখন বিচার ফয়সালা হয়ে যাবে তখন শয়তান জাহান্নামীদের বলবে, আল্লাহ তায়ালা তোমাদের সাথে (যে) ওয়াদা করেছেন তা (ছিল) সত্য ওয়াদা, আমিও তোমাদের সাথে (একটি) ওয়াদা করেছিলাম, কিন্তু আমি তোমাদের সাথে ওয়াদার বরখেলাপ করেছি; (আসলে) তোমাদের ওপর আমার তো কোন আধিপত্য ছিল না, আমি তো শুধু এটুকুই করেছি, তোমাদের (আমার দিকে) ডেকেছি, অতঃপর আমার ডাকে তোমরা সাড়া দিয়েছ, তাই (আজ) আমার প্রতি তোমরা (কোন রকম) দোষারোপ করোনা, বরং তোমরা তোমাদের নিজেদের ওপরই দোষারোপ করো; (আজ) আমি (যেমন) তোমাদের উদ্ধারে (কোনরকম) সাহায্য করতে পারব না, (তেমনি) তোমরাও আমার উদ্ধারে কোন সাহায্য করতে পারবে না; তোমরা যে (আগে) আমাকে আল্লাহ্র শরীক বানিয়েছ, আমি তাও আজ অস্বীকার করছি (এমন সময় আল্লাহ্র ঘোষণা আসবে); অবশ্যই জালিমদের জন্য রয়েছে কঠিন আযাব।“ [সুরা ইব্রাহীমঃ২২]
ভেবে দেখুন, কিয়ামতের দিন নিজের এরকম প্রতারিত ও পথভ্রষ্ট হওয়ার পর বিবেক যন্ত্রণায় বিদ্ধ অবস্থা। মহানবী (সাঃ) বলেছেন – “এমন অনেক লোক আছে যারা নামাজ পড়ে কিন্তু তাদের নামাজ পুরপুরি কবুল না হওয়ায় পরিপূর্ণ সওয়াব প্রাপ্ত হয় না।বরং তাদের কেউ এক দশমাংশ, বা এক নবমাংশ, বা এক অষ্টাংশ, বা এক সপ্তাংশ, বা এক ষষ্ঠাংশ, বা এক পঞ্চমাংশ, বা এক চতুর্থাংশ, বা এক তৃতীয়াংশ, বা অর্ধেক সওয়াব পায়।” [আবু দাউদ ১/৭৯০, ইঃফাঃ]
কাজেই শয়তান যতটুকু সম্ভব চেষ্টা করে আমাদের নামায থেকে চুরি করে সওয়াবের পরিমান কমিয়ে দিতে। আমাদের ভাবতে হবে যেন আমরা ইতিমধ্যেই আমাদের পুরষ্কার পেয়ে গেছি কিন্তু আমাদের তা পাহাড়া দিতে হবে- কারন আমারা যখনই অমনোযোগী হই শয়তান আমাদের সওয়াবের কিছু অংশ চুরি করে নিয়ে যায়। এবং আমাদের কারো কারো ক্ষেত্রে শয়তান চুরি করতেই থাকে যতক্ষণ না পর্যন্ত আমরা খালি হয়ে যাই।
সমাধান
শেইখ আল-শিনকিতি বলেছেন, আল্লাহ আমাদের শিখিয়ে দিয়েছেন কিভাবে আমরা নিজেদেরকে মানুষ শয়তান এবং জীন শয়তান থেকে রক্ষা করব। আল্লাহ বলেন: “তার চেয়ে উত্তম কথা আর কোন ব্যক্তির হতে পারে যে মানুষদের আল্লাহ তায়ালার দিকে ডাকে এবং সে (নিজেও) নেক কাজ করে এবং বলে, আমি তো মুসলমানদেরই একজন।(হে নবী), ভাল আর মন্দ কখনই সমান হতে পারে না; তুমি ভাল (কাজ) দ্বারা মন্দ (কাজ) প্রতিহত করো, তাহলেই (তুমি দেখতে পাবে) তোমার এবং যার সাথে তোমার শত্রুতা ছিল, তার মাঝে এমন (অবস্থা সৃষ্টি) হয়ে যাবে, যেন সে (তোমার) অন্তরঙ্গ বন্ধু।“ [সুরা হা-মীম-আস সাজদাঃ ৩৩, ৩৪]
এভাবে আমরা মানুষ শয়তান থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারি, আমাদের খারাপ কে ভাল দিয়ে প্রতিহত করতে হবে। এটা আমাদের শুধু রক্ষাই না বরং হয়তো আমাদের শত্রুকে মিত্রতে পরিনত করতে পারে। কিন্তু এই কাজটিও সহজ নয়, আল্লাহ পরবর্তী আয়াতেই বলেছেন- “আর এ (বিষয়টি) শুধু তাদের (ভাগ্যেই লেখা) থাকে যারা ধৈর্য ধারন করে এবং এ (সকল) লোক শুধু তারাই হয় যারা সৌভাগ্যের অধিকারী।” [সুরা হা-মীম-আস সাজদাঃ৩৫]
কিন্তু জীন শয়তানের বেলায় কি করব? উপরের পদ্ধতিটি আমরা এক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে পারবনা। তাহলে কি করব? আল্লাহ্র কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতে হবে, কারন আল্লাহ্ উপরল্লখিত আয়াতের পরপরই বলেছেন – “আর যদি কখনও শয়তানের কুমন্ত্রনা তোমাকে প্ররোচিত করে তাহলে তুমি আল্লাহ্ তায়ালার কাছে আশ্রয় চাও; অবশ্যই তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।” [সুরা হা-মীম-আস সাজদাঃ ৩৬]
এটা একটা গল্পে সুন্দর করে বোঝান হয়েছে- এক বৃদ্ধ লোক এক যুবককে প্রশ্ন করল তুমি শয়তান কে দেখলে কি করবে? যুবকটি উত্তর দিল – মারব। বৃদ্ধের প্রশ্ন – আবার আসলে? আবার মারব। আবার একই প্রশ্নে যুবকটি একই উত্তর দিল। তখন বৃদ্ধ মাথা নেড়ে বলল- রাস্তায় তোমার সামনে যদি একটি হিংস্র কুকুর আসে তুমি কতবার ওকে মেরে তাড়াবে? তারচেয়ে এটাই কি বুদ্ধিমানের কাজ না যে তুমি এর মালিককে ডেকে কুকুরটাকে পথ থেকে সরাতে বল।
একারনেই আমরা নামাজের শুরুতে আল্লাহ্র কাছে আশ্রয় চাই। ইবনে আল কাইয়িম বলেছেন- আমরা যখন নামায পড়ি আল্লাহ্ তাঁর আর আমাদের মাঝের পর্দা উঠিয়ে দেওয়ার আদেশ করেন, আর আমরা সরাসরি আল্লাহ্র মুখমুখি হয়ে যাই, আবার যখন অন্যদিকে মন ঘুরিয়ে নেই, তখন আবার পর্দা নেমে আসে। শয়তান তখনই আমাদের মনে একটার পর একটা চিন্তা দিয়ে ব্যস্ত করে ফেলে, কিন্তু যখন পর্দা সরানো থাকে তখন সে এ কাজ করার সাহস পায় না। কাজেই, আমরা আল্লাহ্র কাছে শয়তানের হাত থেকে আশ্রয় চাইব, অর্থ বুঝে নামায পড়ব এবং নিজেদেরকে নামাজের মাধ্যমে শয়তানের কাছ থেকে আত্মরক্ষার চেষ্টা করব।
আগের পর্ব গুলো এই লিংক থেকে পড়ুনঃ
পর্ব ১।পর্ব ২।পর্ব ৩।পর্ব ৪।পর্ব ৫।পর্ব ৬।পর্ব ৭।পর্ব ৮।পর্ব ৯।পর্ব ১০।পর্ব ১১।পর্ব ১২।পর্ব ১৩।পর্ব ১৪।পর্ব ১৫।পর্ব ১৬।পর্ব ১৭।পর্ব ১৮।পর্ব ১৯।পর্ব ২০।পর্ব ২১।পর্ব ২২।পর্ব ২৩।পর্ব ২৪।পর্ব ২৫।পর্ব ২৬।পর্ব ২৭।পর্ব ২৮
'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক'
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে আপনি Facebook, Whatsapp, Telegram, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। ইসলামি দা’ওয়াহ্র ৮০ টিরও বেশী উপায়! বিস্তারিত জানতে এইখানে ক্লিক করুন "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]
Allah protects us from shoitan (Ameen)
Human must be know satan(shaithan) is the great enimy
assalamualaikum,ami kichu prosno korte chai.kothe prosno korbo ebong kivabe uttor pabo.help me pls.
Islamic proshner jonno apni http://www.islamqa.com visit korte paren.