পর্ব ১।পর্ব ২।পর্ব ৩।পর্ব ৪।পর্ব ৫।পর্ব ৬।পর্ব ৭।পর্ব ৮।পর্ব ৯।পর্ব ১০।পর্ব ১১।পর্ব ১২।পর্ব ১৩।পর্ব ১৪।পর্ব ১৫।পর্ব ১৬।পর্ব ১৭।পর্ব ১৮।পর্ব ১৯।পর্ব ২০।পর্ব ২১।পর্ব ২২।পর্ব ২৩।পর্ব ২৪।পর্ব ২৫।পর্ব ২৬।পর্ব ২৭।পর্ব ২৮
সৃষ্টি সম্পর্কে ভাবা
সুরা ফাতিহা হল সেই সুরা যা আমরা প্রতি ওয়াক্তের প্রতি রাক’আতে পড়ি- দিনে কমপক্ষে ১৭ বার। কাজেই এই সুরার প্রতিটি আয়াতের বিস্তারিত অর্থ আমাদের জন্য জানা একান্ত প্রয়োজন যাতে আমরা যা পড়ি তার সাথে নিজের অন্তরকে যুক্ত করতে পারি। আজ আমরা অংশ নেব এক অনন্য সাধারণ যাত্রায় যা আমাদের অন্তরে আল্লাহর প্রতি সম্ভ্রম ও শ্রদ্ধা গেঁথে দিতে সাহায্য করবে ইনশাল্লাহ। আল্লাহ বলেন: “তাহলে আপনি বলে দিন, চেয়ে দেখ তো আসমানসমুহে ও যমীনে কি রয়েছে।……” [সুরা ইউনুসঃ ১০১]
আল্লাহ আমাদেরকে আদেশ করেছেন তাঁর সৃষ্টি নিয়ে পর্যবেক্ষণ করার জন্য আর এ নিয়ে চিন্তাভাবনা করার জন্য। নিচের ভিডিওটি আমাদের এক শ্বাসরুদ্ধকর ভ্রমণে নিয়ে যাবে।
এই অতল বিশাল সৃষ্টির সামনে আমরা কত নগণ্য। আমরা কখনও ভেবে দেখেছি আমাদের আর বেহেশতসমূহের মধ্যে দূরত্ব কতখানি? আল্লাহ বলেন: “নিশ্চয় তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহ। তিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। অতঃপর আরশের উপর অধিষ্টিত হয়েছেন।…” [সুরা আল ‘আরাফ: ৫৪]
নিশ্চয়ই আল্লাহ সুবহানাওয়াতা‘আলার কিভাবে আরশে সমাসীন হন তা আক্ষরিক অর্থে আমরা বুঝতে পারব না। কারণ আল্লাহ আরও বলেন: “কোন কিছুই তাঁর অনুরূপ নয়।” [সুরা আশশুরাঃ১১]
যাহোক, এটি আমাদের আজকের আলোচনার প্রসঙ্গও না। আমরা ভিডিওটিতে যা দেখলাম তা যদি মাত্র প্রথম আসমান হয়, তাহলে কল্পনা করে দেখুন এরকম সাতটি আসমান রয়েছে; আবার এই সাত আসমানের উপরে রয়েছে আল্লাহর কুরসী এবং তাঁর আরশ। আমরা কি সেই কুরসী কল্পনা করতে পারি? মহানবী(সাঃ) বলেছেন: “কুরসীর মধ্যে সাত আসমান ধু ধু প্রান্তরে নিক্ষিপ্ত আংটির চেয়ে বেশি কিছু না।” [ইবনে হাযার]
কুরসী যদি এমন হয়, আরশ তাহলে কেমন? তখন নবীজি (সাঃ) বলেছেনঃ “আরশের তুলনায় কুরসী প্রান্তরের তুলনায় কড়ার মত।
আমরা কি এই বিশালত্ব কল্পনা করতে পারি? তাহলে আমরা কিভাবে অহংকার করতে পারি? আমরা কিভাবে আল্লাহর সামনে দাড়াতে পারি এবং তাঁর বিশালতা ও মহানুভবতা অনুভব না করে পারি? আমরা মাঝে মাঝে মানুষের নানান সাফল্য ও কীর্তি যেমন উচ্চতম বিল্ডিং নির্মাণ, উড়োজাহাজের ওড়া, ক্লোনিং দেখে অবাক হই। কিন্তু আমরা যখন আল্লাহর প্রাকৃতিক সৃষ্টিসমূহ একে একে আবিষ্কার ও পর্যবেক্ষণ করি তখন আমরা শ্রদ্ধা মিশ্রিত ভয়ের এক অনুভুতি নিয়ে বিস্ময়বিহ্বল হয়ে যাই। এই কথা গুলো মাথায় রেখে আমরা নবীজি (সাঃ) এর এই হাদিসটি পড়ি- “যখন কেউ নামাজে দাঁড়াবে, সে যেন এদিক সেদিক না তাকায়, কারন আল্লাহ তখন তার দিকে দৃষ্টি দিয়ে রাখেন যতক্ষণ না পর্যন্ত সে এদিক সেদিক তাকায়।” [তিরমিযি]
আমরা তাহলে কি করে আমাদের মুখ অন্য দিকে ফিরিয়ে নিতে পারি? ভেবে দেখুন আল্লাহর বিশালতম সৃষ্টি থেকে ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র সৃষ্টি সমূহের কথা। এ সমস্ত কিছুই কত চমৎকারভাবে চলছে, আমাদের কোন রকম সাহায্য বা অংশগ্রহন ছাড়াই। আমরা শুধুই বলতে পারিঃ ‘আলহামদুলিল্ললাহি রাব্বিল ‘আলামীন’ -সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর যিনি সৃষ্টি জগত সমূহের রব।
নামাজ: একটি কথোপকথন
সুরা ফাতিহা সম্পর্কে আল্লাহ হাদিসে কুদসি তে বলেছেন- আমি সালাত (সুরা ফাতিহা) আমার ও আমার বান্দার মধ্যে অর্ধেক অর্ধেক ভাগ করে নিয়েছি, আর, আমার বান্দা যা চাইবে তাই তাকে দেওয়া হবে।
বান্দা যখন বলেঃ আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল ‘আলামিন বা সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ রব্বুল ‘আলামীনের জন্য, আল্লাহ তখন বলেনঃ আমার বান্দা আমার প্রশংসা করল।যখন বান্দা বলেঃ আর রহমানির রহীম বা পরম করুনাময় অতি দয়ালু, তখন আল্লাহ বলেনঃ আমার বান্দা আমার গুণগান করল।যখন বান্দা বলেঃ মালিকি ইয়াওমিদ্দীন বা প্রতিফল দিবসের মালিক, তখন আল্লাহ বলেনঃ বান্দা আমার মর্যাদা বর্ণনা করল।যখন বান্দা বলেঃ ইয়্যাকা না’বুদু ওয়া ইয়্যাকা নাস্ তা’ঈন বা আমরা তোমারই ইবাদত করি এবং তোমারই সাহায্য চাই, তখন আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ এটা আমার ও আমার বান্দার মধ্যে বিভক্ত এবং বান্দার জন্য তা-ই রয়েছে যা সে চাইবে। অতঃপর যখন বান্দা বলেঃ ইহদিনাস সিরাতাল মুস্তাকীম; সিরাতাল্লাযীনা আন’আমতা ‘আলাইহিম গইরিল মাগদুবি আলাইহিম ওয়ালাদ-দল্লীন বা আমাদের সরল পথ দেখাও। তাদের পথ যাদের তুমি নিয়ামত দিয়েছ, তাদের পথ নয় যারা গজবপ্রাপ্ত এবং যারা পথভ্রষ্ট, তখন আল্লাহ তা’য়ালা বলেনঃ এ সব তো আমার বান্দার জন্য এবং আমার বান্দা যা চাইবে তার জন্য তা-ই রয়েছে। [সহীহ মুসলিম ২য়ঃ৭৭৪]
আমাদের রবের সাথে কি চমৎকার কথোপকথনই না হয় আমাদের! ইবন আল কায়্যিম বলেন, সবচেয়ে চমৎকার বিষয় হল আল্লাহ আমাদেরকে তাঁরই বান্দা বলে সম্বোধন করেছেন। আল্লাহ যখন নবী মুহাম্মাদ (সাঃ)কে ইসরা এবং মিরাজে নিয়ে গিয়েছিলেন, তিনি বলেন: “পরম পবিত্র ও মহিমাময় সত্তা তিনি, যিনি স্বীয় বান্দাকে রাত্রি বেলায় ভ্রমণ করিয়েছিলেন মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যান্ত-যার চার দিকে আমি পর্যাপ্ত বরকত দান করেছি যাতে আমি তাঁকে কুদরতের কিছু নিদর্শন দেখিয়ে দেই। নিশ্চয়ই তিনি পরম শ্রবণকারী ও দর্শনশীল।” [সুরা আল ইসরাঃ ১]
মানুষের দাসত্ব অপমানজনক; কিন্তু আল্লাহর দাসত্ব, যার সাথে থাকে ভালবাসা, তা হল মানুষের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ সম্মানের বিষয়।আমরা যেন সবাই আল্লাহর প্রতি গভীর সম্ভ্রম আর ভালবাসার অনুভুতি নিয়ে নামাজে দাড়াতে পারি। আমীন। *ইবনে কাসীরের আল বিদায়া ওয়া আন নিহায়া ১ম খণ্ড থেকে।
আগের পর্ব গুলো এই লিংক থেকে পড়ুনঃ
পর্ব ১।পর্ব ২।পর্ব ৩।পর্ব ৪।পর্ব ৫।পর্ব ৬।পর্ব ৭।পর্ব ৮।পর্ব ৯।পর্ব ১০।পর্ব ১১।পর্ব ১২।পর্ব ১৩।পর্ব ১৪।পর্ব ১৫।পর্ব ১৬।পর্ব ১৭।পর্ব ১৮।পর্ব ১৯।পর্ব ২০।পর্ব ২১।পর্ব ২২।পর্ব ২৩।পর্ব ২৪।পর্ব ২৫।পর্ব ২৬।পর্ব ২৭।পর্ব ২৮
'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক'
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে আপনি Facebook, Whatsapp, Telegram, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। ইসলামি দা’ওয়াহ্র ৮০ টিরও বেশী উপায়! বিস্তারিত জানতে এইখানে ক্লিক করুন "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]
Allah Ho Akbar, That’s all I can think of now, I got so emotional after watching this video. May Allah forgive us all, and show us right path to pray only him. Amin.
VERY NICE
Sukria
Jajakallaho khairan