পোষ্যবর্গের জীবনযাত্রার সমস্ত সামগ্রীর খরজ বহন করা ওয়াজিব বা অপরিহার্য

0
1776

লেখক: মুহাম্মাদ মর্তুজা ইবন আয়েশ মুহাম্মাদ

অনন্ত করুণাময় পরম দয়ালু আল্লাহর নামে

পোষ্যবর্গের জীবনযাত্রার সমস্ত সামগ্রীর খরজ বহন করা ওয়াজিব বা অপরিহার্য:

পোষ্যবর্গের প্রয়োজনীয় সামগ্রী বা খোরপোশ জোগানোর সুব্যবস্থা করা অপরিহার্য। এই বিষয়ে প্রকৃত ইসলামের স্পষ্ট বিধান হলো এই যে, আবু হুরায়রা [রাদিয়াল্লাহু আনহু] হতে বর্ণিত, তিনি নাবী কারীম [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] থেকে বর্ণনা করেছেনঃ নাবী কারীম [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেনঃ “অভাব মুক্ত অবস্থায় দান করা হলো সর্বোত্তম দান, তবে সর্ব প্রথমে তুমি তোমার নিজের পোষ্যবর্গের ভরণপোষণ ও খোরপোশের সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন করবে”। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং 1426]।

এই হাদীসটি প্রমাণ করে যে, স্বয়ং দানকারী এবং তার পোষ্যবর্গ অভাবমুক্ত অবস্থায় থাকলে, সে অন্য ব্যক্তিকে সদকা বা দান প্রদান করতে পারে। তবে অন্য ব্যক্তিকে সদকা দান প্রদান করার আগে মুসলিম ব্যক্তির নিজের এবং তার পোষ্যবর্গের ভরণপোষণ ও খোরপোশ জোগানোর সুব্যবস্থা করা ওয়াজিব ও অপরিহার্য। তাই  নিজের পোষ্যবর্গকে ভিক্ষার পথে ছেড়ে দিয়ে অন্য মানুষকে সদকা বা দান প্রদান করা কোনো সময় জায়েজ নয়। সুতরাং এই বিষয়ে অনেক হাদীস উল্লিখিত হয়েছে, তার মধ্যে থেকে এখানে একটি হাদীস উল্লেখ করা হলোঃ আব্দুল্লাহ বিন আমর [রাদিয়াল্লাহু আনহুমা] হতে বর্ণিত তিনি বলেনঃ আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেনঃ “একজন লোকের পাপী হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট যে, সে নিজের পোষ্যবর্গের ভরণপোষণের প্রয়োজনীয় সামগ্রী তাদেরকে প্রদান করার দায়িত্ব পালন করা হতে বিরত থাকবে”। [সুনান আবু দাউদ, হাদীস নং 1692, আল্লামা নাসেরুদ্দিন আল্ আলবাণী এই হাদীসটিকে হাসান বলেছেন]।

এই বিষয়ে আরো একটি হাদীস পেশ করা উচিত মনে করছি । আর সেই হাদীসটি  হলো এই যে, আব্দুল্লাহ বিন আমর [রাদিয়াল্লাহু আনহুমা]  হতে বর্ণিত তিনি বলেনঃ আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] বলেছেনঃ “একজন লোকের পাপী হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট যে, সে নিজের পোষ্যবর্গের ভরণপোষণের প্রয়োজনীয় সামগ্রী তাদেরকে না দিয়ে তা আটকে রাখবে”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং 40 -(996)]

এই হাদীসগুলির দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, একজন মুসলিম ব্যক্তির নিজের এবং তার পোষ্যবর্গের জীবনযাত্রার সমস্ত খরজ বহন করা তার উপর ওয়াজিব বা অপরিহার্য। এই অপরিহার্য দায়িত্বপালনে অবহেলা কিংবা গাফিলতি করলে সে একজন পাপিষ্ঠ মানুষ বলে পরিগণিত হবে।  তাই নিজের কর্তব্যপালনের বিষয়ে সচেতন থাকা দরকার। এবং কোনো সময় দায়িত্বপালনের কাজে অবহেলা করা বৈধ নয়।

নিজের পোষ্যবর্গের তথা নিজের স্ত্রী এবং সন্তানদের ভরণপোষণ ও খোরপোশের সঠিক ভাবে দায়িত্ব পালন করতেই হবে। এর জন্য তার উপর বৈধ পদ্ধতিতে এবং হালাল পন্থায় রুজিরোজগার করা অপরিহার্য। যাতে শান্তির সহিত সে নিজের এবং নিজের স্ত্রী ও সন্তানদের জন্য ভরণপোষণ ও খোরপোশ জোগানোর সুব্যবস্থা করতে সক্ষম হয়।

নিজের পোষ্যবর্গ বলা হয়ঃ নিজের স্ত্রী ও সন্তানসন্ততি ইত্যাদিকে।

Print Friendly, PDF & Email
Banner Ad


'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক'
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে
আপনি Facebook, Whatsapp, Telegram, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। ইসলামি দা’ওয়াহ্‌র ৮০ টিরও বেশী উপায়! বিস্তারিত জানতে এইখানে ক্লিক করুন "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]

দ্বীনী খিদমায় অংশ নিন

আপনার মন্তব্য লিখুন