এক গুপ্তচরের গল্প

0
517

লেখক: ড. মুহাম্মদ ইবনে আবদুর রহমান আরিফী | অনুবাদক: রাশেদুল আলম

অন্যের গােপন বিষয় তালাশ করা বা গুপ্তচরবৃত্তি করা অনেক পুরনাে রীতি। এক্ষেত্রে আরব-অনারব মুসলিম-অমুসলিম সকলেই সমান। বিভিন্ন জন বিভিন্ন অশ্চর্যজনক পন্থা অবলম্বন করে অন্যের বিষয়ে গােপ্তচরবৃত্তি করে বা অন্যের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করে। কখনাে কখনাে এই গােপ্তচরবৃত্তিটা হয়ে থাকে অন্যের ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্যে, কখনাে শুধুমাত্র মজা বা ঠাট্টা করার জন্যে, অন্যে কী করে তা জানার জন্যে। আবার কখনাে কখনাে গুপ্তচরবৃত্তি হয়ে থাকে অন্যের ক্ষতি করার জন্যে। এখন আমরা খলিফা মুতাদিদের এক গুপ্তচরের কাহিনী বলবাে। এই ঘটনা বলার দ্বারা আমাদের উদ্দেশ্যহল এটা জানানাে যে, মানুষ কখনাে কখনাে অন্যের বিষয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করে শুধুমাত্র মজা করার জন্যে। অথচ কোনাে কারণ ছাড়া অন্যের বিষয়ে গুপ্তচরবৃত্তি করা জায়েয নেই, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কারাে ব্যাপারে গুপ্তচরবৃত্তি করতে নিষেধ করেছেন। কুরআনে এবিষয়ে সতর্কবাণী এসেছে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: ‘তােমরা কারাে ব্যাপারে গুপ্তচরবৃত্তি করবে না এবং কারাে গােপন বিষয় জানতেও চাবে না।’

কারাে অনুমতি ব্যতীত তার গােপন বিষয় জানতে চাওয়া হারাম। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : “যে ব্যক্তি অনুমতি ব্যতীত কারাে লেখা চিঠি দেখে তার জন্যে এমন এমন শাস্তি রয়েছে।’

অথবা হাদিসে এভাবে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন : ‘অনুমতি ব্যতীত অন্যের লেখা চিঠি দেখা তােমাদের কারাে জন্যে জায়েয নেই।’

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: “তােমরা করাে ব্যাপারে গুপ্তচরবৃত্তি করবে না এবং কারাে গােপন বিষয়ে জানতেও চাবে না।

খলিফা মুতাদিদের কাসেম বিন আবদুল্লাহ নামক খুবই আস্থাভাজন একজন মন্ত্রী ছিল। সে দরাবারের প্রতিটি কাজ খুবই বিশ্বস্ততার সাথে করতাে, খলিফা এতে তার প্রতি খুবই সন্তুষ্ট ছিল, খলিফা তার বিভিন্ন ব্যক্তিগত বিষয়েও এই উজিরের সাথে কথা বলতাে। প্রতিটি মুনুষেরই ব্যক্তিগত কিছু বিষয় থাকে যা সে অন্য কাউকে জানাতে চায় না। সে তার পরিবারের সাথে একান্তে অনেক সময় কাটায়, তাদের সাথে হাসিঠাট্টা করে। এই বিষয়গুলাে সে বাহিরের কাউকেই জানাতে চায় না। মন্ত্রী কাসেমও নিজ পরিবারের সাথে একান্তে অনেক সময় কাটাতেন, তাদের সাথে হাসি-ঠাট্টা করতেন, যা সে খলিফাকে জানাতেন না। এবং এটা জানানাে তার দায়িত্বের মধ্যেও ছিলাে না।

একদিন সকালে কাসেম যখন খলিফার দরবারে উপস্থিত হয়েছে, খলিফা তখন তাঁকে ডেকে বলে, কাসেম! গতকাল তুমি অমুক অমুকের সাথে বাড়িতে খেলা করেছে, তখন আমাকে ডাকো নি কেনাে?

একথা শুনে মন্ত্রী কাসেম অত্যন্ত চিন্তিত হয়ে পড়লেন যে, খলিফা কীভাবে আমার ব্যক্তিগত বিষয় জানলেন? এটাতাে একান্ত আমার পারিবারিক বিষয়। এটা তাে খলিফার জানার কথা নয়। এসকল বিষয় ভেবে তার মন অনেক খারাপ হয়ে গেল; কিন্তু তিনি খলিফার সামনে মুচকি হেসে সেখান থেকে বেরিয়ে এলেন। অতঃপর বিষয়টি নিয়ে তাঁর একান্ত সচিবের সাথে পরামর্শ করলেন। সচিব তাকে এই বলে আশ্বস্ত করলাে যে, সে বিষয়টি দেখবে।

পরদিন ভােরে এই সচিব কাসেম ইবনে আবদুল্লাহর প্রাসাদের সামনে এসে অবস্থান করল। সে এতটাই ভােরে এসেছে যে, তখনও কাসেম বাড়ি থেকে বের হয়নি। সে বাড়ির সামনে এসে প্রহরীদের প্রতি লক্ষ করতে শুরু করল। সে বলেছে, আমি প্রহরীদের প্রতি লক্ষ করছিলাম, এমন সময় এক পঙ্গু ভিক্ষুক সেখানে উপস্থিত। আমি লক্ষ করলাম প্রহরীরা সকলে তাকে চিনে এবং সেও তাদের সাথে কথা বলছে ও হাসিঠাট্টা করছে। কথাবার্তার এক পর্যায়ে পঙ্গু লােকটি বললাে, তােমরা কেমন আছ? তােমাদের মনিব কাসেম কেমন আছে? সে গতকাল কখন বাড়িতে ফিরেছে? এভাবে খুব চাতুরতার সাথে কাসেম সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে নিচ্ছে; কিন্তু তারা কেউ বুঝতেই পারছে না। তখন প্রহরীরা তাকে বললাে, আমরা ভাল আছি, আমাদের মনিব কাসেমও ভাল আছেন, সে গতকাল অমুক সময় বাড়িতে ফিরেছেন। অন্যান্য দিনের চেয়ে সে কালকে একটু দেরিতেই ফিরেছেন, ফিরার সময় তার সাথে অমুক লােক ছিল। এরপর ভিক্ষুকটি ভিক্ষার ভান করে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে বাড়ির আরাে ভিতরে গেল; কিন্তু কেউ কিছুই মনে করল না, কারণ সে ভিক্ষুক, মানুষের কাছে চাওয়া ও ভিক্ষা করাই তার পেশা।

সে বাড়ির ভিতরে গিয়ে কাসেমের প্রাসাদের নিকটবর্তী কর্মচারীদের কাছে গেলএবং পূর্বের ন্যায় এখানেও তাদের সাথে খুব কৌশলে কথা চালিয়ে গেল; সে তাদেরকে বললাে, তােমাদের খবর কী? তােমাদের মনিবের খবর কী? তােমাদের মনিব গতকাল রাতে কার সাথে ছিল? তারা বললাে, আমরা ভাল আছি, আমাদের মনিবও ভাল আছেন, সে গতকাল রাতে তার অমুক স্ত্রীর সাথে ছিলেন। তারপর সে বলল, সে কি দেরি করে তার কাছে গিয়েছেন না তারাতারি? অতঃপর হেসে বললাে, সে যদি আগেআগেই যেয়ে থাকে তাহলে তাে মনে হয় তার এই স্ত্রী অনেক সুন্দরী। সে খুব কৌশলে তাদের কাছ থেকে কাসেম সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে নিল, তাদের কাছে হাত পাতার কারণে তারাও তাকে কিছু দান করল। এরপর সে ভিক্ষার ভান করে করে আরাে ভিতরে যেতে লাগল এবং পথে ছােট বড় দেখা হওয়া প্রত্যেককের কাছ থেকেই অত্যন্ত দক্ষতা ও সুকৌশলে কাসেম সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে নিচ্ছিল।

এরপর সে রান্নাঘরে প্রবেশ করল, খোঁড়া ও দরিদ্র হওয়ার কারণে সকলেই তার প্রতি দয়াশীল হল এবং যে যার মত দান-সদকা করল এবং ভিতরে প্রবেশ করতেও তাকে কেউ বাধা দিল না। সে রান্নাঘর থেকে থলিতে কিছু খাবারও ভরে নিল। এরপর সে বাবুর্চিকে প্রশ্ন করল, তুমি গতকাল রাতে কী রান্না করেছিলে? তােমার মনিব কাসেম কী পরিমাণ খাবার খায়? গতকাল সে কতটুকু খেয়েছে? কথাগুলাে বাবুর্চিদের সাথে। কথার ফাকে ফাকে কৌশলে জেনে নিল। এভাবে সে প্রসাদের ছােট-বড় প্রায় প্রতিটি লােকের সাথে কথা বলে সেখান থেকে বের হয়ে আমাদের পিছনের এলাকায় চলে গেল।

সচিব বলে, সেখান থেকে বের হওয়ার পর আমি তাকে অনুসরণ করলাম। আমি দেখলাম সে একটি নির্জন রাস্তায় এসে নিজ আকৃতি পরিবর্তন করে ফেলল। এখন তাকে দেখে একজন সুন্দর সুঠামদেহী লােক মনে হচ্ছে। আমি এটা দেখে খুবই আশ্চর্য হলাম। এরপর সে তার ভিক্ষার ব্যাগটা নিয়ে কয়েকজন ফকিরকে দিয়ে বললাে, নাও এগুলাে তােমাদের জন্যে। অতঃপর সে একটি বাড়িতে প্রবেশ করল। আমি বাড়িটি চিহ্নিত করে সেখান থেকে চলে এলাম এবং রাতে আবার সেই বাড়ির কাছে গিয়ে তার উপর নযর রাখছিলাম, এমন সময় দেখলাম খলিফার দরবারের এক কাজের লােক সেই বাড়ির দিকে এগিয়ে আসছে। আমি তাকে চিনে ফেললাম। সে বাড়িতে এসে দরজায় আঘাত করল আর তখন ভিতর থেকে দরজার নিচ দিয়ে একটা কাগজ বেরিয়ে এলাে, সেটি নিয়ে লােকটি চলে গেল। আমি জানি না আসলে কাগজে কী লেখা ছিল। এরপর আমি কয়েকজন প্রহরীকে নিয়ে এসে সেই বাড়িতে প্রবেশ করলাম এবং লােকটিকে ধরে বেঁধে কাসেমের কাছে নিয়ে গেলাম। কাসেম তাকে বলল, সত্য ঘটনা খুলে বল। সে বললাে, কিছুই করিনি। আমি একজন অসহায় লােক। তারপর যখন আমি তাকে প্রহার করা শুরু করলাম তখন সে বলল, হাঁ, আমি খলিফা মুতাদিদের গােপ্তচর, সে আপনার সংবাদ সংগ্রহের বিনিময়ে প্রতি মাসে আমাকে এক হাজার দেরহাম বেতন দেন।

আমি পঙ্গুর ভান করি এবং আপনার বাড়ির পাশে এই বাড়িটি বাড়া নিয়েছি, যাতে করে কেউ আমাকে চিনতে না পারে এবং বুঝতে না পারে যে, আমি পঙ্গু ও ফকিরের ভান করছি। আমি ফকিরের বেশভূষা ধারণ করি এবং আমার এই দাড়ির উপরে কৃত্তিম দাড়ি লাগাই, অতঃপর আপনার প্রাসাদে প্রবেশ করে মানুষের কাছে ভিক্ষা চাই এবং কৌশলে ছােট-বড় সবার কাছ থেকে আপনার ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করি। এরপর আমি আমার ভারা করা সেই বাড়িতে গিয়ে সকল তথ্য লিখে রাখি। রাতে খলিফার কাছ থেকে এক লােক এসে সেই কাগজ নিয়ে যায় এবং তা খলিফার নিকট হস্তান্তর করে। এর মাধ্যমে খলিফা মুতাদিদ জানতে পারে যে, আপনি প্রতিদিন কী করেন?

কাসেম লােকটিকে ধারে বন্দি করে রাখল। পরদিন রাতে মুতাদিদের প্রহরী এসে যখন লােকটির দরাজায় আঘাত করল, তার স্ত্রী দরজা খুলে তাকে বললাে, গতকাল কয়েকজন লােক এসে তাকে ধরে নিয়ে গেছে। আমি তাদের চিনিনা, আসলে তারা কারাছিল? এরপর থেকে সে এখনও ফিরে আসেনি। সে এখন কোথায় আছে, কার কাছে আছে আমি জানি না। এর পরের রাত্রেও তার স্ত্রী ঘর থেকে বের হয়ে বললাে, আমার স্বামী এখনও ফিরেনি, সে এখন জীবিত না মৃত আমি এর কিছুই জানি না।

এদিকে কাসেম প্রতিদিনের মত খলিফার দরবারে যাওয়া আসা করছে। কয়েক দিন পর খলিফা মুতাদিদ তাকে বলল, পঙ্গু লােকটি এখন কোথায়, আছে তার খবর কী? তাকে কী করেছাে? কাসেম বলল, আমিরুল মুমিনিন আমি তাে তাকে চিনি না। খলিফা বললাে, না; তুমি তাকে চিনেনা। আল্লাহর শপথ করে বলছি, তুমি যদি তাকে হত্যা করে থাক অথবা তাকে কিছু করে থাক তাহলে আমি কিন্তু তােমার এই এই… করবাে। আমি তােমাকে ওয়াদা দিচ্ছি এরপর থেকে তােমার ব্যক্তিগত বিষয় জানার চেষ্টা করবাে না। এখন বলাে, তুমি তাকে কোথায় লুকিয়ে রেখেছাে? তারাতারি তাকে বের করেদাও। কাসেম বলল, আমি তার সাথে ভাল ব্যবহার করেছি এবং হাদিয়া দিয়ে তাকে আমার কাছ থেকে মুক্ত করে দিচ্ছি।

আমি যখন ইবনুল জাওযিরহ.-এর লিখিত ‘আল মুনতাজিম ফি আখবারিল মুলুক ওয়াল উমাম’ নামক কিতাবে এই ঘটনা পড়লাম, তখন এটা ভেবে আমি অত্যন্ত আশ্চার্যান্বিতহলাম যে, একজনের বিরুদ্ধে অন্যজনের গুপ্তচরবৃত্তি কাজটা সকল যুগে, সকল দেশে,সব শ্রেণীর মানুষের মধ্যেই বিদ্যমান ছিলাে এবং আছে। তুমি কখনাে কখনাে লক্ষ করে দেখবে যে, একজনকে বিশ্বাস করে তার কাছে তােমার গােপন বিষয়টা শেয়ার করছাে, আর কিছু দিন পরেই সে তােমার গােপন বিষয়টি অন্যজনের কাছে প্রকাশ করে দিয়েছে। একারণে মানুষের উচিত যত বিশ্বস্তই হােক না কেনাে কাউকে তার গােপন বিষয় সম্পর্কে অবগত না করা, কারণ মানুষের হৃদয় তাে নিজের গােপন বিষয় লুকিয়ে রাখার ক্ষেত্রেই অনেক সংকীর্ণ। তাহলে অন্যের বিষয় সে কীভাবে ধারণ করবে? তখন তাে সে আরাে সংকীর্ণ হয়ে পড়বে।

দ্বিতীয় বিষয় হল, কোনাে কল্যাণ নিহিত না থাকলে কারাে ব্যক্তিগত বিষয়ে অনুসন্ধান বা গােপ্তচরবৃত্তি করা জায়েয নেই। উদাহরণস্বরূপ, যেমন কারাে ব্যাপারে নেশা করার সন্দেহ হল, আমরা তার ব্যাপারে গােপনে অনুসন্ধান করবাে, তারপর বিষয়টা সত্য প্রমণিত হলে এর জন্যে তার ব্যাপরে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবাে।

অনুরূপভাবে যদি করাে ব্যাপারে সন্দেহ হয় যে, সে অসৎ নারীর কাছে যাওয়া-আসা কারে, তাহলে আমরা তার ব্যাপারে গােপনে অনুসন্ধান করবাে, তারপর বিষয়টা সত্য প্রমণিত হলে এর জন্যে তার ব্যাপরে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবাে। তবে এই কাজটা সবাই করবে না বরং পুলিশ বা গােয়েন্দা সংস্থার কেউ করবে অথবা এর দায়িত্বে থাকা অন কেউ এই কাজটি করবে। তবে কোনাে কারণ ছাড়া অযথা শুধু শুধু মানুষের একান্ত বিষয়ে অনুসন্ধান করা বা গুপ্তচরবৃত্তি করা জায়েয নেই। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমনটি করতে নিষেধ করেছেন; বরং তিনি তাে অন্যের ঘরে অনুমতি ব্যতীত উঁকি দিলে তার চোখ উপরে ফেলারও অনুমতি দিয়েছেন।

অনুমতি ব্যতীত করাে ঘরের দরজা বা জানালার ফাঁকদিয়ে কেউ তাকালে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার চোখ উপড়ে ফেলার অনুমতি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, কেউ এমনটি করলে তার কোনাে হদ বা দিয়াত নেই। এটা তাে জানা কথাই যে, কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে কারাে চোখ উপড়ে ফেলে, তাহলে এর হদ হিসেবে তার চোখও তুলে ফেলা হবে। আল্লাহ তাআলা বলেন: চোখের বিনিময় চোখ উপড়ে ফেলা হবে।‘ [সুরা মায়িদা: ৪৩]

অথাৎ কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে অন্যের চোখ তুলে ফেলে তাহলে তার চোখও অনুরূপভাবে তুলে ফেলতে হবে। আর যদি কেউ ইচ্ছাকৃত নয় বরং ভুলে কারাে চোখ তুলে তাহলে তাকে অর্ধেক দিয়াত-রক্তপণ দিতে হবে। আর এটা মানুষের যে অঙ্গগুলাে জোড়ায় জোড়ায় আছে এর একটা যদি কেউ ভুলে নষ্ট করে যেমন কেউ ভুলে কারাে হাত কেটে ফেললাে বা কারাে পা কেটে ফেললাে তাহলে তাকেঅর্ধেক দিয়াত দিতে হবে।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার হরিণের শিং দিয়ে মাথা চুলকাচ্ছিলেন। এমন সময় এক লােক ঘরের ফাঁকা দিয়ে ভিতরের লােকদের দুষ্টমি দেখছিল। এটা দেখে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অনেক রাগান্নিত হলেন। লােকটি যদি চলে না যেতাে তাহলে তিনি তার চোখ উপড়ে দিতেন। তিনি বলেন, এটা বৈধ। এটা করলে কারাে দিয়াত-রক্তপণ দিতে হবে না। এর মাধ্যমে তিনি কারাে ব্যক্তিগত বিষয়ে অনুসন্ধানের ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছেন। মানুষ যখন অন্যের গােপন বিষয়ে অনুসন্ধান করলাে তখন সে নিজেও ধ্বংস হল, অন্যকেও ধ্বংস করল। আর একারণেই রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: ‘মানুষের মিথ্যারগুনাহ করার জন্যে এটাই যথেষ্ট যে, সে যা শুনবে তাই বর্ণনা করবে।

এবং তিনি আরাে বলেন : ‘মানুষের ইসলামের সৌন্দর্য হল অনর্থক কাজ ছেড়ে দেওয়া।

হে ভাই! কারাে মাঝে ও তার স্ত্রীর মাঝে সমস্যা থাক বা না থাক তাতে তােমার কী? কে কত বেতন পেল না পেল তা দিয়ে তুমি কী করবে? এক লােক ও তার স্ত্রীর বা তার ছেলে-মেয়েদের মধ্যে সামান্য ঝামেলা থাকতেই পারে, তুমি কেনাে অযথা তাদের গােপন খবর তালাশ করতে যাবে? অনর্থক বিষয়ে তুমি কেননা অন্যকে জিজ্ঞেস করতে যাবে? তুমি কেনাে অনর্থক বিষয়ের পিছনে ছুটবে?

মানুষের ইসলামের সৌন্দর্য হল অনর্থক কাজ ছেড়ে দেওয়া।মন্ত্রীর ব্যক্তিগত বিষয়ের অনুসন্ধান করাটা খলিফা মুতাদিদেরমােটেও ঠিক হয়নি। সাহাবায়ে কেরাম রা. কারাে কোনাে বিষয়ে অনর্থক নাক গলাতে যেতেন না। তাহলে তােমার কি হল যে, তুমি অন্যের ব্যক্তিগত বিষয়ে নাক গলাতে যাবে? যেমনিভাবে মানুষের ইসলামের সৌন্দর্য হল কুরআন তেলাওয়াত করা; মানুষের ইসলামের সৌন্দর্য হল নফল সালাত আদায় করা; মানুষের ইসলামের সৌন্দর্য হল বেশি বেশি আল্লাহ তাআলার যিকির করা; অনুরূপভাবে মানুষের ইসলামের সৌন্দর্য হল অনর্থক কাজ ছেড়ে দেওয়া।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনাে অনর্থক কাজ করতেন না। তিনি মানুষের একান্ত ব্যক্তিগত প্রতিটি ছােট ও বড় বিষয়ের প্রতি দৃষ্টি দিতেন না। সাহাবায়ে কেরাম রা.ও কখনাে অনর্থক কাজ করেননি। আমরা ইতিহাস পড়ে দেখতে পাই যে, সাহাবায়ে কেরাম রা. অন্যের কোনাে বিষয় নিয়ে অযথা মাথা ঘামাতেন না। অনুরূপভাবে আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সিরাত পড়ে জানতে পারি যে, তিনি কখনাে কোনাে সাহাবির দোষ তালাশ করেননি। তবে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কারাে প্রতি ইহসান-অনুগ্রহ করতে চাইতেন তখন তার বিষয়ে জিজ্ঞাস করতেন। যেমন নবি কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক যুদ্ধ থেকে ফিরে আসছিলেন, জাবের ইবনে আবদুল্লাহ রা.ও সেই যুদ্ধে তাদের সাথে ছিলেন। তারা প্রচণ্ড রৌদ্রের মধ্যে উটের উপর চড়ে বিশাল উপত্যকা পাড়ি দিচ্ছিলেন।শুধুমাত্র আল্লাহ তাআলার নিকট প্রতিদানের আশায় এই ত্বক পােড়া রােদের কষ্ট সহ্য করে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিচ্ছিলেন। সাহাবায়ে কেরাম রা.-এর সাথে তাদের প্রয়ােজনীয় সামগ্রী ছিল। মদিনায় পৌছতে অল্প পথ বাকিছিল।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খেয়াল করলেন যে, জাবের ইবনে আবদুল্লাহ রা, সকলের থেকে পিছিয়ে পড়েছে, ফলে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কাছে আসলেন এবং তাঁকে বললেন, জাবের! চলাে; জাবের রা. বললেন, হে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমার উট অসুস্থ হয়ে পড়েছে, সে হাঁটতে পারছে না। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তােমার উটকে বসাও। তখন তিনি তাঁর উটটিকে বসালেন। অতঃপর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তােমার লাঠিটা আমাকে দাও। জাবের রা, লাঠি দিলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন লাঠি দিয়ে উটের উপর আঘাত করলেন এবং এর জন্যে দোয়া করলেন, তখন উট দাঁড়িয়ে গেল এবং আল্লাহর ইচ্ছায় পথ চলতে শুরু করল।

অতঃপর জাবের রা. তার উটের উপর চড়লেন, এবং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও নিজ উটের উপর উঠলেন। অতঃপর তিনি জাবের রা.-এর সাথে সাথে চলতে লাগলেন। জাবের রা.-এর বয়স তখন ছিলাে একুশ বছর। তিনি জাবের রা.কে জিজ্ঞেস করলেন, জাবের! বিয়ে করেছাে? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জাবের রা.কে অনর্থক এমন প্রশ্ন করেননি। যেরকম আমরা একে অপরকে করে থাকি, ভাই কেমন আছেন? দিন কাল তাে মনে হয় ভালই কাটছে? শুনলাম, স্ত্রীর সাথে ঝামেলা হয়েছে? কারণ কী? এধরনের বিভিন্ন প্রশ্ন। আরে ভাই এমন প্রশ্ন করার তােমার প্রয়ােজন কী। তুমি কেনাে তার বিষয়ে জানতে চাইবে? তুমি কি মেয়ের বাবা না তার বড় ভাই? না-কি তুমি ছেলের বাবা? তুমি কি সমাজের মতব্বর যে, এবিষয়ে মীমাংসা করবে? এমন অযথা প্রশ্ন ছেড়ে দাও। আবার কেউ কেউ এসে তােমাকে প্রশ্ন করবে, কী ভাই! শুনলাম অমুককে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছাে, সত্য না-কি? এগুলাে অনর্থক প্রশ্ন, কী দরকার আছে অন্যের বিষয়ে এধরনের প্রশ্ন করার। মানুষের ইসলামের সৌন্দর্য হল অনর্থক কাজ থেকে বিরত থাকা। যেমন সালাত আদায় করা, সিয়াম পালন করা ইসলামের সৌন্দর্য, তেমনিভাবে অনর্থক বিষয়ে জড়িত হওয়া ও ইসলামের সৌন্দর্য; কিন্তু রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জাবের রা.কে অযথা প্রশ্ন করেননি; বরং তিনি তার প্রতি ইহসান করতে চেয়েছেন।

যেমন তুমি কোনাে দরিদ্র লােককে সাহায্যের উদ্দেশ্যে তার অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে তুমি তাকে বল, তােমার অবস্থা কী? বাড়ি ভাড়া কত? তুমিতাকে সাহায্য করার জন্যে এধরনের প্রশ্ন করাে। আর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেও বুঝতে পারে যে, তুমি তাকে সাহায্য করার জন্যে এধরনের প্রশ্ন করছাে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জাবের রা.কে বলেন, হে। জাবের! তুমি কি বিবাহ করেছ? জাবের রা. বলেন, জি ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি বিবাহ করেছি। তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুশি হলেন এবং বললেন, কুমারী না-কি বিবাহিতা নারী বিয়ে করেছ? সে বলল, বিবাহিতা। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, কুমারি মেয়ে কেনাে বিয়ে করলে না? তাহলে তুমি তার সাথে সােহাগ করতে পারতে আর সেও তােমার সাথে আনন্দ করতে পারতাে। তখন জাবের রা. বললেন, হে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমার বাবা যুদ্ধে শহিদ হয়েছেন, আর তিনি আমার দায়িত্বে সাতজন বােন রেখে গেছেন। আমি বাড়িতে তাঁদের মতই আরেকজন মেয়ে আনতে চায়নি।যেনাে বাড়িতে আমার বােনদের সাথে তার ঝগড়া-বিবাদ লেগে না যায়। তাই আমি একজন বয়স্কা মহিলা বিয়ে করেছি, যাতে সে বাড়িতে তাঁদের সাথে মায়ের মত হয়ে থাকতে পারে। হে ভাই! বােনদের প্রতি এমন মায়ার কি কোনাে দৃষ্টান্ত হতে পারে যে, নিজের আনন্দ-ফুর্তিকে, নিজের চাহিদাকে বােনদের জন্যে কুরবানি করে দিয়েছে। একথা শুনে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অত্যন্ত খুশি হলেন এবং তিনি জাবের রা.কে আর্থিক সাহায্য করতে চাইলেন। তাই তিনি তাকে বললেন, জাবের! তুমি কি তােমার উটটা আমার কাছে বিক্রি করবে?

একথা বলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জাবের রা.-এর উটটির দিকে তাকালেন, যা ছিলাে খুবই দুর্বল এবং কিছু পূর্বেও বসে পড়েছিলাে, এখন তা সবল হয়ে উদ্যমতার সাথে হাঁটা শুরু করলাে। হঠাৎ একথ শুনে জাবের রা, কী করবেন বুঝতে পারলেন না। তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম!যে উটটি কিছুকাল পূর্বেও অসুস্থ ছিলাে এবং এখন সুস্থ হয়ে উদ্যমতার সাথে চলছে, আপনি কি সেটার কথা বলছেন? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হাঁ; তুমি আমার কাছে তা বিক্রি করাে। জাবের রা. বললেন, আপনি এটা নিয়ে নিন। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, না বরং তুমি আমার কাছে তা বিক্রি করাে। জাবের রা. বলেন, হে আল্লাহ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! কত টাকা দিয়ে ক্রয় করবেন? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এক দেরহাম। জাবের রা. বললেন, কম হয়ে যায়। একটি উট মাত্র এক দেরহাম? অনেক কম হয়ে যায়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, দুই দেরহাম। জাবের রা. বললেন, কম হয়ে যায়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তিন দেরহাম। তিনি বললেন, কম হয়ে যায়। এভাবে রাসুলুল্লাহ বাড়াতে বাড়াতে চল্লিশ দেরহম ও সাথে এক উকিয়া স্বর্ণমুদ্রা পর্যন্ত বললেন। জাবের রা. তখন বললেন, ঠিক আছে তবে একটা শর্ত আছে আর তাহল, আমি মদিনা পর্যন্ত এর উপর আরােহণ করে যাব। মদিনায় পৌছে জাবের রা. বাড়িতে গিয়ে পরিবারের নিকট মালপত্র নামিয়ে রেখে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট ফিরে এলাে এবং তাঁর নিকট উট হস্তান্তর করল।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন বেলাল রা.কে বললেন, বেলাল! উটটি নিয়ে বেঁধে রাখাে এবং জাবেরকে চল্লিশ দেরহামের সাথে কিছু বেশি দিয়ে দাও। বেলাল রা. তাঁকে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামেরদেওয়া পরিমাণ মাল দিয়ে দিলেন। জাবের রা. উটের মূল্য গ্রহণ করে ভাবতে লাগলেন, আমি এই টাকা দিয়ে কী করবাে। আমি এর মাধ্যমে অন্য একটি উট ক্রয় করব না-কি এর মাধ্যমে আমার বােনদের বিয়ের ব্যবস্থা করবাে? অথবা পরিবারের লােকদের জন্যে খাবার ক্রয় করবাে? অর্থাৎ আমি তাে এই উটের উপর সফর করতাম, এর মাধ্যমে পানি আনতাম, প্রয়ােজনীয় আসবাবপত্র বহন করতাম; কিন্তু এখন এর মূল্য দিয়ে আমি কী করবাে? এটা ভাবতে ভাবতে জাবের রা. নিজ গৃহের দিকে ফিরে যাচ্ছেন, তখন রাসুলুল্লাহ সা বেলাল রা.কে বললেন, বেলাল! যাও জাবেরকে উটটিও দিয়ে দাও এবং তাঁকে বল, উট এবং উটের মূল্য উভয়টিই তার জন্যে। বেলাল রা, জাবের রা.-এর নিকট গেলেন এবং তাঁকে বললেন, জাবের! তােমার উট নিয়ে নাও। জাবের রা. বললেন কেনাে? রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কি এটা নিবেন না? তখন তিনি বললেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, উট এবং উটের মূল্য উভয়টিই তােমার। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই আচরণ দেখে জাবের রা, অত্যন্ত খুশি হলেন।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জাবের রা.কে সাহায্য করার জন্যে তার গােপন বিষয় জানতে চেয়েছেন। তােমরা কারাে ব্যাপারে গােপ্তচরবৃত্তি করবে না এবং কারাে গােপন বিষয়ে জানতেও চাবে না। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে একথা বলে, আবার নিজেই তার খেলাফ করেননি।

হে আল্লাহ! আপনি আমাদের গােপন বিষয়ের হেফাযত করুন এবং আমাদেরকে অন্যের গােপন বিষয় সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেওয়া থেকে বিরত থাকার তাওফিক দান করুন! আমাদেরকে দুনিয়া ও আখেরাতের সকল অনিষ্টতা থেকে হেফাযত করুন। আমিন!!

উৎস:আত্মবিশ্বাসপৃষ্ঠা: ২৫৬ – ২৬৭

Print Friendly, PDF & Email


'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক'
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে
আপনি Facebook, Whatsapp, Telegram, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। ইসলামি দা’ওয়াহ্‌র ৮০ টিরও বেশী উপায়! বিস্তারিত জানতে এইখানে ক্লিক করুন "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]

দ্বীনী খিদমায় অংশ নিন

আপনার মন্তব্য লিখুন