লেখক: শাইখ আব্দুল্লাহ আল কাফী মাদানী | সম্পাদনায়: উস্তাদ আব্দুল্লাহিল হাদী মাদানী
‘মাওলা’ শব্দের অর্থ হচ্ছেঃ প্রভু, মনিব, বন্ধু, সাহায্যকারী, অভিভাবক, মিত্র, আযাদকৃত দাস ইত্যাদি। ইমাম নভুভী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, এই শব্দের ১৬টি অর্থ আছে। এই কারণে শব্দটি সালাফে সালেহীনের মধ্যে ব্যবহারের প্রচলন ছিল। যেমন দাসগণ তাদের মনিবদের উদ্দেশ্যে ‘মাওলা’ শব্দ ব্যবহার করেছেন। রাসূলুল্লাহ সা. এক হাদীছে দাসকে নিষেধ করেছেন মনিবকে ‘মাওলায়া’ বা আমার প্রভূ বলতে। আবার আরেক রেয়াওয়াতে অনুমতি দিয়েছেন যে দাস তার মনিবকে বলবে ‘সাইয়্যেদী ও মাওলায়া’। (উভয় বর্ণনা সহীহ মুসলিমে আছে)
এখানে ‘মাওলা’ শব্দের শেষে ‘ইয়া’ সর্বনাম যোগ করলে একবচন বক্তা বুঝায়, আর ‘না’ সর্বনাম যোগ করলে বহুবচন বক্তা বুঝায়।
এখন হাদীছে এক বর্ণনায় নিষেধ আরেক বর্ণনায় অনুমতির তাৎপর্য কি?
এ সম্পর্কে উলামাগণ বলেছেন, যদি ‘মাওলা’ শব্দ দ্বারা রুবুবিয়্যাতের অর্থ গ্রহণ করা হয় এবং তাকে সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী উদ্দেশ্য করা হয়, তবে তা নিষেধ। কিন্তু যদি সাধারণভাবে দায়িত্বশীল বা অভিভাবক বা অন্য কোন অর্থ উদ্দেশ্য করা হয় তবে ব্যবহার করা নিষেধ নয়।
কেউ বলেছেন, দ্বিতীয় বর্ণনা দ্বারা এটি ব্যবহার জায়েয হওয়ার প্রমাণ দেয়া হয়েছে। আর প্রথম বর্ণনাটি দ্বারা আদব রক্ষার্থে ব্যবহার না করতে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। অর্থাৎ ব্যবহার করা মাকরূহ।
- এই জন্যে শাইখ বিন বায (রহ.) বলেছেন, যদিও শব্দটির ব্যবহার নাজায়েয নয় তবে তা যত্রতত্র ব্যবহার না করাকেই উত্তম।
- শাইখ আবদুল মুহসেন আব্বাদ (হাফিজাহুল্লাহ) শব্দটি ব্যবহারে তাওহীদের ক্ষেত্রে কোন সমস্যা না থাকলেও যার তার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা ঠিক না।
“আবু রাফে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর আযাদকৃত দাস ছিলেন, তিনি তার বিভিন্ন খাতে খরচের জন্যে অর্থ দিতেন। একবার তিনি তাকে বলেছেন, “তোমাকে যা আমি দেই তাতে যদি তোমার যথেষ্ট হয়ে যায়, তবে মানুষের ময়লা (সাদকা-যাকাত) চাইবে না। কেননা ওটা আমাদের জন্যে হারাম। আর কোন কওমের আযাদকৃত দাস তাদেরই অন্তর্ভুক্ত। তিনি বললেন, ‘আনতা মাওলানা ওয়া মিন্না’ তুমি আমাদের আযাদকৃত দাস, তুমি আমাদেরই অন্তর্ভুক্ত।” [আবু দাউদ]
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “আমি যার মাওলা, আলী (রা.)ও তার মাওলা।” [আহমাদ, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ]
- এর অর্থ সম্পর্কে মুবারকপুরী তোহফাতুল আহওয়াযীতে বলেছেন, আমি যার সাথে বন্ধুত্ব রাখি আলীও তার সাথে বন্ধুত্ব রাখে। (শত্রুতার বিপরীত)।
- কেউ বলেছেন, তার অর্থ হচ্ছে, আমি যাকে ভালবাসি আলীও তাকে ভালবাসে।
- কেউ বলেছেন, যে আমাদের সাথে সম্পর্ক রাখবে আলীও তার সাথে সম্পর্কে রাখবে।
আল্লাহ বলেন: “তোমাদের ওলী (বন্ধু) তো কেবল আল্লাহ, তাঁর রাসূল এবং মুমিনগণ।” [মায়েদাঃ ৫৫]
কুরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন: “আপনি আমাদের মাওলা (সাহায্যকারী ও বন্ধু) এত:এব আপনি আমাদেরকে কাফের সম্প্রদায়ের উপর সাহায্য করুন।” [সূরা বাকারা: ২৮৬]
এই আয়াতে মওলানা অর্থ: বন্ধু ও সাহায্যকারী অর্থাৎ আপনি আমাদের বন্ধু ও সাহায্যকারী। আমরা আপনার উপরই ভরসা করছি, আপনার নিকটই সাহায্য প্রার্থনা করছি..। (তাফসীর ইবনে তাসীর)
মোটকথা, শরীয়তের দৃষ্টিভঙ্গী অনুযায়ী ‘মাওলানা’ শব্দটি কখনো আল্লাহর জন্য ব্যবহৃত হয় আবার কখনো রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ক্ষেত্রে এবং কখনো কখনো সম্মানিত বিদ্বান ও ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও ব্যবহার করতে কোন বাধা নেই। ইনশা আল্লাহ। তবে কোন ব্যক্তি নিজের পরিচয় দিতে গিয়ে যদি মাওলানা শব্দ ব্যবহার করে তবে নি:সন্দেহে তা হাস্যকর হবে। কারণ, অর্থগতভাবে তা গ্রহণযোগ্য নয় কারণ, মাওলানা অর্থ: (আপনি আমাদের অবিভাবক ও বন্ধু) । তবে অন্য মানুষ যদি মাওলানা বলে সম্বোধন করে তাতে কোন বাঁধা নাই ইনশাআল্লাহ। আল্লাহই সব চেয়ে ভাল জানেন।
'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক'
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে আপনি Facebook, Whatsapp, Telegram, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। ইসলামি দা’ওয়াহ্র ৮০ টিরও বেশী উপায়! বিস্তারিত জানতে এইখানে ক্লিক করুন "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]
জাযাকাল্লাহ খাইর
na, mawlana holin 1matru alla ho tala
তাহলে দরুদ পড়ার সময় আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ মুস্তাফা (সঃ) কে মাওলা আনা বলা হয় কেন?
In all respect ur intention is counted first. When one can realize a thing is permitted by Rasul (SM) no argument welcome. But u have to be definite in ur intention, so that wrath from Allah subhanhutaa’la is fall upon u.