লিখেছেন: মনসূর আহমেদ | অনুবাদক: মোহাম্মদ সলিমুল্লাহ | ওয়েব সম্পাদনা: মো: মাহমুদ ইবনে গাফফার
কিছুলোক অনেক দো‘আ করেন কিন্তু কোনো সাড়া পান না।
প্রশ্ন:
দো‘আ করলে তার উত্তর পেতে দেরি হয় কেন? কিছুলোক অনেক দো‘আ করেন কিন্তু কোনো সাড়া পান না; তারা দীর্ঘকাল ধরে চাইতে থাকেন। কিন্তু কোনো ফল পান না। এমন ক্ষেত্রগুলোতে আপনি দেখবেন শয়তান এমন লোকের কানে ফিসফিসানি শুরু করছে এবং স্রষ্টা সম্পর্কে তাদের নেতিবাচক চিন্তা করতে জন্য শিক্ষা দিচ্ছে।
উত্তর:
প্রশংসা মাত্রই আল্লাহ্র জন্য।
প্রথমত: যে ব্যক্তির ক্ষেত্রে এটা ঘটে তার বিশ্বাস করা উচিৎ যে, দো‘আ করার পরও সাড়া না পাওয়ার মাঝে একটি কারণ ও বিশাল এক প্রজ্ঞা লুকিয়া আছে। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা সার্বভৌমত্বের মালিক এবং কেউই তাঁর দয়াকে থামিয়ে দিতে বা ক্ষমতাকে নস্যাৎ করতে পারে না। তিনি দয়া করে কাউকে কিছু দিতে চাইলে বা ন্যায় বিচার করে কাউকে দিতে না চাইলে তার ইচ্ছেকে প্রভাবিত করে এমন কোনো শক্তি বা সত্ত্বা নেই। আমরা তাঁর বান্দা আর আমাদের সাথে তাই করেন যা তিনি ইচ্ছে করেন। “আর তোমাদের প্রভু যা ইচ্ছা ও পছন্দ তা-ই সৃষ্টি করেন, এতে তাদের কোনো পছন্দের অবকাশ নেই।” [আল-কাসাস ২৮:৬৮]
কোন যুক্তিতে একজন কর্মচারী মালিককে তাঁর প্রাপ্য সম্মান না করেই নিজের পাওনা পুরোটাই দাবী করতে পারে?
অবাধ্যতা নয় আনুগত্য, বিস্মরণ নয় স্মরণ, অকৃতজ্ঞতা নয় ধন্যবাদ পাওয়াটাই তাঁর অধিকার। আপনি যদি নিজের দিকে তাকান আর দেখেন কিভাবে নিজ দ্বায়িত্ব পালন করছেন, তবে নিজেকে খুবই নগন্য মনে হবে। আপনি অপমান বোধ করবেন আর উপলব্ধি করবেন যে, তাঁর ক্ষমা ও দয়া ছাড়া কোনো মুক্তিই নেই। তাই সৃষ্টিকর্তা ও নিয়ন্তা আল্লাহ্র দাস হিসেবেই নিজেকে দেখুন।
দ্বিতীয়ত: আল্লাহ মহাজ্ঞানী, তিনি কারণ ছাড়া কাউকে কিছু দেন না বা দেওয়া ফেরান না। আপনি কোনো কিছুর দিকে তাকিয়ে সেটাকে খুব ভালো ভাবতে পারেন। কিন্তু তাঁর জ্ঞানে এটা আবশ্যক নয়। একজন ডাক্তার এমন কিছু করতে পারেন যা আপনার কাছে যন্ত্রণা দায়ক মনে হবে যদিও তা রোগীর সর্বোচ্চ স্বার্থেই করা হয়ে থাকে। “আর আল্লাহ্ই সর্বোচ্চ জ্ঞানের অধিকারী।” [আল-নাহল ১৬:৬০]
তৃতীয়ত: ব্যক্তি যা চায় তার প্রত্যেকটিই তাকে দেয়া হলে তা তার জন্য অমঙ্গলজনকও হতে পারে। একজন সালাফের বর্ণনানুযায়ী তিনি কোনো সামরিক অভিযানে যাওয়ার জন্য আল্লাহ্র নিকট দো‘আ করতেন। কিন্তু তিনি একটি কণ্ঠ শুনতে পান: “তুমি সামরিক অভিযানে গেলে বন্দী হবে। আর বন্দী হলে তুমি খ্রীস্টান হয়ে যাবে।” [সায়িদ আল-খাতির, ১/১০৯] ইবনুল কায়্যিম বলেন: ‘আল্লাহ তাঁর বিশ্বাসী বান্দাদের জন্য যা নির্ধারণ করেছেন তা রহমত স্বরূপ। যদিও তা প্রদাণ বন্ধ করে হতে পারে; পরীক্ষা হলেও সেটি কল্যাণকর। আর তাঁর নির্ধারিত দূর্যোগও মঙ্গলজনক। যদিও তা পীড়াদায়ক হয়।‘ [মাদারিজ আল-সালেকীন, ৪/২১৫]
কেউ জানেনা তার বিষয়গুলো কিভাবে শেষ হবে। সে এমন কিছু চাইতে পারে যা তাকে পরিচালিত করবে কুফলের দিকে যাতে তার ক্ষতি হয়ে যাবে। তার জন্য কোনটি সবচেয়ে ভালো তা অদৃশ্যের মালিক আল্লাহ্ই ভালো জানেন। “আর এমন হতে পারে তুমি যা অপছন্দ করছো তা তোমার জন্য মঙ্গলকর।” [আল-বাকারা ২:২১৬]
এ আয়াতের একটি অর্থ হতে পারে যে, আমাদের এমন ভাবা উচিৎ নয় যে বিধাতার বিধান অন্যরূপ অথবা তাঁর কাছে এমন কিছু চাওয়া উচিৎ নয় যে বিষয়ে আমাদের জ্ঞান নেই এজন্য যে তা আমাদের অজান্তেই আমাদের ক্ষতি করবে। তাই আমাদের জন্য আমাদের প্রভু যা পছন্দ করেছেন তা ভিন্ন অন্য কিছু আমাদের পছন্দ অরা উচিৎ নয়। বরং তাঁর কাছে আমাদের কোনো শুভ পরিণতি কামনা করা উচিৎ। আর এটা এজন্য যে, এছাড়া অধিকতর উপকারী আমাদের জন্য কিছুই আর নেই।
চতুর্থত: বান্দা নিজের জন্য যা পছন্দ করে তার চেয়ে আল্লাহ্ তার জন্য যা পছন্দ করেন তা-ই শ্রেষ্ঠ। আল্লাহ্ তাঁর বান্দাকে এতোটাই ভালোবাসেন যতোটা বান্দা নিজেকেই ভালবাসতে পারে না। যদি তার এমন কিছু হয় যা সে অপছন্দ করে, তাহলে সেটা না ঘটার চেয়ে ঘটাই উত্তম; তাই তাঁর বিধান দয়া ও মমতায় ভরপুর। বান্দা যদি আল্লাহ্র নিকট আত্মসমর্পণ করে আর বিশ্বাস করে যে, সকল ক্ষমতার উৎস আল্লাহ্ এবং সবকিছুই তাঁর নিয়ন্ত্রানাধীন, এবং তার প্রতি তিনি নিজ অপেক্ষা অধিক দয়াশীল, তবেই সে কাঙ্ক্ষিত বস্তুটি না পেলেও তার মানসিক প্রশান্তি নষ্ট হবে না। [দেখুন: মাদারিজ আল-সালিকীন, ২/২১৫]
পঞ্চমত: এমন হতে পারে যে, ব্যক্তি এমন কিছু করেছেন যার জন্য তার দো‘আ কবুল হচ্ছে না বা বিলম্ব হচ্ছে। হতে পারে তার খাদ্য হারাম; হতে পারে তিনি যখন দো‘আ করেছেন তার মনে ঐকান্তিকতার অভাব ছিল; হতে পারে তিনি কোনো পাপে লিপ্ত থাকা অবস্থায় দো‘আ করেছেন। তাই দো‘আর সাড়া পেতে দেরি হওয়াটা ব্যক্তির নিজেকে সামলে নিতে, প্রভুর সম্মুখে কিভাবে দাঁড়াতে হবে তা শুধরে নিতে তাগিদ দেয়। যাতে করে সে নিজে সংশোধিত ও অনুতপ্ত হয়; যদি সে দো‘আর সাড়া দ্রুত পেত হয়ত সে বে-খেয়াল হয়ে যেত। যাকিছু করছে তা ঠিক বলে মনে করে তা করেই যেতো। তারপর তার ভেতর আত্ম-তুষ্টির মনোভাব তৈরি হতো যা তাকে সর্বনাশের দিকে নিয়ে যেতো।
দো‘আর সাড়া পেতে দেরি হওয়া বা কোনো সাড়া পাওয়ার কারণ হতে পারে আল্লাহ্ চাচ্ছেন বান্দার পুরষ্কার কিয়ামত পর্যন্ত দেরি করে দিতে। হয়তো তিনি চাচ্ছেন সমপরিমাণ কোনো পাপ মার্জনা করতে যা বান্দা বুঝতে পারে না।
ঘটনা যেটাই হোক, দো‘আর ফল অনিবার্য। যদিও হতে পারে আপনার চোখে আপনি তা দেখেন না। তাই স্রষ্টার প্রতি কৃতজ্ঞ হোন এবং বলুন: সম্ভবত তিনি আমার দো‘আয় এমনভাবে সাড়া দিয়েছেন যা আমি বুঝি না। সহীহ হাদীসে বর্ণিত আছে যে, নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন: “এমন কোনো মুসলিম নেই যে আল্লাহর কাছে দো‘আ করে আর তার কোনো পাপ নেই বা পরিবারের বন্ধন ছিন্ন করেনি, অথচ আল্লাহ্ তাকে তিন পদ্ধতির যে কোনোভাবে পুরষ্কার দেবেন: হয়তো আল্লাহ্ তার দো‘আয় তাৎক্ষনিকভাবে সাড়া দেবেন, বা তিনি পরকালে প্রতিদান দেয়ার জন্য জমা রাখবেন, অথবা এই কারণে তার সমপরিমান পাপ মোচন করে দেবেন।” সাহাবাগণ (রা:) জানতে চাইলেন: “আমরা যদি অনেক বেশি দো‘আ করি?” তিনি বললেন, “আল্লাহ্ ততোধিক মহান।” [হাদীসটি আহ্মাদ সংকলন করেছেন। সহীহুল তারগীব ওয়াত্তারহীব (১০৭৪৯) গ্রন্থে আল-আলবানী হাদীসটিকে হাসান সহীহ বলে রায় দিয়েছেন]
পরিশেষে, দো‘আ করে ফল লাভ না করার বা দেরিতে করার অনেক কারণ রয়েছে; এটা আমাদের অবশ্যই মানতে হবে এবং দো‘আ করা থামিয়ে দিলে চলবে না। কেননা দো‘আ সবসময়ই আমাদের জন্য কল্যাণ এবং মঙ্গল বয়ে আনে।
আল্লাহ্ রাব্বুল ‘আলামীন সমস্ত বিষয়ে সর্বজ্ঞ।
'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক'
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে আপনি Facebook, Whatsapp, Telegram, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। ইসলামি দা’ওয়াহ্র ৮০ টিরও বেশী উপায়! বিস্তারিত জানতে এইখানে ক্লিক করুন "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]
MashaAllaah
আসলে তাওহীদভেদে মানুষের দোয়ার প্রকারভেদ রয়েছে। যার যত আল্লাহর প্রতি ভক্তি বেশী সে তত বেশী দোয়ার সাড়া পায়। আসলে আল্লাহর তাঁর বান্দার প্রতি ভেদাভেদ করেন না। তাঁর কাছে সবাই সমান। কিন্তু অধিক তাকওয়ার লোকের দোয়া বেশী কবুল হওয়ার মূল কারন হচ্ছে তার দোয়াগুলে কবুল হওয়ার মত দোয়া। যেমন যার তাকওয়া কম তার চাওয়াটা একটু বাড়াবাড়ি ধরনের কিছু। যেগুলো হয়ত মানবতার বিরূদ্ধে, সমাজ-বেবস্থার বাইরে। কিন্তু একজন মুমিনের দোয়াটা ভিন্ন। তিনি দোয়া করবেন বুঝে শুনে। তার দোয়ায় কোন রকম বাড়াবাড়ি করবে না। তিনি সব সময় মনে রাখেন দোয়া কি ধরনের হওয়া উচিত।
ভালো লাগলো।
Ya allah please save us…. Ya allah please forgive us……!!
এটা ধর্য্যের পরীক্ষা
Allah maf kore dio….. Ameen……
Ameen
ya ALLAH anni amader dhorjo dharon e sofolkam korun! AMEEN!
আল্লাহ্ হু আকবার
,বাবু
Ya Allah tume amader doya koro mabud.
Da
allah
Aameen.
Alhamdulillah!
He allah soitaner kharap ktha teke amdr biroto raken r 2mr chayya theke amdr dore soriye dio na.amin.
Allah mohan
এটা কঠিন পরীক্ষা
Allahu Akbar
allahu akbar
Subahan allah. .allah amader sobaike hefazot korun ameen
SubhanaAllah.
ALLAH tar bandar jonno sob somoy valoi koren
Allah tume chara amder kaho nai , tume chara k bachabe jahannam thakee,
Allah hu Akbar
SubhanAllah.
Beshaq Allah is great
সূরা আল বাক্বারাহ:৪৫ – ধৈর্য্যর সাথে সাহায্য প্রার্থনা কর নামাযের মাধ্যমে। অবশ্য তা যথেষ্ট কঠিন। কিন্তু সে সমস্ত বিনয়ী লোকদের পক্ষেই তা সম্ভব।
ALLAHU AKBAR
subhan allah
Allah, is great
ALLAH MOHAN
Allah manuser test nen..
<3 ALLAHU AKBOR ALLAH <3 <3 SuB HaN ALLAH <3 <3 ALLAH HUMMA AMEEN <3
SUBHANALLAH
সুবাহানআল্লহ্
Allah ja kore sob valor jonno e koren
Ameen.
r8
yea Allah Amader shoto boro shokol pap evabe Khoma kore dao. Aaameen
সুবহান আল্লাহি ওয়াবি হামদিহি, সুবহান আল্লাহিল আযিম “
Alhamdulillah
আললাহ ভাল জানেন ৷ এর কারন আললাহ তায়ালা তার হাবিবের মাধমে আমাদের কি কি বিষয়ে আমাদের পরিক্ষা করপেন ৷ কোরয়ানে আছে সেই কথা (সূরাহ বাকারা আয়াত নং ১৫৫)
Subhanallah
Ameen.
r8
amin