গুনাহের দরজাসমূহ (পর্ব ২)

2
2204

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

লিখেছেনঃ আব্দুল্লাহ শহীদ আব্দুর রহমান । ওয়েব সম্পাদনাঃ মোঃ মাহমুদ -ই- গাফফার

 পর্ব ১ । পর্ব ২

তৃতীয়ত:

মেধার চিন্তা ও কল্পনা সমূহ: চিন্তা ও কল্পনা বিষয়ক অধ্যায়টি বিশেষ গুরুত্ববহ। কেননা মানুষের কথা, কাজ ও আচরণ সমূহে এর শক্তিশালী প্রভাব রয়েছে। কারণ, চিন্তাই হল ভাল মন্দের উৎস। এবং চিন্তা থেকেই নানা ইচ্ছা, প্রেরণা ও সংকল্পের সৃষ্টি হয়। অতএব সে তার কল্পনা শক্তিকে নিয়ন্ত্রণ করবে সে তার প্রবৃত্তির লাগাম এর নিয়ন্ত্রক হবে এবং সে প্রবৃত্তর ওপর বিজয় লাভ করবে। পক্ষান্তরে যার কল্পনা তাকে পরাজিত করবে তার প্রবৃত্তি মন তার ওপর বিজয়ী হবে। আর সে কল্পনাকে লঘু দৃষ্টিতে দেখবে তাকে ধ্বংসের প্রান্তসীমায় নিয়ে যাবে। এবং এই কল্পনা মনের মধ্যে ঘুরপাক খেতে থাকবে যাবৎ না তার নিরর্থক হিসেবে সাব্যস্ত হবে। আর কল্যাণময় কল্পনা যা মানুষের উপকারে আসে তা হচ্ছে, পার্থিব বা অপার্থিব কল্যাণ অর্জনের উদ্দেশে যা নিবেদিত অথবা কোন ইহলৌকিক বা পারলৌকিক অনিষ্ট দূর করার উদ্দেশে যা নির্দিষ্ট।

আর সর্বাধিক উপকারী হল যা আল্লাহ ও পরকাল-এর উদ্দেশে হয়ে থাকে যেমন পবিত্র কোরআনের আয়াতের অর্থসমূহ গভীর চিন্তা ভাবনা করা এবং তা দ্বারা আল্লাহর উদ্দেশ্য উপলব্ধি করা। এবং আমাদের সামনে উপস্থিত জাগতিক নিদর্শন সমূহে ধ্যান-মগ্ন হওয়া এবং তা দ্বারা আল্লাহর নাম, গুন ও প্রজ্ঞার ওপর প্রমাণ উপস্থাপন করা। এমন ভাবে আল্লাহর নেয়ামত অনুগ্রহ ও দান সমূহ সম্পর্কে চিন্তা ভাবনা করা। প্রবৃত্তির দোষ ত্র“টি ও সমস্যা সমূহ নিয়ে চিন্তা ভাবনা করা। সময়ের দায়িত্ব প্রয়োজন সম্পর্কে চিন্তা মগ্ন হওয়া। এই মোট ৫ প্রকার। পূর্ণতা হল হৃদয়কে কল্পনা শক্তি, চিন্তা-ভাবনা ও প্রভুর সন্তুষ্টি অর্জনের চিন্তায় নিমগ্ন ও পরিপূর্ণ রাখা। এবং তার পথ ও গন্তব্য সম্পর্কে চিন্তা করা। সবচে’ পূর্ণতম মানুষ সে যে কল্পনা, চিন্তা ও ইচ্ছায় এর বাস্তবায়নে অধিক মনোযোগী। পক্ষান্তরে সবচে’ অসম্পূর্ণ মানুষ সে যে কল্পনা, চিন্তা ও ইচ্ছায় তার প্রবৃত্তির অধিক অনুগামী। আর কেউ তো অধিক এমন বিষয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে যা পুরো পুরি অর্থহীন, ফলে তার ইচ্ছাশক্তি প্রকৃত অর্থবহ কাজ থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকে। অত:পর তার ইহকাল ও পরকাল উভয়ই নষ্ট হয়ে যায়। অতএব, অর্থহীন কল্পনা ও চিন্তা-ভাবনা এবং কাল্পনিক ও সুদূর পরাহত বিষয়ের চিন্তা কী উপকারে আসবে?

নি:সন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্য হচ্ছে, মেধাকে নিয়ন্ত্রণ করা। এবং তাকে কল্পনা ও প্রশস্ত চিন্তায় নির্ভিঘ্নে খোরাখুরির সুযোগ না দেওয়া, যা তাকে পার্থিব উপকরণ তার বিভিন্ন শাখা-প্রশাখায় পরিভ্রমণ করাবে। আর তাকে এক বস্তু থেকে আরেক বস্তুর দিকে স্থানান্তর করবে। তবে তা তাকে প্রয়োজনীয় কোন স্থানে অবস্থান করাবে না। আর বিক্ষিপ্ত, অবিন্যস্ত চিন্তা-ভাবনার সুসংহত চিন্তা-ভাবনা মানুষের অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বস্তু। এবং জাতিকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাক্সিক্ষত গন্তব্য।

গন্তব্যে পৌঁছার উপায় কী?

এই বিষয়ে আমরা অন্তরের দুর্বলতা ও রোগ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞের অভিজ্ঞতার শরণাপন্ন হওয়ার অধিক প্রয়োজনীয়তা অনুভব করি। যে রোগ শনাক্ত করবে ও তার কারণ গুলো বিশে¬ষণ করবে এবং চিকিৎসা ব্যবস্থার ব্যাখ্যা দেবে। একটি নাতি দীর্ঘ বক্তব্যের মাধ্যমে বিষয়টি সুস্পষ্ট করা হচ্ছে ‘ জেনে রাখো ওয়াসওয়াসা ও প্ররোচনার সাথে সংশি¬ষ্ট বিষয়গুলো চিন্তা-ভাবনা কে পর্যন্ত আক্রান্ত করে। আর চিন্তা Ñভাবনা এ গুলোকে স্মরণের বিষয়ে পরিণত করে। তার পর স্মরণ এ গুলোকে ইচ্ছা পর্যন্ত পৌঁছে দেয়, ইচ্ছা তাকে বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ও কাজে বাস্তবায়ন করে। অত:পর তা মজবুত হয়ে স্বভাব, অভ্যাসে পরিণত হয়। তাই এগুলোকে শুরু থেকেই মূলোৎপাটন করা অধিকতর সহজ তা দৃঢ় ও পূর্ণতা লাভ করার পর বিচ্ছিন্ন করার তুলনায়।

আর এটা জানা বিষয় যে, মানুষকে কল্পনা শক্তি মৃত বানিয়ে ফেলা এবং তা নির্মূল করার শক্তি দেওয়া হয়নি। প্রবৃত্তির বিভিন্ন উপসর্গ তার কাছে ভিড় করবেই। কিন্তু ইমানের শক্তি ও জ্ঞান তাকে সর্বোত্তম জিনিস গ্রহণ ও তার প্রতি সন্তুষ্টি এবং তা ধারণ করার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। আর সবচে’ মন্দ বিষয়কে প্রতিরোধ ও তার প্রতি ঘৃণা ও অসন্তুষ্টি প্রকাশে সহায়তা করবে। যেমন সাহাবারা বলতেন—হে আল্লাহর রাসূল, আমাদের কেউ তার মনের ভেতর এমনি কিছুর উপস্থিতি পায় যদি তা দাহ্য বস্তু হত তা কয়লায় পরিণত হয়ে যেত। তিনি বললেন, তোমরা কি এমন কিছুর উপলব্ধি করেছ? তারা বললেন, জি হ্যাঁ। তিনি বললেন, এটাই হচ্ছে সুস্পষ্ট ইমান। অন্য ভাষায়, সমস্ত প্রশংসা ওই আল্লাহর যিনি কুমন্ত্রণার দিকে তার কৌশলকে বানচাল করে দিয়েছেন।এ বিষয়ে দুটি বক্তব্য পাওয়া যায়।

একটি হচ্ছে: তা প্রত্যাখ্যান ও অপছন্দ করা ইমানের সুস্পষ্ট পরিচায়ক।
দ্বিতীয় হচ্ছে: তার মনে শয়তান-এর উপস্থিতি ও প্ররোচনা দেয়া সুস্পষ্ট ইমান। কেননা ইমানের সঙ্গে বৈপরীত্য সৃষ্টি ও তার দ্বারা মানকে নির্বাসিত করার ইচ্ছায় শয়তান এমনটি করে থাকে।

মহান আল্লাহ মানুষরে মনকে সর্বদা ঘুর্নায়মান বা তার সাদৃশ্য করে সৃষ্টি করেছেন। তাই তার এমন এক বস্তু দরকার যা সে বিচূর্ণ করবে। যদি তার মধ্যে কোন দানা রাখা হয় তবে তাকেই চূর্ণ করবে। আর যদি তার মধ্যে মাটি বা পাথর রাখা হয় তবে তাকেও বিচূর্ণ করবে। অতএব, মনের ভিতরে আন্দোলিত সমস্ত কল্পনা ও চিন্তাশক্তি জাঁতায় রক্ষিত দানা তুল্য। আর জাঁতা কখন ও কর্মহীন, নির্বিকার বসে থাকে না। তাই তার মধ্যে কিছু রাখতেই হবে। মানুষের মধ্যে কারও জাঁতা এমন যে নিজেও উপকৃত হয় এবং অন্যকেও উপকার পৌঁছায়। আর অধিকাংশ মানুষ তারা বালি, পাথর ও তৃন বিচূর্ণ করে। তারপর যখন খামির ও রুটি তৈরির সময় আসে তখনই চূর্ণ করার পরিচয় বেরিয়ে পড়ে।

আর এটাও জানা বিষয় যে, কল্পনার সংশোধন চিন্তার সংশোধনের তুলনায় অধিক সহজ। আর চিন্তার পরিশুদ্ধি ইচ্ছার পরিশুদ্ধির তুলনায় সহজ। এবং ইচ্ছার সংশোধন বিনষ্ট কর্মের প্রতিবিধানের তুলনায় সহজ। আর তার প্রতিবিধান —- তাই সবচে’ উপকারী চিকিৎসা হচ্ছে, তুমি নিজেকে অর্থহীন ভাবনায় না জড়িয়ে অর্থপূর্ণ কাজে ব্যস্ত রাখবে। অর্থহীন বিষয় চিন্তা-ভাবনা সব অনিষ্টের প্রবেশ পথ। আর যে নিরর্থক ভাবনায় জড়িয়ে পড়ে তার অর্থবহ কাজগুলো ছেড়ে অধিক লাভ জনক কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখবে। আর চিন্তা, কল্পনা, ইচ্ছা ও প্রেরণা শক্তিকে পরিশুদ্ধ করা অধিক বাঞ্ছনীয়। কেননা, এগুলোই হচ্ছে তোমার বৈশিষ্ট্য ও স্বরূপ যা দ্বারা তুমি আপন প্রভুর নৈকট্য বা বৈরাগ্য লাভ কর। অথচ তোমার প্রভুর নৈকট্য লাভ ও তার তোমার প্রতি সন্তুষ্টিই হচ্ছে সৌভাগ্যের সোপান। আর তার থেকে তোমার দূরত্ব ও তোমার প্রতি তার অসন্তুষ্টি হচ্ছে পূর্ণ অমঙ্গল। আর যার কল্পনাও চিন্তার সীমানায় দুর্বুদ্ধি ও মন্দ ভাবনার স্থান পায় তার সমস্ত কাজেই এর প্রভাব থাকে।

তোমার চিন্তা ও ইচ্ছা শক্তির পরিমণ্ডলে শয়তানকে স্থান দেয়া থেকে বিরত থাকবে। কেননা সে চিন্তাকে এমন ভাবে বিনষ্ট করে যার ক্ষতিপূরণ অনেক কঠিন হয়ে পড়বে। এবং সে তোমাকে ক্ষতিকর চিন্তা ও প্ররোচনায় নিক্ষেপ করবে। এবং সে তোমার ও তোমার মঙ্গলজনক চিন্তার মাঝে দেয়াল তৈরি করবে। অথচ তুমিই তাকে তোমার বিরুদ্ধে সহযোগিতা করেছ। তাকে তোমার হৃদয় ও কল্পনার মালিকানার আসনে বসিয়েছ সে এগুলোর মালিক বনে গেছে। এসব গুলির সমন্বিত সংশোধনের উপায় হচ্ছে, আপনার চিন্তাকে জ্ঞান ও ভাবনায় নিমগ্ন রাখা, যথা, তওহিদ ও তার দায়িত্ব সম্পর্কে জানা এবং মৃত্যুও তার পরবর্তী জান্নাত বা জাহান্নামের প্রবেশ সম্পর্কে ও মন্দ কর্ম ও তা থেকে বেঁচে থাকার উপায় সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা। ইচ্ছাও প্রতিজ্ঞার ক্ষেত্রে উপকারী ইচ্ছায় নিজেকে ব্যস্ত রাখা এবং অপকারী ইচ্ছা পরিত্যাগ করা। এই জাঁতাকে সংশোধনের মূল উপায় হচ্ছে অর্থবহ কাজে ব্যস্ত রাখা আর তার বিনাশ সাধান হচ্ছে অর্থহীন কাজে তাকে ব্যবহার করা।

চতুর্থ:

দায়িত্বে অবহেলাকারী অধিকাংশেরই সময় স্বল্পতা ও অবসরে অভাবের অভিযোগ তুলে। তবে সরেজমিনে অনুসন্ধানে তুমি লক্ষ করবে। এ গুলোর সবচে’ বড় কারণ হচ্ছে তাদের সময়ের বড় অংশ অর্থহীন কাজে বিনষ্ট হওয়া। তাদের বৈঠকগুলো থেকেও তুমি এসবের অনেক কিছুই অবহিত হতে পারবে। তুমি তা দেখতে পাবে ক্রীড়া-কৌতুক ও অসার গল্পের শুষ্ক পরিবেশ, নেতিবাচকতার নমুনা, অবহেলার আশ্রয়স্থল ও জীবনকে ধ্বংস করার পথ, অর্থবহ ও উপকারী বিষয়ে গুরুত্বহীন। আর এ নেতিবাচক কাজের ক্ষতি আরো তীব্র হয় যখন রোগাক্রান্ত কিছু সৎকর্মশীলরাও তাতে লিপ্ত হয়। অত:পর তাদের আসর গুলোই মন্দের দিক প্রতীক হয়ে যায়। আলেমে রব্বানী ইবনুল কায়্যিম তাদের সম্পর্কে আলোচনায় বলেন, সতীর্থদের মন্দ বৈঠক দুই প্রকার। তার একটি হচ্ছে, মনকে চাঙ্গা রাখা ও সময় কাটানোর উদ্দেশ্যে বৈঠক। এ প্রকারের বৈঠক তার পরকালের তুলনায় ক্ষতির পরিমাণ বেশি। আর ন্যূনতম ক্ষতি হচ্ছে, তা অন্তরকে দূষিত করে ও সময়ের অপচয় করে।

তবে কোন মজলিস উদ্দেশ্যপূর্ণ ও লক্ষ্য মুখী হয়, তবে তা কখন ও লক্ষ্য থেকে বিচ্যুতও হয়ে থাকে। ইবনুল কায়্যিম মজলিসের কিছু ক্ষতি থেকে সতর্ক করছেন। তিনি দ্বিতীয় প্রকারের উলে¬খ করে বলেন, দ্বিতীয়ত হচ্ছে, পরস্পর একে অপরকে সত্য ও ধৈর্যধারণের উপদেশ এবং নাজাতের উপকরণ সমূহের ক্ষেত্রে সহযোগিতার ব্যাপারে পারস্পরিক মিলন বা সমাবেশ। এটা হচ্ছে মহত্তম গনিমত ও সর্বাধিক উপকারী বিষয়। কিন্তু তাতেও দুটি ক্ষতির দিক রয়েছে।

প্রথমত: প্রয়োজনের তুলনায় অধিক কথাবার্তা ও মেলামেশা বা ঘনিষ্ঠতা অর্জন।
দ্বিতীয় হচ্ছে: এটি একটি মনের আকাক্সক্ষা ও অভ্যাসে পরিণত হয়ে যাবে। যা দ্বারা উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। এতদ সত্ত্বেও ভালোদের সংস্পর্শ অর্জন এবং নেককার মুরুব্বিদের সান্নিধ্যর প্রতি গুরুত্বারোপ করতে কোন নিষেধ নেই।

তবে গুরুত্বের বিষয় হচ্ছে, সঙ্গী নির্বাচন দুরদর্শিতা ও উত্তম নির্বাচন করা। আর নিজেকে উপকারী মজলিসে নিয়মানুবর্তিতার সাথে সময় দিতে প্রস্তুত করা। আর মজলিসে আলোচিত কথা-কাজ ও বিশ্বাসের সঙ্গে নিজেকে পরিমাপ করা এবং তার জন্যে চেষ্টা সাধনা করা। কেননা এ ব্যাপারে অবহেলা ক্ষতি ডেকে আনবে। আবার কখনোও এ অভিযান অর্থহীন বিষয়ের দিকেও মোড় নিতে পারে। আর সে মুহূর্তে অর্থহীন ও ক্রীড়া কৌতুকে আসক্ত অন্তর মন্দ ও অর্থহীন বৈঠক উপস্থিত হতে প্ররোচিত হতে পারে। আর এটাই হচ্ছে শয়তানের পদক্ষেপ। মোট কথা হচ্ছে আড্ডা ও মেলামেশা হচ্ছে অঙ্গী। নফ্সে আম্মারা বা নফ্সে মুতমাআন্নাহ উভয়ের জন্য। এই মিশ্রণ থেকে ফলাফল প্রকাশ পাবে। মিশ্রণ যদি উত্তম হয় তবে তার ফলাফল ও ভালো হবে। এমনকি পবিত্র আত্মাসমূহ তার মিশ্রণ ফেরেশতা থেকে। আর মন্দ আত্মা তার মিশ্রণ শয়তান থেকে। তাই আল্লাহ তাআলা তার প্রজ্ঞায় ও কৌশলে পুণ্যবতী নারীদেরকে পুণ্যবান পুরুষদের জন্য এবং মন্দ নারীদেরকে মন্দাপুরুষদের জন্য নির্বাচন করেছেন।

মানুষের কাজও গুরুত্বের বিষয়ের প্রতি দৃষ্টিপাত করলে তাদের অর্থহীন ব্যস্ততার পরিমাণ সম্পর্কে উপলব্ধি করতে পারবে। ক্রীড়া-কৌতুক, আনন্দ, উল¬স ও আনন্দদায়ক বা খেলাধুলা এবং হাত পায়ের নিরর্থক সমস্ত আন্দোলন। নানা ধরনের অর্থহীন প্রতিযোগিতা রান্না ও পোশাকের গ্রন্থাদী এবং গল্পের আসর ও নিরর্থক আনন্দ ভ্রমণ। বিভিন্ন চ্যানেল ও সম্প্রচারের পরিবেশিত অনুষ্ঠানের গভীর মনোনিবেশ এবং বিশ্ব সংবাদের গূঢ় রহস্য উদ্ঘাটন যা সংশি¬ষ্ট ব্যক্তিদের ছাড়া অন্যদের কোন উপকারে আসে না। পত্র-পত্রিকা, ম্যাগাজিন পাঠ ও অর্থহীন পড়াশোনা সহ আরো অনেক নিষিদ্ধ জিনিস রয়েছে। সুস্পষ্ট নিষিদ্ধ বস্তু দেখা ও শোনা যথা : পোশাক প্রদর্শনকারী নারীদের প্রতিযোগিতা ও সুন্দরী প্রতিযোগিতা। তারা এসব কিছু তোমাকে এই বিশ্ব ও তার কল্যাণ সম্পর্কে অবহিত করবে। আর তার ভ্রান্ত চেষ্টা তোমার কাছে সুস্পষ্ট করবে। অথচ সে মনে করছে কত উত্তম কাজই না সে করেছে। যারা আল্লাহ ও পরকালের বিশ্বাস রাখে না তাদের থেকে যদি এ কাজ প্রত্যাশিত না হয় তা হলে মুসলমানদের অবস্থা কী?

তিক্ত বাস্তবতা হচ্ছে, যাদের ওপর আল্লাহ হেদায়েতের নেয়ামত দিয়েছেন তাদের কারো অধিকাংশ গুরুত্ব মানুষ লক্ষ্য করে তাদের তিক্ততা বেড়ে যায়। এদের সম্পর্কে প্রথম বক্তব্য হচ্ছে তারা যেন বয়স ফুরিয়ে যাওয়ার নিজেদের নিয়ে হিসাব-নিকাশ করে। ইবনুল কায়্যূম রহ. বলেন: পদক্ষেপের সংরক্ষণ হচ্ছে নিজের কদমকে সওয়াবের প্রত্যাশা ছাড়া স্থানান্তর না করা। যদি তার পদক্ষেপে অতিরিক্ত সওয়াব প্রাপ্তি না হয়, তবে বসে থাকাই উত্তম। আর প্রত্যেক মুবাহ কাজে আল্লাহর উদ্দেশ্যে নিয়ত করলে তা সওয়াব হিসেবে পরিগণিত হবে। শরীর ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সমস্ত কাজ ও আন্দোলনও ঠিক অনুরূপ।

ইসলাম প্রচার ব্যুরো, রাবওয়াহ, রিয়াদ


'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক'
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে
আপনি Facebook, Whatsapp, Telegram, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। ইসলামি দা’ওয়াহ্‌র ৮০ টিরও বেশী উপায়! বিস্তারিত জানতে এইখানে ক্লিক করুন "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]

দ্বীনী খিদমায় অংশ নিন

2 COMMENTS

আপনার মন্তব্য লিখুন