লেখক: সানাউল্লাহ নজির আহমদ
ইখলাসপূর্ণ ইবাদত
ইখলাসপূর্ণ ইবাদত বান্দার কাছে আল্লাহর প্রাপ্য একটি অধিকার। সকল ইবাদত-উপাসনা অদ্বিতীয় আল্লাহর জন্যই নিবেদিত হতে হবে এ-বিষয়টি তাওহীদের মূল দাবি। ইবাদত আরাধনার কোনো ক্ষেত্রেই আল্লাহ ভিন্ন অন্য কোনো সত্ত্বার সমীপে নিজেদেরকে আরোপিত করা যাবেনা। আদেশ-নিষেধের অনুবর্তীতা, আনুগত্য ও ইতায়াত পাওয়ার অধিকার একমাত্র রাব্বুল আলামীনের। তবে ইবাদত-আনুগত্য শুষ্ক প্রাণহীন হৃদ্যতাবিবর্জিত হলে চলবেনা। ইবাদত হতে হবে ইখলাসপূর্ণ প্রাণবন্ত ও ঐকান্তিক। ইবাদত হতে হবে রিয়া ও লোক-দেখানোর ভাব থেকে মুক্ত। শিরকের সামান্যতম ছোঁয়া থেকেও পবিত্র। জীবন-মৃত্যু দোয়া আরাধনার সবটুকুই সমর্পিত হতে হবে একমাত্র আল্লাহর সমীপে। কোনো ক্ষেত্রে আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করা যাবেনা। মনোজগত ও বাহ্যিক আচরণের সকল দিক সপোর্দ করতে হবে আল্লাহর আদেশ নিষেধের আওতায়।এরশাদ হয়েছে: “বলুন: আমার নামায, আমার কুরবানী এবং আমার জীবন ও মরণ বিশ্বপ্রতিপালকের জন্য সমর্পিত। তার কোন অংশীদার নেই। আমি তাই আদিষ্ট হয়েছি এবং আমি প্রথম আত্মসমর্পনকারী।” [আল আন আম-১৬১-১৬২]
আরো এরশাদ হয়েছে: “আমি আপনার উপর এ কিতাব যথার্থরূপে নাযিল করেছি। অতএব আপনি নিষ্ঠার সাথে আল্লাহ তায়ালার ইবাদত করুন।” [আয যুমার:২]
সহীহ হাদীসে কুদসীতে এসেছে আল্লাহ তায়ালা বলেন: “আমি সমস্ত অংশীদারদের ভিতর বেশী অমুখাপেক্ষি, যে এমন আমল করল যাতে সে আমার সাথে অন্য কাউকে অংশীদার সাব্যস্ত করেছে আমি তার থেকে দায়মুক্ত। সে যেন তার আমলের ছোয়াব, যাকে অংশীদার বানিয়েছে, তার কাছ থেকে চেয়ে নেয়।” [মুহাল্লা : ৯/১৮৪] মুয়ায ইবনে জাবাল রা. বলেন, আমি একটি গাধার পিঠে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওসাল্লামের সঙ্গী ছিলাম।
তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করে বললেন: “হে মুয়ায, তুমি কি জান বান্দার উপর আল্লাহর কি হক ? এবং আল্লাহর উপর বান্দার কি হক ? উত্তর করে বললাম, আল্লাহ এবং তার রাসূল ভাল জানেন। তিনি বললেন, বান্দার উপর আল্লাহর হক হল, বান্দা তাঁর এবাদত করবে, তাঁর সাথে অন্য কাউকে শরীক করবে না। আর আল্লাহর উপর বান্দার হক হল, যে ব্যিক্তি তাঁর সাথে কাউকে শরীক করলনা , তাকে তিনি শাস্তি দিবেন না। আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি কি মানুষদেরকে এ-বিষয়ে সুসংবাদ দিব না? তিনি বললেন , সুসংবাদ দিওনা, কেননা তারা অকর্মন্য হয়ে বসে থাকবে।” [আল জামেউস্সাহীহ :২৮৫৬]
আরেকটি হাদীসে এসেছে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “আল্লাহ তোমাদের শরীর ও চেহারার দিকে তাকান না। তিনি তাকান তোমাদের হৃদয়ের প্রতি।” [সাহীহ তারগীব : ১৫]
ইবাদতের ক্ষেত্রে ইখলাস একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ইবাদতের সবটুকু, ভয়-ভক্তি-ভালোবাসা-আসা-ভরসার সর্বশেষ বিন্দুটুক, নিবেদিত করতে হবে একমাত্র আল্লাহর উদ্দেশে। অংশীবাদী চেতনার লঘু থেকে লঘুতম স্পর্শ থেকে ঊর্ধে উঠাতে হবে নিজেদের। তবেই তো আমরা বান্দার ওপর আল্লাহর গুরুত্বপূর্ণ হক _ ইখলাসপূর্ণ ইবাদতে _ নিজেদেরেক আরোপিত করতে সমর্থ হব।
'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক'
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে আপনি Facebook, Whatsapp, Telegram, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। ইসলামি দা’ওয়াহ্র ৮০ টিরও বেশী উপায়! বিস্তারিত জানতে এইখানে ক্লিক করুন "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]
জাযাকাল্লাহ খাইরান