জ্ঞানের কল্যাণ

0
145

লেখকঃ ড. আয়িদ আল করনী | অনুবাদঃ ডা. হাফেজ মাওলানা মােহাম্মদ নূর হােছাইন

আপনি যা জানতেন না, আল্লাহ আপনাকে তা শিখিয়েছেন। আর আপনার প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ চির মহান।” [সূরা-৪ আন নিসা : আয়াত-১১৩]

মূর্খতা মানুষের বিবেক ও আত্মাকে হত্যা করে। আমি আপনাকে সতর্ক করছি, আপনি যেন একজন মুখ না হন।” [১১-সূরা হূদ : আয়াত-৪৬]

জ্ঞান এমন এক আলাে, যা প্রজ্ঞার দিকে নিয়ে যায়। এটি মানুষের আত্মার প্রাণ ও চরিত্রের ইন্ধন।

যে মৃত ছিল, অতঃপর আমি তাকে জীবিত করেছি ও মানুষের মধ্যে চলার জন্য একটি আলাে দিয়েছি, সে কি তার মতাে, যে অন্ধকারে আছে এবং সেখান থেকে সে কখনও বের হয়ে আসতে পারবে না?” [৬-সূরা আল আন’আম : আয়াত-১২২]

সুখ ও মনের তেজ শিক্ষার মাধ্যমে আসে। (২২তম সংস্করণের মূল আরবী কিতাবে আছে : আনন্দ ও প্রফুল্লতা জ্ঞানের মাধ্যমে আসে।) কারণ জ্ঞানের মাধ্যমে মানুষ তার উদ্দেশ্য পুরাে করতে পারে এবং পূর্বে তার থেকে যা গােপন করা হয়েছিল, তা আবিষ্কার করতে পারে। আত্মা স্বভাবগতভাবেই মনকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে নতুন জ্ঞানার্জনের আকাক্ষা সৃষ্টি করে।

মূর্খতা হলাে বিরক্তি ও বিষন্নতা। কেননা মূর্খ ব্যক্তি এমন জীবন যাপন করে, যা কখনও নতুন বা মন-উত্তেজক কিছু উৎসর্গ করে না। গতকাল আজকের মতােই, আজও পালাক্রমে আগামীকালের মতােই। (অর্থাৎ মূর্খদের সময় জ্ঞান নেই, তাদের কাছে সময়ের মূল্য নেই। তারা মূর্খতার কারণে অতীতকে যেভাবে নষ্ট করেছে, বর্তমানকেও সেভাবে নষ্ট করে ও একইভাবে ভবিষ্যৎকেও নষ্ট করবে -অনুবাদক)।

আপনি যদি সুখ চান তবে জ্ঞান ও শিক্ষার সন্ধান করুন, তাহলেই দেখবেন, দুশ্চিন্তা, হতাশা ও দুঃখ-বেদনা আপনাকে ছেড়ে পালাবে। “এবং বলুন : প্রভু! আমার জ্ঞান বাড়িয়ে দিন।” [সূরা-২০ ত্বাহা : আয়াত-১১৪]

তােমার প্রভু- যিনি (তােমাকে এবং সবকিছু) সৃষ্টি করেছেন, তােমার সে (মহান) প্রভুর নামে পড়।” [৯৬-সূরা আল আলা : আয়াত-১]

নবী করীম (সাঃ) বলেছেন : “আল্লাহ যার কল্যাণ চান, তাকে তিনি দ্বীনের জ্ঞান দান করেন।”

অতএব, কেহ মূর্খ হলে সে যেন তার সম্পদ ও তার সামাজিক মর্যাদা নিয়ে বড়াই না করে : তার জীবন অর্থহীন এবং তার কৃতিত্ব শােচনীয়ভাবে অসম্পূর্ণ।

আপনার প্রভুর পক্ষ থেকে আপনার নিকট যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তা সত্য বলে যে জানে তবে কি সে তার মতাে যে অন্ধ?” [১৩-সূরা রা’আদ : আয়াত-১৯]

কুরআনের প্রসিদ্ধ মুফাসৃসির আল্লামা যামাখশারী (রহ) কবিতাকারে বলেছেন:

১. “ইলম শিক্ষায় আমি যে বিনিদ্র রজনী যাপন করি তা আমার কাছে সম্মােহনকারিনী রমণীর সঙ্গ বা আলিঙ্গনের চেয়েও বেশি প্রিয়।

২. কোন জটিল বিষয় বুঝার সময় আমার হৃদয়ের গভীরে আনন্দ-উল্লাস হয় তা আমার নিকট সর্বাপেক্ষা চমক্কার পানীয়ের চেয়েও বেশি সুস্বাদু।

৩. কাগজের উপরে (লিখার সময়ে) আমার কলমে যে খসখস শব্দ হয় তা প্রেমিক-প্রেমিকার (আলিঙ্গনের শব্দের) চেয়েও বেশি মজাদার।

৪. কাগজের ধুলি ঝাড়ার সময় আমার হাতে যে শব্দ হয় তা ঢােল বাজানোের সময় নারীর হাতে যে শব্দ হয় তার চেয়েও বেশি আনন্দদায়ক।

৫. ওহে! যে শুধু বৃথা আশার মাধ্যমে আমার সমান মর্যাদা পাওয়ার চেষ্টা করে, অনেক বেশি উচ্চ বলে যে চড়তে কষ্ট পায় তার মাঝে আর অন্যজন যে চড়ে ও চূড়ায় পৌছে তার মাঝে কতইনা বেশি পার্থক্য!

৬. আমি রাতভর জেগে থাকি আর তুমি তখন ঘুমিয়ে থাক, অথচ তুমি আমাকে ছাড়িয়ে যেতে চাও! শিক্ষা কতই না মহৎ! আর এর মাধ্যমে | আত্মা কতই না সুখী হয়!”

যে তার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আসা সুস্পষ্ট প্রমাণের ওপর আছে সে কি তার মত, যার জন্য তার মন্দ কাজকে সুশােভিত করে দেয়া হয়েছে আর যারা নিজেদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করেছে?” [৪৭-সূরা মুহাম্মদ বা কেতাল : আয়াত-১৪]

উৎসঃ লা তাহযান [হতাশ হবেন না], ক্রমিক নংঃ ৩৯, পৃষ্ঠা: ৯৯ – ১০২

Print Friendly, PDF & Email


'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক'
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে
আপনি Facebook, Whatsapp, Telegram, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। ইসলামি দা’ওয়াহ্‌র ৮০ টিরও বেশী উপায়! বিস্তারিত জানতে এইখানে ক্লিক করুন "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]

দ্বীনী খিদমায় অংশ নিন

আপনার মন্তব্য লিখুন