সৌদি আরবে সাধারণ মানুষদের জীবনযাত্রা নিয়ে যখন প্রথমবার লিখতে বসি, আমার উদ্দেশ্য ছিল ওদের নিয়ে মানুষের মনে যে ভুল ধারণা আছে তা যেন একটু হলেও বদলায় তার চেষ্টা করা। সেই সাথে এই ভয়ও ছিল যে অনেকেই হয়ত লেখাটি সহজভাবে নিতে পারবেন না – স্বাভাবিক ভাবেই আমরা যদি আজীবন ভুল তথ্য জেনে বড় হই, হঠাৎ কেউ সম্পূর্ণ বিপরীত কথা বললে মেনে নেয়া তো সহজ নয়। তাই আমি কিছুটা ভীত ছিলাম লেখার সময়। আবার এমনও ভয় ছিল যে কেউ ভাবতে পারেন এসব লেখার আড়ালে হয়ত কোন ব্যক্তিগত ফায়দা রয়েছে। হয়ত বা সেকারনেই আরও অনেক মনোমুগ্ধকর অভিজ্ঞতা লেখা হয়নি। তাই আমার দেখা এদেশের আরও কিছু ‘অজানা’ দিক তুলে ধরছি এখানে।
আমার মেয়ের জন্মের পর যখন প্রথমবারের মত ওকে নিয়ে এদেশে আসি, ওর বয়স তখন আড়াই মাস। বেজায় চেঁচাতে পারত, গলার আওয়াজও ছিল বড় বেশী তীক্ষ্ণ। ইমিগ্রেশন এ দাঁড়িয়ে আছি, শুরু হোল non stop কান্না। আমি তো অস্থির। যদিও এরা মহিলাদের অসম্ভব রকম বেশী সম্মান করে বলে মহিলাদের লাইন-এর সামনে দাঁড়াতে বলে, তারপরও আমার সামনে ছিলেন আর না হলেও আরও ৪-৫ টা পরিবার। সবাই আরব, সাথে তাঁদেরও একাধিক সন্তান। আমি অবাক হয়ে দেখলাম মুখে হাসি নিয়ে সবাই মিলে আমাকে সামনে পাঠিয়ে দিলেন। সামান্য একটু সাহায্য—কিন্তু অন্যকে নিজের ওপর প্রাধান্য দেয়ার ব্যাপারটি আমাকে এতো নাড়া দিয়েছিল যে ঘটনাটি আজও আমি ভুলিনি। এই সুন্দর অভিজ্ঞতার জের কাটার আগেই মুগ্ধ হতে হোল আরেক সৌদির ব্যবহারে। যারা এয়ারপোর্টের কাছাকাছি চাকরি করেন, তাঁরা শহরে ফেরার পথে অনেক সময় যাত্রী নিয়ে ফেরেন। এর বিনিময়ে ট্যাক্সির যা ভাড়া, তাই তাঁরা নেন। আমরা ওরকম একজনের গাড়িতেই উঠেছিলাম। পথে মাগরিবের সালাতের সময় হয়ে যাওয়াতে গাড়ির চালক খুব চিন্তিত হয়ে পড়লেন। তিনি চাইছিলেন আমাদের সালাতের আগেই নামিয়ে দিতে। অগত্যা যখন সালাতের জন্য থামতেই হোল, আমি আর আমার মেয়ে গাড়িতে বসে থাকব শুনে তিনি তাঁর গাড়ির চাবিটা আমার হাসবেন্ডের হাতে তুলে দিলেন। খুব সামান্য একটা কাজ। কিন্তু চিন্তা করলেই মনে হয় কী অসাধারণ শিক্ষা পেয়ে বড় হয়েছেন যে একটা অপরিচিত লোকের হাতে নিজের গাড়ির চাবি তুলে দিলেন যেন আমরা ভয় না পাই একা থাকতে অপরিচিত ভিনদেশী এক মানুষের গাড়িতে!
সবাই যে খুব ধার্মিক একথাটা সবসময় ঠিক না। কিন্তু কতগুলো মূল্যবোধ তাঁদের রক্তে মিশে গিয়েছে। আমারা নিজেদের দিকে তাকালে হয়ত ব্যাপারটা বুঝবো। আমরা যারা অন্য রকম জীবনধারা থেকে ইসলাম এর পথে আসার তৌফিক পেয়েছি – আমরা কিন্তু আজও অনেক কিছুতেই ইসলাম বিরোধী চিন্তাধারা ছাড়তে পারিনা। ঠিক তেমনি, ওদের কম ধার্মিক মানুষগুলোকে দেখলে বুঝা যায় ওরা কত বেশী ইসলামী পরিবেশে বড় হয়েছে যে ইসলাম শুধু এদেশের দ্বীন না, কিন্তু জীবনযাত্রায় মিশে গিয়েছে। রাস্তায় কখনো সালাতের সময় হয়ে গেলে যাদের রাস্তায় ঘুরতে দেখেছি তাদের মাঝে আরব খুব কম, অথবা নেই বললেই চলে —হয় অমুসলিম নয়ত আমাদের উপমহাদেশীয় বে-নামাজি মুসলিম। ছোট ছোট বাচ্চাগুলোও মসজিদ এ গিয়ে সালাত আদায় করে। এখনো দাওয়াতে যাওয়া বা মার্কেটে যাওয়ার সময় ঠিক করা হয় সালাত কে কেন্দ্র করে – এশার পর, অথবা আসরের পরে। সালাতের ওয়াক্ত দিয়েই সময় মাপা হয়। হিজরি ক্যালেন্ডার ব্যবহার হয় অনেক এখানে – হ্যাঁ, ওরা আরব, তা তো করারই কথা। সে বললে তো আমরাও বাঙ্গালী – আজকের বাংলা তারিখটা না দেখে কয়জন বলতে পারব? হিজরি তারিখ তো কেবল একটা মামুলি হিসাব না, এ যে আমাদের মুসলিমদের অনেক বড় সম্পদ!
সৌদি আরবের গরমের ‘সুনাম’ নিশ্চয়ই অনেকেই শুনেছেন। এখানে মূলত বৃষ্টি পড়ে শীতে! অনাবৃষ্টির সময় এখানে ঘোষণা দিয়ে কখনো পুরো দেশে, কখনো বা বিভিন্ন শহরে আল্লাহর কাছে বৃষ্টি প্রার্থণা করে সালাত আদায় করা হয় – এই সালাতের নাম সালাতুল ইস্তিসকা। আমরা ইসলামের ইতিহাসে পড়েছি যে আল্লাহর রাসুল (সা) এর সময়, সাহাবাদের সময় এমন সালাত আদায় করা হত এবং বৃষ্টি নেমে আসতো। এখানে আমি অন্তত যতবার শুনেছি যে এই সালাত হয়েছে, প্রতিবারই বৃষ্টি পড়তে দেখেছি অথবা আকাশে কালো মেঘ জমতে দেখেছি! এসমস্ত ইসলামের চর্চা ওরা আজও ধরে রেখেছে। তেমনি ধরে রেখেছে সূর্যগ্রহণ বা চন্দ্রগ্রহণ এর সালাত।
এতক্ষণ যা লিখলাম এসব বুরাইদা তে আসার আগে যা দেখেছি সেসব। এখানে আসার পর আরব সমাজকে আরও কাছে থেকে দেখেছি। বুরাইদা বলতে গেলে সৌদি সংস্কৃতির শহর। এখানে এখনো অমুসলিম মহিলারা নিকাব দিতে বাধ্য হন। কেউ বাধ্য করে না। কিন্তু সবাই যেখানে মুখ ঢাকা সেখানে নিজে মুখ খুলে ঘুরার মত মানসিকতাই এখানে কারুর হবে না। অর্থাৎ এই সমাজটা এখনো ভিন্ন সংস্কৃতির প্রভাব মুক্ত। তাই প্রায় প্রতিদিনই ওদের নিজস্বতার পরিচয় পাই।
এখানের আলিমদের নিয়ে অনেকের বিস্তর অভিযোগ। দ্বীন থেকে তাঁরা মানুষকে দূরে রাখছেন, ইত্যাদি। আমাদের নামে কেউ যখন অসত্য কিছু বলে, আমরা তো মুখ লাল করে প্রতিবাদ করে বসি। যখন ইসলামী সমাজের সর্বোত্তম মানুষ—অর্থাৎ আলিমদের নিয়ে অসত্য কথা শুনি, আমাদের অন্তর কেন তার প্রতিবাদ করে না? আলিমদের একটি বড় কাজ মানুষকে শেখানো। আর তাঁরা সেটা কী পরিমাণে করেন সেটা যে বাঙ্গালী এদেশে থেকেও কোনদিন মসজিদে যায় না, বা গেলেও শুদ্ধ আরবি ভাষায় দেয়া বক্তব্যের কিছুই বুঝে না, তার মুখে শুনে বিচার করতে বসলে তো চলবে না! প্রতিটি জুম্মার খুতবার বিষয়বস্তু থাকে অন্যায়ের প্রতিবাদ করার দায়িত্ব, সঠিক কাজের পথ দেখানোর দায়িত্ব, সদাকার গুরুত্ব, ইস্রাফ (অপচয়) না করার আহ্বান, মুসলিম ভাইদের সাহায্য করার দায়িত্ব, আকীদা, জিহাদ এসবের ওপর। আর বিভিন্ন মসজিদে যেসব দারস দিনের পর দিন চলতেই থাকে, তার কথা নাই বা বললাম।
সিরিয়ার জন্য জুম্মায়, ফজর বা অন্য ওয়াক্তের সালাতে ইমামরা কুনুত করেই চলেছেন, আলিমরা বলেই চলেছেন “আরব নেতারা তোমরা কোথায়?” – কেউ কেউ প্রকাশ্যেই প্রতিবাদ করছেন শাসকদের এই চুপ থাকা নিয়ে – সাধারণ মানুষের মধ্যেও সিরিয়ার জন্য সচেতনতা আছে – আর আমাদের বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ জানেই না সিরিয়াতে কী চলছে! আর এখানে সাধারণ মানুষ অথবা আলিম – কেউ এ নিয়ে শান্তিতে নেই। যদি কারুর জানার আগ্রহ থাকে, তাহলে ইন্টারনেটে সিরিয়া নিয়ে বা সৌদি আলিমদের নাম দিয়ে খুঁজলেই তাঁদের খুতবা, বক্তৃতা দেখতে পাবেন। আমি আজ পর্যন্ত বাংলাদেশী যতজনকে সিরিয়ার কথা বলেছি, তাদের অনেকে তো স্মৃতির পাতা ঘেঁটে মনে করেন যে সিরিয়া দেশ না শহর, না কী! আর বাকিরা যারা তা জানেন, মনে করেন ওখানে রাজনৈতিক দাঙ্গা চলছে। সে যাই হোক, এদেশের একটা বড় সম্পদ হলেন এদেশের আলিমরা এবং তাঁদের থেকে যারা শিখছেন এবং সেই অনুযায়ী জীবন গড়ছেন তাঁরা।
এখানকার সাধারণ মানুষ আলিমদের অসম্ভব সম্মান করেন। তাঁদের এ বোধ আছে যে আলিমরা সমাজের অপরিহার্য অঙ্গ – কেউ মারা গেলে কুরআন খতম দেয়ার মেশিন নন! অনেক, অনেক ছাত্র নিজের উৎসাহে শরিয়াহ পড়তে যায়। এইতো কদিন আগেই শুনলাম এক ছাত্রের কথা। তার বাবা Qassim University এর College of Computer এর ডিন। অসম্ভব মেধাবী ছাত্র, এখানের যেকোনো ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার মত যোগ্যতা তার আছে। আমাদের চোখে লোভনীয় subject ছেড়ে সে বেছে নিয়েছে শরিয়াহ। এমন বহু ছেলে মেয়ে আছে এখানে। আর অন্য বিষয়ে পড়লেও অনেকেই দ্বীন এর দিকটা ছেড়ে দেয় না, দেয়ার উপায়ও নেই। মসজিদে মসজিদে দারস হতেই থাকে, বিভিন্ন সালাতের পর পরই শুরু হয়ে যায়। নিজে যেতে না চাইলেও যখন দেখে বন্ধুরা যাচ্ছে, নিজেও যেয়ে বসে শুনে তখন।
প্রতি মহল্লায় মহিলা এবং শিশুদের জন্য কুরআন এর হিফয আর তাজউইদ শেখার স্কুল আছে। বাচ্চারা শুনে শুনে হিফয করছে সেখানে, যারা পড়তে পারে তারা পড়ছে। পার্কে যখন যাই মেয়েকে নিয়ে, আর সালাত এর সময় মাইকে তিলাওয়াত শুনতে পাই – সাথে শুনি আশে পাশে যারা খেলছে সেই বাচ্চাগুলো ইমাম এর সাথে তাল মিলিয়ে সেই সূরা পড়ছে! মায়েদের সাথে যারা বিভিন্ন দারস এ যায়, তাদের ওপর এর প্রভাব অসাধারণ। অনেকেই মায়ের পাশে বসে দারস এর নোট নেয়ার ভান করে কাগজের ওপর কলম চালায়। মা মসজিদে বসে কুরআন পড়লে ওরা নিজেরাও এক কপি নিয়ে বসে পড়ার ভান করে! খুতবা শোনা, দারস শোনাটাকে ওরা জীবনের এক অবিচ্ছেদ্দ্য অংশ হিসেবেই দেখে। মজার ব্যাপার হোল এখানে কিন্তু অনারবদের যেতে কোনও মানা নেই। কিন্তু কেউ যায় না। নাহয় আরবি বোঝেন না দেখে অনেকে যান না। তাহলে যা জানেন না তা নিয়ে দেশে ফিরে সমালোচনা কেন করেন তাঁরা?
এখানে গাড়ি পার্ক করার নিয়ম বড় অদ্ভুত। নিজের প্রাইভেট বাড়িতে গাড়ির গ্যারাজ আছে অনেকের। ভাড়া ফ্ল্যাট বাড়িতে সেসব কিছু নেই। লোকে তাদের brand new গাড়ি বাড়ির সামনে খোলা রাস্তায় পার্ক করে, চুরির ভয় নেই! আর এই শহরে অন্তত চুরি করাটাও মহা যন্ত্রণার হবে বলে আমি মনে করি। মসজিদ ভিত্তিক মহল্লা হওয়ায় সবাই সবাইকে চেনে, কার বাড়িতে কে থাকে তাও জানে। চুরির মত এমন একটা কাজ সেরে পালানোটা সহজ নয়। তার ওপর আছে শরিয়ত এর শাস্তি। অল্প বয়সে হাত খোয়ানোর সাহস কয়জনের হবে? এখানে অপরাধ যদি করতে চায়, তার অত্যন্ত সাহস নিয়ে করতে হবে। জেল খাটার সাহস মানুষের থাকে, সেই সাথে জামিনে মুক্তি পাওয়ার আশাও থাকে। মাথাই হোক আর হাতই হোক, অপরাধ ভেদে এর কোনটাই কেউ হারাতে চাইবে না, আর এও জানা আছে যে এসব একবার হারালে কোনও জামিনেই ফেরত পাওয়া যাবে না। অপরাধ না করাটাই তাই বেশীরভাগের কাছে যুক্তিসঙ্গত!
আরবদের মেহমানদারি আমাদের থেকে কিছুটা ভিন্ন ধরনের! একদিন মসজিদ থেকে আমার মেয়ে সমেত তার বাবাকে জোর করেই মহল্লার মুরুব্বী একজন বয়স্ক লোক নিয়ে গেলেন তাঁদের আসরে। অল্প বয়সী ছেলেরা আরবি কফি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে, যতবার মেহমান খেতে চায় ততবার ঢেলে দিতেই থাকবে, বসবে না। খাওয়ার আয়োজনও অদ্ভুত, বড় থালায় আস্ত দুম্বার রোস্ট আর পোলাও রাখা আছে। সেই একই থালা থেকেই সবাই খেয়ে নিবে। প্লেটের ঝামেলা নেই। অল্প বয়সীরা কিন্তু মুরুব্বীদের সাথে বসবে না। বড়দের খাওয়া শেষ হলে তারপর তারা ওই একই প্লেটেই খেতে বসবে। আর আমি যাদের অল্প বয়সী বলছি তারা ২০/২২ বছরের যুবক, বেশীরভাগই বিবাহিত। কেউ হয়ত চাকুরি করে, কেউ ভেড়া চরায়, কেউ ব্যবসা দেখে। তাঁদের খাওয়া দাওয়ার এই আয়োজন যারা এড়িয়ে যেতে চান, তাঁদের এশার সালাত আদায় করেই মসজিদ থেকে পলায়ন করা জরুরী, নয়ত ওখানে না যেয়ে উপায় নেই! বয়স্ক একজন যখন নিজের মানুষ মনে করে বার বার মিনতি করবেন তাঁর আসরে গিয়ে একটু বসার জন্য, সেই মিনতি উপেক্ষা করা কারুর পক্ষে সহজ নয়। আর এর বিনময়ে তাঁরা একবারও আশা করেন না যে পাল্টা দাওয়াত দেয়া হবে তাঁদের। মেহমানদারী করতে পেরেই তাঁরা ধন্য।
আর মহিলারাও খুব আন্তরিক। এবার মসজিদে ৫ দিন ব্যপি দারস এর আয়জন করা হয়েছিল। চা নাস্তা মসজিদের তরফ থেকেই দেয়া হয়। অনেক মহিলা নিজের বাসা থেকে এখানকার বিশেষ কফি বানিয়ে নিয়ে আসেন, খেজুর সহ। এই কফিতে কোনও চিনি দেয়া হয় না, খেজুর দিয়ে খেতে হয়। প্রায় প্রতিদিন খেয়াল করলাম যে কফি ওই মহিলা আনলেও সেটা পড়ে আছে আমাদের কয়জনের কাছে। যিনি এনেছেন তাঁর নিজের খেয়াল নেই কিছু, আর যারা সেটা উপভোগ করছেন তাঁদেরও এটা কোনও ব্যাপার বলে মনে হচ্ছে না। কেবল খালি ফ্লাস্কটা ওই মহিলার কাছে ফেরত যাচ্ছে! ওদের মাঝে একধরনের আপন করে নেয়ার আচরণ প্রকাশ পায়। সবার ব্যাগেই মনে হয় চকলেট বা বিস্কুট কিছু না কিছু অনেক পরিমাণে থাকে! হয়ত মসজিদে কোনও বাচ্চার কান্নায় তার মা কিছুই শুনতে পাচ্ছেন না, পাশের মহিলা এসে বাচ্চাটিকে কোনও একটা খাবার দিয়ে থামিয়ে দিবেন। একটা-কে যখন দিলেন, তখন মসজিদের সবকটি শিশুকেই দিবেন!
আগেও বলেছি যে এমন নয় যে কেউ অন্যায় করে না অথবা ধর্ম পালনে ঘাটতি নেই। কিন্তু যেখানে সারাক্ষণ ভালো কিছু দেখছে, শুনছে, সেখানকার মানুষের upbringing এর ধরনটাই আলাদা। এইতো আজকে আর-রাজহি মসজিদে জুম্মার খুতবাহ দিলেন মসজিদুল হারামের একজন খতীব। এই মসজিদের খতীব যিনি, তিনিও অসাধারণ সুন্দর খুতবা দেন। কিন্তু মসজিদুল হারামের খতীব এসেছেন শুনে আজকে অনেকেই এই মসজিদে জুম্মার সালাত আদায় করতে এসেছিলেন। সালাতের কথা আর নাই বললাম, অসম্ভব সুন্দর! খুতবার বিষয়বস্তু ছিল বিচার দিবস। আমি স্পষ্ট বুঝতে পারছিলাম আমার আশে পাশের মহিলারা কেঁদে কেঁদে উঠছেন। আর এতো প্রাঞ্জল বর্ণনা শুনে আমার মনে হচ্ছিল আমি যদি এখনই নিজের সমস্ত গুনাহ সমেত মাটিতে মিশে যেতে পারতাম! এসব শুনে যারা বড় হয়েছে, হচ্ছে—তাদের অন্তরে তাকওয়া তো মজবুত হতে বাধ্য।
অনেক আগে সৌদি আরব এ বড় হওয়া এক বাংলাদেশী মহিলা বলেছিলেন ৮৮ এর বন্যায় আমরা যখন দেশের জন্য সদাকার টাকা তুলেছি, সৌদি মহিলারা হাত থেকে সোনার চুড়ি পর্যন্ত খুলে দিয়েছেন, কিন্তু বাংলাদেশিরা ১০০টা টাকা দিতেও একশো বার ভেবেছে। তখন আমার মনে হয়েছিল যে সৌদিদের অভাব নেই তাই অমন করে দিতে পেরেছে। কিন্তু এখন যখন দানের ক্ষেত্রে নিজের অন্তর দেখি, তখন বুঝি যে প্রশ্নটা থাকা বা না থাকার না। প্রশ্ন দিয়ে দিতে পারার মত অন্তরের। যা আমাদের একটু কম, আর ওদের একটু বেশিই। আগে যেমন বলেছি, ওরা আল্লাহর খুশির জন্য দিতে জানে। বাংলাদেশে বর্তমানে আইডিবির (Islamic Development Bank) তত্ত্বাবধানে নির্মাণাধীন বহুসংখ্যক ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রের অর্থের যোগানদাতা নাম না জানা একজন সৌদি নাগরিক! আল্লাহর পথে সামান্য সদাকা! নিজের নাম জানানোর প্রশ্নই আসেনা এখানে! ওরাও জানে ওদের কত বদনাম, তবু বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশে ত্রান দিয়েই চলেছে, আমরাও নিয়েই চলেছি আর বদনাম করেই চলেছি।
এই দেশ ইসলামের ইতিহাসের সাথে যেমন ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে আছে, তেমনি জড়িয়ে আছে মুসলিম হিসেবে আমাদের ধর্মীও কর্তব্যের সাথেও। এই দেশের বদনাম করে আমাদের কোনও উপকার কোনদিন হবে না। এটা আমাদের আল্লাহর রাসুল (সা) এর দেশ। এটা সেই ভূখণ্ড যেখানে আল্লাহর কাছ থেকে আল্লাহর কালাম নিয়ে এসেছেন জিব্রিল (আ) আল্লাহর রাসুল এর কাছে। এই সেই জায়গা যেখানে সেরকম মানুষ জন্মেছেন যারা শত অত্যাচারেও না আল্লাহর সাথে কাউকে শরিক করেছেন আর না আল্লাহর রাসুল(সা) কে তুলে দিয়েছেন শত্রুর হাতে। আর এই দেশের সেই ভাষা, যে ভাষায় নাযিল হয়েছে কুরআন। আর এই সেই ভাষা যা পৃথিবীর সব মুসলিমকে সালাত এর মাধ্যমে এক করে রাখে – যেই দেশেরই মানুষ হোক না কেন, আল্লাহু আকবর বলে যখন সালাত শুরু হয়, ভিন দেশী ইমাম কে অনুসরন করতে কারুর সমস্যা হয় না। এই দেশ শুধু সৌদিদের না। এই দেশ সব মুসলিমের চোখের মণি। তাই কিছু মানুষের অন্যায় যেন আমাদেরকে এতো অন্ধ করে না দেয় যে আমরা আমাদের সবচেয়ে প্রিয় জায়গাটির ভুল মূল্যায়ন করে বসি।
'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক'
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে আপনি Facebook, Whatsapp, Telegram, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। ইসলামি দা’ওয়াহ্র ৮০ টিরও বেশী উপায়! বিস্তারিত জানতে এইখানে ক্লিক করুন "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]
Thank you very much for this post. I myself was very prejudiced about people of Saudi Arabia. Thanks for revealing the truth about them
Zazakallah,Thank you very much sister to write this post.we have to know about true.May Allah bless you from my heart.I hope that in the future more write about true of KSA
THANKS A LOT.I MYSELF BELIEVE THAT THOSE PEOPLE WHO ARE ENGAGED TO SPRADE RUMOUR AGAINST KSA WILL BE SHAMED AND STOP FROM NOW
zazakallahu khairan. i lived in saudi arabia and i also had respect for it. but i came to a different country now and i am surprised how Bengali people are hateful about that country. i wanted to say the truth about the society of that country, but i was never able to say the way you said.
thanks alot for such article on s.arabia.
onek valo laglo, aaro kichhu jante ichcha korchhe.
আরও জানতে ইচ্ছে করছে। পর্ব 3 চাই।
আমাদের বদলাতে হবে। এভাবে চলতে থাকলে কপালে অনেক দু:খ আছে।
nijer upore j ki poriman lojja hocche bole bujhate parbo na.
Part 1 thekei osru shikto ami. Part 2 pore mone hocche a kanna aaj thambena.
A toh shorgo! Shoyong prithibir buk a Al Jannah.
Allah amader sobaike hedayet dan koro.
Jodi islam amra maantam tahole aaj amar deshio amon hoto… Ei vebei kanna pacche beshi…
Aro janar iccha roilo. And Zazakallahu khairun sister. Thanks a lot for sharing. Amazing article. Please update more parts.
আগামীকাল বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তানের ম্যাচের বল বাই বল আপডেট জানতে এবং পাশা পাশি বিশ্ব কাপের অন্য ম্যাচের লাইব আপডেট জানতে জয়েন করুন। জয়েনঃ খেলাধুলার খবর ২৪ ঘন্টা জয়েনঃ খেলাধুলার খবর ২৪ ঘন্টা জয়েনঃ খেলাধুলার খবর ২৪ ঘন্টা আসা করি সবাই জয়েন করুন।
ভালোবাস তাকে… যার কারনে পৃথিবী দেখেছো….।। ভালোবাস তাকে…।। যে তোমাকে ১০মাস ১০দিন গর্ভে রেখেছে….।। ভালোবাস তাকে… যার পা এর নিচে তোমার জান্নাত আছে…..।। তিনি হলেন মা।।।