লেখকঃ ড. আয়িদ আল করনী | অনুবাদঃ ডা. হাফেজ মাওলানা মােহাম্মদ নূর হােছাইন
তকদীর অনুপাতে ও যা সিদ্ধান্ত করা হয়েছে সে অনুসারেই সব কিছু ঘটে। মুহাম্মদ (সাঃ) এর উম্মত মুসলিমদের ধর্ম-বিশ্বাস এমনই। আল্লাহর ইলমের বাইরে, তার অনুমতি ছাড়া এবং ঐশী পরিকল্পনা ছাড়া এ বিশ্ব জগতে কোন কিছুই ঘটে না।
“পৃথিবীতে এবং তােমাদের মাঝে যে বিপর্যয় আসে তা আমি ঘটানাের পূর্বেই কিতাবে লিপিবদ্ধ আছে, নিশ্চয় সে কাজ আল্লাহর পক্ষে সহজ।” [৫৭-সূরা আল হাদীদ : আয়াত-২২]
“নিশ্চয় আমি প্রতিটি জিনিসকেই তার পূর্বনির্ধারণী অনুসারেই সৃষ্টি করি।” [৫৪-সূরা আল ক্বামার : আয়াত-৪৯]
“এবং অবশ্যই আমি তােমাদেরকে ভয়, ক্ষুধা এবং ধন-সম্পদ, জীবন ও ফসলের ক্ষতি ইত্যাদি কতিপয় জিনিস দ্বারা পরীক্ষা করব এবং (হে নবী মুহাম্মাদ!) আপনি ধৈর্যশীলদেরকে (জান্নাতের) সুসংবাদ দিন।” [২-সূরা বাক্বারা : আয়াত-১৫৫]
একটি হাদীসে নবী করীম (সাঃ) বলেছেন: “মুমিনের কাজ বড়ই আশ্চর্যজনক! নিশ্চয় তাঁর সব কাজই তার জন্য কল্যাণকর। যখন তার কোন কল্যাণ হয় তখন শুকরিয়া আদায় করে, ফলে তা তার আরাে কল্যাণকর হয়ে যায়। আর যখন তার কোন ক্ষতি হয় তখন সে ধৈর্য ধারণ করে, ফলে সে ক্ষতিও তার জন্য কল্যাণকর হয়ে যায়। আর এমনটি মুমিন ছাড়া অন্য কারাে জন্যই হয় না।”
একটি বিশুদ্ধ হাদীসে নবী করীম (সাঃ) বলেছেন: “যখন তুমি কোন কিছু চাইবে, তখন তুমি তা আল্লাহর নিকটে চাও, আর যখন তুমি সাহায্য চাইবে তখন তুমি আল্লাহর নিকটই সাহায্য চাও। আর জেনে রাখ যে, সব মানুষও যদি কোন বিষয়ে তােমার উপকার করার জন্য একত্রিত হয় তবুও তারা তা করতে পারবে না। তবে আল্লাহ তােমার ভাগ্যলিপিতে যেটুকু লিখে রেখেছেন ততটুকু উপকার করতে পারবে। আর যদি তারা তােমার ক্ষতি করার জন্যও একত্রিত হয় তবুও তারা তা করতে পারবে না, তবে তােমার ভাগ্যলিপিতে আল্লাহ যেটুকু লিখে রেখেছেন-সেটুকু ক্ষতি তারা করতে পারবে। কলম উঠিয়ে রাখা হয়েছে এবং (কালিতে লিখিত) পৃষ্ঠাসমূহ শুকিয়ে গেছে।”
নবী করীম (সাঃ) (তার উপর করুণা ও শান্তি বর্ষিত হােক) আরাে বলেছেন: “এবং জেনে রাখ যে, যা তােমার নিকট এসেছে তা তােমার নিকট না আসার ছিল না এবং যা তােমার নিকট আসেনি তা তােমার নিকট আসার ছিল না।”
অন্য একটি নির্ভরযােগ্য হাদীসে নবী করীম (সাঃ) বলেছেন: “যা তােমার উপকার করবে তার জন্য চেষ্টা কর, আল্লাহর নিকট সাহায্য চাও, দুর্বল হয়াে না ও এ কথা বলাে না যে, আমি অমুক অমুক কাজ করলে অবস্থা এমন এমন হতাে। বরং একথা বল যে, আল্লাহ সিদ্ধান্ত করে ফেলেছেন এবং তিনি যা চান তা তিনি করেন।”
আরাে একখানি নির্ভরযােগ্য হাদীসে নবী করীম (সাঃ) বলেছেন: “বান্দার জন্য আল্লাহ যে ফয়সালা করেন তা তার জন্য কল্যাণকর।”
শাইখুল ইসলাম আল্লামা ইবনে তাইমিয়াকে পাপ সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করা হলাে, এটা কি কারাে জন্য উপকারী? তিনি বললেন! “হ্যা, তবে এ শর্তে যে, পাপের পর লজ্জিত, অনুতপ্ত, ক্ষমা প্রার্থনাকারী ও মানসিকভাবে চরম অনুতপ্ত হতে হবে।”
মহান আল্লাহ বলেন: “এবং এমনও হতে পারে যে, তােমরা যা অপছন্দ কর তা তােমাদের জন্য কল্যাণকর আর এমনও হতে পারে যে, তােমরা যা পছন্দ কর তা তােমাদের জন্য ক্ষতিকর এবং আল্লাহ জানেন আর তােমরা জান না।” [২-সূরা বাক্বারা : আয়াত-২১৬]
উৎসঃ লা তাহযান [হতাশ হবেন না], ক্রমিক নংঃ ৪৯, পৃষ্ঠা: ১২৩ – ১২৫
'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক'
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে আপনি Facebook, Whatsapp, Telegram, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। ইসলামি দা’ওয়াহ্র ৮০ টিরও বেশী উপায়! বিস্তারিত জানতে এইখানে ক্লিক করুন "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]