লেখকঃ ড. আয়িদ আল করনী | অনুবাদঃ ডা. হাফেজ মাওলানা মােহাম্মদ নূর হােছাইন
“আকাশসমূহ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবই তাঁর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে। প্রতি মুহূর্তে তিনি কাজে রত।” [৫৫-সূরা আর রাহমান : আয়াত-২৯]। (যেমন কাউকে সম্মান দান করা, কাকে অপমানিত করা, নবসৃষ্টির মাধ্যমে কাউকে জীবন দান করা, কাউকেবা মৃত্যু দান করা ইত্যাদি কাজে রত।)
যখন বিক্ষুব্ধ ঝঞা বায়ুতে সমুদ্র উত্তাল-তরঙ্গায়িত থাকে, তখন নৌকার আরােহীগণ আর্তনাদ করে বলে, “হে আল্লাহ!” যখন মরুভূমিতে উট চালক ও কাফেলা পথ হারিয়ে ফেলে তখন তারা আর্তচিৎকার করে বলে, “হে আল্লাহ!” যখন বিপর্যয় ও দুর্যোগ দেখা দেয় তখন দুর্দশাগ্রস্তরা বলে উঠে, “হে আল্লাহ!” দরজা দিয়ে যখন কেউ প্রবেশ করতে চায় আর তার সামনেই দরজা বন্ধ করে দেয়া হয় এবং অভাবীদের সামনে যখন বাধার প্রাচীর নির্মাণ করা হয় তখন তারা চিক্কার দিয়ে বলে, “হে আল্লাহ!” যখন সকল পরিকল্পনা ব্যর্থ হয়, সকল আশা ভঙ্গ হয়ে যায় এবং পথ সংকীর্ণ হয়ে যায় তখন ডাক পড়ে, “হে আল্লাহ!” বিশাল, বিস্তীর্ণ ও প্রশস্ত হওয়া সত্ত্বেও পৃথিবী যখন আপনার কাছে সংকীর্ণ মনে হয়, নিজেকে সংকুচিত ভাবতে পরিস্থিতি বাধ্য করে তখন আপনি ডাক দিয়ে বলুন, “হে আল্লাহ!” সকল ভালাে কথা, একান্ত অনুনয়-বিনয়, নিরপরাধীর আঁখিজল এবং বিপদগ্রস্তের সাহায্য প্রার্থনা-সবই আল্লাহর দরবারে পৌছে। অভাব-অনটন এবং বিপদাপদের সময় দু’হাত ও দু’চোখ তার দিকেই প্রসারিত হয়।
জিহ্বা তার নাম সুমধুর কণ্ঠে জপে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা কতই না উত্তম ও উৎকৃষ্ট! কতই না মহান! যখন আমরা তাকে স্মরণ করি তখন হৃদয় প্রশান্তি লাভ করে, আত্মা স্থিরতা লাভ করে, স্নায়ু বিশ্রাম নেয় আর বােধশক্তি জেগে উঠে। “আল্লাহ নাম হলাে সুন্দরতম নাম, বিশুদ্ধতম বর্ণ-সংযােজন এবং সর্বাধিক মূল্যবান শব্দ।
- “তুমি কি এমন কিছু জান বা চেন যা তাঁর অনুরূপ।” [সূরা-১৯ মারইয়াম : আয়াত-৬৫]
- “তার মতাে কিছু নেই, আর তিনি হলেন সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।” [৪২-সূরা- শূরা : আয়াত-১১] যখন পরম সমৃদ্ধি, শক্তি সত্তা, মর্যাদা ও প্রজ্ঞার কথা মনে আসে তখন ‘আল্লাহ’ নাম মনে হয়।
- “আজ রাজত্ব কার? (আল্লাহ নিজেই নিজের প্রশ্নের উত্তর দিবেন)। আল্লাহর যিনি একক, মহাপরাক্রমশালী!” [৪০-সূরা আল মু’মিন : আয়াত-১৬] যখন দয়া, যত্ন, সাহায্য, স্নেহ-মমতা ও অনুকম্পার কথা মনে আসে তখন ‘আল্লাহ’ নাম মনে পড়ে।
- “আর তােমাদের নিকট যত নিয়ামত রয়েছে সবই আল্লাহর পক্ষ থেকে।” [১৬-সূরা আন নাহল : আয়াত-৫৩] আল্লাহ হলেন মর্যাদা, মাহাত্ম্য ও শক্তিমত্তায় অধিকারী। যুগ।হে আল্লাহ! আরাম-আয়েশকে দুঃখ-কষ্টের স্থান দখল করতে দিন।??
হতাশ হবেন না।
হে আল্লাহ! ঈমানের শীতলতা দ্বারা হৃদয়ের জ্বালা নিবারণ করুন। হে আমাদের প্রভু! বিদ্রি রজনী যাপনকারীকে সুখদ্রিা দান করুন এবং অসুখী আত্মাকে শান্তি প্রদান করুন। হে আমাদের প্রতিপালক! বিভ্রান্তদেরকে আপনার আলাের এবং পথভ্রষ্টদেরকে আপনার হেদায়েতের পথে পরিচালিত করুন। হে আল্লাহ! আমাদের অন্তরসমূহ হতে কুমন্ত্রণা দূর করে দিন এবং আমাদের অন্তরসমূহকে আলাে দ্বারা পরিপূর্ণ করে দিন, মিথ্যাকে সত্য দ্বারা ধ্বংস করে দিন এবং শয়তানের কুচক্রকে আপনার ফেরেশতা বাহিনী দিয়ে দুমড়ে-মুচড়ে দিন। হে আল্লাহ! আমাদের থেকে দারিদ্রতা, ক্লেশ ও উদ্বেগ চিরতরে দূর করে দিন। আপনাকে ব্যতীত অন্যকে ভয় করা, আপনাকে ছাড়া অন্যের উপর ভরসা করা, আপনাকে বাদ দিয়ে অন্যের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা স্থাপন করা এবং আপনি ছাড়া অন্যের নিকট সাহায্য প্রার্থনা করা থেকে আমরা আপনার নিকট আশ্রয় চাই। আপনি হলেন সর্বোকৃষ্ট পৃষ্ঠপােষক ও পরমােকৃষ্ট পালনকর্তা ও রক্ষাকর্তা।”
উৎসঃ লা তাহযান [হতাশ হবেন না] , ক্রমিক নংঃ ১ , পৃষ্ঠা: ২৯ – ৩১
'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক'
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে আপনি Facebook, Whatsapp, Telegram, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। ইসলামি দা’ওয়াহ্র ৮০ টিরও বেশী উপায়! বিস্তারিত জানতে এইখানে ক্লিক করুন "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]