Home Blog Page 5

বই : শবে বরাত -ফ্রী ডাউনলোড

1

রচনায়:ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর | পৃষ্ঠাঃ  ৩৩ | সাইজঃ ১ মেগাবাইট

কুরআন -সুন্নাহর আলোকে শবে-বরাত ফযীলত ও আমল (পেপারব্যাক)। উপমহাদেশের মুসলমানগন পনের শাবানের রাতে শবে বরাত নামে যে আচার-আনুষ্ঠান উদযাপন করে থাকে, তা আদৌ শরিয়তসিদ্ধ নয়। আল-কুরআনুল কারীম ও সহীহ হাদীসে এ রাতের বিশেষ কোন আমলের কথা উল্লেখ নেই। সাহাবা ও তাবেয়ীনগণের আমল দ্বারাও এ রাত উদযাপন বিষয়ে কোন কিছু প্রমাণিত হয় নি। আমাদের সমাজে শবে বরাত বিষয়ে যে অলীক ধারণাসমূহ শিকড় গেড়ে আছে সেগুলোর বস্তুনিষ্ঠ আলোচনা বইটিতে উপস্থাপিত হয়েছে মনোজ্ঞ ভাষায়।

বই : শবে বরাত QA Server
বই : শবে বরাত QA Server
বই : শবে বরাত -MediaFire
বই : শবে বরাত -MediaFire

বইটি ভালো লাগলে অবশ্যই একটি Hard Copy সংগ্রহ করে অথবা লেখক বা প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে সৌজন্য মূল্য প্রদান করে সহযোগিতা করুন।

শবে বরাত ও প্রাসংগিক কিছু কথা

লেখক : ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া [পিএইচডি (ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, মদীনা), সহকারী অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান- ফেকাহ্ বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া]

শবে বরাত (বারাত) আভিধানিক অর্থ অনুসন্ধান

‘শব’ ফারসি শব্দ। অর্থ রাত বা রজনী। বরাত শব্দটিও মূলে ফারসি। অর্থ ভাগ্য। দু’শব্দের একত্রে অর্থ হবে, ভাগ্য-রজনী। বরাত শব্দটি আরবি ভেবে অনেকেই ভুল করে থাকেন। কারণ ‘বরাত’ বলতে আরবি ভাষায় কোন শব্দ নেই।

যদি বরাত শব্দটি আরবি বারা’আত শব্দের অপভ্রংশ ধরা হয় তবে তার অর্থ  হবে— সম্পর্কচ্ছেদ বা বিমুক্তিকরণ। কিন্তু কয়েকটি কারণে এ অর্থটি এখানে অগ্রাহ্য, মেনে নেয়া যায় না-

  • ১. আগের শব্দটি ফারসি হওয়ায় ‘বরাত’ শব্দটিও ফারসি হবে, এটাই স্বাভাবিক
  • ২. শা’বানের মধ্যরজনীকে আরবি ভাষার দীর্ঘ পরম্পরায় কেউই বারা’আতের রাত্রি হিসাবে আখ্যা দেননি।
  • ৩. রমযান মাসের লাইলাতুল ক্বাদরকে কেউ-কেউ লাইলাতুল বারা’আত হিসাবে নামকরণ করেছেন, শা‘বানের মধ্য রাত্রিকে নয়।

আরবি ভাষায় এ রাতটিকে কি বলা হয়?

আরবি ভাষায় এ রাতটিকে ‘লাইলাতুন নিছফি মিন শা‘বান’ — শাবান মাসের মধ্য রজনী — হিসাবে অভিহিত করা হয়।

শাবানের মধ্যরাত্রির কি কোন ফযীলত বর্ণিত হয়েছে?

শাবান মাসের মধ্য রাত্রির ফযীলত সম্পর্কে কিছু হাদীস বর্ণিত হয়েছে:

১. আয়েশা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) বলেন: এক রাতে আমি রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কে খুঁজে না পেয়ে তাঁকে খুঁজতে বের হলাম, আমি তাকে বাকী গোরস্তানে পেলাম। তখন রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাকে বললেন: ‘তুমি কি মনে কর, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তোমার উপর জুলুম করবেন?’ আমি বললাম: ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমি ধারণা করেছিলাম যে আপনি আপনার অপর কোন স্ত্রীর নিকট চলে গিয়েছেন। তখন রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন: ‘মহান আল্লাহ তা’লা শা‘বানের মধ্যরাত্রিতে নিকটবর্তী আসমানে অবতীর্ণ হন এবং কালব গোত্রের ছাগলের পালের পশমের চেয়ে বেশী লোকদের ক্ষমা করেন।

[হাদীসটি ইমাম আহমাদ তার মুসনাদে বর্ণনা করেন (৬/২৩৮), তিরমিযি তার সুনানে (২/১২১,১২২) বর্ণনা করে বলেন, এ হাদীসটিকে ইমাম বুখারী দুর্বল বলতে শুনেছি। অনুরূপভাবে হাদীসটি ইমাম ইবনে মাজাহ তার সুনানে (১/৪৪৪, হাদীস নং ১৩৮৯) বর্ণনা করেছেন। হাদীসটির সনদ দুর্বল বলে সমস্ত মুহাদ্দিসগণ একমত]

২. আবু মূসা আল আশ’আরী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ‘আল্লাহ তা‘আলা শাবানের মধ্যরাত্রিতে আগমণ করে, মুশরিক ও ঝগড়ায় লিপ্ত ব্যক্তিদের ব্যতীত, তাঁর সমস্ত সৃষ্টিজগতকে ক্ষমা করে দেন। [হাদীসটি ইমাম ইবনে মাজাহ তার সুনানে (১/৪৫৫, হাদীস নং ১৩৯০),এবং তাবরানী তার মু’জামুল কাবীর (২০/১০৭,১০৮) গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন]

আল্লামা বূছীরি বলেন: ইবনে মাজাহ বর্ণিত হাদীসটির সনদ দুর্বল। তাবরানী বর্ণিত হাদীস সম্পর্কে আল্লামা হাইসামী (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) মাজমা‘ আয যাওয়ায়েদ (৮/৬৫) গ্রন্থে বলেনঃ ত্বাবরানী বর্ণিত হাদীসটির সনদের সমস্ত বর্ণনাকারী শক্তিশালী। হাদীসটি ইবনে হিব্বানও তার সহীহতে বর্ণনা করেছেন। [এ ব্যাপারে দেখুন, মাওয়ারেদুজ জাম‘আন, হাদীস নং (১৯৮০), পৃঃ (৪৮৬)]

৩. আলী ইবনে আবী তালিব (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “যখন শা‘বানের মধ্যরাত্রি আসবে তখন তোমরা সে রাতের কিয়াম তথা রাতভর নামায পড়বে, আর সে দিনের রোযা রাখবে; কেননা সে দিন সুর্যাস্তের সাথে সাথে আল্লাহ তা‘আলা দুনিয়ার আকাশে অবতরণ করেন এবং বলেন: ক্ষমা চাওয়ার কেউ কি আছে যাকে আমি ক্ষমা করব। রিযিক চাওয়ার কেউ কি আছে যাকে আমি রিযিক দেব। সমস্যাগ্রস্ত কেউ কি আছে যে আমার কাছে পরিত্রাণ কামনা করবে আর আমি তাকে উদ্ধার করব। এমন এমন কেউ কি আছে? এমন এমন কেউ কি আছে? ফজর পর্যন্ত তিনি এভাবে বলতে থাকেন”।

[হাদীসটি ইমাম ইবনে মাজাহ তার সুনানে (১/৪৪৪, হাদীস নং ১৩৮৮) বর্ণনা করেছেন। আল্লামা বূছীরি (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) তার যাওয়ায়েদে ইবনে মাজাহ (২/১০) গ্রন্থে বলেন, হাদীসটির বর্ণনাকারীদের মধ্যে ইবনে আবি সুবরাহ রয়েছেন যিনি হাদীস বানাতেন। তাই হাদীসটি বানোয়াট]

উল্লিখিত আলোচনায় এটা স্পষ্ট যে, শা‘বানের মধ্যরাত্রির ফযীলত বিষয়ে যে সব হাদীস বর্ণিত হয়েছে তার সবগুলোই দুর্বল অথবা  বানোয়াট, আর তাই গ্রাহ্যতারহিত

প্রাজ্ঞ আলেমগণ এ ব্যাপারে একমত যে, দুর্বল হাদীস দ্বারা কোন আহকাম- বিধান প্রমাণ করা যায় না। দুর্বল হাদীসের উপর আমল করার জন্য কয়েকটি শর্ত লাগিয়েছেন তারা। শর্তগুলো নিম্নরূপ –

১. হাদীসটির মূল বক্তব্য অন্য কোন সহীহ হাদীসের বিরোধীতা করবেনা, বরং কোন শুদ্ধ ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হতে হবে।
২. হাদীসটি একেবারেই দুর্বল অথবা বানোয়াট হলে চলবে না।
৩. হাদীসটির উপর আমল করার সময় এটা রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে প্রমাণিত বলে বিশ্বাস করা যাবে না। কারণ রাসূল থেকে প্রমাণিত বলে বিশ্বাস করলে রাসূলের উপর মিথ্যাচারিতার পাপ হবে, ফলে জাহান্নাম অবধারিত হয়ে পড়বে।
৪. হাদীসটি ফাদায়িল তথা কোন আমলের ফযীলত বর্ণনা সংক্রান্ত হতে হবে। আহকাম (ওয়াজিব, মুস্তাহাব, হারাম, মাকরূহ) ইত্যাদি সাব্যস্তকারী না হতে হবে।
৫. বান্দা ও তার প্রভুর মাঝে একান্ত ব্যক্তিগত কোন আমলের ক্ষেত্রে হাদীসটির নির্ভরতা নেয়া যাবে। তবে এ হাদীসের উপর আমল করার জন্য একে অপরকে আহবান করতে পারবে না।

এই শর্তাবলীর আলোকে যদি উপরোক্ত হাদীসগুলো পরীক্ষা করে দেখি তাহলে দেখতে পাই যে, উপরোক্ত হাদীসসমূহের মধ্যে শেষোক্ত _ আলী  (রাদিয়াল্লাহু আনহু)বর্ণিত — হাদীসটি বানোয়াট। সুতরাং তার উপর আমল করা উম্মাতের আলেমদের ঐক্যমতে জায়েয হবে না।

প্রথম হাদীসটি দুর্বল, দ্বিতীয় হাদীসটিও অধিকাংশ আলেমের মতে দুর্বল, যদিও কোন-কোন আলেম এর বর্ণনাকারীগণকে শক্তিশালী বলে মত প্রকাশ করেছেন। কিন্তু কেবলমাত্র বর্ণনাকারী শক্তিশালী হলেই হাদীস বিশুদ্ধ হওয়া সাব্যস্ত হয়না।

মোট কথাঃ প্রথম ও দ্বিতীয়, এ হাদীস দুটি দুর্বল। খুব দুর্বল বা বানোয়াট নয়। সে হিসেবে যৎকিঞ্চিৎ প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে যে এ রাত্রির ফযীলত রয়েছে।

এই সূত্রেই অনেক হাদীসবিদ শাবানের মধ্যরাতের ফযীলত রয়েছে বলে মত প্রকাশ করেছেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছেন:

  • ইমাম আহমাদ (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি)। [ইবনে তাইমিয়া তার ইকতিদায়ে ছিরাতে মুস্তাকীমে (২/৬২৬) তা উল্লেখ করেছেন]
  • ইমাম আওযায়ী (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি)। [ইমাম ইবনে রাজাব তার ‘লাতায়েফুল মা‘আরিফ’ গ্রন্থে (পৃঃ১৪৪) তার থেকে তা বর্ণনা করেছেন]
  • শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি)। [ইকতিদায়ে ছিরাতে মুস্তাকীম ২/৬২৬,৬২৭, মাজমু‘ ফাতাওয়া ২৩/১২৩, ১৩১,১৩৩,১৩৪]।
  • ইমাম ইবনে রাজাব আল হাম্বলী (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি)। [তার লাতায়েফুল মা‘আরিফ পৃঃ১৪৪ দ্রষ্টব্য]।
  • প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস আল্লামা নাসিরুদ্দিন আল-আলবানী (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) [ছিলছিলাতুল আহাদীস আস্‌সাহীহা ৩/১৩৫-১৩৯]

উপরোক্ত মুহাদ্দিসগনসহ আরো অনেকে এ রাত্রিকে ফযীলতের রাত বলে মত প্রকাশ করেছেন।

কিন্তু আমরা যদি উপরে উল্লিখিত প্রথম ও দ্বিতীয় হাদীসটি পাঠ করে দেখি তাহলে দেখতে পাব —আল্লাহ  তা‘আলা নিকটবর্তী আসমানে অবতীর্ণ হয়ে তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনার আহবান জানাতে  থাকেন — হাদীসদ্বয়ে এ বক্তব্যই উপস্থাপিত হয়েছে। মুলত সহীহ হাদীসে সুস্পষ্ট এসেছে যে, “আল্লাহ তা‘আলা প্রতি রাতের শেষাংশে – শেষ তৃতীয়াংশে- নিকটবর্তী আসমানে অবতীর্ণ হয়ে আহবান জানাতে থাকেন ‘এমন কেউ কি আছে যে আমাকে ডাকবে আর আমি তার ডাকে সাড়া দেব? এমন কেউ কি আছে যে আমার কাছে কিছু চাইবে আর আমি তাকে দেব? আমার কাছে ক্ষমা চাইবে আর আমি তাকে ক্ষমা করে দেব?” [বুখারী, হাদীস নং ১১৪৫, মুসলিম হাদীস নং ৭৫৮]

সুতরাং আমরা এ হাদীসদ্বয়ে অতিরিক্ত কোন কিছুই দেখতে পাচ্ছি না। সুতরাং এ রাত্রির বিশেষ কোন বিশেষত্ব আমাদের নজরে পড়ছে না। এজন্যই শাইখ আব্দুল আজীজ ইবনে বায (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) সহ আরো অনেকে এ রাত্রির অতিরিক্ত ফযীলত অস্বীকার করেছেন।

এ রাত্রি উদযাপন ও এতদসংক্রান্ত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর

প্রথম প্রশ্নঃ

এ রাত্রি কি ভাগ্য রজনী?

উত্তর:

না, এ রাত্রি ভাগ্য রজনী নয়, মূলতঃ এ রাত্রিকে ভাগ্য রজনী বলার পেছনে কাজ করছে সূরা আদ-দুখানের ৩ ও ৪ আয়াত দু’টির ভূল ব্যাখ্যা। তা হলোঃ আয়াতদ্বয়ের অর্থ হলোঃ “অবশ্যই আমরা তা (কোরআন) এক মুবারক রাত্রিতে অবতীর্ণ করেছি, অবশ্যই আমরা সতর্ককারী, এ রাত্রিতে যাবতীয় প্রজ্ঞাপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়”।

এ আয়াতদ্বয়ের তাফসীরে অধিকাংশ মুফাসসির বলেনঃ এ আয়াত দ্বারা রমযানের লাইলাতুল ক্বাদরকেই বুঝানো হয়েছে। যে লাইলাতুল কাদরের চারটি নাম রয়েছে: ১. লাইলাতুল কাদর, ২. লাইলাতুল বারা’আত, ৩. লাইলাতুচ্ছফ, ৪.লাইলাতুল মুবারাকাহ। শুধুমাত্র ইকরিমা (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, এ আয়াত দ্বারা শা’বানের মধ্যরাত্রিকে বুঝানো হয়েছে। এটা একটি অগ্রহণযোগ্য বর্ণনা।

আল্লামা ইবনে কাসীর (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেন, আলোচ্য আয়াতে ‘মুবারক রাত্রি’ বলতে ‘লাইলাতুল ক্বাদর বুঝানো হয়েছে, যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেছেনঃ আমরা এ কোরআনকে ক্বাদরের রাত্রিতে অবতীর্ণ করেছি। [সূরা আল-কাদরঃ১]

আল্লাহ তা‘আলা আরও বলেন: রমযান এমন একটি মাস যাতে কোরআন অবতীর্ণ করা হয়েছে। [সূরা আলবাকারাহঃ১৮৫]

যিনি এ রাত্রিকে শা‘বানের মধ্যবর্তী রাত বলে মত প্রকাশ করেছেন, যেমনটি ইকরিমা থেকে বর্ণিত হয়েছে, তিনি অনেক দূরবর্তী মত গ্রহণ করেছেন; কেননা কোরআনের সুস্পষ্ট বাণী তা রমযান মাসে বলে ঘোষণা দিয়েছে’। (তাফসীরে ইবনে কাসীর (৪/১৩৭)।

অনুরূপভাবে আল্লামা শাওকানীও এ মত প্রকাশ করেছেন। (তাফসীরে ফাতহুল ক্বাদীর (৪/৭০৯)।

সুতরাং ভাগ্য রজনী হলো লাইলাতুল ক্বাদর যা রমযানের শেষ দশদিনের বেজোড় রাত্রিগুলো। আর এতে করে এও সাব্যস্ত হলো যে, এ আয়াতের তাফসীরে ইকরিমা (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) মতভেদ করলেও তিনি শা’বানের মধ্য তারিখের রাত্রিকে লাইলাতুল বারা’আত নামকরণ করেননি।

দ্বিতীয় প্রশ্নঃ

শা’বানের মধ্যরাত্রি উদযাপন করা যাবে কিনা?

উত্তরঃ

শা’বানের মধ্যরাত্রি পালন করার কি হুকুম এ নিয়ে আলেমদের মধ্যে তিনটি মত রয়েছে:

  • এক. শা‘বানের মধ্য রাত্রিতে মাসজিদে জামাতের সাথে নামায ও অন্যান্য ইবাদত করা জায়েয । প্রসিদ্ধ তাবেয়ী খালেদ ইবনে মি‘দান, লুকমান ইবনে আমের সুন্দর পোশাক পরে, আতর খোশবু, শুরমা মেখে মাসজিদে গিয়ে মানুষদের নিয়ে এ রাত্রিতে নামায আদায় করতেন। এ মতটি ইমাম ইসহাক ইবনে রাহওয়ীয়াহ থেকেও বর্ণিত হয়েছে। (লাতায়েফুল মা‘আরেফ পৃঃ১৪৪)। তারা তাদের মতের পক্ষে কোন দলীল পেশ করেননি। আল্লামা ইবনে রাজাব (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) তাদের মতের পক্ষে দলীল হিসাবে বলেনঃ তাদের কাছে এ ব্যাপারে ইসরাইলি তথা পূর্ববর্তী উম্মাতদের থেকে বিভিন্ন বর্ণনা এসেছিল, সে অনুসারে তারা আমল করেছিলেন। তবে পূর্বে বর্ণিত বিভিন্ন দুর্বল হাদীস তাদের দলীল হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে থাকবে।
  • দুই. শা‘বানের মধ্যরাত্রিতে ব্যক্তিগতভাবে ইবাদত বন্দেগী করা জায়েয। ইমাম আওযা‘য়ী, শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া, এবং আল্লামা ইবনে রজব (রাহমাতুল্লাহি আলাইহিম) এ মত পোষণ করেন। তাদের মতের পক্ষে তারা যে সমস্ত হাদীস দ্বারা এ রাত্রির ফযীলত বর্ণিত হয়েছে সে সমস্ত সাধারণ হাদীসের উপর ভিত্তি করে ব্যক্তিগতভাবে ইবাদত করাকে জায়েয মনে করেন।
  • তিন. এ ধরণের ইবাদত সম্পূর্ণরূপে বিদ’আত — চাই তা ব্যক্তিগতভাবে হোক বা সামষ্টিকভাবে। ইমাম ‘আতা ইবনে আবি রাবাহ, ইবনে আবি মুলাইকা, মদীনার ফুকাহাগণ, ইমাম মালেকের ছাত্রগণ, ও অন্যান্য আরো অনেকেই এ মত পোষণ করেছেন। এমনকি ইমাম আওযায়ী যিনি শাম তথা সিরিয়াবাসীদের ইমাম বলে প্রসিদ্ধ তিনিও এ ধরনের ঘটা করে মাসজিদে ইবাদত পালন করাকে বিদ‘আত বলে ঘোষণা করেছেন।

তাদের মতের পক্ষে যুক্তি হলো :

  • ১. এ রাত্রির ফযীলত সম্পর্কে সুস্পষ্ট কোন দলীল নেই। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ রাত্রিতে কোন সুনির্দিষ্ট ইবাদত করেছেন বলে সহীহ হাদীসে প্রমাণিত হয়নি। অনুরূপভাবে তার কোন সাহাবী থেকেও কিছু বর্ণিত হয়নি। তাবেয়ীনদের মধ্যে তিনজন ব্যতীত আর কারো থেকে বর্ণিত হয়নি। আল্লামা ইবনে রজব (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেনঃ শা‘বানের রাত্রিতে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অথবা তার সাহাবাদের থেকে কোন নামায পড়া প্রমাণিত হয়নি। যদিও শামদেশীয় সুনির্দিষ্ট কোন কোন তাবেয়ীন থেকে তা বর্ণিত হয়েছে। (লাতায়েফুল মা‘আরিফঃ১৪৫)। শাইখ আব্দুল আযীয ইবনে বায (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেনঃ ‘এ রাত্রির ফযীলত বর্ণনায় কিছু দুর্বল হাদীস এসেছে যার উপর ভিত্তি করা জায়েয নেই, আর এ রাত্রিতে নামায আদায়ে বর্ণিত যাবতীয় হাদীসই বানোয়াট, আলেমগণ এ ব্যাপারে সতর্ক করে গেছেন’।
  • ২. হাফেজ ইবনে রজব (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) যিনি কোন কোন তাবেয়ীনদের থেকে এ রাত্রির ফযীলত রয়েছে বলে বর্ণনা করেছেন, তিনি বলেছেনঃ ঐ সমস্ত তাবেয়ীনদের কাছে দলীল হলো যে তাদের কাছে এ ব্যাপারে ইসরাইলি কিছু বর্ণনা এসেছে। তাহলে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, যারা এ রাত পালন করেছেন তাদের দলীল হলো, যে তাদের কাছে ইসরাইলি বর্ণনা এসেছে, আমাদের প্রশ্নঃ ইসরাইলি বর্ণনা এ উম্মাতের জন্য কিভাবে দলীল হতে পারে?
  • ৩. যে সমস্ত তাবেয়ীনগণ থেকে এ রাত উদযাপনের সংবাদ এসেছে তাদের সমসাময়িক প্রখ্যাত ফুকাহা ও মুহাদ্দিসীনগণ তাদের এ সব কর্মকান্ডের নিন্দা করেছেন। যারা তাদের নিন্দা করেছেন তাদের মধ্যে প্রখ্যাত হলেনঃ ইমাম আতা ইবনে আবি রাবাহ, যিনি তার যুগের সর্বশ্রেষ্ট মুফতি ছিলেন, আর যার সম্পর্কে সাহাবী আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহুমা) বলেছিলেনঃ তোমরা আমার কাছে প্রশ্নের জন্য একত্রিত হও, অথচ তোমাদের কাছে ইবনে আবি রাবাহ রয়েছে। সুতরাং যদি ঐ রাত্রি উদযাপনকারীদের পক্ষে কোন দলীল থাকত, তাহলে তারা ‘আতা ইবনে আবি রাবাহর বিপক্ষে তা অবশ্যই পেশ করে তাদের কর্মকাণ্ডের যথার্থতা প্রমাণ করার চেষ্টা করতেন, অথচ এরকম করেছেন বলে প্রমাণিত হয়নি।
  • ৪. পূর্বেই বর্ণিত হয়েছে যে, যে সমস্ত দুর্বল হাদীসে ঐ রাত্রির ফযীলত বর্ণিত হয়েছে, তাতে শুধুমাত্র সে রাত্রিতে আল্লাহর অবতীর্ণ হওয়া এবং ক্ষমা করা প্রমাণিত হয়েছে, এর বাইরে কিছুই বর্ণিত হয়নি। মুলতঃ এ অবতীর্ণ হওয়া ও ক্ষমা চাওয়ার আহবান প্রতি রাতেই আল্লাহ তা’আলা করে থাকেন। যা সুনির্দিষ্ট কোন রাত বা রাতসমূহের সাথে সংশ্লিষ্ট নয়। এর বাইরে দুর্বল হাদীসেও অতিরিক্ত কোন ইবাদত করার নির্দেশ নেই।
  • ৫. আর যারা এ রাত্রিতে ব্যক্তিগতভাবে আমল করা জায়েয বলে মন্তব্য করেছেন তাদের মতের পক্ষে কোন দলীল নেই, কেননা এ রাত্রিতে রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বা তার সাহাবা কারো থেকেই ব্যক্তিগত কিংবা সামষ্টিক কোন ভাবেই কোন প্রকার ইবাদত করেছেন বলে বর্ণিত হয়নি। এর বিপরীতে শরীয়তের সাধারণ অনেক দলীল এ রাত্রিকে ইবাদতের জন্য নির্দিষ্ট করাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করছে, তম্মধ্যে রয়েছেঃআল্লাহ বলেনঃ“আজকের দিনে আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করে দিলাম”। (সূরা আল-মায়েদাহঃ ৩)।রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ (যে ব্যক্তি আমাদের দ্বীনের মধ্যে এমন নতুন কিছুর উদ্ভব ঘটাবে যা এর মধ্যে নেই, তা তার উপর নিক্ষিপ্ত হবে)। (বুখারী, হাদীস নং ২৬৯৭)।তিনি আরো বলেছেনঃ (যে ব্যক্তি এমন কোন কাজ করবে যার উপর আমাদের দ্বীনের মধ্যে কোন নির্দেশ নেই তা অগ্রহণযোগ্য)। (মুসলিম, হাদীস নং ১৭১৮)।শাইখ আব্দুল আজীজ ইবনে বায (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) বলেনঃ আর ইমাম আওযা‘য়ী (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) যে, এ রাতে ব্যক্তিগত ইবাদত করা ভাল মনে করেছেন, আর যা হাফেয ইবনে রাজাব পছন্দ করেছেন, তাদের এ মত অত্যন্ত আশ্চার্যজনক বরং দুর্বল; কেননা কোন কিছু যতক্ষন পর্যন্ত না শরীয়তের দলীলের মাধ্যমে জায়েয বলে সাব্যস্ত হবে ততক্ষন পর্যন্ত কোন মুসলিমের পক্ষেই দ্বীনের মধ্যে তার অনুপ্রবেশ ঘটাতে বৈধ হবে না। চাই তা ব্যক্তিগতভাবে করুক বা সামষ্টিক- দলবদ্ধভাবে। চাই গোপনে করুক বা প্রকাশ্য। কারণ বিদ‘আতকর্ম অস্বীকার করে এবং তা থেকে সাবধান করে যে সমস্ত প্রমাণাদি এসেছে সেগুলো সাধারণভাবে তার বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছে। (আত্‌তাহযীর মিনাল বিদ‘আঃ১৩)।
  • ৬. শাইখ আব্দুল আযীয ইবনে বায (রাহমাতুল্লাহি আলাইহি) আরো বলেনঃ সহীহ মুসলিমে আবু হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ “তোমরা জুম‘আর রাত্রিকে অন্যান্য রাত থেকে ক্বিয়াম/ নামাযের জন্য সুনির্দিষ্ট করে নিও না, আর জুম‘আর দিনকেও অন্যান্য দিনের থেকে আলাদা করে রোযার জন্য সুনির্দিষ্ট করে নিও না, তবে যদি কারো রোযার দিনে সে দিন ঘটনাচক্রে এসে যায় সেটা ভিন্ন কথা”। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১১৪৪, ১৪৮)।যদি কোন রাতকে ইবাদতের জন্য সুনির্দিষ্ট করা জায়েয হতো তবে অবশ্যই জুম‘আর রাতকে ইবাদতের জন্য বিশেষভাবে সুনির্দিষ্ট করা জায়েয হতো; কেননা জুম‘আর দিনের ফযীলত সম্পর্কে হাদীসে এসেছে যে, “সুর্য যে দিনগুলোতে উদিত হয় তম্মধ্যে সবচেয়ে শ্রেষ্ট দিন, জুম‘আর দিন”। (সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ৫৮৪)।সুতরাং যেহেতু রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জুম‘আর দিনকে বিশেষভাবে ক্বিয়াম/নামাযের জন্য সুনির্দিষ্ট করা থেকে নিষেধ করেছেন সেহেতু অন্যান্য রাতগুলোতে অবশ্যই ইবাদতের জন্য সুনির্দিষ্ট করে নেয়া জায়েয হবে না। তবে যদি কোন রাত্রের ব্যাপারে সুস্পষ্ট কোন দলীল এসে যায় তবে সেটা ভিন্ন কথা। আর যেহেতু লাইলাতুল ক্বাদর এবং রমযানের রাতের ক্বিয়াম/নামায পড়া জায়েয সেহেতু রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে এ রাতগুলোর ব্যাপারে স্পষ্ট হাদীস এসেছে।

তৃতীয় প্রশ্নঃ

শা‘বানের মধ্যরাত্রিতে হাজারী নামায পড়ার কী হুকুম?

উত্তরঃ

শা‘বানের মধ্যরাত্রিতে একশত রাকাত নামাযের প্রতি রাকাতে দশবার সূরা কুল হুওয়াল্লাহ (সূরা ইখলাস) দিয়ে নামাজ পড়ার যে নিয়ম প্রচলিত হয়েছে তা সম্পূর্ণরূপে বিদ‘আত।

এ নামাযের প্রথম প্রচলন

এ নামাযের প্রথম প্রচলন হয় হিজরী ৪৪৮ সনে। ফিলিস্তিনের নাবলুস শহরের ইবনে আবিল হামরা নামীয় একলোক বায়তুল মুকাদ্দাস আসেন। তার তিলাওয়াত ছিল সুমধুর। তিনি শা‘বানের মধ্যরাত্রিতে নামাযে দাঁড়ালে তার পিছনে এক লোক এসে দাঁড়ায়, তারপর তার সাথে তৃতীয় জন এসে যোগ দেয়, তারপর চতুর্থ জন। তিনি নামায শেষ করার আগেই বিরাট একদল লোক এসে তার সাথে যুক্ত হয়ে পড়ে। পরবর্তী বছর এলে, তার সাথে অনেকেই যোগ দেয় ও নামায আদায় করে। এতে করে মাসজিদুল আক্‌সাতে এ নামাযের প্রথা চালু হয়। কালক্রমে এ নামায এমনভাবে আদায় হতে লাগে যে অনেকেই তা সুন্নাত মনে করতে শুরু করে। (ত্বারতুসীঃ হাওয়াদেস ও বিদ‘আ পৃঃ১২১, ১২২, ইবনে কাসীরঃ বিদায়া ওয়ান নিহায়া ১৪/২৪৭, ইবনুল কাইয়েমঃ আল-মানারুল মুনিফ পৃঃ৯৯)।

এ নামাযের পদ্ধতি

প্রথা অনুযায়ী এ নামাযের পদ্ধতি হলো, প্রতি রাকাতে সূরা ফাতিহার পর সূরা ইখলাস দশবার করে পড়ে মোট একশত রাকাত নামায পড়া। যাতে করে সূরা ইখলাস ১০০০ বার পড়া হয়। (এহইয়ায়ে উলুমুদ্দীন (১/২০৩)।

এ ধরণের নামায সম্পূর্ণ বিদ‘আত। কারণ এ ধরণের নামাযের বর্ণনা কোন হাদীসের কিতাবে আসেনি। কোন কোন বইয়ে এ সম্পর্কে যে সকল হাদীস উল্লেখ করা হয় সেগুলো কোন হাদীসের কিতাবে আসেনি। আর তাই আল্লামা ইবনুল জাওযী (মাওদু‘আত ১/১২৭-১৩০), হাফেয ইরাকী (তাখরীজুল এহইয়া), ইমাম নববী (আল-মাজমু‘ ৪/৫৬), আল্লামা আবু শামাহ (আল-বা‘েয়স পৃঃ৩২-৩৬), শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়্যা, (ইকতিদায়ে ছিরাতুল মুস্তাকীম ২/৬২৮), আল্লামা ইবনে ‘আররাক (তানযীহুশ শরীয়াহ ২/৯২), ইবনে হাজার আল-আসকালানী, আল্লামা সূয়ূতী (আল-আমর বিল ইত্তেবা পৃঃ৮১, আল-লাআলিল মাসনূ‘আ ২/৫৭), আল্লামা শাওকানী (ফাওয়ায়েদুল মাজমু‘আ পৃঃ৫১) সহ আরো অনেকেই এ গুলোকে “বানোয়াট হাদীস” বলে সুস্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন।

এ ধরণের নামাযের হুকুম

সঠিক জ্ঞানের অধিকারী আলেমগণের মতে এ ধরণের নামায বিদ‘আত; কেননা এ ধরনের নামায আল্লাহর রাসূলও পড়েননি। তার কোন খলীফাও পড়েননি। সাহাবাগণও পড়েননি। হেদায়াতের ইমাম তথা আবু হানিফা, মালেক, শাফেয়ী, আহমাদ, সাওরী, আওযায়ী, লাইস’সহ অন্যান্যগণ কেউই এ ধরণের নামায পড়েননি বা পড়তে বলেননি।

আর এ ধরণের নামাযের বর্ণনায় যে হাদীসসমূহ কেউ কেউ উল্লেখ করে থাকেন তা উম্মাতের আলেমদের ইজমা অনুযায়ী বানোয়াট। (এর জন্য দেখুনঃ ইবনে তাইমিয়ার মাজমুল‘ ফাতাওয়া ২৩/১৩১,১৩৩,১৩৪, ইকতিদায়ে ছিরাতে মুস্তাকীম ২/৬২৮, আবু শামাহঃ আল-বা‘য়েছ পৃঃ ৩২-৩৬, রশীদ রিদাঃ ফাতাওয়া ১/২৮, আলী মাহফুজ, ইবদা‘ পৃঃ২৮৬,২৮৮, ইবনে বাযঃ আত্‌তাহযীর মিনাল বিদ‘আ পৃঃ১১-১৬)।

চতুর্থ প্রশ্নঃ

শা‘বানের মধ্যরাত্রির পরদিন কি রোযা রাখা যাবে?

উত্তরঃ

রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে বহু সহীহ হাদীসে প্রমাণিত হয়েছে যে, তিনি শা‘বান মাসে সবচেয়ে বেশী রোযা রাখতেন। (এর জন্য দেখুনঃ বুখারী, হাদীস নং ১৯৬৯, ১৯৭০, মুসলিম, হাদীস নং ১১৫৬, ১১৬১, মুসনাদে আহমাদ ৬/১৮৮, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং ২৪৩১, সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস নং ২০৭৭, সুনানে তিরমিঝি, হাদীস নং ৬৫৭)।

সে হিসাবে যদি কেউ শা‘বান মাসে রোযা রাখেন তবে তা হবে সুন্নাত। শাবান মাসের শেষ দিন ছাড়া বাকী যে কোন দিন রোযা রাখা জায়েয বা সওয়াবের কাজ। তবে রোজা রাখার সময় মনে করতে হবে যে, রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যেহেতু শা‘বান মাসে রোজা রেখেছিলেন তাকে অনুসরন করে রোযা রাখা হচ্ছে। অথবা যদি কারও আইয়ামে বিদের নফল রোযা তথা মাসের ১৩,১৪,১৫ এ তিনদিন রোযা রাখার নিয়ম থাকে তিনিও রোযা রাখতে পারেন। কিন্তু শুধুমাত্র শা‘বানের পনের তারিখ রোযা রাখা বিদ‘আত হবে। কারণ শরীয়তে এ রোযার কোন ভিত্তি নেই।

আল্লাহ আমাদেরকে তাঁর রাসূলের পরিপূর্ণ পদাঙ্ক অনুসরন করে চলার তৌফিক দিন। আমীন।

টীকা: 7 যদি শা‘বানের মধ্যরাত্রিকে উদযাপন করা বা ঘটা করে পালন করা জায়েয হতো তাহলে অবশ্যই রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ ব্যাপারে আমাদের জানাতেন। বা তিনি নিজেই তা করতেন। আর এমন কিছু তিনি করে থাকতেন তাহলে সাহাবাগণ অবশ্যই তা উম্মাতের কাছে বর্ণনা করতেন। তারা নবীদের পরে জগতের শ্রেষ্টতম মানুষ, সবচেয়ে বেশী নসীহতকারী, কোন কিছুই তারা গোপন করেননি’। (আত্‌তহযীর মিনাল বিদা‘১৫,১৬)।

উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমাদের কাছে স্পষ্ট হলো যে, কুরআন, হাদীস ও গ্রহণযোগ্য আলেমদের বাণী থেকে আমরা জানতে পারলাম শা‘বানের মধ্য রাত্রিকে ঘটা করে উদযাপন করা, চাই তা নামাযের মাধ্যমে হোক অথবা অন্য কোন ইবাদতের মাধ্যেমে অধিকাংশ আলেমদের মতে জগন্যতম বিদ‘আত। শরীয়তে যার কোন ভিত্তি নেই। বরং তা’ সাহাবাদের যুগের পরে প্রথম শুরু হয়েছিল। যারা সত্যের অনুসরণ করতে চায় তাদের জন্য দ্বীনের মধ্যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল যা করতে বলেছেন তাই যথেষ্ট।

বই : শবে বরাত QA Server
বই : শবে বরাত QA Server

এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে এই লেকচার শুনতে পারেনঃ

http://www.youtube.com/watch?v=Q0z4-v5dBf0

পর্ব ১ – http://youtu.be/jU9NLXcnJH0
পর্ব ২ – http://youtu.be/AVrZez4snuQ

mp3 – Part 1 – http://i.iloveAllaah.com/flpdx
mp3 – Part 2 – http://i.iloveAllaah.com/tkwfc

আর্টিকেল পড়তে পারেনঃ

বইঃ শবে বরাত সমাধান 

বই: শবে বরাত -ফ্রী ডাউনলোড

সুস্বাগত মাহে রমযান

লেখক: আলী হাসান তৈয়ব  |  সম্পাদনা: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া

বাড়িতে বিশেষ কোনো বিশেষ মেহমান আসার তারিখ থাকলে আমরা পূর্ব থেকেই নানা প্রস্তুতি নেই। ঘরদোর পরিষ্কার করি। বিছানাপত্র সাফ-সুতরো করি। পরিপাটি করি বাড়ির পরিবেশ। নিশ্চিত করি মেহমানের যথাযথ সম্মান ও সন্তুষ্টি রক্ষার সার্বিক ব্যবস্থা। তারপর অপেক্ষা করতে থাকি মেহমানকে সসম্মানে বরণ করে নেবার জন্য। আমাদের দুয়ারেও আজ কড়া নাড়ছে এক বিশেষ অতিথি। এমন অতিথি যার আগমনে সাড়া পড়ে যায় যমীনে ও আসমানে! আনন্দের হিল্লোল বয়ে যায় সমগ্র সৃষ্টি জগতে!

আল্লাহর হাবীবের মুখেই শুনুন সে কথা: ‘যখন রমযানের প্রথম রাত্রি আগমন করে শয়তান এবং অবাধ্য জিনদের শৃঙ্খলিত করা হয়, জাহান্নামের সকল দরোজা বন্ধ করে দেয়া হয়; খোলা রাখা হয় না কোন দ্বার, জান্নাতের দুয়ারগুলো অর্গলমুক্ত করে দেয়া হয়; বদ্ধ রাখা হয় না কোন তোরণ। এদিকে একজন ঘোষক ঘোষণা করেন,‘হে পুণ্যের অনুগামী, অগ্রসর হও। হে মন্দ-পথযাত্রী থেমে যাও’।আবার অনেক ব্যক্তিকে আল্লাহ তা‘আলা জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। আর এমনটি করা হয় রমযানের প্রতি রাতেই’।   [ তিরমীযী : ৬৮২; ইবনমাজা : ১৬৪২; ইবনহিব্বান : ৩৪৩৫সহীহুত-তিরমিযীতে শায়খ আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন ]

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাই রমযান আসার পূর্ব থেকেই রমযানের জন্য প্রস্তুতি নিতেন। শাবান মাসে অধিকহারে নফল রোযা পালনের মাধ্যমে তিনি রমযানে সিয়াম সাধনার আগাম প্রস্তুতি নিতেন।পূর্বানুশীলনকরতেন। তদুপরি তিনি সাহাবীদেরকে রমযানের শুভাগমনের সুসংবাদ দিতেন। তাঁদেরকে শোনাতেন রমযানের ফযীলতের কথা। তাঁরা যেন রমযানে ইবাদত-বন্দেগীতে বেশি করে আত্মনিয়োগ করতে পারেন। নেকী অর্জনে অতিরিক্ত পরিশ্রম করতে প্রত্যয়ী হন।

আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: ‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সঙ্গী-সাথীদের এ মর্মে সুসংবাদ শোনাতেন, ‘তোমাদের সমীপে রমযান মাস এসেছে। এটি এক মোবারক মাস। আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের ওপর এ মাসের রোযা ফরজ করেছেন। এতে জান্নাতের দ্বার খোলা হয়। বন্ধ রাখা হয় জাহান্নামের দরোজা। শয়তানকে বাঁধা হয় শেকলে। এ মাসে একটি রজনী রয়েছে যা সহস্র মাস হতে উত্তম। যে এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হল সে যেন যাবতীয় কল্যাণ থেকেই বঞ্চিত হল’।  [নাসায়ী : ২৪২৭; মুসনাদ আহমাদ : ৮৯৭৯; শুআবুল ঈমান : ৩৩২৪ শায়খ আলবানী হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন ]

সুতরাং আমাদের কর্তব্য হল, এ মাস আসার আগেই এর যথার্থ মূল্যায়নের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা। নীরবে এসে নীরবে চলে যাওয়ার আগেই এ মহান অতিথির যথাযথ সমাদর করা। এ মাস যেন আমাদের বিপক্ষে দলীল না হয়ে দাঁড়ায় সে জন্য প্রস্তুতি সম্মন্ন করা। কারণ মাসটি পেয়েও যে এর উপযুক্ত মূল্য দিল না, বেশি বেশি পুণ্য আহরণ করতে পারল না এবং জান্নাত লাভ ও জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণের পরোয়ানা পেল না, সে বড় হতভাগ্য। সবচে’ভয়ংকর ব্যাপার হলো এমন ব্যক্তি আল্লাহর ফেরেশতা ও খোদ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বদ দু‘আর অধিকারী। কারণ এমন ব্যক্তির ওপর জিবরীল আলাইহিস সালাম লানত করেছেন আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সঙ্গে ‘আমীন’বলেছেন! কেননা হাদীসে এসেছে, আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদা মিম্বরে আরোহণ করলেন।অতপর বললেন, আমীন, আমীন আমীন।জিজ্ঞেস করা হলো, হে আল্লাহর রাসূল, এটা আপনি কী করলেন? তিনি বললেন, জিবরীল আমাকে বললেন, ওই ব্যক্তির নাক ধূলিধুসরিত হোক যার সামনে রমযান প্রবেশ করলো অথচ তাকে ক্ষমা করা হলো না।আমি শুনে বললাম, আমীন (আল্লাহ কবূল করুন)।এরপর তিনি বললেন, ওই ব্যক্তির নাক ধূলিধুসরিত হোক যার সামনে আপনার কথা আলোচিত হয় তথাপি সে আপনার ওপর দরূদ পড়ে না।তখন আমি বললাম, আমীন (আল্লাহ কবূল করুন)।অতপর তিনি বললেন, ওই ব্যক্তির নাক ধূলিধুসরিত হোক যে তার পিতামাতা বা তাঁদের একজনকে পেল অথচ সে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারলো না।তখন আমি বললাম, আমীন (আল্লাহ কবূল করুন)।[বুখারী, আল-আদাবুল মুফরাদ : ৬৪৬; শায়খ আলবানী হাদীসটিকে হাসান সহীহ বলেছেন। সহীহ ইবন খুযাইমাহ : ১৮৮৮; বাইহাকী : ৮২৮৭ ]

রমযানকে স্বাগত জানানোর ক্ষেত্রে সুন্নত হল, রমযানের চাঁদ দেখে নিম্নের দু‘আটি পাঠ করা।আবদুল্লাহ ইবন উমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন চাঁদ দেখতেন, তখন তিনি বলতেন হে আল্লাহ আপনি একে আমাদের ওপর বরকত ও ঈমানের সঙ্গে এবং সুস্থতা ও ইসলামের সঙ্গে উদিত করুন, তোমার এবং আমার রব হলেন আল্লাহ।  [তিরমিযী : ৩৪৫১, শায়খ আলবানী সহীহ বলেছেন। মুসনাদ আহমদ : ১৩৯৭। সহীহ ইবন হিব্বান : ৮৮৮ ]

অতপর একে স্বাগত জানানোর সর্বোত্তম উপায়, রমযানকে সকল গুনাহ থেকে বিশেষ তাওবার সঙ্গে গ্রহণ করা। কারণ এটাতো তাওবারই মৌসুম। এ মাসে তাওবা না করলে তাওবা করবে কবে? অনুরূপভাবে রমযানকে স্বাগত জানানো ইবাদাতে দ্বিগুণ চেষ্টা, দান-সাদাকা, কুরআন তিলাওয়াত, জিকির-ইস্তেগফার এবং অন্যান্য নেক আমল অধিক পরিমাণে করার দৃঢ় সংকল্প নিয়ে। এবং এ দু‘আর মাধ্যমে- হে আল্লাহ, আমাদেরকে তোমার সন্তুষ্টি মত রোযা রাখার এবং তারাবীহ আদায় করার তাওফীক দাও।

তাই আসুন আমরা এ মহান অতিথিকে বরণ করে নিয়ে এ মাসের দিন-রাত্রিগুলো এমন আমালের মধ্য দিয়ে কাটানোর প্রস্তুতি নেই যা আমাদেরকে আল্লাহ তা‘আলার প্রিয় করে তুলবে। আমরা যেন সেসব লোকের দলে অন্তর্ভুক্ত না হই যারা রসনা তৃপ্তির রকমারি আয়োজন ও সালাত বরবাদ করার মাধ্যমে রমযানকে স্বাগত জানায়। আমরা যেন সেই লোকদের অন্তর্ভুক্ত না হই যারা রমযান পাওয়ার পরও আল্লাহর কাছে মাগফিরাত না পেয়ে নিজেকে আল্লাহর ফেরশতা ও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বদ দু‘আর যোগ্য বানায়।আল্লাহ তা‘আলা আমাদের কবুল করুন। আমীন।

ওয়েব সম্পাদনাঃ মুহাম্মাদ মাহমুদ ইবন গাফফার

রামাদান বিষয়ক সকল ফাইল – প্রবন্ধ, বই, অডিও/ভিডিও লেকচার ডাউনলোড করতে চাইলে এই লিঙ্ক এ ক্লিক করুন – রামাদান বিষয়ক সকল ফাইল – প্রবন্ধ, বই, অডিও/ভিডিও লেকচার

বই – সবর মুমিনের সাফল্যের সোপান – ফ্রি ডাউনলোড

বই: সবর মুমিনের সাফল্যের সোপান

লেখক: আবদুল মালিক আল কাসিম

প্রকাশনায়: রুহামা পাবলিকেশন

পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১২০

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: আবু দারদা রা. আমাদের তিনটি বিষয়ের শিক্ষা দিয়েছেন, যা দুর্বল করে দেয় মানুষের অভ্যন্তরীণ প্রবৃত্তিকে এবং সহায়তা করে স্রষ্টার সান্নিধ্য অর্জনে। তিনি বলেন, ‘আমি এমন তিনটি জিনিসকে ভালোবাসি, যেগুলোকে সাধারণ মানুষ অপছন্দ করে : দারিদ্র্য, রোগ-ব্যাধি এবং মৃত্যু। দারিদ্র্যকে ভালোবাসি, কারণ তা রবের সামনে বিনয় প্রকাশের মাধ্যম। মৃত্যুকে ভালোবাসি, কারণ রবের সাথে সাক্ষাৎ করার জন্য মৃত্যুই একমাত্র পন্থা। এবং রোগ-ব্যাধিকে ভালোবাসি, কারণ রোগ-ব্যাধি পাপরাশি মুছে দেয়।’ (আস-সিয়ার : ২০/১৪৯)

শাইখ আব্দুল মালিক আল-কাসিমের (اصبر واحتسب) গ্রন্থের সরল অনুবাদ—’সবর মুমিনের সাফল্যের সোপান’। বইটিতে কুরআন, সুন্নাহ, পূর্ববর্তী নেককারদের জীবনী থেকে সবরের শিক্ষা, মর্যাদা, উপায় আলোচিত হয়েছে সবিস্তারে।

Android – ezPDF Reader  |  PlayStore | Adobe Reader – PlayStore

Windows 7/8/10 – Adobe Reader

বই – সবর মুমিনের সাফল্যের সোপান – QA
বই – সবর মুমিনের সাফল্যের সোপান – QA

বইটি ভালো লাগলে অবশ্যই একটি Hard Copy সংগ্রহ করে অথবা লেখক বা প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে সৌজন্য মূল্য প্রদান করে সহযোগিতা করুন।

গৃহিণীদের রামাদান পরিকল্পনা

kitchen-1

রামাদান এলেই রামাদান কে স্বাগত জানানোর জন্য ,রামাযানকে সুন্দরভাবে পালন করার জন্য আমরা কত রকম পরিকল্পনা করে থাকি আরো সাথে থাকে ঈদের বাড়তি আনন্দ। রামাদান পালন আর ঈদের আনন্দ এ সব কিছু মিলিয়ে প্রতিটা গৃহিণীর মনে থাকে অন্যরকম একটা ভালোলাগা আর এ ভালোলাগার পুরো আনন্দ পেতে সারা মাস জুরে থাকে ব্যস্ততা যা সব কিছুকে সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে নতুনত্ব আনার একটা প্রচেষ্টা। কিন্তু অনেক গৃহিণী রামাদানের শুরুতেই অপরিকল্পনার কারনে কিছুটা তালগোল পাকিয়ে ফেলেন করি করছি করব করতে করতেই এ মাস টা শেষ হয়ে যায় , শেষে আফসোস থেকে যায় , ইসস! কিছুই করতে পারলাম না।

সেজন্য সব গৃহিণীদের অবশ্যই বিশেষ কিছু কিছু পরিকল্পনা করতে হয় যাতে রামাযান এবং ঈদের আনন্দ দুটাই পুরু পুরি উপভোগ করে মনে প্রশান্তি পাওয়া যায়। রামাযান যেহেতু আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে বিশেষ রহমত পাওয়ার মাস তাই পুরু রামাযান কিভাবে পালন করে এ মাসটাকে অর্থবহ করে তোলা যায় তারজন্য চাই বিশেষ কিছু পরিকল্পনা –

রামাদান শুরু হওয়ার আগের পরিকল্পনা :–

১) রামাদান শুরু হওয়ার আগেই ঘরবাড়ি পরিস্কার করার কাজ সেরে রাখুন , ঘরে সাজিয়ে রাখা শোপিস ,ফুল ,  পর্দা , রান্নাঘরের কেবিনেট ,রেফ্রিজারেটর ,ওভেন ইত্যাদি ।
২) রামাদানের আগেই মুদি দোকানের সব কেনা কাটা করে নিন এবং সব গুছিয়ে রাখুন প্রয়োজনে কৌটার গায়ে জিনিস পত্রের নাম লিখে রাখুন যেন দরকারের সময় অযথা খুঁজাখুঁজি করে সময় নষ্ট না করতে হয় ।
৩) যে জামা কাপর গুলি অনেক দিন জমিয়ে রেখেছেন লন্দ্রিতে দিবেন বা বাসায় ধুয়ে নিবেন সেগুলি ধুয়ে ইস্ত্রি করে আলমারিতে তুলে রাখুন নয়তো এগুলির জন্য আপনাকে পরিশ্রম এবং টেনশন দুটাই করতে হবে ।
৪) বাইরের ভেজাল খাবার না খেতে চাইলে রমজানের আগে কিছু কিছু খাবার দু চার দিন এক সপ্তাহের জন্য রান্না করে ফ্রিজ আপ করে রাখতে পারেন ,যেমনঃগোস্তের কিমা ,ছোলা সিদ্ধ,মিষ্টি দই ।এতে করে ঘরের বানানো নির্ভেজাল খাবার খেতে পারবেন এবং কয়েকদিনের জন্য ফ্রী থাকবেন যাতে এই সময়টা ইবাদাতের কাজে লাগাতে পারেন ।
৫) সারা মাস জুরে চলে ঈদের কেনা কাটার ব্যস্ততা ।এই ঝামেলা থেকে মুক্তি রমজান শুরু হওয়ার আগেই পরিবারের সবার জন্য লিস্ট করে ঈদের কেনা কাটা সেরে ফেলুন ,এতে একদিকে যেমন সময়কে সুস্থ ভাবে কাজে লাগাতে পারবেন তেমনি বাড়তি খরচ থেকেও মুক্তি পাবেন ।

রামাযানের দিনগুলি আমরা কিভাবে কাটাতে পারি তার পরিকল্পনা :–

১) প্রতি ওয়াক্তের ফরজ নামাজ নিয়মিত আদায় করার চেষ্টা করুন , সুন্নত এবং নফল ইবাদাত আপনার পক্ষে যতটা সম্ভব বাড়িয়ে দিন ।সন্তানদেরকেও ইবাদতে অভ্যাস গড়ে তুলুন ।রামাদানের শেষ দশ দিনে ইবাদাত যেন বেশি বেশি করতে পারেন তারজন্য আল্লাহ্‌র কাছে দুয়া করুন ।
২) শুধু মাত্র কোরআন খতমের দিকে লক্ষ্য না রেখে কোরআন অর্থ বুঝে পড়ার চেষ্টা করবেন ।যাতে আল্লাহ্‌ তায়ালা কোরআন আমাদের জন্য কেন নাযিল করেছেন ,জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে কি কি বিধি বিধান রয়েছে সেটা বুঝতে পারেন ।
৩) সন্তানদের রোজা রাখার জন্য তাগিদ দিবেন ,গেমস কম্পিউটার চালানো থেকে তাদের বিরত রেখে কোরআন পড়ার প্রতি উৎসাহ দিবেন এবং নিজে তাদের সাথে বসবেন ।
৪) আমরা কেও ভুল ভ্রান্তির ঊর্ধ্বে না তাই নিজের দোষ গুলি খুজে বের করুন ,অন্যের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলুন এবং অন্যকে ক্ষমা করার চেষ্টা করুন ।গীবত চোগলখুরি আর ঝগড়া বিবাদ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখুন।
৫)খাবার দাবারের কাজে নিজেকে এতটা ব্যস্ত রাখবেন না যাতে আপনি ক্লান্ত হয়ে পরেন এবং রাতের তারাবী নামাজ পরতে অলসতা বোধ করেন ।তাই যতটা সম্ভব খাবার তৈরিতে এবং পরিশ্রমের মাঝে ভারসাম্য রাখার চেষ্টা করবেন ।
৬) সেহরি খাওয়াটা একটা সুন্নত তাই রাতের একটা নির্দিষ্ট সময় ঘুমায়ে ক্লান্তি দুর করুন এবং সেহরি খাওয়ার প্রতি সবাইকে উৎসাহিত করুন ।
৭) অযথা সারা রাত জেগে থেকে দিনের অধিকাংশ সময় ঘুমিয়ে কাটানোর পরিকল্পনা বাদ দিন ।
৮) নিজেদের ইফতার থেকে প্রতিদিন অন্তত একজন রোজাদারকে ইফতারী করানোর চেষ্টা করুন, অবশ্যই নিজেদের গরীব আত্মীয় -স্বজনদের থেকে আগে নির্বাচন করবেন , যতটা সম্ভব গরীব আত্মীয় স্বজনদের যোগাযোগ রাখুন এবং তাদের সাহায্য সহযোগিতা করার চেষ্টা করুন ।
৯) ইফতারীর সময় কিছুটা হাতে রেখে ইফতারী তৈরির কাজ শেষ করবেন যেন পরিবারের সবার সাথে বসে একসাথে ইফতারী করতে পারেন ।
১০) আত্ন সমালোচনা করে নিজের সকল গুনাহ, ভুল-ক্রুটির জন্য আল্লাহ্‌র কাছে খাঁটি মনে তওবা করুন এবং শিরক বিদআত থেকে মুক্ত থাকার জন্য আল্লাহ্‌র কাছে হিদায়েত প্রার্থনা করুন ।
১১) নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী এ মাসে দান সাদাকা করার চেষ্টা করুন ।যাকাত ফিতরা আদায় করুন ।
১২) ঘরের বিভিন্ন কাজের ফাকে ফাকে বিভিন্ন সুন্নতই জিকির আযকার করে আপনার নেকির পরিমান বাড়ানোর চেষ্টা করুন ।
১৩)একজন মুসলিমাহর প্রাত্যহিক জীবন কেমন হওয়া উচিৎ! দিনের একটা অবসর সময় বেছে নিয়ে আপনার কাছের বান্ধবীদের সাথে নিয়ে বসে আলোচনা সমালোচনা করুন এবং নিজেদেরকে একজন উন্নত মুসলিমাহ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য একে অন্যকে অনুপ্রেরনা দিন ।
১৪) সহীহ শুদ্ধ ভাবে দ্বীনের জ্ঞান লাভের চেষ্টা করুন । দ্বীনের দাওয়াত দেয়ার কোন সুযোগ পেলে সেটা হাতছারা করবেন না যথাসাধ্য চেষ্টা করুন সহীহ ভাবে অন্যকে জানাতে ।
১৫) রোজা থাকা অবস্থায় দোয়া কবুল হয় তাই এ সময় বেশি বেশি করে দোয়া করুন ,নিজের জন্য ,পরিবারের জন্য ,বাবা-মায়ের জন্য ,সকল মুমিন মুসলিমদের জন্য ।

এবং দোয়া করুন এ পরিকল্পনাগুলি যেন সার্থক ভাবে পালন করে সফল হতে পারেন ।

পরিশেষে আরো একটি পরিকল্পনা থেকে যায় সেটা হল -এ মাসে নিজেকে যেভাবে চালিয়ে নিয়েছেন পরবর্তী দিনগুলিও যেন সেভাবে চালানোর চেষ্টা করতে পারেন এর জন্য একটা পরিকল্পনা ।কিন্তু সে পরিকল্পনা হোক আপনাদের নিজেদের জীবনে যার যার সুযোগ সুবিধা মতো । আল্লাহ আমাদের সবার পক্ষ্ থেকে রমজান কবুল করুক এবং তার দ্বীনের উপর অবিচল থাকার তৌফিক দান করুক।

আমীন!!

রামাদান বিষয়ক সকল ফাইল – প্রবন্ধ, বই, অডিও/ভিডিও লেকচার ডাউনলোড করতে চাইলে এই লিঙ্ক এ ক্লিক করুন – রামাদান বিষয়ক সকল ফাইল – প্রবন্ধ, বই, অডিও/ভিডিও লেকচার

বই – পুণ্যবান বন্ধু জীবনসফরে উত্তম সহযাত্রী – ফ্রি ডাউনলোড

বই: পুণ্যবান বন্ধু জীবনসফরে উত্তম সহযাত্রী

অনুবাদ ও সম্পাদনা: আব্দুল্লাহ ইউসুফ

লেখক: আবদুল মালিক আল কাসিম

প্রকাশনায়: রুহামা পাবলিকেশন

পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৬৮

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: হাদিস শরিফে উত্তম বন্ধু ও খারাপ বন্ধুর খুব সুন্দর উপমা বিবৃত হয়েছে। রাসুল ﷺ বলেন :
‘উত্তম বন্ধু ও মন্দ বন্ধুর উদাহরণ হলো, সুগন্ধি বিক্রেতা ও হাপরে ফুঁকদানকারী। সুগন্ধিওয়ালা হয়তো তোমাকে উপহারস্বরূপ সুগন্ধি দেবে অথবা তার কাছ থেকে তুমি কিনে নেবে। তাও না হলেও তার কাছ থেকে অন্তত সুগন্ধি পাবে। আর হাপরে ফুঁকদানকারী হয়তো তোমার কাপড় পুড়ে ফেলবে অথবা দুর্গন্ধ পাবে।’

ইসলামে বন্ধুত্বের গুরুত্ব, বন্ধুত্বের প্রভাব, প্রকৃত বন্ধু চেনার উপায়, বন্ধুত্বের সম্পর্ক অটুট রাখার কৌশল, এ ব্যাপারে সালাফদের দিকনির্দেশনা, ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এই বইতে।

Android – ezPDF Reader  |  PlayStore | Adobe Reader – PlayStore

Windows 7/8/10 – Adobe Reader

বই – পুণ্যবান বন্ধু জীবনসফরে উত্তম সহযাত্রী – QA
বই – পুণ্যবান বন্ধু জীবনসফরে উত্তম সহযাত্রী – QA

বইটি ভালো লাগলে অবশ্যই একটি Hard Copy সংগ্রহ করে অথবা লেখক বা প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে সৌজন্য মূল্য প্রদান করে সহযোগিতা করুন।

বই – জান্নাতের চাবি – ফ্রি ডাউনলোড

বই: জান্নাতের চাবি

লেখক: শাইখ আব্দুল মালিক আল কাসিম

প্রকাশনায়: রুহামা পাবলিকেশন

পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৫৬ 

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: সাইদ বিন মুসাইয়িব রহ. বলেন, ‘৫০ বছর যাবৎ কোনোদিন আমার থেকে ‘তাকবিরে উলা’ ছোটেনি এবং ৫০ বছর যাবৎ আমি নামাজে মানুষের পিঠ দেখিনি (অর্থাৎ সব সময় প্রথম কাতারে নামাজ পড়েছি)।’ (হিলইয়াতুল আওলিয়া : ২/১৬৩)

সুফইয়ান বিন উয়াইনা রহ. বলেন, ‘নামাজের প্রতি পূর্ণ সম্মান প্রদর্শন হলো, ইকামাত দেওয়ার আগেই নামাজের জন্য উপস্থিত হওয়া।’ (সিফাতুস সাফওয়াহ : ২/২৩৫)

হাতিম আল-আসাম রহ. বলেন, ‘একদিন আমার এক ওয়াক্ত নামাজের জামাআত ছুটে গেলে কেবল আৰু ইসহাক বুখারি রহ. আমাকে সান্ত্বনা দিলেন; অথচ যদি আমার সন্তান মারা যেত, তাহলে দশ হাজারেরও অধিক মানুষ আমাকে সান্ত্বনা দিত। কারণ, মানুষের নিকট দ্বীনি মুসিবত দুনিয়াবি মুসিবতের তুলনায় তুচ্ছ!’ (মুকাশাফাতুল কুলুব : ৩৬৪ )

Android – ezPDF Reader  |  PlayStore | Adobe Reader – PlayStore

Windows 7/8/10 – Adobe Reader

বই – জান্নাতের চাবি – QA
বই – জান্নাতের চাবি – QA

বইটি ভালো লাগলে অবশ্যই একটি Hard Copy সংগ্রহ করে অথবা লেখক বা প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে সৌজন্য মূল্য প্রদান করে সহযোগিতা করুন।

বই – মা, মা, মা এবং বাবা – ফ্রি ডাউনলোড

বই: মা, মা, মা এবং বাবা

লেখক: আরিফ আজাদ

প্রকাশনায়: সমকালীন প্রকাশন

বিষয়: আদব, আখলাক

পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১৭৬ 

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: পিতা-মাতা এবং সন্তানের মধ্যকার সম্পর্কটাই পৃথিবীর সবচেয়ে মধুর এবং সবচেয়ে সুন্দর সম্পর্ক। এই সম্পর্কের কোথাও কোনো খাঁদ নেই। নেই স্বার্থ কিংবা স্বার্পরতার ছোঁয়া। মায়া, মমতা, আদর, যত্ন এবং নিখাঁদ ভালোবাসার এক অদ্ভুত চক্রে আবর্তিত এই সম্পর্কের প্রতিটি মুহূর্ত। আমাদের জন্ম, বেড়ে ওঠা, শৈশব এবং কৈশোরের গল্পে, আমাদের যুবক হয়ে ওঠার চিত্রপটে তারাই থাকেন মূল ভূমিকায়।

অথচ নিয়তির নির্মম পরিহাসে আমাদের জীবনের সেই মহানায়ক আর মহানায়িকা, যারা নিজেদের সবটুকু ঢেলে দিয়ে আমাদের আগলে রাখেন, আমাদের মানুষ করেন, তাদেরকে আমরা আস্তাকুড়ে ছুঁড়ে ফেলি। পরিত্যক্ত জঞ্জালের ন্যায় ভাগাড়ে নিক্ষেপ করি। এমনসব কঠিণপ্রাণ সন্তান, যারা দুনিয়ার লোভ আর মোহে পড়ে বাবা-মা’কে ভুলে যায়, ভুলে যায় তাদের অবদান, ত্যাগ আর তিতিক্ষার গল্প, কেমন হয় তাদের পরিণতি?

অথবা, এমনসব সৌভাগ্যবান সন্তান, যারা সবকিছুর বিনিময়ে বাবা-মা’কে আগলে রাখে, ভালোবাসে, যেভাবে শৈশবে তাদের আগলে রেখেছিল তাদের পিতা-মাতা, কেমন হয় সেসকল সন্তানদের যাপিত জীবনের গল্প? সেরকম একঝুঁড়ি গল্পের সমাহার নিয়ে রচিত মা, মা, মা এবং বাবা।

Android – ezPDF Reader  |  PlayStore | Adobe Reader – PlayStore

Windows 7/8/10 – Adobe Reader

বই – মা, মা, মা এবং বাবা – QA
বই – মা, মা, মা এবং বাবা – QA

বইটি ভালো লাগলে অবশ্যই একটি Hard Copy সংগ্রহ করে অথবা লেখক বা প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে সৌজন্য মূল্য প্রদান করে সহযোগিতা করুন।

ইসলামের দৃষ্টিতে বিশ্ব ভালবাসা দিবস (Valentine day) পর্ব ১

লেখক: আ.স.ম শোয়াইব আহমাদ (পিএইচ.ডি) | সম্পাদনা: ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া

পর্ব ১ | পর্ব 2 | পর্ব ৩

ভালবাসার পরিচয়:

‘ভালবাসা’ এক পবিত্র জিনিস যা আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এর পক্ষ হতে আমরা পেয়েছি। ভালবাসা’ শব্দটি ইতিবাচক। আল্লাহ তা‘আলা সকল ইতিবাচক কর্ম-সম্পাদনকারীকে ভালবাসেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: ‘‘এবং স্বহস্তে নিজেদেরকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিয়ো না। তোমরা সৎকর্ম কর, নিশ্চয় আল্লাহ্‌ মুহসিনদের ভালবাসেন।’’ [সূরা আল-বাকারা:১৯৫]। ভুলের পর ক্ষমা প্রার্থনা করা এবং পবিত্রতা অবলম্বন করা এ দুটিই ইতিবাচক কর্ম। তাই আল্লাহ তাওবাকারী ও পবিত্রতা অবলম্বনকারীদেরকেও ভালবাসেন। আল্লাহ বলেন: ‘‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ তাওবাকারী ও পবিত্রতা অবলম্বনকারীদেরকে ভালবাসেন।’’ [সূরা আল-বাকারা:২২২]। তাকওয়া সকল কল্যাণের মূল। তাই আল্লাহ মুত্তাকীদেরকে খুবই ভালবাসেন। তিনি বলেন: ‘‘আর নিশ্চয় আল্লাহ মুত্তাকীদেরকে ভালবাসেন।’’ [সূরা আল ইমরান:৭৬]

পবিত্র এ ভালবাসার সাথে অপবিত্র ও নেতিবাচক কোন কিছুর সংমিশ্রণ হলে তা আর ভালবাসা থাকে না, পবিত্রও থাকে না; বরং তা হয়ে যায় ছলনা,শঠতা ও স্বার্থপরতা। ভালবাসা, হৃদয়ে লুকিয়ে থাকা এক অদৃশ্য সুতোর টান। কোন দিন কাউকে না দেখেও যে ভালবাসা হয়; এবং ভালবাসার গভীর টানে রূহের গতির এক দিনের দূরত্ব পেরিয়েও যে দুই মুমিনের সাক্ষাত হতে পারে তা ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমার এক বর্ণনা থেকে আমরা পাই। তিনি বলেন: ‘‘কত নি‘আমতের না-শুকরি করা হয়, কত আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করা হয়, কিন্তু অন্তরসমূহের ঘনিষ্ঠতার মত (শক্তিশালী) কোন কিছু আমি কখনো দেখি নি।’’ [ইমাম বুখারী, আল-আদাবুল মুফরাদ :হাদীস নং২৬২]

ভালবাসার মানদণ্ড:

কাউকে ভালবাসা এবং কারো সাথে শত্রুতা রাখার মানদণ্ড হলো একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি। শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই কাউকে ভালবাসতে হবে এবং শত্রুতাও যদি কারো সাথে রাখতে হয়, তাও আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই। এটাই শ্রেষ্ঠ কর্মপন্থা। রাসূলুল্লাহ () বলেন: ‘‘নিশ্চয় আল্লাহর নিকট শ্রেষ্ঠ আমল হলো আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই কাউকে ভালবাসা এবং শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই কারো সাথে শত্রুতা রাখা।’’ [আহমদ, মুসনাদুল আনসার, হাদিস নং২০৩৪১]

ঈমানের পরিচয় দিতে হলে, কাউকে ভালবাসবার আগে আল্লাহর জন্য হৃদয়ের গভীরে সুদৃঢ় ভালবাসা রাখতে হবে। কিছু মানুষ এর ব্যতিক্রম করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন: ‘‘আর মানুষের মধ্যে কেউ কেউ আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্যকে আল্লাহ্‌র সমকক্ষরূপে গ্রহণ করে এবং আল্লাহকে ভালবাসার মত তাদেরকে ভালবাসে; কিন্তু যারা ঈমান এনেছে আল্লাহ্‌র প্রতি ভালবাসায় তারা সুদৃঢ়।’’ [সূরা আল-বাকারা:১৬৫]

শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই কাউকে ভালবাসতে হবে, নতুবা কোন ব্যক্তি ঈমানের স্বাদ পাবে না। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন: ‘‘তিনটি গুণ যার মধ্যে থাকে সে ঈমানের স্বাদ পায়। ১. আল্লাহ ও তাঁর রাসূল তার কাছে অন্য সব কিছু থেকে প্রিয় হওয়া। ২. শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই কাউকে ভালবাসা। ৩. কুফুরীতে ফিরে যাওয়াকে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়ার মত অপছন্দ করা।’’ [বুখারী, কিতাবুল ঈমান, হাদিস নং:১৫]

আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ভালবাসার ফযীলত:

আল্লাহ রাব্বুল ইয্‌যতের মহত্ত্বের নিমিত্তে যারা পরস্পর ভালবাসার সম্পর্ক স্থাপন করে, কিয়ামতের দিন তাদেরকে তিনি তাঁর রহমতের ছায়ায় জায়গা দেবেন। রাসূলুল্লাহ () বলেন: ‘‘কিয়ামতের দিন আল্লাহ বলবেন, আমার মহত্ত্বের নিমিত্তে পরস্পর ভালবাসার সম্পর্ক স্থাপনকারীরা কোথায় ? আজ আমি তাদেরকে আমার বিশেষ ছায়ায় ছায়া দান করব। আজ এমন দিন, যে দিন আমার ছায়া ব্যতীত অন্য কোন ছায়া নেই।’’ [মুসলিম, কিতাবুল বিররি ওয়াস-সিলাহ, হাদিস নং৪৬৫৫]

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আরও বলেন: ‘‘নিশ্চয় আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে এমন কিছু মানুষ আছে যারা নবীও নয় শহীদও নয়; কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ হতে তাঁদের সম্মানজনক অবস্থান দেখে নবী এবং শহীদগণও ঈর্ষান্বিত হবে। সাহাবিগণ বললেন, হে আল্লাহর রাসূল ! আমাদেরকে বলুন, তারা কারা ? তিনি বলেন, তারা ঐ সকল লোক, যারা শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই একে অপরকে ভালবাসে। অথচ তাদের মধ্যে কোন রক্ত সম্পর্কও নেই, এবং কোন অর্থনৈতিক লেন-দেনও নেই। আল্লাহর শপথ! নিশ্চয় তাঁদের চেহারা হবে নূরানি এবং তারা নূরের মধ্যে থাকবে। যে দিন মানুষ ভীত-সন্ত্রস্ত থাকবে,সে দিন তাঁদের কোন ভয় থাকবে না। এবং যে দিন মানুষ দুশ্চিন্তাগ্রস্ত থাকবে, সে দিন তাঁদের কোন চিন্তা থাকবে না..।’’ [সুনানু আবী দাঊদ, কিতাবুল বুয়ূ‘, হাদিস নং ৩০৬০]

পরস্পরের মধ্যে ভালবাসা বৃদ্ধি করার উপায়:

ইসলাম বলে, পরস্পরের মধ্যে ভালবাসা ও সৌহার্দ্য স্থাপিত না হলে পরিপূর্ণ ঈমানদার হওয়া যায় না, শান্তি ও নিরাপত্তা লাভ করা যায় না, এমনকি জান্নাতও লাভ করা যাবে না। তাই রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মুমিনদের পরস্পরের মধ্যে ভালবাসা ও সৌহার্দ্য বৃদ্ধির জন্য একটি চমৎকার পন্থা বাতলে দিয়েছেন। তিনি বলেন: ‘‘তোমরা বেহেশতে প্রবেশ করতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত ঈমানদার না হবে, তোমরা ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না পরস্পরের মধ্যে ভালবাসা ও সৌহার্দ্য স্থাপন করবে। আমি কি তোমাদেরকে এমন বিষয়ের কথা বলব না, যা করলে তোমাদের মধ্যে ভালবাসা ও সৌহার্দ্য প্রতিষ্ঠিত হবে ? সাহাবীগণ বললেন, নিশ্চয় ইয়া রাসূলাল্লাহ ! (তিনি বললেন) তোমাদের মধ্যে বহুল পরিমাণে সালামের প্রচলন কর।’’ [মুসলিম, কিতাবুল ঈমান, হাদিস নং ৮১]

পর্ব ১ | পর্ব 2 | পর্ব ৩

রামাদানের প্রস্তুতির জন্য ৮ টি সহজ টিপ্‌স

5995303596_0445c705b0

লেখক: ওয়েসাম কেরায়েম | অনুবাদক: মুসাফির শহীদ

রামাদানে বা হজ্জের সময় ছাড়া বছরের অন্যান্য সময় কেন সালাতে মনোযোগ দিতে কষ্ট হয় কিংবা কেন আমাদের ঈমান দুর্বল থাকে তা ভেবে আপনি কি কখনো বিষ্মিত হয়েছেন? এর কারণ হতে পারে, সচরাচর আমরা সাধারণত একটি ফোনালাপের পরপরই তাকবীরে চলে যাই কিংবা অন্য আর সবার মতোই আমরা আমাদের চারপাশের পরিবেশ দ্বারা প্রভাবিত হই, যা আমাদের প্রকৃত অনুভূতি নয়। 

আমাদের অনেকেই খুব সাধারণ জীবন যাপন করি, আর অনেক ক্ষেত্রে আমাদের ঈমানের হ্রাস-বৃদ্ধি নির্ভর করে আসন্ন কোন ঘটনার উপর, উদাহরণস্বরূপঃ ‘রামাদান শুরু হলেই আমি প্রতিদিন এক পাতা কুর’আন তিলাওয়াত করবো; হজ্জ থেকে ফিরেই আমি প্রতি রাতে তাহাজ্জুদ আদায় করবো; আমার সন্তান জন্মলাভ করলেই আমি ধুমপান ছেড়ে দিব।’ আর এ ধরনের চিন্তাভাবনার কারণেই সাধারণত আমাদের প্রাপ্ত ফলাফল হয় সম্পূর্ণ বিপরীত। আমরা ধুমপান ছাড়তে পারি না, নিয়মিত তাহাজ্জুদ আদায় করতে পারি না, আর কুর’আন তিলাওয়াত শুরু করলেও কয়েকদিন বা কয়েক সপ্তাহ পর আমরা আবার আমাদের আগের অবস্থায় ফিরে যাই। কারণ, আমাদের এই ‘সংকল্প’ কিংবা ‘অনুভূতিগুলো’ আবেগ কিংবা ঝোঁকের কারণে সৃষ্ট; প্রকৃত চিন্তাভাবনার ফসল নয়। সাধারণত রামাদান কিংবা হজ্জের জন্য আমাদের কোন প্রস্তুতি থাকে না, যা আমাদের ঈমানকে বৃদ্ধি করতে পারে; অন্য সবাই যা করে আমরাও তা করি এবং আশা করি আমাদের ঈমান বেড়ে যাবে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এমন কিছু ঘটে না।

আপনি কি চান না আপনার রামাদান শুরু হোক অত্যন্ত ভালোভাবে এবং রামাদানের এই সুন্দর প্রভাব স্থায়ীভাবে বিরাজ করুক আপনার জীবনে? তাহলে এটা কীভাবে সম্ভব? আসুন জেনে নেই…এখানে ৮ টি ধাপ সম্পর্কে বর্ণনা করা হলো যা রামাদানের একটি স্থায়ী ফলাফল পেতে ইনশা আল্লাহ আপনাকে সাহায্য করবে–

১) একটি রমাদান ‘কাউন্ট ডাউন’ তৈরি করুন: রামাদানের দিন গণনা (মনে মনে কিংবা ক্যালেন্ডারে দাগ দিয়ে) আপনার মনে এবং আপনার চারপাশে থাকা মানুষদের মাঝে সৃষ্টি করবে এক উম্মাদনা এবং গুঞ্জন। যখন আপনি এবং আপনার বন্ধুরা একই কর্মসূচীর জন্য দিন গুণতে থাকবেন তখন তা আপনাদের প্রতিদিনকার কথাবার্তা ও আনন্দ ভাগাভাগির অংশে পরিণত হবে।

২) রামাদান সম্পর্কে জ্ঞান অন্বেষণ করুনঃ এটা আপনাকে রামাদানের ইবাদাতসমূহ সঠিক ও পূর্ণভাবে পালনের নিশ্চয়তা দিবে এবং আপনার মাঝে রামাদানের অনুপ্রেরণামূলক দিক ও কাজগুলো সম্পর্কে এক উম্মাদনার সৃষ্টি করবে। রামাদান সম্পর্কে আপনি যতো বেশি জানবেন ততো বেশি ইবাদাত করে আপনার প্রতিদানকে বহুগুণে বাড়িয়ে নিতে পারবেন। বিস্তারিত জানতে এইখানে ক্লিক করুন।

৩) রামাদানের জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরি করুন: হতে পারে এটা সম্পূর্ণ কুর’আন খতম দেয়া, নিয়মিত তারাওয়ীর সালাত আদায় করা কিংবা আত্মীয়-স্বজনদের ইফতারে আমন্ত্রণ করা; প্রথমে এই রামাদানে আপনি কোন ইবাদাতগুলো করতে চান তার একটি তালিকা তৈরি করুন, তারপর পরিকল্পনা করুন সেগুলো কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায়। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, আপনার পরিকল্পনাগুলো যেন বাস্তবসম্মত হয় এবং সেগুলো যাতে আপনার স্বাভাবিক জীবন-যাত্রায় কোন ব্যাঘাত না ঘটায় (উদাহরণস্বরূপ, এমন কোন পরিকল্পনা না করা যাতে আপনাকে পুরো এক মাস ছুটি নিতে হয় কিংবা কাজের সময় পরিবর্তন করতে হয়), তাহলে রামাদানের পরেও আপনি এই ইবাদাতগুলো চালিয়ে যেতে পারবেন ইনশা আল্লাহ। এই রামাদানে আপনি কী অর্জন করতে চান তা জানা থাকলে লক্ষ্য পূরণের ব্যাপারে আপনি অবিচল থাকতে পারবেন। রামাদানে প্রতিদিন রাতে পরবর্তী দিনের জন্য পরিকল্পনা তৈরি করুন (চেষ্টা করুন রামাদানের পরেও এই অভ্যাসটি চালিয়ে যেতে)।

৪) নিজের জীবন সম্পর্কে সচেতন হোন: রামাদানে কিংবা রামাদানের পরপরই ঘটতে পারে এমন কোন বিষয়ের ব্যাপারে সচেতন হোন। রামাদানের মধ্যে কি আপনার পরীক্ষা আছে? কিংবা রামাদানের পরপরই কোন বিয়ের অনুষ্ঠান? অথবা বাসা বদলানো? যদি এ ধরনের কোন কর্মসূচী থেকে থাকে তবে এখন থেকেই সেগুলোর ব্যাপারে পরিকল্পনা করুন। এখন থেকেই পড়তে থাকুন, তাহলে রামাদান শুরুর আগেই আপনার প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়ে যাবে ইনশা আল্লাহ। সবকিছু গুছিয়ে নিন এবং রামাদান শুরুর আগে কিংবা পরে বাসা বদলানোর প্রস্তুতি গ্রহণ করুন, যাতে তা আপনার ইবাদাতের সময় কেড়ে না নেয়। সর্বশেষ আপনার যে কাজটি করার সম্ভাবনা আছে তা হলো রামাদানে শপিং সেন্টারে ঘুরে সময় অপচয় করা। তাই ঈদ কিংবা বিয়ের কেনাকাটা রামাদানের আগেই সেরে ফেলুন।

৫) আধ্যাত্মিকভাবে তৈরি হোন: আমরা সবাই জানি রামাদান হচ্ছে সিয়াম পালন, সালাত আদায়, কুর’আন তিলাওয়াত এবং সাদাকাহ (দান) করার মাস। রামাদানের ঠিক প্রথম দিনটির জন্য বসে না থেকে এখন থেকেই এই ইবাদাতগুলো করা শুরু করুন। এখন থেকেই নফল সালাত, কুর’আন তিলাওয়াত, মানুষের প্রতি উদারতা প্রদর্শন প্রভৃতি ইবাদাতসহ নবী করীম (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সুন্নাহ সমূহ অনুসরণ করার চেষ্টা করুন। আর শাবান মাসে নফল সিয়াম পালনের কথা ভুলবেন না কিন্তু।

৬) আপনার মনকে প্রস্তুত করুন: সাওম হচ্ছে আমরা আমাদের মুখের মাধ্যমে যা কিছু গ্রহণ বা বর্জন করি তা থেকে বিরত থাকা। এখন থেকেই সংযমের চেষ্টা করুন, বিশেষ করে আপনার কথোপকথনের ব্যাপারে। পরনিন্দা, পরচর্চা কিংবা সকল প্রকার অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা থেকে বিরত থাকুন।

৭) বদ অভ্যাসগুলোকে বলুন ‘শুভ বিদায়’: নিজের বদ অভ্যাসগুলো চিহ্নিত করুন এবং রামাদানের জন্য বসে না থেকে এখন থেকেই সেগুলো ছেড়ে দেয়ার চেষ্টা করুন। আপনার যদি দেরিতে ঘুমানোর অভ্যাস থাকে, তবে এখন থেকেই তাড়াতাড়ি ঘুমানোর চেষ্টা করুন; আপনি যদি ফেসবুক আসক্ত হোন তবে এখন থেকেই ফেসবুক কম ব্যবহার করার চেষ্টা করুন; কফির প্রতি খুব দুর্বল? তবে এখন থেকেই তা কমিয়ে আনার চেষ্টা করুন। আমরা সবাই জানি কোন কিছু বলা খুব সহজ কিন্তু করা কঠিন। তবে আপনি যদি একবার শুরু করেন এবং আপনার নিয়্যাহ যদি বিশুদ্ধ থাকে তবে দু’আর মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য কামনা করুন। ইনশা আল্লাহ আপনি যতটা কষ্ট হবে ভেবেছিলেন তার চেয়ে অনেক সহজেই আপনার বদ অভ্যাসগুলো ছেড়ে দিতে পারবেন।

৮) নিজের জীবনকে ইবাদাতের উপযোগী করে পরিকল্পনা করুন: সলাতের সময় কাজ কিংবা মিটিংয়ের আয়োজন না করে অন্য সময় করুন, যাতে সলাতের জন্য আপনার কিছু সময় বিরতি থাকে। আপনি যেখানে সলাত আদায় করেন সেখানে মোবাইল ফোন নিয়ে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন এবং দুনিয়ার কথা ভুলে যান, কারণ সলাতের মাধ্যমে আপনি আল্লাহর সামনে দাঁড়াচ্ছেন।

আশা করি এই ৮ টি ধাপ যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে আপনারা সকলেই রামাদানে সামান্য হলেও উপকৃত হবেন। আর এর বাইরেও যদি আপনাদের কোন ব্যক্তিগত পরিকল্পনা থাকে তবে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন।

জাযাক আল্লাহ খাইরান।

রামাদান বিষয়ক সকল ফাইল – প্রবন্ধ, বই, অডিও/ভিডিও লেকচার ডাউনলোড করতে চাইলে এই লিঙ্ক এ ক্লিক করুন –রামাদান বিষয়ক সকল ফাইল – প্রবন্ধ, বই, অডিও/ভিডিও লেকচার

রামাদান বিষয়ক সকল ফাইল – প্রবন্ধ, বই, অডিও/ভিডিও লেকচার

রামাদান বিষয়ে প্রতিদিন আপডেট করা হবে এই লিস্ট।

এই রামাদান (রমজান মাসকে) পরিনত করুন আপনার জীবনের শ্রেষ্ঠ রামাদ্বানে। এই ‘রামাদ্বান রিসোর্সেস পোস্ট’-এ আছে  গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ, লেকচার, বই, অন্যান্য দরকারী তথ্য যা আপনার রামাদ্বান প্রস্তুতিতে সাহায্য করবে যাতে আপনি কুরআন সুন্নাহ অনুযায়ী অনেক বেশি সৎ আমল করতে পারেন এবং সর্বোচ্চ উপকার পেতে পারেন এই পবিত্র মাস থেকে। রামাদানের সর্বোচ্চ ব্যবহার করে নিজেকে পরিণত করুন মহান আল্লাহর একজন নিবেদিত বান্দা হিসেবে। রামাদানকে ব্যবহার করুন আগের চেয়ে আরও ভালো, আরও বেশি বেশি ইবাদাত চর্চা করার মাধ্যম হিসেবে। হেলা ফেলায় এ মাস যেন চলে না যায় খেয়াল রাখুন। ইনশা’আল্লাহ। আমরা আরো নতুন রিসোর্সেস যোগ করবো এই পোস্ট এর সাথে। 

পোস্টটি সর্বশেষ আপডেট করা হয়েছে ২ / ২ / ২০২৪ তারিখে। আসুন তাহলে এখন থেকেই রামাদ্বানের প্রস্তুতি শুরু করি। Ramadan Productivity Tools [starlist]

  1. রামাদান প্রত্যাহিক কর্ম তালিকা – Ramadan Check List –
  2. রামাদ্বান প্ল্যানার – Download
  3. Ramadan Diary: The diary, in essence, is a day by day guide packed full of practical hints and tips and quotes from the Quran and Sunnah that can help you every step of the way throughout the Holy month. Download

প্রবন্ধ/আর্টিকেল

রামাদ্বানের পর 

বই

বই – রামাদান আল্লাহ’র সাথে সম্পর্ক করুন

বই: রামাদান আল্লাহ’র সাথে সম্পর্ক করুন | লেখক: ড. মুহাম্মাদ ইবনে আবদুর রহমান আরিফী

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: প্রত্যেকটা মানুষের জীবনে এমন কিছু আছে যা তার খুব প্রিয়, যা সে মন থেকে আকাঙ্ক্ষা করে, যাকে ঘিরে সে স্বপ্ন বুনে, দিন রাত যত কল্পনা জল্পনা সব সেই আকাঙ্ক্ষিত বিষয়কে নিয়েই। সর্বাত্মক চেষ্টার পাশাপাশি প্রতিনিয়ত আল্লাহর কাছে কাকুতি মিনতি করে, ‘হে আল্লাহ! আমাকে মিলিয়ে দাও!’ এরকম খুব প্রিয় একটি বিষয় আমাদের পূর্বসূরীদেরও ছিল।

তাঁরা এ মাসে আল্লাহর রহমত অনুভব করেছিলেন, ইয়াকিনের সাথে বিশ্বাস করেছিলেন, আর তাই এই রামাদানেই তাঁরা জান্নাত কিনে নেয়ার কোমর বেধে প্রতিযোগিতায় নামতেন।

আমরা কি পারি না এই রামাদানকে ভালোবাসতে যেভাবে বেসেছিলেন আমাদের পূর্বসূরীরা? আমরা কি পারি না এই রামাদানকে ব্যবহার করতে যেভাবে করেছিলেন আমাদের পূর্ববসূরীরা?

বই – রামাদান আল্লাহ’র সাথে সম্পর্ক করুন – QA
বই – রামাদান আল্লাহ’র সাথে সম্পর্ক করুন – QA

রামাদ্বান প্ল্যানার

লেখক: শায়খ আহমাদুল্লাহ | প্রকাশনায়: আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন পাবলিকেশন্স

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: এই প্লানারে রয়েছে রামাদ্বান মাসব্যাপী আত্মশুদ্ধি পূর্ণ পরিকল্পনা। প্ল্যানারটির উল্লেখযোগ্য কিছু অংশ হলো দিনের আয়াত, দিনের হাদিস, দিনের দুআ, দৈনিক চেকলিস্ট। এছাড়াও রয়েছে আল্লাহর গুণবাচক নাম ও প্রতিদিনের কাজ। ফলে পাঠক খুব সহজেই প্রতিদিন একটি করে কুরআনের আয়াত, একটি হাদিস এবং একটি করে দুআ মুখস্ত করতে পারবেন। কোন কাজটা কখন করবেন, পাঠক তার সময়ানুযায়ী খুব সহজেই তা ভাগ করে নিতে পারবেন। এছাড়া এতে রয়েছে সালাত ট্র্যাকার, কুরআন ট্র্যাকার, প্রতিদিনের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তিসমূহ ট্রাক করার সুযোগ সহ আরও অনেক কিছু।

বই – রামাদ্বান প্ল্যানার – QA Server
বই – রামাদ্বান প্ল্যানার – QA Server

প্রোডাক্টিভ রামাদান

লেখক: উস্তাদ আলী হাম্মুদা, মোহাম্মাদ ফারিস | প্রকাশনায়: মাকতাবাতুল আসলাফ

অনুবাদক: মুওয়াহহিদ মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ, নাফিস নাওয়ার সহ আরও অনেকে | সংকলন ও সম্পাদনা: মুওয়াহহিদ মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: রামাদান মাস হচ্ছে মুসলিম জাতির আমলি বসন্ত। প্রত্যেক প্র্যাক্টিসিং মুসলিম এই মাসের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় থাকে। এই মাসে আমলের সওয়াব অন্য মাসগুলোর আমলের তুলনায় অনেক বেশি। তাই আমাদের সবারই লক্ষ্য থাকে এ মাসে বেশি বেশি আমল করা, আরো বেশি প্রোডাক্টিভ থাকা।

এমাসে আমাদের কাজকর্ম, পড়াশুনা, পারিবারিক চাহিদা পূরণ ইত্যাদির পাশাপাশি অর্ধেক দিন সিয়ামরত অবস্থায় এবং বাকি অর্ধেক সময়ে রাতের ইবাদত এবং কুরআন তিলাওয়াতও করতে হয়। এটা নিঃসন্দেহে চ্যালেঞ্জিং একটি কাজ। রামাদান মাসে কীভাবে এত এত চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করে আরো বেশি প্রোডাক্টিভ থাকা যায়, সে বিষয়েই কিছু কার্যকর পরামর্শ দেয়া হবে এ বইয়ে। রামাদানের প্রস্তুতি, লক্ষ্য, পরিকল্পনা ও রুটিন বানাতে এ বই আপনাদের জন্য সহায়ক হবে ইনশাআল্লাহ। রামাদানে আমলে মনোযোগী হওয়ার, কুরআন পড়ার ও দুআ করার ব্যাপারে দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে এ বইয়ে। শুধু তাই নয়, রামাদানের খাদ্যাভ্যাস ও ফিটনেস ধরে রাখার উপায়, একাডেমিক পরীক্ষার ব্যস্ততা সামলে আমল করার উপায়ও বাতলে দেয়া হয়েছে এ সংকলনে।

সবশেষে, রামাদানের পরেও কুরআনের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখার ও সুস্থ থাকার পরামর্শ দিয়ে সাজানো হয়েছে এ বই। আশা করি, বইটি রামাদানের প্রস্তুতির জন্য ও প্রোডাক্টিভভাবে রামাদান কাটানোর জন্য কার্যকর একটি গাইডবুক হবে ইনশাআল্লাহ।

বই – প্রোডাক্টিভ রামাদান – QA Server
বই – প্রোডাক্টিভ রামাদান – QA Server

ভালোবাসার রামাদান

লেখক: ড. আইদ আল কারণী | প্রকাশনায়: সমকালীন প্রকাশন

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: রামাদান এতই মাহাত্ম্যপূর্ণ একটি মাস যে, এই মাসে জান্নাতের সবগুলো দরজা উন্মুক্ত রাখা হয় এবং জাহান্নামের সবগুলো দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর এই মাসেই রয়েছে লাইলাতুল ক্বদেরর ন্যায় বরকতময় রজনী যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, রামাদানের প্রতিটি দিন ও রাতে আল্লাহর কাছে বান্দার দুআ কবুল হয় এবং অগণিত বান্দা জাহান্নাম থেকে মুক্তি লাভ করে।

এই গ্রন্থে অপেক্ষাকৃত কার্যকরী বহু আয়াত ও বিশুদ্ধ হাদীসের মাধ্যমে রামাদানের বিভিন্ন আমলের ব্যাপারে নির্ভুল দিক-নির্দেশনা প্রদানের চেষ্টা করা হয়েছে।

বই – ভালোবাসার রামাদান – QA Server
বই – ভালোবাসার রামাদান – QA Server

সেরা হোক এবারের রামাদান

লেখক: রৌদ্রময়ী টিম | প্রকাশনায়: সমকালীন প্রকাশন

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: রৌদ্রময়ী একটি প্লাটফর্মের নাম। এখানে আমাদের বোনেরা তাদের মনের কথাগুলো লিখে যান। ইসলামে নারীর অধিকার, নারীদের দ্বীন শিক্ষা, দ্বীন চর্চা, পারিবারিক ব্যবস্থা, সামাজিক বিভিন্ন কুপ্রথা-কুসংস্কার, ইত্যাদি বিষয়ে প্রতিনিয়ত লিখে চলেছেন। ‘সেরা হোক এবারের রামাদান’ বইটি তাদের রামাদান বিষয়ক লেখাগুলোর সংকলন।

বই – সেরা হোক এবারের রামাদান – QA Server
বই – সেরা হোক এবারের রামাদান – QA Server

সালাফদের সিয়াম

লেখক: সাঈদ ইবনে আলী আল কাহতানী, উম্মে আব্দ মুনীব | প্রকাশনী: আযান প্রকাশনী

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: “সালাফদের সিয়াম” বইটিতে মূলত: সাহাবীগণ (রাদিয়াল্লাহু আনহুম ওয়া আজমাঈন), তাবেঈ ও তাবে-তাবেঈন (রাহিমাহুমুল্লাহ) কীভাবে সিয়াম পালন করতেন, কীভাবে রমাদ্বানের রজনীগুলো অতিবাহিত করতেন, কুরআনের সাথে কীভাবে সম্পর্ক স্থাপন করতেন, সাহরী ও ইফতার কীভাবে করতেন, ইতিকাফের দিনগুলো কীভাবে কাটাতেন, লাইলাতুল ক্বদর কীভাবে তালাশ করতেন এগুলো নিয়ে সবিস্তারে আলোচনা করা হয়েছে৷ আমরা আশা করছি এই বইটির মাধ্যমে রমাদ্বান মাসকে উত্তমরুপে কাজে লাগানোর একটা নির্দেশনা পাওয়া যাবে এই বইটি থেকে।

বই – সালাফদের সিয়াম – QA Server
বই – সালাফদের সিয়াম – QA Server

রমাদান-আত্মশুদ্ধির বিপ্লব

লেখক: ড. খালিদ আবু শাদি | প্রকাশনায়: রুহামা পাবলিকেশন

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: আমাদের জীবনে প্রতি বছরই রমাদান আসে। সময়ের আবর্তনে আবার তা বিদায় নেয়। কিন্তু আমরা কি এ রমাদানের যথাযথ কদর করি? রমাদানের প্রভাব কি এর পরবর্তী সময়গুলােতে আমাদের মাঝে থাকে? রমাদান থেকে তাকওয়ার সবক নিয়ে সারা বছর কি আমরা তাকওয়ার পথে চলি? হায়, কত রমাদানই তাে আমরা পার করেছি; কিন্তু আমাদের মাঝে পরিবর্তন কোথায়?! আছে কি আমাদের জীবনে তাকওয়ার বহিঃপ্রকাশ?! আসুন, আর গুনাহের সাগরে ডুবে থাকা নয়; আর নয় গাফিলতির মাঝে বিভাের থাকা। নিজেকে শুধরে নেওয়ার দৃঢ় প্রত্যয়ে জেগে উঠি। সামনের প্রতিটি রমাদানকে সর্বোত্তমভাবে কাজে লাগানাের ফিকির করি। প্রতিটি রমাদানকে জীবনের শেষ রমাদান ভেবে এর সর্বোচ্চ কদর করি। রমাদান থেকে তাকওয়ার শিক্ষা নিয়ে জীবনের প্রতিটি পদে পদে এর বাস্তবায়ন ঘটাই।…

বই – রমাদান-আত্মশুদ্ধির বিপ্লব – QA Server
বই – রমাদান-আত্মশুদ্ধির বিপ্লব – QA Server

ধূলিমলিন উপহার রামাদান

লেখক: শাইখ আহমাদ মুসা জিবরিল | প্রকাশনায়: সীরাত পাবলিকেশন

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: রামাদানের আগমনধ্বনি শুনলে একজন মুসলিমের মনে আবেগ আর খুশির জোয়ার বয়ে যাওয়ার কথা ছিলো। কথা ছিলো উৎসাহ আর প্রস্তুতি নিয়ে মুসলিমরা উন্মুখ হয়ে বসে থাকবে। রামাদান চলে যাবে, কিন্তু রামাদানের ঔজ্জ্বল্য আমাদের মাঝে ছাপ রেখে যাবে — তাক্বওয়া।

কথা থাকলেও আমরা কথা রাখিনি। যে মাসকে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা আর সবক’টা মাসের ওপর মর্যাদা দিয়েছিলেন, সেই মাসকে আমরা যথেষ্ট কদর করিনি। যদি কোনো মাসকে ‘বরণ’ করে নেওয়ার থাকে তবে সেটা রামাদান, বৈশাখ নয়। অর্থহীন নাটুকেপনা আর মেকি বাঙ্গালিত্বের দিনভিত্তিক উদযাপনে মুসলিমরা বিশ্বাস করে না। মুসলিমরা বিশ্বাস করে পবিত্র মাসে, যে মাস তাদেরকে আল্লাহ তাআলার কাছাকাছি আসবার সুযোগ করে দেয়।

বই – ধূলিমলিন উপহার রামাদান – QA Server
বই – ধূলিমলিন উপহার রামাদান – QA Server

রামযানের ফাযায়েল ও রোযার মাসায়েল

 

লেখক: আব্দুল হামিদ ফাইযী আল মাদানী

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: সহীহ দলীলকে ভিত্তি করে রমযানের ফাযায়েল ও রোযার মাসায়েল জানার জন্য এটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বই। মুসলিমদের জন্য রমযান অত্যন্ত গুরুত্তপুর্ন মাস। এতে একজন মুসলিম রমযান মাসকে কিভাবে ফলপ্রসূ করবে তার মাসআলা-মাসায়েল ও ফাযায়েল সংক্রান্ত যে সকল বিষয়াদির প্রয়োজন অনুভব করে সেগুলো খুব সুন্দরভাবে আলোচিত হয়েছে। এখানে শুধুমাত্র রমযানের মাসায়েল সম্পর্কেই আলোচনা হয়নি রমযান মাস আমাদের জীবনে কেন এত গুরুত্তপুর্ন তারও বর্ননা রয়েছে। মোটকথা, বইটি প্রতিটি মুসলমানের জন্য নিত্য প্রয়োজনীয় এবং অতি গুরুত্বপূর্ন। রোযা ও রমযানের মত একটি মহান উৎদ্দীপনা তথা আনন্দমুখর মৌসুমকে ঘিরে যে সকল জানা ও মানার কথা এখানে পরিবেশিত হয়েছে তা আশা করি সকল মুসলিম ভাই বোনদের জানা প্রয়োজন। এই বইটি লিখেছেন আব্দুল হামীদ ফাইযী আল-মাদানী এবং প্রকাশনায় তাওহীদ প্রকাশনী।

বই: রামযানের ফাযায়েল ও রোযার মাসায়েল – QA
বই: রামযানের ফাযায়েল ও রোযার মাসায়েল – QA

রমযানের ৬০ শিক্ষা ৩০ ফতোয়া

30-fatawa

সংকলন:  ইব্রাহিম ইবনে মোহাম্মদ আল হাকিম | প্রকাশনায়: পিস পাবলিকেশন্স বাংলাদেশ সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: এই বইটিতে কুরআন এবং সুন্নাহর আলোকে রমযানের ৬০ শিক্ষা এবং ৩০ ফতোয়া সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। Download | Download from Mediafire

বই – রোযার সত্তরটি মাসয়ালা – মাসায়েল

 

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: সিয়াম বা রোযা প্রসঙ্গে জ্ঞাতব্য অনেকগুলো জরুরী মাসয়ালা – মাসায়েল, কুরআন – হাদীস ও যুগশ্রেষ্ঠ আলেমগণের ফতওয়ার উপর ভিত্তি করে সৌদী আরবের বিশিষ্ট আলেম সম্মানিত শায়খ মুহাম্মাদ সলেহ আল-মুনাজ্জেদ “সাবাউনা মাসয়া্লা ফিস্ সিয়াম” বইটি আরবি ভাষায় প্রণয়ন করেছেন । এবং এর বাংলা অনুবাদ “রোযার সত্তরটি মাসয়ালা – মাসায়েল” করেছেন – সরদার মুহাম্মাদ জিয়াউল হক। বিস্তারিত জানতে এবং ডাউনলোড করতে এইখানে ক্লিক করুন।

রামাদান নির্বাচিত ফাতাওয়া

আলহামদুলিল্লাহ্‌ জনপ্রিয় ওয়েবসাইট Islam-QA.com এর রামাদান সম্পর্কিত ১১২টি ফাতাওা বাংলায় বই আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। বইটি ডাউনলোড করার এইখানে ক্লিক করুন

লেখক: খোন্দকার আবুল খায়ের ডাউনলোড করুন এই লিংক থেকে।

সিয়াম ও রমজান

ramadanqqqqqq

রহমত,মাগফিরাত ও নারকীয় জীবনের স্পর্শ থেকে মুক্তি লাভের অফুরান সম্ভাবনা নিয়ে ফিরে আসে মাহে রমজান। আসে তাকওয়ার উত্তাপ অনুভব করাতে,যা কিছু অকল্যাণকর, অন্ধকারময় তা থেকে ব্যক্তির অন্তর ও বাহ্য জগৎকে বিমুক্ত করে শুদ্ধ-আলোকিত মানুষের উন্মেষ ঘটাতে। তবে তার জন্য প্রয়োজন মাহে রমজানকে যথার্থভাবে যাপন,সিয়াম পালনের নীতি-বিধান বিষয়ে সম্যক জ্ঞানার্জন,সিয়ামের শিক্ষা ও মাসায়েল বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা অর্জন।মাহে রমজান ও সিয়াম সাধনা বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ এই রচনাটি ইমাম ও দায়ীদের জন্য একটি অতি-মূল্যবান তথ্য-ভাণ্ডার হিসেবে কাজ করবে বলে আমাদের বিশ্বাস। সাধারণ পাঠক সিয়াম সাধনার খুঁটি-নাটি বিষয়ে অজানা বহু তথ্য খুঁজে পাবেন বইটিতে। এই বইটি ডাউনলোড করতে চাইলে এই লিঙ্ক এ ক্লিক করুন

ফিকহুস সিয়াম

সংকলক: মুহাম্মাদ নাসীল শাহরুখ | সম্পাদনা: মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী আমাদের জীবনকে বদলে দিয়ে নতুন মানুষ হওয়ার এক অনন্য সুযোগ রামাদান! কিন্তু আমরা অনেকেই জ্ঞান ও প্রস্তুতি ছাড়াই রামাদানে প্রবেশ করি, ফলে আমাদেরকে চমকে দিয়ে চলে যায় আখিরাতের পাথেয় সঞ্চয়ের এই মৌসুম। রামাদানের প্রস্তুতি গ্রহণ এবং রোযার প্রয়োজনীয় মাসায়েল দ্রুত খুঁজে পাওয়ার উপযোগী করে রচিত হয়েছে এই সংকলন। ডাউনলোড করুন 

আল-কুরআন ও সহীহ হাদীসের আলোকে রামাদান মাসে একজন মুমিনের দায়িত্ব ও কর্তব্য

সংকলন: মোহাম্মদ মানজুরে ইলাহী | সম্পাদক: আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া | সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: আলোচ্য রচনায় আল-কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে রামাদান মাসে একজন মুমিনের দায়িত্ব ও কর্তব্যসমূহ বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে। ডাউনলোড করুন 

রমযান মাসের ৩০ আসর

সংকলন: মুহাম্মাদ ইবন সালেহ আল-উসাইমীন | অনুবাদক: আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া – আলী হাসান তৈয়ব | সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: এ হচ্ছে ‘মুবারক রমযান মাসের কিছু আসর’; যাতে সিয়াম, কিয়াম, যাকাত ইত্যাদি ও এ উত্তম মাসের উপযোগী কিছু বিধান স্থান পেয়েছে। আমি এটাকে দৈনিক অথবা রাত্রিকালিন আসররূপে সাজিয়েছি। এর অধিকাংশ খুতবা বা আসরের ভূমিকা আমি ‘কুররাতুল ‘উয়ূনিল মুবসিরাহ বি তালখীসে কিতাবিত তাবসিরাহ’ গ্রন্থ থেকে যতটুকু যথা সম্ভব পরিপাটি করে চয়ন করেছি। আর আমি এখানে যত বেশি সম্ভব হুকুম-আহকাম, বিধি-বিধান, ও আদাব নিয়ে নিয়ে এসেছি; কারণ মানুষের এটাই বেশি প্রয়োজন। আর আমি এটাকে ‘মাজালিসু শাহরি রামাদান’ বা ‘রমযান মাসের আসরসমূহ’ নামকরণ করেছি। ডাউনলোড করুন 

রমযান স্বাগতম

সংকলন: আব্দুল হামীদ ফাইযী | সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: সহীহ দলীলকে ভিত্তি করে রমযানের ফাযায়েল ও রোযার মাসায়েল জানার জন্য এটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বই। মুসলিমদের জন্য রমযান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মাস। এতে একজন মুসলিম রমযান মাসকে কিভাবে ফলপ্রসূ করবে তার মাসআলা-মাসায়েল ও ফাযায়েল সংক্রান্ত যে সকল বিষয়াদির প্রয়োজন অনুভব করে সেগুলো খুব সুন্দরভাবে আলোচিত হয়েছে। ডাউনলোড করুন 

রমযানের বিষয়ভিত্তিক হাদিস : শিক্ষা ও মাসায়েল

সংকলন: ইবরাহীম বিন মুহাম্মাদ আল হুকাইল | অনুবাদক: সানাউল্লাহ নজির আহমদ | সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: রমযানের বিষয়ভিত্তিক হাদিস, শিক্ষা ও মাসায়েল: লেখক বলেছেন: “সিয়াম, ইতিকাফ, রমযানের কিয়াম ও লাইলাতুল কদর ইত্যাদি বিষয়ে ষাটটি দরস তৈরি করেছি, যা থেকে বিশেষভাবে দ্বীনের দায়ি ও মসজিদের ইমামগণ এবং সাধারণভাবে সকল মুসলিম উপকৃত হবেন, ইনশাআল্লাহ। প্রত্যেক দরসের ভিত্তি রেখেছি কুরআন ও হাদিসের ওপর, যদি শিরোনামের অনুকূলে কোন আয়াত পেয়েছি, তাহলে তা উল্লেখ করেছি, অতঃপর হাদিস উল্লেখ করেছি। আর শিরোনামের অনুকূলে কোন আয়াত না থাকলে সরাসরি উক্ত বিষয়ের হাদিস উল্লেখ করেছি। হাদিস বাছাই করার ক্ষেত্রে দলিল হিসেবে পেশ করার উপযুক্ত সহিহ ও হাসান হাদিসগুলো নির্বাচন করেছি, দুর্বল হাদিস এড়িয়ে গেছি। আল্লাহ সবাইকে এর দ্বারা উপকৃত হওয়ার তওফিক দান করুন।” ডাউনলোড করুন 

প্রশ্নোত্তরে রমযান ও ঈদ

সংকলন: অধ্যাপক মোঃ নুরুল ইসলাম  | সম্পাদক: আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: এ বইটিতে প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে সিয়ামের ফজিলত, বিভিন্ন আহকাম ও মাসায়েল বর্ণনা করা হয়েছে। ডাউনলোড করুন 

ঈদুল ফিতর ও যাকাতুল ফিতর এর সংক্ষিপ্ত বিধি বিধান

অনুবাদক: উমাইর লুৎফর রহমান | সম্পাদক: আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া | সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: গ্রন্থটিতে সংক্ষিপ্তভাবে ঈদুর ফিতরের বিবিধ বিধি-বিধান ও যাকাতুল ফিতরের বিধান বর্ণনা করা হয়েছে। ডাউনলোড করুন  [divider]

রামাযানের সাধনা

লেখক: হাফেজ হুসাইন বিন সোহরাব (অনার্স হাদিস, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, মদীনা, সৌদি আরব) ডাউনলোড করুন 

স্বাস্থ্য বিষয়ক 

  1. Ramadan Health and Spirituality Guide
  2. রমজান ও ডায়াবেটিস

[divider]

দুয়া

  1. Duas to say after Salah – in PDF
  2. Duas to say morning & evening – in PDF
  3. Duas to say when sleeping or waking – in PDF
  4. Duas to say morning & evening one page – in PDF

[divider]

অডিও – ভিডিও লেকচার

 বক্তা: শেইখ মতিউর রহমান মাদানী

রামাদানের ফজিলত

Audio | Video

রামাদানের সৎ আমল

Audio | Video

সিয়াম অবস্থায় নিষিদ্ধ কাজ

Audio | Video

সিয়াম ও রামজান

Audio Video

জাল জয়ীফ হাদিস রামাদান সম্পর্কে 

Video

রমজান স্বাগতম

বক্তা: Saifuddin Belal Madani Audio

সিয়াম (রোজা) – Video lecture

সিয়াম ও জিজ্ঞাসা

Video

রামাদান

রামাদানে সিয়াম পালন, ইসলামের অন্যতম স্তম্ভ। স্তম্ভ এমন কোন কিছুকে বলা হয় যা সম্পূর্ণ বস্তুকে দাড় করিয়ে রাখে। অথচ আমরা মুসলিমরা কি আজ এর যথার্থ মূল্যায়ন করছি! অথচ এই রামাদানকে ঘিরে সাহাবারা প্রস্তুতি শুরু করতেন মাস শুরু হওয়ার অনেক আগে থেকে। এর কারন হয়তবা আমরা রামাদানের সঠিক গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারিনি। রামাদানের গুরুত্ব ও কিছু সংক্ষিপ্ত মাসায়েল নিয়ে শুনুন শাইখ আব্দুর রাজ্জাকের কুরআন ও হাদীসভিত্তিক এই অনন্য বক্তব্যটি। এই অডিওটি ডাউনলোড করতে চাইলে এই লিঙ্ক এ ক্লিক করুন

 সিয়ামের ফজিলত ও নফল সিয়াম

সিয়াম সাধনা, ইসলামের এক অনন্য ইবাদাত। এটি এমন এক ইবাদাত যার পুরস্কার দিবেন স্বয়ং আল্লাহ, সিয়াম পালনকারীদের জন্য রয়েছে জান্নাতে একটি স্বতন্ত্র দরজা আর এছাড়াও রয়েছে আরো প্রচুর পুরষ্কার। সিয়াম এমন কোন ইবাদাত নয় যা শুধু রামাদানের সাথে সম্পর্কিত , বরঞ্চ হাদীস ও সাহাবাদের জীবন থেকে আমরা দেখতে পাই প্রচুর নফল সিয়াম। সিয়াম পালনে নিজেকে আগ্রহী করে তুলতে শুনুন প্রখ্যাত ‘আলেমে দ্বীন শাইখ আব্দুর রাজ্জাকের সিয়ামের পুরষ্কার ও নফল সিয়াম সম্পর্কিত এই তথ্যবহুল বক্তব্য। এই অডিওটি ডাউনলোড করতে চাইলে এই লিঙ্ক এ ক্লিক করুন

[divider] ইংরেজি ভাষায়ে আরো প্রবন্দ, বই, লেকচার পড়তে এবং ডাউনলোড করতে হলে এই লিংক এ ক্লিক করুন – http://i.iloveallaah.com/qswwe

বই – নবীজি ﷺ—যেমন ছিলেন তিনি – ফ্রি ডাউনলোড

nobijiবই: নবীজি ﷺ—যেমন ছিলেন তিনি

লেখক:  ড. আয়েয আল-কারনী

প্রকাশনায়: সমকালীন প্রকাশন

পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১৮২

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: একজন মানুষের হাত ধরে পাল্টে গেল পৃথিবীর ইতিহাস। মোড় নিল বিশ্ব রাজনীতি। সভ্যতা পেল নতুন এক মাত্রা। সেই মানুষের হাত ধরে পৃথিবীতে আবার নেমে এলো হিদায়াতের ফল্গুধারা। মানুষটার নাম মুহাম্মাদ ইবন আবদুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। একজন মানুষ এসে পৃথিবীকে এমনভাবে নাড়িয়ে দিয়েছেন—এমন ঘটনা পৃথিবীতে আর দুটো নেই। মানবতার মুক্তির দূত এই মহামানবের জীবনী লেখক এমন ঢঙে উপস্থাপন করেছেন, পড়তে গিয়ে পাঠকের মনে হবে যেন তারা চোখের সামনেই মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দেখতে পাচ্ছেন। বইটির নামও রেখেছেন সেভাবে—মুহাম্মাদ : কাআন্নাকা তারাহু। তার অন্যতম সেরা কাজ এই ‘মুহাম্মাদ : কাআন্নাকা তারাহু’। আমরা বইটির নাম রেখেছি—নবীজি।

বইটিতে নবীজির জীবন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়। নবীজির নাম, বংশ, জন্মভূমি, শৈশব, নবুওয়াত, ধর্ম, ঐশীগ্রন্থ, সত্যবাদিতা, ধৈর্য, মহানুভবতার মতো তার আরো অনেক মানবিক গুনাবলী সম্পর্কে এই বই থেকে জানা যায় ।

Android – ezPDF Reader  |  PlayStore | Adobe Reader – PlayStore

Windows 7/8/10 – Adobe Reader

বই – নবীজি ﷺ—যেমন ছিলেন তিনি – QA
বই – নবীজি ﷺ—যেমন ছিলেন তিনি – QA

বইটি ভালো লাগলে অবশ্যই একটি Hard Copy সংগ্রহ করে অথবা লেখক বা প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে সৌজন্য মূল্য প্রদান করে সহযোগিতা করুন।

বই – এসো তাওবার পথে – ফ্রি ডাউনলোড

বই: এসো তাওবার পথে

লেখক: আবদুল মালিক আল কাসিম

প্রকাশনায়: রুহামা পাবলিকেশন

বিষয়: আত্মশুদ্ধি ও অনুপ্রেরণা

পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৯৬

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: উত্তম ফসলের জন্য শস্যক্ষেতের পরিচর্যা করতে হয়। আগাছা থেকে মুক্ত রাখতে হয়। জমিনকে উর্বর রাখতে হয়। পোকামাকড়, রোগবালাই আক্রমণ করলে তা থেকে শস্যক্ষেত নিরাপদ রাখতে হয়। তাহলেই দিন শেষে ক্ষেতের মালিক তার কাঙ্ক্ষিত ফসল পায়।

ঈমানের ব্যাপারটাও এমন। অনেকটা চারাগাছের মতো। আর এই গাছ লাগানো থাকে প্রত্যেক মুমিনের অন্তরে। তাই ঈমানের ফল ভোগ করতে হলে অন্তরকে সাফ রাখতে হয় সকল পঙ্কিলতা থেকে। পাপ নামক আগাছাগুলো উপড়ে ফেলতে হয়। পোকামাকড়ের বেশে আসে শয়তানের জন্য অন্তরের সকল ফাঁকফোকর বন্ধ রাখতে হয়। আর এই সবগুলো সম্ভব তাওবার দ্বারা। তাওবাই মৃতপ্রায় ঈমানকে জাগিয়ে তোলে। তাওবাই মরিচা ধরা অন্তরকে তীক্ষ্ম করে। তাওবাই লাঞ্ছনা থেকে মুক্তি এনে দেয়। ব্যর্থদের দরিয়া ছেড়ে ব্যক্তিকে সাফল্যের ভূমিতে নিয়ে আসে এই তাওবাহ।

এসো তাওবার পথে। এই আহ্বান নিয়ে পুরো বইটি সাজানো।

Android – ezPDF Reader  |  PlayStore | Adobe Reader – PlayStore

Windows 7/8/10 – Adobe Reader

বই – এসো তাওবার পথে – QA
বই – এসো তাওবার পথে – QA

বইটি ভালো লাগলে অবশ্যই একটি Hard Copy সংগ্রহ করে অথবা লেখক বা প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে সৌজন্য মূল্য প্রদান করে সহযোগিতা করুন।

বই – চলো জান্নাতের সীমানায় – ফ্রি ডাউনলোড

বই: চলো জান্নাতের সীমানায়

লেখক: আবদুল মালিক আল কাসিম

প্রকাশনী: রুহামা পাবলিকেশন

বিষয়: আত্মশুদ্ধি ও অনুপ্রেরণা

বইটির পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৯০

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: আরববিশ্বের খ্যাতনামা দায়ি ও লেখক ড. শাইখ আব্দুল মালিক আল- কাসিমের জনপ্রিয় সিরিজ সালাফের পথ ছেড়ে কোথায় আমরা’। আত্মশুদ্ধি ও অনুপ্রেরণামূলক এই সিরিজটির মূল উপকরণগুলো চয়ন করা হয়েছে সালাফে সালিহিনের জীবন, কর্ম ও চিন্তাধারার বিশাল সম্ভার থেকে। শাইখের রচনা পড়লেই বোঝা যায় জীবনের একটি বড় অংশ তিনি কাটিয়েছেন ইতিহাসের বিস্তৃত ময়দানে। অদম্য কৌতূহলে ঘুরে বেড়িয়েছেন সোনালি যুগের পথে-প্রান্তরে। সময়ের ভাঁজে ভাঁজে খুঁজে ফিরেছেন আলোর পাথেয়। সালাফের কর্মমুখর জীবনভান্ডার থেকে দুহাতে সংগ্রহ করেছেন মূল্যবান সব মণিমুক্তো। আর তা-ই দিয়ে তিনি থরে থরে সাজিয়ে তুলেছেন সিরিজ। তাঁর উপস্থাপনার ভঙ্গিতে ঝরে পড়ে অফুরন্ত উদ্যম ও অনুপ্রেরণা। রচনার পরতে পরতে বারবার তিনি আহ্বান জানান মুসলিম তারুণ্যকে—তারা যেন উঠে আসে সালাফের অনুসৃত পথে; তাদের যৌবন যেন ব্যয়িত হয় উম্মাহর কল্যাণে ।

Android – ezPDF Reader  |  PlayStore | Adobe Reader – PlayStore

Windows 7/8/10 – Adobe Reader

বই – চলো জান্নাতের সীমানায় – QA
বই – চলো জান্নাতের সীমানায় – QA

বইটি ভালো লাগলে অবশ্যই একটি Hard Copy সংগ্রহ করে অথবা লেখক বা প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে সৌজন্য মূল্য প্রদান করে সহযোগিতা করুন।

ইসলামে শবে মেরাজ পালন এর বিধান

অনুবাদ ও গ্রন্থনা: আব্দুল্লাহিল হাদী

মেরাজ দিবস কিংবা শবে মেরাজ উদযাপন করা রজব মাসের অন্যতম বিদআত। জাহেলরা এই বিদআতকে ইসলামের উপর চাপিয়ে দিয়ে প্রতি বছর তা পালন করে যাচ্ছে। এরা রজব মাসের সাতাইশ তারিখকে শবে মেরাজ পালনের জন্য নির্ধারণ করে নিয়েছে। এ উপলক্ষে এরা একটি নয় একাধিক বিদআত তৈরি করেছে। যেমন, শবে মেরাজ উপলক্ষে মসজিদ মসজিদে একত্রিত হওয়া, মসজিদে কিংবা মসজিদের মিনারে মিনারে মোমবাতি-আগরবাতি জ্বালানো, এ উপলক্ষে অর্থ অপচয় করা, কুরআন তিলাওয়াত বা জিকিরের জন্য একত্রিত হওয়া, মেরাজ দিবস উপলক্ষে মসজিদে বা বাইরে সভা-সেমিনার আয়োজন করে তাতে মিরাজের ঘটনা বয়ান করা ইত্যাদি।

এগুলো সবই গোমরাহী এবং বাতিল কর্ম কাণ্ড। এ প্রসঙ্গে কুরআন-সুন্নাহতে নূন্যতম কিছু বর্ণিত হয় নি। তবে এ এভাবে দিবস পালন না করে যে কোন সময় মিরাজের ঘটনা বা শিক্ষা নিয়ে আলোচনা করা দোষণীয় নয়।

(ক) কোন রাতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইসরা ও মেরাজ সংঘটিত হয়েছিল?

যে রাতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইসরা ও মেরাজ সংঘটিত হয়েছিল সেটি নির্ধারণের ক্ষেত্রে পূর্ব যুগ থেকেই ওলামাগণের মাঝে মত পার্থক্য রয়েছে। অর্থাৎ এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট কোন হাদীস না থাকায় আলেমগণ বিভিন্ন জন বিভিন্ন মতামত ব্যক্ত করেছেন।

ইবনে হাজার আসকালানী রহ. বলেন: মিরাজের সময় নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে। কেউ বলেছেন, নবুওয়তের আগে। কিন্তু এটা একটি অপ্রচলিত মত। তবে যদি উদ্দেশ্য হয়, যে সেটা স্বপ্ন মারফত হয়েছিল সেটা ভিন্ন কথা অধিকাংশ আলেমগণের মত হল, তা হয়েছিল নবুওয়তের পরে। তবে নবুওয়তের পরে কখন সেটা নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে।

কেউ বলেছেন: হিজরতের এক বছর আগে। ইবনে সা’দ প্রমুখ এ মতের পক্ষে। ইমাম নওবী রহ. এই মতটির পক্ষে জোর দিয়ে বলেছেন। তবে ইবনে হাজাম এর পক্ষে আরও শক্ত অবস্থান নিয়ে বলেন: এটাই সর্ব সম্মত মত। এই মতের আলোকে বলতে হয় মেরাজ হয়েছিল রবিউল আওয়াল মাসে। কিন্তু তার কথা অগ্রহণ যোগ্য। কারণ, এটা সর্ব সম্মত মত নয়। বরং এক্ষেত্রে প্রচুর মতবিরোধ রয়েছে। এ প্রসঙ্গে বিশটির অধিক মত পাওয়া যায়।

ইবনুল জাওযী বলেন, হিজরতের আট মাস আগে মেরাজ হয়েছিল। এ মতানুসারে সেটা ছিল রজব মাসে।

কেউ বলেন: হিজরতের ছয় মাস আগে। এ মত অনুযায়ী সেটা ছিল রামাযানে। এ পক্ষে মত দেন আবুর রাবী বিন সালেম।

আরেকটি মত হল, হিজরতের এগার মাস আগে। এ পক্ষে দৃঢ়তার সাথে মত ব্যক্ত করেন, ইবরাহীম আল হারবী। তিনি বলেন: হিজরতের এক বছর আগে রবিউস সানীতে মিরাজ সংঘটিত হয়।

কারো মতে, হিজরতের এক বছর তিন মাস আগে। ইবনে ফারিস এ মত পোষণ করেন। এভাবে আরও অনেক মতামত পাওয়া যায়। কোন কোন মতে রবিউল আওয়াল মাসে, কোন মতে শাওয়াল মাসে, কোন মতে রামাযান মাসে, কোন মতে রজব মাসে। আর তাই শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন: ‘ইবনে রজব বলেন: রজব মাসে বড় বড় ঘটনা ঘটেছে মর্মে বিভিন্ন বর্ণনা পাওয়া যায় কিন্তু কোনটির পক্ষেই সহীহ দলীল নাই। বর্ণিত হয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রজবের প্রথম রাতে ভূমিষ্ঠ হয়েছেন, সাতাইশ বা পঁচিশ তারিখে নবুওয়ত প্রাপ্ত হয়েছেন অথচ এ সব ব্যাপারে কোন সহীহ দলীল পাওয়া যায় না।‘ (লাতাইফুল মায়ারেফ, ১৬৮ পৃষ্ঠা)

আবু শামাহ বলেন: ‘গল্পকারেরা বলে থাকে যে, ইসরা ও মিরাজের ঘটনা ঘটেছিল রজব মাসে। কিন্তু ইলমে জারহ ওয়াত তাদীল সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ আলেমগণের মতে এটা ডাহা মিথ্যা।‘ (আল বায়িস: ১৭১)

খ) শবে মিরাজ পালন করার বিধান:

সালফে সালেহীনগণ এ মর্মে একমত যে, ইসলামী শরীয়তে অনুমোদিত দিন ছাড়া অন্য কোন দিবস উদযাপন করা বা আনন্দ-উৎসব পালন করা বিদআত। কারণ, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: ‘যে ব্যক্তি দ্বীনের অর্ন্তভুক্ত নয় এমন নতুন জিনিষ চালু করল তা পরিত্যাজ্য।‘ (বুখারী, অধ্যায়: সন্ধি-চুক্তি)

আর সহীহ মুসলিমের বর্ণনায় রয়েছে: ‘যে ব্যক্তি এমন আমল করল: ‘যার প্রতি আমার নির্দেশ নেই তা প্রত্যাখ্যাত।‘ (মুসলিম হা/১৭১৮; মিশকাত হা/১৪০)।

সুতরাং মিরাজ দিবস অথবা শবে মেরাজ পালন করা দ্বীনের মধ্যে সৃষ্ট বিদআতের অর্ন্তভূক্ত সাহাবীগণ, তাবেঈনগণ বা তাদের পদাঙ্ক অনুসরণকারী সালফে সালেহীনগণ তা পালন করেন নি। অথচ সকল ভাল কাজে তারা ছিলেন আমাদের চেয়ে অনেক বেশি অগ্রগামী।

ইবনুল কাইয়েম জাওযিয়া রহ. বলেন: পূর্ববর্তী যুগে এমন কোন মুসলমান পাওয়া যাবে না যে শবে মেরাজকে অন্য কোন রাতের উপর মর্যাদা দিয়েছে। বিশেষ করে শবে কদরের চেয়ে উত্তম মনে করেছে এমন কেউ ছিল না। সাহাবায়ে কেরাম এবং তাদের একনিষ্ঠ অনুগামী তাবেঈনগণ এ রাতকে কেন্দ্র করে বিশেষ কোন কিছু করতেন না এমনকি তা আলাদাভাবে স্মরণও করতেন না। যার কারণে জানাও যায় না যে, সে রাতটি কোনটি।

নি:সন্দেহে ইসরা ও মিরাজ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদার প্রমাণ বহন করে। কিন্তু এজন্য এর মিরাজের স্থান-কালকে কেন্দ্র করে বিশেষ কোন ইবাদত করার বৈধ নয়। এমনকি যে হেরা পর্বতে ওহী নাযিলের সূচনা হয়েছিল এবং নবুওয়তের আগে সেখানে তিনি নিয়মিত যেতেন নবুওয়ত লাভের পর মক্কায় অবস্থান কালে তিনি কিংবা তাঁর কোন সাহাবী সেখানে কোন দিন যান নি। তারা ওহী নাজিলের দিনকে কেন্দ্র করে বিশেষ কোন ইবাদত-বন্দেগী করেন নি বা সেই স্থান বা দিন উপলক্ষে বিশেষ কিছুই করেন নি।
যারা এ জাতীয় দিন বা সময়ে বিশেষ কিছু এবাদত করতে চায় তারা ঐ আহলে কিতাবদের মত যারা ঈসা আলাইহিস সালাম এর জন্ম দিবস (Chisthomas) বা তাদের দীক্ষাদান অনুষ্ঠান (Baptism) পালন ইত্যাদি পালন করে।

উমর ইবনুল খাত্তাব দেখলেন কিছু লোক একটা জায়গায় নামায পড়ার জন্য হুড়াহুড়ি করছে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, এটা কী? তারা বলল, এখানে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামায পড়েছিলেন। তিনি বললেন, তোমরা কি তোমাদের নবীদের স্মৃতি স্থলগুলোকে সাজদার স্থান বানাতে চাও? তোমাদের পূর্ববর্তী জমানার লোকেরা এ সব করতে গিয়েই ধ্বংস হয়ে গেছে। এখানে এসে যদি তোমাদের কারো নামাযের সময় হয় তবে সে যেন নামায পড়ে অন্যথায় সামনে অগ্রসর হয়। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা, ২য় খণ্ড, ৩৭৬, ৩৭৭)

ইবনুল হাজ্জ বলেন: ‘রজব মাসে যে সকল বিদআত আবিষ্কৃত হয়েছে সগুলোর মধ্যে সাতাইশ তারিখের লাইলাতুল মিরাজের রাত অন্যতম।‘ (আল মাদখাল, ১ম খণ্ড, ২৯৪পৃষ্ঠা)

পরিশেষে বলব, যেহেতু রজব মাসে নফল নামায, রোযা করা, মসজিদ, ঘর-বাড়ি, রাস্তা-ঘাট দোকান-পাট ইত্যাদি সাজানো, সেগুলোকে আলোক সজ্জা করা কিংবা ছাব্বিশ তারিখের দিবাগত রাত তথা সাতাইশে রজবকে শবে মিরাজ নির্ধারণ করে তাতে রাত জেগে ইবাদত করার ব্যাপারে কোন গ্রহনযোগ্য প্রমাণ নাই। তাই আমাদের কর্তব্য হবে সেগুলো থেকে দূরে থাকা। অন্যথায় আমরা বিদয়াত করার অপরাধে আল্লাহ তায়ালার দরবারে গুনাহগার হিসেবে বিবেচিত হব। অবশ্য কোন ব্যক্তি যদি প্রতি মাসে কিছু নফল রোযা রাখে সে এমাসেও সেই ধারাবাহিকতা অনুযায়ী এ মাসে রোযা রাখতে পারে, শেষ রাতে উঠে যদি নফল নামাযের অভ্যাস থাকে তবে তবে এ মাসের রাতগুলিতেও নামায পড়তে পারে।

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সকল অবস্থায় তাওহীদ ও সুন্নাহর উপর আমল করার তাওফীক দান করুন এবং শিরক ও বিদয়াত থেকে হেফাজত করুন।

আমীন।

উৎস: এ প্রবন্ধটির অধিকাংশ তথ্য অনুবাদ করা হয়েছে البدع الحولية কিতাব থেকে।
অনুবাদ ও গ্রন্থনা: আব্দুল্লাহিল হাদী
মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার,
সউদী আরব।

বই – স্বাগত তোমায় আলোর ভুবনে – ফ্রি ডাউনলোড

 

বই:স্বাগত তোমায় আলোর ভুবনে

লেখক: আবদুল মালিক আল কাসিম

প্রকাশনায়: রুহামা পাবলিকেশন

পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১৮৪

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: ইসলামি ঘরানায় বর্তমানে ছোটগল্প বেশ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। তাই অনেক লেখকই দাওয়াহর জন্য এটিকেই বেছে নিচ্ছেন। ছোট গল্প যেহেতু দশ থেকে পঞ্চাশ মিনিট দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট হয়, তাই পাঠকরা সাধারণত বিরক্ত হয় না। তাছাড়া গল্পে গল্পে পাঠকের বোধবিশ্বাসে সহজেই রেখাপাত করা সম্ভব হয়। যাক, ছোটগল্প নিয়ে একদিন আলাদা আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ।

‘স্বাগত তোমায় আলোর ভুবনে’ এর গল্পগুলো পুরোপুরি রবিবাবুদের ছোটগল্পের সংজ্ঞায় পড়ে না। এগুলো অনেকটা বিভূতিভূষণ ও বনফুলের ছোটগল্পগুলোর মতো। গল্পকে রোমাঞ্চকর কোনো পরিণতি দেয়ার চেয়ে গল্পের মূল মেসেজটা পাঠকের হৃদয়ে চারিয়ে দেয়ার চিন্তাই এখানে লেখককে তাড়িত করেছে।

শাইখ আব্দুল মালিক আল কাসিমের রচনা যারা পড়েন তাদের অজানা নয় যে, তার প্রায় সব রচনার সারনির্যাস হলো দাওয়াহ ও আত্মশুদ্ধি। আশির দশকে লেখা ‘আজ-জামানুল কাদিম’গল্প গ্রন্থটি তার রচনাবলির মধ্যে সর্বাধিক জনপ্রিয়। তার দায়িসুলভ প্রতিভার পূর্ণ স্ফূরণ ঘটেছে এই গল্পগুলোতে। মৃত্যু, কবর, তাওবা, সাদাকা, দাওয়াহ, সদাচার, তিলাওয়াত, মুহাসাবা, হিজাব ইত্যাদির মতো মুমিনের জীবনঘনিষ্ঠ বিষয়গুলোকে উপজীব্য করে তিনি গল্পগুলো নির্মাণ করেছেন।

গ্রন্থটি রচনা করতে গিয়ে মনে হয় তিনি মেয়েদের প্রতি বিশেষভাবে লক্ষ রেখেছেন। অধিকাংশ গল্পেই তিনি মেয়েদের বিভিন্ন দ্বীনি বিষয়গুলোকে দক্ষতার সঙ্গে উপস্থাপন করেছেন। নারীদের পর্দা, দাওয়াত ও ইবাদতসহ দাম্পত্য জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অনেকগুলো বিশুদ্ধ ভাবনা উঠে এসেছে গল্পে গল্পে। তাই আমি বলব, বইটি যতটা না যুবকদের তার চেয়েও বেশি মেয়েদের।

গল্পগুলো আশির দশকে আরবের তৎকালনি সমাজজীবনের প্রেক্ষাপটে লেখা। বইটি পড়তে গিয়ে পাঠক সেই সময়ের কিছুটা আভাস পাবেন। তখন বর্তমান যুগের মতো প্রযুক্তি এতটা বিস্তার লাভ করেনি। দাওয়াতের উপকরণ হিসেবে তিনি বারবার বলেছেন বয়ানের ক্যাসেটের কথা। তবে অনুবাদ করার সময় আমরা সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রক্ষার্থে গল্পের আবহটাকে কিছুটা যুগোপযোগী করার চেষ্টা করেছি। যেমন সময় অপচয় করা প্রসঙ্গে আমরা ইন্টারনেটের কথা বলেছি, ইউটিউবের কথা বলেছি। বুঝতেই পারছেন আশির দশকে এসবের নাম-গন্ধও ছিল না।

আজ-জামানুল কাদিম-এ তিন খণ্ডে মোট ছত্রিশটি গল্প আছে। কিছু গল্প সাইজে বেশ ছোট হওয়ার কারণে এবং কিছু গল্পের মেসেজ আমাদের উদ্দিষ্ট পাঠকদের জন্য কম গুরুত্বপূর্ণ মনে হওয়ায় বাদ পড়েছে। প্রতি খণ্ড থেকে নয়টি করে মোট সাতাশটি গল্প আমরা মলাটবদ্ধ করেছি।

Android – ezPDF Reader  |  PlayStore | Adobe Reader – PlayStore

Windows 7/8/10 – Adobe Reader

বই – স্বাগত তোমায় আলোর ভুবনে – QA
বই – স্বাগত তোমায় আলোর ভুবনে – QA

বইটি ভালো লাগলে অবশ্যই একটি Hard Copy সংগ্রহ করে অথবা লেখক বা প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে সৌজন্য মূল্য প্রদান করে সহযোগিতা করুন।

শবে মেরাজ: এক বিস্ময়কর যাত্রা (ভিডিও)

জীবনের সবচেয়ে কষ্টের সময়টি পার করার পর রাসুল (সঃ) এর জন্য অপেক্ষা করছিল এক অদ্ভুত, অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা। একটি রাতে রাসুল (সঃ) ভ্রমণ করেছিলেন মক্কা থেকে জেরুসালেম, এবং সাত আসমান পাড়ি দিয়ে স্বয়ং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার সাথে কথা বলেছিলেন। বিস্ময়কর এই যাত্রার গল্প শেয়ার করা হলো।

বই – মুমিন জীবনে সময় – ফ্রি ডাউনলোড

বই: মুমিন জীবনে সময়

লেখক: ড. ইউসুফ আল কারযাভী

প্রকাশনায়: গার্ডিয়ান পাবলিকেশন্স

পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১১২ 

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: যা এইমাত্র অতীত হলো, সেটাই সময়। এখন যে মুহূর্ত অতিক্রম করছি, সেটাই সময়। কিছুক্ষণ পরে যেখানে প্রবেশ করব, সেটাই সময়। সময় নামের অক্টোপাস থেকে কে, কখন, কবে মুক্তি পেয়েছে বলুন?

সফল তিনি, যিনি এই সময়কে ঠিকঠাক উপলব্ধি করতে পারেন। বিশেষত মুমিন জীবনে সময় মানেই নিজের মুক্তি ও পুরস্কার নিশ্চিত করে নেওয়ার মওকা! সময় নিয়ে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গির বোঝাপড়া তাই অতীব জরুরি আলাপ।

প্রত্যেক মানুষ দুনিয়াতে আগমন করেছে নির্দিষ্ট কিছু সময় নিয়ে। আর সফল তারাই যারা এই সময়কে মূল্য দিয়েছে। মুমিনের জীবনের সময়ের গুরুত্ব আরও ব্যাপক ও অর্থবহ। কারণ, দুনিয়ার জীবনের নির্দিষ্ট ও স্বল্প সময়ের উপরই নির্ভর করছে, পরবর্তি অনন্তকালের জীবনের পরিণতি। অনন্তকালের জীবনে চির সুখের জান্নাত পেতে হলে একজন মুমিনের জীবনে সময় কতটা গুরুত্ব বহণ করে, সেই আলাপ খুঁজে নেবো এই গ্রন্থে।

Android – ezPDF Reader  |  PlayStore | Adobe Reader – PlayStore

Windows 7/8/10 – Adobe Reader

বই – মুমিন জীবনে সময় – QA
বই – মুমিন জীবনে সময় – QA

বইটি ভালো লাগলে অবশ্যই একটি Hard Copy সংগ্রহ করে অথবা লেখক বা প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে সৌজন্য মূল্য প্রদান করে সহযোগিতা করুন।

বই – খুশু-খুযু – ফ্রি ডাউনলোড

Khusu kujhuবই: খুশু-খুযু

লেখক: আল্লামা ইবনুল কায়্যিম জাওযিয়্যাহ রহ

প্রকাশনায়:  সমকালীন প্রকাশন

পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৮৪

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: আমাদের আল্লাহ তা’আলা বলেন,
“ঐ সকল মুমিনরা সফল যারা তাদের সালাতে বিনয়াবণত”(সূরা মুমিনুন, ১-২)
.
হুযাইফা (রাদ্বী) বলেন,
“তোমরা তোমাদের দ্বীনের বিষয়সমূহ থেকে সর্বপ্রথম খুশুকে(বিনয়) হারাবে, আর সর্বশেষ হারাবে সালাত। অনেক সালাত আদায়কারী আছে, তাদের মধ্যে কোনো কল্যাণ নেই। অচিরেই তোমরা মসজিদে প্রবেশ করবে, কিন্তু কোনো বিনয়াবণত সালাত আদায়কারী দেখতে পাবে না।”(মাদারিজুস সালাকিন, ১/৫২১)
.
খুশুই হলো, সালাতের প্রাণ এবং তার সবচেয়ে বড় উদ্দেশ্য। তাই খুশুহীন সালাত হলো, প্রাণহীন দেহের ন্যায়।
তাই সালাতে খুশু একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা খুব দ্রুত হারিয়ে যায় এবং যার অস্তিত্ব অত্যন্ত দুর্লভ। বিশেষ করে আমাদের এ শেষ যুগে তথা আখেরি যামানায়।
সালাতে খুশু তখন হাসিল হয়, যখন অন্তর সালাতের জন্য অবসর হয়। অন্য সব কিছু বাদ দিয়ে কেবল সালাত নিয়েই ব্যস্ত হয় এবং সব কিছুর পর কেবল সালাতকেই প্রাধান্য দেয়। তখন সালাত তার জন্য প্রশান্তি হয় এবং সালাত তার চোখের শীতলতা আনয়নকারী হয়। যেমন রাসূল বলেছেন, ‘আমার চোখের প্রশান্তি দেওয়া হয়েছে সালাতের মধ্যে’ ( মুসনাদ আহমাদ, ৩/১২৮)
.
তো এই খুশু কীভাবে অর্জিত হবে? জানতে পড়ুন ইবন কায়্যিম এর খুশু খুযু

Android – ezPDF Reader  |  PlayStore | Adobe Reader – PlayStore

Windows 7/8/10 – Adobe Reader

বই – খুশু-খুযু – QA
বই – খুশু-খুযু – QA

বইটি ভালো লাগলে অবশ্যই একটি Hard Copy সংগ্রহ করে অথবা লেখক বা প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে সৌজন্য মূল্য প্রদান করে সহযোগিতা করুন।

বই – অন্তিম মুহূর্ত – ফ্রি ডাউনলোড

বই: অন্তিম মুহূর্ত

লেখক:  আবদুল মালিক আল কাসিম

প্রকাশনায়: রুহামা পাবলিকেশন

পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৮৮

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা: ‘প্রত্যেক প্রাণীই মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করবে।’ পবিত্র কুরআনের এ আয়াতটি আমরা প্রায় সকলেই মুখস্থ পারি, কিংবা এর অর্থটুকু হলেও জানি। কিন্তু কতটুকু আমরা মৃত্যুর মর্ম অনুধাবন করি? মৃত্যু নিয়ে কি আদৌ আমরা ভাবি? কিন্তু একটা সময় আসবে, যখন আমাদের মৃত্যু নিয়ে ভাবতে হবে; ভাবতে হবে মৃত্যু-পরবর্তী জীবন নিয়ে। সে জীবনে নিজের অবস্থা কেমন হবে—এমন সকল প্রশ্ন নিয়ে আমরা ভাবব; ভাবতে বাধ্য হবো। সে সময়টাই আমাদের এ জীবনের অন্তিম মুহূর্ত।

এ দুনিয়া থেকে যতজন বিদায় নিয়েছে, সবাইকে অন্তিম মুহূর্তের কষ্ট-যন্ত্রণা সয়ে যেতে হয়েছে। নবি-রাসুল আলাহিমুস সালাম-এর জন্যও কষ্ট-যন্ত্রণার এ অন্তিম মুহূর্তটি এসেছিল। এসেছিল সালাফে সালেহিনের জীবনেও। জীবন সায়াহ্নে আসা সে সময়টা নিয়ে আমাদের বিভিন্ন প্রশ্ন, নবি-রাসুল ও সালাফে সালেহিনের শেষ সময়ের চিত্রগুলো উঠে এসেছে ‘অন্তিম মুহূর্ত’ বইটিতে।

Android – ezPDF Reader  |  PlayStore | Adobe Reader – PlayStore

Windows 7/8/10 – Adobe Reader

বই – অন্তিম মুহূর্ত – QA
বই – অন্তিম মুহূর্ত – QA

বইটি ভালো লাগলে অবশ্যই একটি Hard Copy সংগ্রহ করে অথবা লেখক বা প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে সৌজন্য মূল্য প্রদান করে সহযোগিতা করুন।

সাবস্ক্রাইব করুন

2,018,267FansLike
1,685FollowersFollow
1,150FollowersFollow
6,143FollowersFollow
4,600SubscribersSubscribe