লেখক: উম্মে আব্দ মুনীব, শায়খ মুহাম্মদ বিন সাইদ কাহতানি (রহ) | সম্পাদনা: রাজিব হাসান
আইশা (রা:) বলেন, ‘রমাদ্বানে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) ঘুমাতেন, জাগতেন এবং সলাত আদায় করতেন। তবে, যখন শেষের দশদিন এসে যেত, তখন তিনি সারারাত জাগতেন, কোমর শক্ত করে বেঁধে নিতেন, স্ত্রীদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করতেন, মাগরিব ও ইশার মাঝে গােসল করতেন, অতঃপর সাহরির সময় রাতের খাবার খেতেন।‘ [1]
ঈমাম ইবনে জারীর (রহ.) বলেন, রমাদ্বানের শেষ দশ রাতের প্রতি রাতে মাগরিব ও ইশার মধ্যবর্তী সময়ে গােসল করা মুস্তাহাব। ঈমাম ইব্রাহীম আন-নাখাই (রহ.) রমদ্বানের শেষ দশরাতে মাগরিব ও ইশার মধ্যবর্তী সময়ে গােসল করতেন।
হাফিয ইবনু রজব হাম্বলী (রহ.) বলতেন, ‘রমাদ্বানের শেষ দশ রাতে মাগরিব ও ইশার মধ্যবর্তী সময়ে গােসল করা মুস্তাহাব। তিনি আরাে বলতেন, এই দশরাতে শুধু গােসলই নয়, উত্তম পােষাক, আতর লাগানােও জুমুআর দিন ও ঈদের দিনের মত মুস্তাহাব। কেননা এই দশরাতের যে কোন রাতে লাইলাতুল কদর হয়ে যেতে পারে।‘ [2]
ঈমাম ইবনে আবি আসিম (রহ.) বলেন, রাসূল রমাদ্বানের শেষ দশ রাতে মাগরিব ও ইশার মধ্যবর্তী সময়ে গােসল করতেন।
আনাস বিন মালিক (রাঃ) রমাদ্বানের ২৪ দিবাগত রাত্রিতে গােসল করতেন, গায়ে সুগন্ধি মাখতেন, সবচেয়ে সুন্দর পােষাক পরিধান করতেন। পরেরদিন সকালে পােষাক খুলে সুন্দর করে ভাঁজ করে তুলে রাখতেন। পরবর্তী রমাদ্বানের ঐ তারিখ না আসা পর্যন্ত তিনি ঐ পােষাক পরিধান করতেন না।
আইয়ুব আস-সাখতাইয়ান্নি (রাঃ) রমাদ্বানের ২৩ ও ২৪ দিবাগত রাত্রিতে গােসল দিতেন। নতুন পােষাক পরতেন। ধুপ জ্বালিয়ে পােষাক সুগন্ধযুক্ত করতেন।
হাম্মাদ ইবনু সালামাহ (রাঃ) বলেন, “ছাবিত বানানী এবং হুমায়েদ আত-তাউহীল উভয়েই লাইলাতুল কদরের তালাশে তাদের সবচেয়ে সুন্দর পােষাক পরিধান করত। সেরা সুগন্ধি মাখত। ধুপ জ্বালাত। মাসজিদে সুগন্ধি ছিটিয়ে দিত।
সাহাবী তামিম আদ-দারী (রাঃ) ১০০০ হাজার দিরহাম দিয়ে নতুন পােষাক কিনেছিলেন। যে রাতে লাইলাতুল কদরের সম্ভাবনা দেখা দিত তিনি ঐ রাতে পােষাকটি পরিধান করতেন।
ইবনে জারীর (রহ) উপরের সালাফদের এই ঘটনাগুলাের পরিপ্রেক্ষিতে বলেন, ‘এটা প্রতিষ্ঠিত যে লাইলাতুল কদরের রাত্রিতে গােসল করা, সুন্দর পােষাক পরিধান করা, আতর ও সুগন্ধি মাখা মুস্তাহাব। জুমুআর দিন ও দুই ঈদের দিনের মত সুন্নাহ।‘ [3]
উৎসঃ সালাফদের সিয়াম, পৃষ্ঠা: ৯৮ – ৯৯
[1] ইবন আবী আসিম, ইবন রজব হাম্বলী (৭৯৫ হিজরি), এই হাদিসটিকে হাসান বলেছেন।
[2] এই হাদীসের সনদের ব্যাপারে ইবনু রজব (রহ.) মুকারিব বা গ্রহণযােগ্য বলেছেন।
[3] আবু আলিয়াহ ইবন আব্দুল্লাহ, লাতেয়েফ-আল-মা’রিফ থেকে নেওয়া ঘটনা।
'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক'
প্রবন্ধের লেখা অপরিবর্তন রেখে এবং উৎস উল্লেখ্য করে আপনি Facebook, Whatsapp, Telegram, ব্লগ, আপনার বন্ধুদের Email Address সহ অন্য Social Networking ওয়েবসাইটে শেয়ার করতে পারেন, মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন। ইসলামি দা’ওয়াহ্র ৮০ টিরও বেশী উপায়! বিস্তারিত জানতে এইখানে ক্লিক করুন "কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা" [সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]